ভারতে আরেক মহামারী ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস

আক্রান্ত সাড়ে ৫ হাজার, মৃত্যু ১২৬ জন

চলমান করোনা মহামারীর মধ্যেই ভারতজুড়ে ভয়াবহভাবে আরও একটি ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। ব্ল্যাক ফাঙ্গাস (কালো ছত্রাক) বা মিউর্কোমাইকোসিস। এ পর্যন্ত দেশটিতে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে বা কালো ছত্রাকে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৫০০ জন। মারা গেছেন ১২৬ জন। এর মধ্যে শুধু মহারাষ্ট্রেই মারা গেছেন ৯০ জন। এছাড়া দেশটির অনেক রাজ্যে এই রোগের চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় অ্যান্টি-ফাঙ্গাস ওষুধ লাইপোসোমাল অ্যামফোটারিকিন বির ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

ক্রমে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা ব্লাক ফাঙ্গাস মহারাষ্ট্রের পর সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে হরিয়ানা রাজ্যের মানুষ। সেখানে এই নতুন সংক্রমণের কারণে ১৪ জন মারা গেছেন।

উত্তর প্রদেশে ৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তারা সবাই লখনৌয়ের বাসিন্দা। পাশাপাশি ঝাড়খ-ে চারজন এই সংক্রমণে প্রাণ হারিয়েছেন।

অন্যদিকে ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ এবং উত্তরাখ- রাজ্যে দু’জন করে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বিহার, আসাম, উড়িষ্যা এবং গোয়ায় মারা গেছেন একজন করে। আবার বেশ কয়েকটি রাজ্য এখনও আক্রান্ত ও মৃত্যুর তথ্য সংগ্রহ করেনি।

এদিকে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে মহামারী হিসেবে ঘোষণা করেছে রাজস্থান রাজ্য। জয়পুরের সাওয়াই ম্যান সিং হাসপাতালে চলছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা। ইতোমধ্যেই হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রায় ১০০ জন ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমিত রোগীকে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে ক্রমেই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।

একই পথে হেঁটে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে মহামারী হিসেবে ঘোষণা করেছে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তেলেঙ্গানার সরকার। রাজ্য সরকার জানায়, ১৮৯৭ সালের মহামারী আইন অনুযায়ী, মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে মহামারী হিসেবে ঘোষণা করা হলো।

এদিকে অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ওষুধ লাইপোসোমাল অ্যামফোটারিকিন বি এর ঘাটতি দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্য সরকার।

দিল্লি, তেলেঙ্গানা, উড়িষ্যা, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, গোয়া, গুজরাট, কর্নাটক এবং কেরালা জানিয়েছে যে, তাদের ওষুধের মজুত দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। এসব রাজ্যের বেসরকারি ফার্মেসিগুলো এই অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ওষুধের স্টক নেই বলে ইতোমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে। গুজরাটও একই ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। কালো ছত্রাকে আক্রান্ত রোগীদের মাত্র ১০ শতাংশই ইনজেকশন পাচ্ছেন।

ব্ল্যাক ফাঙ্গাস ইনফেকশন বা কালো ছত্রাক সংক্রমণকে চিকিৎসাবিদ্যার ভাষায় বলা হচ্ছে ‘মিউকোরমাইকোসিস’। করোনায় আক্রান্তদের দেহেই এ রোগ দেখা দিচ্ছে। অনেকে করোনাভাইরাস থেকে সুস্থ হয়েও এ রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। অনেকে মারাও যাচ্ছেন। তাছাড়া দেহের বিভিন্ন ক্ষতি করছে এ ছত্রাক।

চিকিৎসকরা বলছেন, করোনাভাইরাসের কারণে রোগীর দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যখন কমে যায়, ঠিক তখনই কালো ছত্রাক সংক্রমণ ঘটায়। এই রোগে মুহূর্তেই পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যেতে পারে। সংক্রমণ তীব্র হলে রোগী মারাও যেতে পারেন।

image

ভারতের একটি হাসপাতালে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস আক্রান্ত রোগীর পরীক্ষা করা হচ্ছে

আরও খবর
সু চির দল নিষিদ্ধের পদক্ষেপ নিচ্ছে জান্তা
ভারতে পুলিশ-মাওবাদী সংঘর্ষ, নিহত ১৫
বিশ্বে করোনায় মৃত্যু প্রায় সাড়ে ৩৪ লাখ

শনিবার, ২২ মে ২০২১ , ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ৯ শাওয়াল ১৪৪২

ভারতে আরেক মহামারী ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস

আক্রান্ত সাড়ে ৫ হাজার, মৃত্যু ১২৬ জন

সংবাদ ডেস্ক

image

ভারতের একটি হাসপাতালে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস আক্রান্ত রোগীর পরীক্ষা করা হচ্ছে

চলমান করোনা মহামারীর মধ্যেই ভারতজুড়ে ভয়াবহভাবে আরও একটি ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। ব্ল্যাক ফাঙ্গাস (কালো ছত্রাক) বা মিউর্কোমাইকোসিস। এ পর্যন্ত দেশটিতে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে বা কালো ছত্রাকে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৫০০ জন। মারা গেছেন ১২৬ জন। এর মধ্যে শুধু মহারাষ্ট্রেই মারা গেছেন ৯০ জন। এছাড়া দেশটির অনেক রাজ্যে এই রোগের চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় অ্যান্টি-ফাঙ্গাস ওষুধ লাইপোসোমাল অ্যামফোটারিকিন বির ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

ক্রমে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা ব্লাক ফাঙ্গাস মহারাষ্ট্রের পর সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে হরিয়ানা রাজ্যের মানুষ। সেখানে এই নতুন সংক্রমণের কারণে ১৪ জন মারা গেছেন।

উত্তর প্রদেশে ৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তারা সবাই লখনৌয়ের বাসিন্দা। পাশাপাশি ঝাড়খ-ে চারজন এই সংক্রমণে প্রাণ হারিয়েছেন।

অন্যদিকে ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ এবং উত্তরাখ- রাজ্যে দু’জন করে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বিহার, আসাম, উড়িষ্যা এবং গোয়ায় মারা গেছেন একজন করে। আবার বেশ কয়েকটি রাজ্য এখনও আক্রান্ত ও মৃত্যুর তথ্য সংগ্রহ করেনি।

এদিকে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে মহামারী হিসেবে ঘোষণা করেছে রাজস্থান রাজ্য। জয়পুরের সাওয়াই ম্যান সিং হাসপাতালে চলছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা। ইতোমধ্যেই হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রায় ১০০ জন ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমিত রোগীকে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে ক্রমেই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।

একই পথে হেঁটে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে মহামারী হিসেবে ঘোষণা করেছে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তেলেঙ্গানার সরকার। রাজ্য সরকার জানায়, ১৮৯৭ সালের মহামারী আইন অনুযায়ী, মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে মহামারী হিসেবে ঘোষণা করা হলো।

এদিকে অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ওষুধ লাইপোসোমাল অ্যামফোটারিকিন বি এর ঘাটতি দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্য সরকার।

দিল্লি, তেলেঙ্গানা, উড়িষ্যা, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, গোয়া, গুজরাট, কর্নাটক এবং কেরালা জানিয়েছে যে, তাদের ওষুধের মজুত দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। এসব রাজ্যের বেসরকারি ফার্মেসিগুলো এই অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ওষুধের স্টক নেই বলে ইতোমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে। গুজরাটও একই ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। কালো ছত্রাকে আক্রান্ত রোগীদের মাত্র ১০ শতাংশই ইনজেকশন পাচ্ছেন।

ব্ল্যাক ফাঙ্গাস ইনফেকশন বা কালো ছত্রাক সংক্রমণকে চিকিৎসাবিদ্যার ভাষায় বলা হচ্ছে ‘মিউকোরমাইকোসিস’। করোনায় আক্রান্তদের দেহেই এ রোগ দেখা দিচ্ছে। অনেকে করোনাভাইরাস থেকে সুস্থ হয়েও এ রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। অনেকে মারাও যাচ্ছেন। তাছাড়া দেহের বিভিন্ন ক্ষতি করছে এ ছত্রাক।

চিকিৎসকরা বলছেন, করোনাভাইরাসের কারণে রোগীর দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যখন কমে যায়, ঠিক তখনই কালো ছত্রাক সংক্রমণ ঘটায়। এই রোগে মুহূর্তেই পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যেতে পারে। সংক্রমণ তীব্র হলে রোগী মারাও যেতে পারেন।