বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। কৃষিই এদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। তবে এ দেশের কৃষির বেহাল দশা এখনও বিদ্যমান। তাই এ দেশের কৃষির উন্নয়নে কৃষির আধুনিকায়ন খুবই জরুরি। আধুনিক কৃষি যন্ত্র দিয়ে ধান কাটার প্রক্রিয়া অনেক সহজ ও সাশ্রয়ী। একটি কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন দিয়ে প্রতি ঘণ্টায় পাঁচ বিঘা জমির ধান কাটা, মাড়াই, পরিষ্কার ও বস্তাভর্তি করা সম্ভব। অন্যদিকে রিপার মেশিনের মাধ্যমে ঘণ্টায় দুই বিঘা জমির ধান কাটা যায়। এতে ৯০ ভাগ খরচ সাশ্রয় হয়। যদি সরকারি উদ্যোগে সহজশর্তে কৃষকদের মধ্যে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের আধুনিক যন্ত্র কম্বাইনড হারভেস্টার ও রিপার মেশিন বিতরণ করা যায়, তবে কৃষকের শ্রমিক বিড়ম্বনা আর থাকবে না।
আবহাওয়া প্রতিকূলে থাকলেও গত বছরের মতো এ বছরও বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ জন্য কৃষকের মুখে হাসি। কিন্তু গত বছরের ন্যায় করোনা ভাইরাসের কারণে এ বছরও ধান কাটার শ্রমিক সংকট দেখা দেওয়ায় মহা চিন্তায় পড়েছে কৃষক। সাধারণত শ্রমিকরা দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে গিয়ে ধান কেটে থাকে। কিন্তু এবার করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে সরকার লকডাউন ঘোষণা করায় দূরপাল্লার যানবাহন বন্ধ রয়েছে এবং এ কারণে দূরদূরান্তের শ্রমিকরা ধান কাটায় অংশ নিতে পারছেন না। এছাড়া সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে। এ অবস্থায় ক্ষেতের পাকা ধান নিয়ে অনেক কৃষকের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। অবশ্য সরকারের উদ্যোগ সীমিত সংখ্যক শ্রমিক বিভিন্ন জেলায় গিয়ে ধান কাটা শুরু করেছে কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগন্য। দূরপাল্লার পরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় ব্যাপকহারে শ্রমিকরা ধান কাটায় অংশগ্রহণ করতে পারছে না।
তবে দেশের বিভিন্ন স্থানে শ্রমিক সংকটে পড়া কৃষকদের ধান কাটতে সহায়তায় এগিয়ে এসেছে স্থানীয় রাজনৈতিক কর্মী, প্রশাসনের লোকজন, স্বেচ্ছাসেবী ও জনপ্রতিনিধিরা। এটা অবশ্যই প্রসংশনীয় ও ভালো উদ্যোগ। কিন্তু গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যাচ্ছে, অনেকে ধান কাটার চেয়ে ছবি তুলে ফেসবুকে দেয়ায় বেশি সক্রিয়। অনেকে দলবলসহ সিনেমার শুটিং এর মতো ছবি তোলায় মহাব্যস্ত, আবার অনেকে কাঁচা ধান কেটে ছবি তুলছে, এতে কৃষকের উপকারের চেয়ে ক্ষতির পরিমাণ বেশি। এটা খুবই দুঃখজনক ও কৃষকের সঙ্গে এক ধরনের তামাশা। এসব বন্ধ করে কৃষকের ধান কাটায় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিন, এতে কৃষক উপকৃত হবেন।
জিল্লুর রহমান
শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।
শনিবার, ২২ মে ২০২১ , ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ৯ শাওয়াল ১৪৪২
বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। কৃষিই এদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। তবে এ দেশের কৃষির বেহাল দশা এখনও বিদ্যমান। তাই এ দেশের কৃষির উন্নয়নে কৃষির আধুনিকায়ন খুবই জরুরি। আধুনিক কৃষি যন্ত্র দিয়ে ধান কাটার প্রক্রিয়া অনেক সহজ ও সাশ্রয়ী। একটি কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন দিয়ে প্রতি ঘণ্টায় পাঁচ বিঘা জমির ধান কাটা, মাড়াই, পরিষ্কার ও বস্তাভর্তি করা সম্ভব। অন্যদিকে রিপার মেশিনের মাধ্যমে ঘণ্টায় দুই বিঘা জমির ধান কাটা যায়। এতে ৯০ ভাগ খরচ সাশ্রয় হয়। যদি সরকারি উদ্যোগে সহজশর্তে কৃষকদের মধ্যে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের আধুনিক যন্ত্র কম্বাইনড হারভেস্টার ও রিপার মেশিন বিতরণ করা যায়, তবে কৃষকের শ্রমিক বিড়ম্বনা আর থাকবে না।
আবহাওয়া প্রতিকূলে থাকলেও গত বছরের মতো এ বছরও বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ জন্য কৃষকের মুখে হাসি। কিন্তু গত বছরের ন্যায় করোনা ভাইরাসের কারণে এ বছরও ধান কাটার শ্রমিক সংকট দেখা দেওয়ায় মহা চিন্তায় পড়েছে কৃষক। সাধারণত শ্রমিকরা দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে গিয়ে ধান কেটে থাকে। কিন্তু এবার করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে সরকার লকডাউন ঘোষণা করায় দূরপাল্লার যানবাহন বন্ধ রয়েছে এবং এ কারণে দূরদূরান্তের শ্রমিকরা ধান কাটায় অংশ নিতে পারছেন না। এছাড়া সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে। এ অবস্থায় ক্ষেতের পাকা ধান নিয়ে অনেক কৃষকের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। অবশ্য সরকারের উদ্যোগ সীমিত সংখ্যক শ্রমিক বিভিন্ন জেলায় গিয়ে ধান কাটা শুরু করেছে কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগন্য। দূরপাল্লার পরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় ব্যাপকহারে শ্রমিকরা ধান কাটায় অংশগ্রহণ করতে পারছে না।
তবে দেশের বিভিন্ন স্থানে শ্রমিক সংকটে পড়া কৃষকদের ধান কাটতে সহায়তায় এগিয়ে এসেছে স্থানীয় রাজনৈতিক কর্মী, প্রশাসনের লোকজন, স্বেচ্ছাসেবী ও জনপ্রতিনিধিরা। এটা অবশ্যই প্রসংশনীয় ও ভালো উদ্যোগ। কিন্তু গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যাচ্ছে, অনেকে ধান কাটার চেয়ে ছবি তুলে ফেসবুকে দেয়ায় বেশি সক্রিয়। অনেকে দলবলসহ সিনেমার শুটিং এর মতো ছবি তোলায় মহাব্যস্ত, আবার অনেকে কাঁচা ধান কেটে ছবি তুলছে, এতে কৃষকের উপকারের চেয়ে ক্ষতির পরিমাণ বেশি। এটা খুবই দুঃখজনক ও কৃষকের সঙ্গে এক ধরনের তামাশা। এসব বন্ধ করে কৃষকের ধান কাটায় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিন, এতে কৃষক উপকৃত হবেন।
জিল্লুর রহমান
শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।