আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরর সঙ্গে দূরত্ব এবং অভিমানের অবসান হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। গতকাল বিকেলে রাজধানীতে বড় ভাই ওবায়দুল কাদেরর সরকারি বাসভবনে উপস্থিত হয়ে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান ছোট ভাই কাদের মির্জা।
আওয়ামী লীগ আমলে জনগণের ভোটাধিকার, মন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্যদের অনিয়মসহ নানা সমালোচনা করে গণমাধ্যমে আলোচনায় আসেন আবদুল কাদের মির্জা। নিজের ফেইসবুক পেজে বড় ভাই ওবায়দুল কাদের এবং তার স্ত্রীকে নিয়েও কড়া সমালোচনা করেন তিনি। স্থানীয় রাজনীতিতে নেতাকর্মীদের সঙ্গে এবং পারিবারিকভাবে ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে আবদুল কাদের মির্জার সম্পর্কের ব্যাপক অবনতি হয়।
কাদের মির্জার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় নোয়াখালী জেলা, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা এবং পৌর আওয়ামী লীগের একটি বড় অংশ। বসুরহাটে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে কয়েক দফার সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনাও ঘটে। বিব্রতকর এই অবস্থার মধ্যে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক (চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত) আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনকে বিষয়টি সুরাহার দায়িত্ব দেয় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। এর অংশ হিসেবেই কাদের মির্জা বড় ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন।
আবদুল কাদের মির্জা সাক্ষাৎ শেষে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আপনজনের প্রতি সাময়িক অভিমান হলেও তা কখনও স্থায়ী হতে পারে না। মন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে কোম্পানীগঞ্জের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলাপ হয়েছে। কোম্পানীগঞ্জে যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য, শান্তি স্থাপনের জন্য কিছু দিক-নির্দেশনা তিনি আমাকে দিয়েছেন। উনি যে দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন সেই মোতাবেক আমার কার্যক্রম পরিচালনা করব। এছাড়া আমার ছোট ভাই শাহাদাত হোসেন শারীরিকভাবে অসুস্থ। তিনি (ওবায়দুল কাদের) তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
ওবায়দুল কাদেরর বরাত দিয়ে কাদের মির্জা বলেন, ‘তিনি (ওবায়দুল কাদের) আমাকে বললেন, তুমি অনেক কথাই বলেছ, আমি কোন পাল্টা বক্তব্য দিইনি। কারণ আমি জানি তুমি একদিন ঠিকই বুঝবে।’
ইতিপূর্বে ওবায়দুল কাদেরের মন্ত্রণালয় এবং রাজনীতি নিয়ে নেতিবাচক নানা মন্তব্য করলেও গতকাল বিকেলে আবদুল কাদের মির্জা তার ফেইসবুক পেজে বড় ভাইকে ফুল দেয়ার একটি ছবি পোস্ট করে স্টেটাসে লেখেন, ‘আমার পিতৃসমতুল্য সহোদর বড় ভাই। বাংলাদেশের মেধাবী রাজনীতির প্রতীক যিনি তৃণমূল থেকে নিজ মেধা ও শ্রমে এশিয়ার অন্যতম রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকে পদাস্থিত হয়েছেন। বাংলাদেশের মন্ত্রিপরিষদের অন্যতম সফল মন্ত্রী হয়েছেন।’
স্টেটাসের শেষ পর্যায়ে কাদের মির্জা লেখেন, ‘মানুষের মান অভিমানের মধ্যে মানবজীবন রচিত হয়। আপন জনের প্রতি সাময়িক অভিমান হলেও তা কখনও স্থায়ী হতে পারে না। সব গ্লানি ভুলে শান্তির কোম্পানীগঞ্জ প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পতাকাতলে একত্রিত হতে আহ্বান জানাচ্ছি।’
এর আগে শুক্রবার আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন আবদুল কাদের মির্জা। সাক্ষাৎকালে আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন দলের ঐক্য ও সংহতি মজবুত করার জন্য কাদের মির্জাকে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, কোম্পানীগঞ্জে দলের মাঝে বিভাজন কমিয়ে দলকে শক্তিশালী করতে হবে। তার এ অনুরোধে জনগণ ও দলের স্বার্থে বিভেদ ভুলে কাজ করার অঙ্গীকার করেন কাদের মির্জা।
উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার আগে পারিবারিকভাবে কাদের মির্জা ও ওবায়দুল কাদেরের দেখা হয়েছিল। সর্বশেষ গত ৩০ জানুয়ারি রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এসে বড় ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করেন কাদের মির্জা।
রবিবার, ২৩ মে ২০২১ , ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১০ শাওয়াল ১৪৪২
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরর সঙ্গে দূরত্ব এবং অভিমানের অবসান হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। গতকাল বিকেলে রাজধানীতে বড় ভাই ওবায়দুল কাদেরর সরকারি বাসভবনে উপস্থিত হয়ে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান ছোট ভাই কাদের মির্জা।
আওয়ামী লীগ আমলে জনগণের ভোটাধিকার, মন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্যদের অনিয়মসহ নানা সমালোচনা করে গণমাধ্যমে আলোচনায় আসেন আবদুল কাদের মির্জা। নিজের ফেইসবুক পেজে বড় ভাই ওবায়দুল কাদের এবং তার স্ত্রীকে নিয়েও কড়া সমালোচনা করেন তিনি। স্থানীয় রাজনীতিতে নেতাকর্মীদের সঙ্গে এবং পারিবারিকভাবে ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে আবদুল কাদের মির্জার সম্পর্কের ব্যাপক অবনতি হয়।
কাদের মির্জার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় নোয়াখালী জেলা, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা এবং পৌর আওয়ামী লীগের একটি বড় অংশ। বসুরহাটে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে কয়েক দফার সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনাও ঘটে। বিব্রতকর এই অবস্থার মধ্যে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক (চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত) আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনকে বিষয়টি সুরাহার দায়িত্ব দেয় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। এর অংশ হিসেবেই কাদের মির্জা বড় ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন।
আবদুল কাদের মির্জা সাক্ষাৎ শেষে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আপনজনের প্রতি সাময়িক অভিমান হলেও তা কখনও স্থায়ী হতে পারে না। মন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে কোম্পানীগঞ্জের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলাপ হয়েছে। কোম্পানীগঞ্জে যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য, শান্তি স্থাপনের জন্য কিছু দিক-নির্দেশনা তিনি আমাকে দিয়েছেন। উনি যে দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন সেই মোতাবেক আমার কার্যক্রম পরিচালনা করব। এছাড়া আমার ছোট ভাই শাহাদাত হোসেন শারীরিকভাবে অসুস্থ। তিনি (ওবায়দুল কাদের) তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
ওবায়দুল কাদেরর বরাত দিয়ে কাদের মির্জা বলেন, ‘তিনি (ওবায়দুল কাদের) আমাকে বললেন, তুমি অনেক কথাই বলেছ, আমি কোন পাল্টা বক্তব্য দিইনি। কারণ আমি জানি তুমি একদিন ঠিকই বুঝবে।’
ইতিপূর্বে ওবায়দুল কাদেরের মন্ত্রণালয় এবং রাজনীতি নিয়ে নেতিবাচক নানা মন্তব্য করলেও গতকাল বিকেলে আবদুল কাদের মির্জা তার ফেইসবুক পেজে বড় ভাইকে ফুল দেয়ার একটি ছবি পোস্ট করে স্টেটাসে লেখেন, ‘আমার পিতৃসমতুল্য সহোদর বড় ভাই। বাংলাদেশের মেধাবী রাজনীতির প্রতীক যিনি তৃণমূল থেকে নিজ মেধা ও শ্রমে এশিয়ার অন্যতম রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকে পদাস্থিত হয়েছেন। বাংলাদেশের মন্ত্রিপরিষদের অন্যতম সফল মন্ত্রী হয়েছেন।’
স্টেটাসের শেষ পর্যায়ে কাদের মির্জা লেখেন, ‘মানুষের মান অভিমানের মধ্যে মানবজীবন রচিত হয়। আপন জনের প্রতি সাময়িক অভিমান হলেও তা কখনও স্থায়ী হতে পারে না। সব গ্লানি ভুলে শান্তির কোম্পানীগঞ্জ প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পতাকাতলে একত্রিত হতে আহ্বান জানাচ্ছি।’
এর আগে শুক্রবার আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন আবদুল কাদের মির্জা। সাক্ষাৎকালে আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন দলের ঐক্য ও সংহতি মজবুত করার জন্য কাদের মির্জাকে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, কোম্পানীগঞ্জে দলের মাঝে বিভাজন কমিয়ে দলকে শক্তিশালী করতে হবে। তার এ অনুরোধে জনগণ ও দলের স্বার্থে বিভেদ ভুলে কাজ করার অঙ্গীকার করেন কাদের মির্জা।
উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার আগে পারিবারিকভাবে কাদের মির্জা ও ওবায়দুল কাদেরের দেখা হয়েছিল। সর্বশেষ গত ৩০ জানুয়ারি রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এসে বড় ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করেন কাদের মির্জা।