তেল চিনি পেঁয়াজে বাড়তি
ঈদের এক সপ্তাহ পর বাজারে সবজির দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে। রাজধানীর বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, সবজির সরবরাহ ধীরে ধীরে বাড়ছে তাই দাম কমতে শুরু করেছে। এখন ধানের ভরা মৌসুম চলছে তাই দাম কমেছে চালের। আবার বেড়েছে সয়াবিন তেল, চিনি এবং পেঁয়াজের দাম। বোরো ফসল আর আমদানির কারণে পাইকারি বাজারে চালের দাম গত এক মাসে কেজিতে দুই থেকে চার টাকা পর্যন্ত কমলেও খুচরায় এর প্রভাব কম। দেশি বিআর আটাশ চাল ৫০ কেজির বস্তা ২ হাজার ১০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে, একমাস আগে যার দাম ছিল ২ হাজার ৩০০ টাকা। আগের তুলনায় এই চালের দাম কেজিতে কমেছে ৪ টাকা। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
গতকাল মালিবাগ কাঁচাবাজারে দেখা যায়, একমাস আগে সরুচালের ৫০ কেজির বস্তা দাম ছিল ৩ হাজার টাকা। কেজিপ্রতি যার দাম এখন ৪ টাকা কমে প্রতি বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৮০০ টাকায়। মোটা চাল পাইজাম ও স্বর্ণা চালের দাম ২ হাজার ১০০ টাকায় নেমে এসেছে। মাসের শুরুতে ৩ থেকে ৪ টাকা বাড়তি দামে এই চালের ৫০ কেজির বস্তা ছিল ২ হাজার ২৫০ টাকা থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকার মধ্যে। চলতি মাসের শুরু থেকে দাম কমার এই ধারা চালের বাজারকে ‘স্বাভাবিক অবস্থায়’ ফিরিয়ে আনবে বলে আশা দিচ্ছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা।
ভারত থেকে বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেক ব্যবসায়ী ভারতীয় চাল কিনে লোকসানের মুখে পড়েছে, কারণ দেশি চাল এখন ভারতীয় চালের চেয়ে কম দামে বিক্রি হচ্ছে। ঈদের আগে ভারতীয় পাইজাম চালের ২৫ কেজির বস্তা ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এখন সেটা ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। বোরো ধান এখনও পুরোপুরি বাজারে আসেনি। ধান বাজারে বা চাতালে উঠলে দাম আরেক দফা কমে আসতে পারে। অবশ্য পাইকারিতে দাম কমার প্রভাব খুচরা বাজারে তেমন দেখা যায়নি। রাজধানীর মালিবাগ বাজারের চাল বিক্রেতা মনসুর আলী বলেন, চালের দাম একটু কমেছে মিনিকেট চাল ৬৪ টাকা, আঠাশ ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। তিনি আরও বলেন, সামনে হয়ত চালের দাম আরও কমতে পারে।
বাজারে মিনিকেট চালের ৫০ কেজির বস্তা একমাস আগে ৩২০০ টাকা থাকলেও এখন তা কমে তিন হাজার টাকায় নেমেছে। একইভাবে বিআর আটাশ চালের বস্তা ২৩০০ টাকায় এবং পাইজাম ও স্বর্ণা চাল ২২০০ টাকায় নেমেছে। ঈদের আগের তুলনায় সব ধরনের চালের দাম বস্তা ৫০ টাকা থেকে ১০০ টাকা করে কমেছে। মালিবাগের আরেক বিক্রেতা জামাল মিয়া বলেন, ‘পেঁয়াজ রসুনের দাম কমেছে। পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা কেজিতে।’
মুদি দোকানদার রহমত আলী বলেন, ‘বাজারে পণ্য সরবরাহ কম তাই জিনিস পত্রের দাম বেশি। সরকার জনগণকে বাড়ি যাওয়া এবং ফেরা থেকে আটতে পারছে না শুধু পণ্য সরবরাহে একটা বাধা পড়ে আছে।’
খোলা ও প্যাকেট উভয় ধরনের চিনির দাম বেড়েছে। খোলা চিনির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৭৬ টাকা। আর প্যাকেট চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭৮ টাকা কেজি। চিনির মতো বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন তেল। খোলা সয়াবিন তেলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। আর বোতলের এক লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ টাকা।
মুরগি ব্যবসায়ী জাফর মিয়া বলেন, ‘ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কমেছে। ব্রয়লার মুরগি ১৩০ টাকা, সোনালি ও লেয়ার মুরগি ২২০ টাকায়। তবে লেয়ার মুরগির চাহিদা বেড়েছে বাজারে।’
রাজধানীর বাজারগুলোতে ঈদের আগে অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায় কিন্তু এখন চাহিদা কমে যাওয়ায় গরু ও খাসির মাংসের দাম কিছুটা কমেছে।
গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা, যা ঈদের আগের দিন ৬৫০ টাকায় উঠেছিল। আর ৯৫০ টাকায় উঠা খাসির মাংস ৭০০ থেকে ৮৫০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।
শান্তিনগর সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে আগের মতো ফুলকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০। মানভেদে শসার কেজি বিক্রি হচ্ছে থেকে ৫০ টাকা। গরমের সবজি পটল বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি, বরবটি ৫০ থেকে ৬০ টাকা এবং ঢেঁড়স ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া ঝিঙে আগের মতো ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। এক কেজি কচুরলতি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। কাঁচকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা।
শনিবার, ২২ মে ২০২১ , ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ৯ শাওয়াল ১৪৪২
তেল চিনি পেঁয়াজে বাড়তি
অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক
ঈদের এক সপ্তাহ পর বাজারে সবজির দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে। রাজধানীর বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, সবজির সরবরাহ ধীরে ধীরে বাড়ছে তাই দাম কমতে শুরু করেছে। এখন ধানের ভরা মৌসুম চলছে তাই দাম কমেছে চালের। আবার বেড়েছে সয়াবিন তেল, চিনি এবং পেঁয়াজের দাম। বোরো ফসল আর আমদানির কারণে পাইকারি বাজারে চালের দাম গত এক মাসে কেজিতে দুই থেকে চার টাকা পর্যন্ত কমলেও খুচরায় এর প্রভাব কম। দেশি বিআর আটাশ চাল ৫০ কেজির বস্তা ২ হাজার ১০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে, একমাস আগে যার দাম ছিল ২ হাজার ৩০০ টাকা। আগের তুলনায় এই চালের দাম কেজিতে কমেছে ৪ টাকা। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
গতকাল মালিবাগ কাঁচাবাজারে দেখা যায়, একমাস আগে সরুচালের ৫০ কেজির বস্তা দাম ছিল ৩ হাজার টাকা। কেজিপ্রতি যার দাম এখন ৪ টাকা কমে প্রতি বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৮০০ টাকায়। মোটা চাল পাইজাম ও স্বর্ণা চালের দাম ২ হাজার ১০০ টাকায় নেমে এসেছে। মাসের শুরুতে ৩ থেকে ৪ টাকা বাড়তি দামে এই চালের ৫০ কেজির বস্তা ছিল ২ হাজার ২৫০ টাকা থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকার মধ্যে। চলতি মাসের শুরু থেকে দাম কমার এই ধারা চালের বাজারকে ‘স্বাভাবিক অবস্থায়’ ফিরিয়ে আনবে বলে আশা দিচ্ছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা।
ভারত থেকে বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেক ব্যবসায়ী ভারতীয় চাল কিনে লোকসানের মুখে পড়েছে, কারণ দেশি চাল এখন ভারতীয় চালের চেয়ে কম দামে বিক্রি হচ্ছে। ঈদের আগে ভারতীয় পাইজাম চালের ২৫ কেজির বস্তা ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এখন সেটা ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। বোরো ধান এখনও পুরোপুরি বাজারে আসেনি। ধান বাজারে বা চাতালে উঠলে দাম আরেক দফা কমে আসতে পারে। অবশ্য পাইকারিতে দাম কমার প্রভাব খুচরা বাজারে তেমন দেখা যায়নি। রাজধানীর মালিবাগ বাজারের চাল বিক্রেতা মনসুর আলী বলেন, চালের দাম একটু কমেছে মিনিকেট চাল ৬৪ টাকা, আঠাশ ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। তিনি আরও বলেন, সামনে হয়ত চালের দাম আরও কমতে পারে।
বাজারে মিনিকেট চালের ৫০ কেজির বস্তা একমাস আগে ৩২০০ টাকা থাকলেও এখন তা কমে তিন হাজার টাকায় নেমেছে। একইভাবে বিআর আটাশ চালের বস্তা ২৩০০ টাকায় এবং পাইজাম ও স্বর্ণা চাল ২২০০ টাকায় নেমেছে। ঈদের আগের তুলনায় সব ধরনের চালের দাম বস্তা ৫০ টাকা থেকে ১০০ টাকা করে কমেছে। মালিবাগের আরেক বিক্রেতা জামাল মিয়া বলেন, ‘পেঁয়াজ রসুনের দাম কমেছে। পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা কেজিতে।’
মুদি দোকানদার রহমত আলী বলেন, ‘বাজারে পণ্য সরবরাহ কম তাই জিনিস পত্রের দাম বেশি। সরকার জনগণকে বাড়ি যাওয়া এবং ফেরা থেকে আটতে পারছে না শুধু পণ্য সরবরাহে একটা বাধা পড়ে আছে।’
খোলা ও প্যাকেট উভয় ধরনের চিনির দাম বেড়েছে। খোলা চিনির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৭৬ টাকা। আর প্যাকেট চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭৮ টাকা কেজি। চিনির মতো বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন তেল। খোলা সয়াবিন তেলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। আর বোতলের এক লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ টাকা।
মুরগি ব্যবসায়ী জাফর মিয়া বলেন, ‘ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কমেছে। ব্রয়লার মুরগি ১৩০ টাকা, সোনালি ও লেয়ার মুরগি ২২০ টাকায়। তবে লেয়ার মুরগির চাহিদা বেড়েছে বাজারে।’
রাজধানীর বাজারগুলোতে ঈদের আগে অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায় কিন্তু এখন চাহিদা কমে যাওয়ায় গরু ও খাসির মাংসের দাম কিছুটা কমেছে।
গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা, যা ঈদের আগের দিন ৬৫০ টাকায় উঠেছিল। আর ৯৫০ টাকায় উঠা খাসির মাংস ৭০০ থেকে ৮৫০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।
শান্তিনগর সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে আগের মতো ফুলকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০। মানভেদে শসার কেজি বিক্রি হচ্ছে থেকে ৫০ টাকা। গরমের সবজি পটল বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি, বরবটি ৫০ থেকে ৬০ টাকা এবং ঢেঁড়স ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া ঝিঙে আগের মতো ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। এক কেজি কচুরলতি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। কাঁচকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা।