সমাজপতির ফতোয়া তিন পরিবার অবরুদ্ধ

লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের ছেকনাপাড়া গ্রামে সমাজপতিদের বিরুদ্ধে তিন পরিবারকে ফতোয়া জারি করে এক ঘরে করার অভিযোগ ওঠেছে।

ওই তিন পরিবারকে ঈদের নামাজ পড়তে দেয়া হয়নি। ওই তিন পরিবারের বাড়িতে এলাকার অন্যান্য মানুষের প্রবেশ, কোন প্রকার লেনদেন, দোকানপাটে ক্রয় বিক্রয় এবং ক্ষেত-খামারে কোন শ্রমিক কাজ না করার জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করে মসজিদের মাইকে ঘোষণা করার অভিযোগ ওঠেছে। বৃহস্পতিবার (২০ মে) বিকেলে ভুক্তভোগী ওই তিন পরিবার ওই এলাকার মসজিদ কমিটি সদস্য আবদুল মতিন ও ইমাম মাওলানা সহিদার রহমানের বিরুদ্ধে পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে।

লিখিত অভিযোগে জানাগেছে, ছেকনাপাড়া গ্রামে রিয়াজুল ইসলামের সঙ্গে একই গ্রামের আবদুল মতিনের পরিবারের জমি-জমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে আবদুল মতিন ছেকনাপাড়া বাইতুল মাকাম জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা সহিদার রহমান মিলে তিন পরিবারের লোকজনের ওপর মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে ফতোয়া জারি করে।

আবদুল মতিন এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় সে পূর্ব শত্রুতা ব্যবহার করে এলাকার ৬০ বছরের বৃদ্ধ রিয়াজুল ইসলাম, ৭০ বছরের বৃদ্ধ মো. ইসাহাক আলী ও শতাধিক বছরের বৃদ্ধ এমাদ উদ্দিন সরকারের পরিবারের ওপর ফতোয়া জারি করে।

ফতোয়ার শিকার শতবছরের বৃদ্ধা এমাদ উদ্দিন জানান, আমার বয়স ১০০ বছরের উপর এলাকার বাইতুল মাকাম জামে মসজিদের সভাপতি আমার ছোট ভাই। কিন্তু পারিবারিক বিরোধ নিয়ে আবদুল মতিনরা আমার পরিবারকে একঘরে করে রাখে। এখন আমি এই বয়সে কার কাছে গিয়ে বিচার চাই?

ফতোয়ার শিকার এছাহাক আলী জানান, প্রভাবশালী আবদুল মতিনের সঙ্গে তার পূর্বে বিরোধ ছিল, এরই জের ধরে ৬ মাস পূর্বে আমার পরিবারের ওপর ফতোয়া জারি করে। এখন এলাকার লোকজন প্রভাবশালীর ভয়ে আমাদের সঙ্গে কোন কথা বলে না এমনকি মসজিদের চাঁদাও নেয় না। এছাড়াও ঈদের নামাজ পড়তেও বাধা দেয়। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আবদুল মতিন জানান, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা। এমন কোন ঘটনা করিনি।

মসজিদের ঈমাম মাওলানা সহিদার রহমানের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি কোন কথা বলতে রাজি হননি। এ বিষয়ে লালমনিরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয়পক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সমাধানের ব্যবস্থা করা হবে।

শনিবার, ২২ মে ২০২১ , ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ৯ শাওয়াল ১৪৪২

লালমনিরহাটে

সমাজপতির ফতোয়া তিন পরিবার অবরুদ্ধ

প্রতিনিধি, লালমনিরহাট

লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের ছেকনাপাড়া গ্রামে সমাজপতিদের বিরুদ্ধে তিন পরিবারকে ফতোয়া জারি করে এক ঘরে করার অভিযোগ ওঠেছে।

ওই তিন পরিবারকে ঈদের নামাজ পড়তে দেয়া হয়নি। ওই তিন পরিবারের বাড়িতে এলাকার অন্যান্য মানুষের প্রবেশ, কোন প্রকার লেনদেন, দোকানপাটে ক্রয় বিক্রয় এবং ক্ষেত-খামারে কোন শ্রমিক কাজ না করার জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করে মসজিদের মাইকে ঘোষণা করার অভিযোগ ওঠেছে। বৃহস্পতিবার (২০ মে) বিকেলে ভুক্তভোগী ওই তিন পরিবার ওই এলাকার মসজিদ কমিটি সদস্য আবদুল মতিন ও ইমাম মাওলানা সহিদার রহমানের বিরুদ্ধে পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে।

লিখিত অভিযোগে জানাগেছে, ছেকনাপাড়া গ্রামে রিয়াজুল ইসলামের সঙ্গে একই গ্রামের আবদুল মতিনের পরিবারের জমি-জমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে আবদুল মতিন ছেকনাপাড়া বাইতুল মাকাম জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা সহিদার রহমান মিলে তিন পরিবারের লোকজনের ওপর মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে ফতোয়া জারি করে।

আবদুল মতিন এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় সে পূর্ব শত্রুতা ব্যবহার করে এলাকার ৬০ বছরের বৃদ্ধ রিয়াজুল ইসলাম, ৭০ বছরের বৃদ্ধ মো. ইসাহাক আলী ও শতাধিক বছরের বৃদ্ধ এমাদ উদ্দিন সরকারের পরিবারের ওপর ফতোয়া জারি করে।

ফতোয়ার শিকার শতবছরের বৃদ্ধা এমাদ উদ্দিন জানান, আমার বয়স ১০০ বছরের উপর এলাকার বাইতুল মাকাম জামে মসজিদের সভাপতি আমার ছোট ভাই। কিন্তু পারিবারিক বিরোধ নিয়ে আবদুল মতিনরা আমার পরিবারকে একঘরে করে রাখে। এখন আমি এই বয়সে কার কাছে গিয়ে বিচার চাই?

ফতোয়ার শিকার এছাহাক আলী জানান, প্রভাবশালী আবদুল মতিনের সঙ্গে তার পূর্বে বিরোধ ছিল, এরই জের ধরে ৬ মাস পূর্বে আমার পরিবারের ওপর ফতোয়া জারি করে। এখন এলাকার লোকজন প্রভাবশালীর ভয়ে আমাদের সঙ্গে কোন কথা বলে না এমনকি মসজিদের চাঁদাও নেয় না। এছাড়াও ঈদের নামাজ পড়তেও বাধা দেয়। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আবদুল মতিন জানান, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা। এমন কোন ঘটনা করিনি।

মসজিদের ঈমাম মাওলানা সহিদার রহমানের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি কোন কথা বলতে রাজি হননি। এ বিষয়ে লালমনিরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয়পক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সমাধানের ব্যবস্থা করা হবে।