হাজার কোটি টাকার ওপরে শেয়ারবাজারে লেনদেন

মূল্যসূচকের বড় উত্থানের পাশাপাশি দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেনের গতিও বেশ বেড়েছে। নিয়মিত হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হচ্ছে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই)। গতকাল বাজারটিতে লেনদেনের পরিমাণ দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

এর আগে গত ১৯ মে বাজারটিতে দুই হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়েছিল। সেই হিসেবে চলতি মাসে দুই কার্যদিবস ডিএসইতে দুই হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়েছে। তার আগে চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি দুই হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়েছিল।

লেনদেনের পাশাপাশি ডিএসইতে মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। সেইসঙ্গে অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের বড় উত্থান হয়েছে। মূল্যসূচকের এই উত্থানে প্রধান ভূমিকা রেখেছে ব্যাংক ও বীমা খাতের কোম্পানিগুলো। দুই বাজারেই সিংহভাগ ব্যাংক ও বীমা কোম্পানির শেয়ার দাম বেড়েছে।

এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। এতে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ২০ পয়েন্টের ওপরে বেড়ে যায়। সময়ের সঙ্গে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাও বাড়ে।

এতে দিনের লেনদেন শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৪১ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৮৮৪ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচক দশমিক ৬ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২৭০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

তবে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৭০ পয়েন্টে নেমে গেছে।

বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত সূচকের পতন হলেও প্রধান মূল্যসূচকের বড় উত্থানের পিছনে মুখ্য ভূমিকা রেখেছে ব্যাংক ও বীমা খাতের কোম্পানিগুলো। ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ৩১টি ব্যাংকের মধ্যে ২৮টির শেয়ার দাম বেড়েছে।

বিপরীতে দুটির শেয়ার দাম কমেছে। আর একটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অপরদিকে বীমা খাতে তালিকাভুক্ত ৫০টি কোম্পানির মধ্যে ৪২টির শেয়ার দাম বেড়েছ। বিপরীতে দাম কমেছে ৬টির। আর দুটির শেয়ার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

ব্যাংক ও বীমা কোম্পানিগুলোর এই দাপটের মধ্যে ডিএসইতে সব খাত মিলে দিনভর লেনদেনে অংশ নেয়া ১৬৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫০টির এবং ৪৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এদিকে দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৮ কোটি ৮২ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১ হাজার ৮২০ কোটি ৭ লাখ টাকা। সেই হিসেবে লেনেদেন বেড়েছে ১৮৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ১৪১ কোটি ৪৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের ৫৩ কোটি ৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৪৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এনআরবিসি ব্যাংক।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- প্রাইম ব্যাংক, গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস, সাইফ পাওয়ার, কনফিডেন্স সিমেন্ট, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স এবং ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৩৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১৪৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৯৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৪৬টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১৯টির এবং ২৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) টপটেন গেইনার বা দর বাড়ার শীর্ষে রয়েছে এবি ব্যাংক লিমিটেড। গতকাল শেয়ারটির দর বেড়েছে ১ টাকা ৩০ পয়সা বা ১০ শতাংশ। এদিন শেয়ারটি সর্বশেষ ১৪ টাকা ৩০ পয়সা দরে লেনদেন হয়।

কোম্পানিটি ৩ হাজার ৩৯৮ বারে ১ কোটি ৮৪ লাখ ৫৩ হাজার ৬৮৫টি শেয়ার লেনদেন করে। তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স। গতকাল কোম্পানিটির দর বেড়েছিল ৩ টাকা ৫০ পয়সা বা ১০ শতাংশ। এদিন কোম্পানিটি সর্বশেষ ৩৮ টাকা ৫০ পয়সা দরে লেনদেন হয়। গেইনারের তৃতীয় স্থানে রয়েছে গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। গতকাল কোম্পানিটির দর ৪ টাকা ৯০ পয়সা বা ১০ শতাংশ বেড়েছে।

এদিন কোম্পানিটির শেয়ার সর্বশেষ ৫৩ টাকা ৯০ পয়সা দরে লেনদেন হয়েছিল। গেইনার তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলো হচ্ছে জিএসপি ফিন্যান্স, নর্দার্ন ইন্স্যুরেন্স, এসিআই ফরমুলেশনস, পিএফ ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, ওয়াইম্যাক্স, তাওফিকা ফুডস ও গ্রীনডেল্টা ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড।

বুধবার, ২৬ মে ২০২১ , ১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১৩ শাওয়াল ১৪৪২

হাজার কোটি টাকার ওপরে শেয়ারবাজারে লেনদেন

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

image

মূল্যসূচকের বড় উত্থানের পাশাপাশি দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেনের গতিও বেশ বেড়েছে। নিয়মিত হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হচ্ছে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই)। গতকাল বাজারটিতে লেনদেনের পরিমাণ দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

এর আগে গত ১৯ মে বাজারটিতে দুই হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়েছিল। সেই হিসেবে চলতি মাসে দুই কার্যদিবস ডিএসইতে দুই হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়েছে। তার আগে চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি দুই হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়েছিল।

লেনদেনের পাশাপাশি ডিএসইতে মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। সেইসঙ্গে অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের বড় উত্থান হয়েছে। মূল্যসূচকের এই উত্থানে প্রধান ভূমিকা রেখেছে ব্যাংক ও বীমা খাতের কোম্পানিগুলো। দুই বাজারেই সিংহভাগ ব্যাংক ও বীমা কোম্পানির শেয়ার দাম বেড়েছে।

এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। এতে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ২০ পয়েন্টের ওপরে বেড়ে যায়। সময়ের সঙ্গে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাও বাড়ে।

এতে দিনের লেনদেন শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৪১ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৮৮৪ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচক দশমিক ৬ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২৭০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

তবে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৭০ পয়েন্টে নেমে গেছে।

বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত সূচকের পতন হলেও প্রধান মূল্যসূচকের বড় উত্থানের পিছনে মুখ্য ভূমিকা রেখেছে ব্যাংক ও বীমা খাতের কোম্পানিগুলো। ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ৩১টি ব্যাংকের মধ্যে ২৮টির শেয়ার দাম বেড়েছে।

বিপরীতে দুটির শেয়ার দাম কমেছে। আর একটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অপরদিকে বীমা খাতে তালিকাভুক্ত ৫০টি কোম্পানির মধ্যে ৪২টির শেয়ার দাম বেড়েছ। বিপরীতে দাম কমেছে ৬টির। আর দুটির শেয়ার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

ব্যাংক ও বীমা কোম্পানিগুলোর এই দাপটের মধ্যে ডিএসইতে সব খাত মিলে দিনভর লেনদেনে অংশ নেয়া ১৬৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫০টির এবং ৪৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এদিকে দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৮ কোটি ৮২ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১ হাজার ৮২০ কোটি ৭ লাখ টাকা। সেই হিসেবে লেনেদেন বেড়েছে ১৮৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ১৪১ কোটি ৪৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের ৫৩ কোটি ৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৪৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এনআরবিসি ব্যাংক।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- প্রাইম ব্যাংক, গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস, সাইফ পাওয়ার, কনফিডেন্স সিমেন্ট, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স এবং ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৩৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১৪৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৯৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৪৬টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১৯টির এবং ২৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) টপটেন গেইনার বা দর বাড়ার শীর্ষে রয়েছে এবি ব্যাংক লিমিটেড। গতকাল শেয়ারটির দর বেড়েছে ১ টাকা ৩০ পয়সা বা ১০ শতাংশ। এদিন শেয়ারটি সর্বশেষ ১৪ টাকা ৩০ পয়সা দরে লেনদেন হয়।

কোম্পানিটি ৩ হাজার ৩৯৮ বারে ১ কোটি ৮৪ লাখ ৫৩ হাজার ৬৮৫টি শেয়ার লেনদেন করে। তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স। গতকাল কোম্পানিটির দর বেড়েছিল ৩ টাকা ৫০ পয়সা বা ১০ শতাংশ। এদিন কোম্পানিটি সর্বশেষ ৩৮ টাকা ৫০ পয়সা দরে লেনদেন হয়। গেইনারের তৃতীয় স্থানে রয়েছে গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। গতকাল কোম্পানিটির দর ৪ টাকা ৯০ পয়সা বা ১০ শতাংশ বেড়েছে।

এদিন কোম্পানিটির শেয়ার সর্বশেষ ৫৩ টাকা ৯০ পয়সা দরে লেনদেন হয়েছিল। গেইনার তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলো হচ্ছে জিএসপি ফিন্যান্স, নর্দার্ন ইন্স্যুরেন্স, এসিআই ফরমুলেশনস, পিএফ ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, ওয়াইম্যাক্স, তাওফিকা ফুডস ও গ্রীনডেল্টা ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড।