করোনার চ্যালেঞ্জ

ফোরকান উদ্দিন আহাম্মদ

নতুন করোনা ভ্যারিয়েন্ট সামাল দিতে ভারত বর্তমানে হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে এক ভয়াবহ ও মানবিক বিপর্যয়কর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের বর্তমান ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য করোনাভাইরাসের নতুন একটি ভ্যারিয়েন্ট দায়ী বলে জানিয়েছে দেশটি। গত মার্চ মাসে প্রথম এই ভ্যারিয়েন্টটি শনাক্ত হয়। দেশটির ধারণাÑ দেশে করোনার যে দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হেনেছে তার পেছনে রয়েছে এই শক্তিশালী ভ্যারিয়েন্ট। ডবল মিউট্যান্ট এই ভ্যারিয়েন্টের নাম দেয়া হয়েছে বি.১.৬১৭। দেশটির একাধিক রাজ্যে এ ভ্যারিয়েন্টের উচ্চ সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়েছে।

করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট নেপালে ছড়িয়ে পড়ার কারণে নেপালে ক্রমশ করোনা পরিস্থিতি খারাপের দিকে ধাবিত হতে চলেছে। এক্ষেত্রে ভারত থেকে নেপালে অবাধে যাতায়াত, ভারতে কাজ করা নেপালি শ্রমিকদের বাড়ি ফেরার বিষয়গুলোও রয়েছে। প্রতিবেশী ভারতের মতো করোনা বিপর্যয়ের মুখে নেপাল। সংকট মোকাবিলায় দেশটির সরকার আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চেয়েছে। রাজধানী কাঠমা-ুসহ দেশের উত্তর-পশ্চিম ও পশ্চিমাঞ্চলে সংক্রমণের মাত্রা অনেক বেড়েছে। এই এলাকাগুলোতে সংক্রমণের হার ৪৭ শতাংশ। এ পরিস্থিতিতে দেশটিতে একদিকে দেখা দিয়েছে টিকার সংকট অন্যদিকে হাসপাতালগুলো রোগীর চাপ বেড়েছে। করোনা পরিস্থিতি সামাল দেয়া নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্ম ওলি। চলতি সপ্তাহে তিনি টিকার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা চেয়েছেন। টিকাদান কর্মসূচিতে সরকারের বিশৃঙ্খলার কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে নাগরিকদের। এভাবে আরও ভাইরাস বিস্তার ঘটাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

নেপালের বিষয়টি আমাদের জন্য এক সকর্তবার্তা। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের রয়েছে ১৮টি স্থলবন্দর ও দীর্ঘ সীমান্ত এলাকা। এর মধ্যে কোনোটি পুরোপুরি বন্ধ, কোনোটিতে শুধু পণ্য পরিবহনের সুযোগ রাখা হয়েছে, আবার কোনো কোনোটি দিয়ে জরুরি কারণ দেখিয়ে বাংলাদেশিরা দেশে আসার সুযোগ পাচ্ছে। এ সুযোগ নিয়ে প্রতিদিনই শত শত যাত্রী ভারত থেকে দেশে ঢুকছে। এ সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। বৈধভাবে আসা এই যাত্রীরা ছাড়াও অবৈধভাবে বিভিন্ন সীমান্ত হয়ে প্রতিদিনই আরো কিছু মানুষ দেশে ঢুকছে; যা হয়তো আমাদের অজানা। যদিও আমাদের সীমান্ত এখন কড়াকড়িভাবেই বন্ধ করা আছে। যারা ফিরছে তাদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনও বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। তবু চারদিকে ভারত সীমান্তবেষ্টিত হওয়ায় বাংলাদেশে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট খুব সহজে দেশে ঢুকে পড়ার সম্ভাবনা বেশি। কেননা কোন এক অসতর্ক মহূর্তের জন্যই মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তবে শঙ্কার বিষয় হচ্ছেÑ ইতোমধ্যে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে। কাজেই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে এবং সরকারের এখনই প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে হবে।

ভারতে করোনাভাইরাসের ‘ডাবল মিউট্যান্ট’ আতঙ্ক কাটতে না কাটতেই সম্প্রতি শোনা যাচ্ছে ‘ট্রিপল মিউট্যান্ট’ ভ্যারিয়েন্টের কথা। ইতোমধ্যে পশ্চিমবঙ্গসহ দেশটির অন্তত চারটি রাজ্যে এ ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। বাকি রাজ্যগুলো হচ্ছে দিল্লি, মহারাষ্ট্র ও ছত্তিশগড়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোভিড-১৯ ভাইরাসের তিনটি আলাদা স্ট্রেইন মিলে তৈরি নতুন এই ভ্যারিয়্যান্টের সংক্রমণের ক্ষমতা তিন গুণ বেশি। নতুন এই স্ট্রেইনে আক্রান্তদের শারীরিক অবস্থারও দ্রুত অবনতি ঘটছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সময়মতো লাগাম পরানো না গেলে এবার সংক্রমণের সুনামি ঘটবে। ভারত থেকে যাতে দেশে সংক্রমণ ছড়াতে না পারে, সে জন্য ২৬ এপ্রিল থেকে বাংলাদেশও ভারতের সঙ্গে স্থলপথে যাতায়াত বন্ধ করেছে। তবে বিভিন্ন পণ্যবাহী পরিবহনে আমদানি-রপ্তানি চালু থাকায় পরিবহন শ্রমিকদের মাধ্যমে দেশে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ঢোকার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে জরুরি প্রয়োজনে ভারত থেকে দেশে প্রবেশকারীরাও সংক্রমণ ছড়ানোর হুমকি হয়ে উঠেছে।

চলমান লকডাউন একটু শিথিলতায় ঈদে দোকানপাট ও শপিংমলে ঝুঁকি নিয়ে মানুষের যেভাবে উপচেপড়া ভিড় এবং ঘরমুখো মানুষের বাঁধভাঙ্গা তীব্র জনস্রোত দেখা গেছে সেখানে স্বাস্থ্যবিধি অনেকটা ভেঙে পড়েছে। সচেতন নাগারিক হিসেবে আমাদের আরো দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া আমাদের বাহিরে বের হওয়া ও জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে। সবাইকে সরকারি নির্দেশনা মানতে হবে। সবাইকে মাস্ক ব্যবহারের ওপর জোর দিতে হবে; কারণ একমাত্র মাস্কই পারে করোনার বিরুদ্ধে ৯০-৯৫ ভাগ রুখে দিতে। ভারতের মতো বিপর্যয়কর পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আগে সরকারকে সমন্বিত ও কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে সাহস ও ধৈর্য্যরে সঙ্গে করোনাকে মোকাবেলা করতে হবে। আমাদের সিংহভাগ জনগণ এখনো ভ্যাকসিনের আওতার বাইরে, অন্যদিকে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট দেশে ঢুকে পড়েছে। তাই বিদ্যমান পরিস্থিতির নিরিখে সরকারকে প্রয়োজনে সর্বাত্মক কঠোর লকডাউনে যেতে হবে। হাসপাতালগুলোকে পর্যাপ্ত বেড, প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র ও অক্সিজেন মজুদ করে রাখতে হবে। বিশেষ করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে চীন, রাশিয়া ও বিকল্প উৎস থেকে ভ্যাকসিন এনে সিংহভাগ জনগণকে টিকার আওতায় আনতে হবে। তাহলেই এ অতিমারীর বিপর্যয়ের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করা সম্ভব।

আমরা দেখেছি করোনার ঊর্ধ্বগতি সংক্রমণে দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউ তো দূরের কথা, সাধারণ বেডই পাওয়া দুস্কর, সেখানে নতুন ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমণের ব্যাপকতা বাড়লে আমাদের পক্ষে কুলিয়ে উঠা কিছুতেই সম্ভব হবে না। ভেঙে পড়বে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। তবে পরিস্থিতি যাই হোক না কেন যেকোন কঠিন পরিস্থিতির জন্য আমাদের মানসিকভাবে তৈরি থাকতে হবে। বাঁধভাঙার মতো অবস্থা এমন কিছু যদি ঘটে থাকে সেক্ষেত্রে কোন ব্যবস্থাতে আর কোন কিছু হবে না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে তাকে ঠেকানোর চেষ্টা করেও কোন ফল আসবে না; যা ঘটার তাই ঘটতে থাকবে।

[লেখক : সাবেক উপ-মহাপরিচালক, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি]

সোমবার, ২৪ মে ২০২১ , ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১১ শাওয়াল ১৪৪২

করোনার চ্যালেঞ্জ

ফোরকান উদ্দিন আহাম্মদ

নতুন করোনা ভ্যারিয়েন্ট সামাল দিতে ভারত বর্তমানে হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে এক ভয়াবহ ও মানবিক বিপর্যয়কর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের বর্তমান ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য করোনাভাইরাসের নতুন একটি ভ্যারিয়েন্ট দায়ী বলে জানিয়েছে দেশটি। গত মার্চ মাসে প্রথম এই ভ্যারিয়েন্টটি শনাক্ত হয়। দেশটির ধারণাÑ দেশে করোনার যে দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হেনেছে তার পেছনে রয়েছে এই শক্তিশালী ভ্যারিয়েন্ট। ডবল মিউট্যান্ট এই ভ্যারিয়েন্টের নাম দেয়া হয়েছে বি.১.৬১৭। দেশটির একাধিক রাজ্যে এ ভ্যারিয়েন্টের উচ্চ সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়েছে।

করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট নেপালে ছড়িয়ে পড়ার কারণে নেপালে ক্রমশ করোনা পরিস্থিতি খারাপের দিকে ধাবিত হতে চলেছে। এক্ষেত্রে ভারত থেকে নেপালে অবাধে যাতায়াত, ভারতে কাজ করা নেপালি শ্রমিকদের বাড়ি ফেরার বিষয়গুলোও রয়েছে। প্রতিবেশী ভারতের মতো করোনা বিপর্যয়ের মুখে নেপাল। সংকট মোকাবিলায় দেশটির সরকার আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চেয়েছে। রাজধানী কাঠমা-ুসহ দেশের উত্তর-পশ্চিম ও পশ্চিমাঞ্চলে সংক্রমণের মাত্রা অনেক বেড়েছে। এই এলাকাগুলোতে সংক্রমণের হার ৪৭ শতাংশ। এ পরিস্থিতিতে দেশটিতে একদিকে দেখা দিয়েছে টিকার সংকট অন্যদিকে হাসপাতালগুলো রোগীর চাপ বেড়েছে। করোনা পরিস্থিতি সামাল দেয়া নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্ম ওলি। চলতি সপ্তাহে তিনি টিকার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা চেয়েছেন। টিকাদান কর্মসূচিতে সরকারের বিশৃঙ্খলার কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে নাগরিকদের। এভাবে আরও ভাইরাস বিস্তার ঘটাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

নেপালের বিষয়টি আমাদের জন্য এক সকর্তবার্তা। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের রয়েছে ১৮টি স্থলবন্দর ও দীর্ঘ সীমান্ত এলাকা। এর মধ্যে কোনোটি পুরোপুরি বন্ধ, কোনোটিতে শুধু পণ্য পরিবহনের সুযোগ রাখা হয়েছে, আবার কোনো কোনোটি দিয়ে জরুরি কারণ দেখিয়ে বাংলাদেশিরা দেশে আসার সুযোগ পাচ্ছে। এ সুযোগ নিয়ে প্রতিদিনই শত শত যাত্রী ভারত থেকে দেশে ঢুকছে। এ সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। বৈধভাবে আসা এই যাত্রীরা ছাড়াও অবৈধভাবে বিভিন্ন সীমান্ত হয়ে প্রতিদিনই আরো কিছু মানুষ দেশে ঢুকছে; যা হয়তো আমাদের অজানা। যদিও আমাদের সীমান্ত এখন কড়াকড়িভাবেই বন্ধ করা আছে। যারা ফিরছে তাদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনও বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। তবু চারদিকে ভারত সীমান্তবেষ্টিত হওয়ায় বাংলাদেশে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট খুব সহজে দেশে ঢুকে পড়ার সম্ভাবনা বেশি। কেননা কোন এক অসতর্ক মহূর্তের জন্যই মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তবে শঙ্কার বিষয় হচ্ছেÑ ইতোমধ্যে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে। কাজেই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে এবং সরকারের এখনই প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে হবে।

ভারতে করোনাভাইরাসের ‘ডাবল মিউট্যান্ট’ আতঙ্ক কাটতে না কাটতেই সম্প্রতি শোনা যাচ্ছে ‘ট্রিপল মিউট্যান্ট’ ভ্যারিয়েন্টের কথা। ইতোমধ্যে পশ্চিমবঙ্গসহ দেশটির অন্তত চারটি রাজ্যে এ ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। বাকি রাজ্যগুলো হচ্ছে দিল্লি, মহারাষ্ট্র ও ছত্তিশগড়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোভিড-১৯ ভাইরাসের তিনটি আলাদা স্ট্রেইন মিলে তৈরি নতুন এই ভ্যারিয়্যান্টের সংক্রমণের ক্ষমতা তিন গুণ বেশি। নতুন এই স্ট্রেইনে আক্রান্তদের শারীরিক অবস্থারও দ্রুত অবনতি ঘটছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সময়মতো লাগাম পরানো না গেলে এবার সংক্রমণের সুনামি ঘটবে। ভারত থেকে যাতে দেশে সংক্রমণ ছড়াতে না পারে, সে জন্য ২৬ এপ্রিল থেকে বাংলাদেশও ভারতের সঙ্গে স্থলপথে যাতায়াত বন্ধ করেছে। তবে বিভিন্ন পণ্যবাহী পরিবহনে আমদানি-রপ্তানি চালু থাকায় পরিবহন শ্রমিকদের মাধ্যমে দেশে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ঢোকার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে জরুরি প্রয়োজনে ভারত থেকে দেশে প্রবেশকারীরাও সংক্রমণ ছড়ানোর হুমকি হয়ে উঠেছে।

চলমান লকডাউন একটু শিথিলতায় ঈদে দোকানপাট ও শপিংমলে ঝুঁকি নিয়ে মানুষের যেভাবে উপচেপড়া ভিড় এবং ঘরমুখো মানুষের বাঁধভাঙ্গা তীব্র জনস্রোত দেখা গেছে সেখানে স্বাস্থ্যবিধি অনেকটা ভেঙে পড়েছে। সচেতন নাগারিক হিসেবে আমাদের আরো দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া আমাদের বাহিরে বের হওয়া ও জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে। সবাইকে সরকারি নির্দেশনা মানতে হবে। সবাইকে মাস্ক ব্যবহারের ওপর জোর দিতে হবে; কারণ একমাত্র মাস্কই পারে করোনার বিরুদ্ধে ৯০-৯৫ ভাগ রুখে দিতে। ভারতের মতো বিপর্যয়কর পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আগে সরকারকে সমন্বিত ও কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে সাহস ও ধৈর্য্যরে সঙ্গে করোনাকে মোকাবেলা করতে হবে। আমাদের সিংহভাগ জনগণ এখনো ভ্যাকসিনের আওতার বাইরে, অন্যদিকে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট দেশে ঢুকে পড়েছে। তাই বিদ্যমান পরিস্থিতির নিরিখে সরকারকে প্রয়োজনে সর্বাত্মক কঠোর লকডাউনে যেতে হবে। হাসপাতালগুলোকে পর্যাপ্ত বেড, প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র ও অক্সিজেন মজুদ করে রাখতে হবে। বিশেষ করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে চীন, রাশিয়া ও বিকল্প উৎস থেকে ভ্যাকসিন এনে সিংহভাগ জনগণকে টিকার আওতায় আনতে হবে। তাহলেই এ অতিমারীর বিপর্যয়ের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করা সম্ভব।

আমরা দেখেছি করোনার ঊর্ধ্বগতি সংক্রমণে দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউ তো দূরের কথা, সাধারণ বেডই পাওয়া দুস্কর, সেখানে নতুন ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমণের ব্যাপকতা বাড়লে আমাদের পক্ষে কুলিয়ে উঠা কিছুতেই সম্ভব হবে না। ভেঙে পড়বে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। তবে পরিস্থিতি যাই হোক না কেন যেকোন কঠিন পরিস্থিতির জন্য আমাদের মানসিকভাবে তৈরি থাকতে হবে। বাঁধভাঙার মতো অবস্থা এমন কিছু যদি ঘটে থাকে সেক্ষেত্রে কোন ব্যবস্থাতে আর কোন কিছু হবে না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে তাকে ঠেকানোর চেষ্টা করেও কোন ফল আসবে না; যা ঘটার তাই ঘটতে থাকবে।

[লেখক : সাবেক উপ-মহাপরিচালক, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি]