দামে রেকর্ড গড়েছে ভোজ্যতেল

সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে সবজি চাল চিনি নিত্যপণ্যে

দেশে সর্বোচ্চ দামের রেকর্ড গড়েছে ভোজ্যতেল। গত বৃহস্পতিবার সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ১২ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে তেল পরিশোধন ও বিপণনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। এছাড়া রাজধানীর বাজারগুলোতে সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দাম বেড়েছে।

বর্তমানে বাজারে প্রতিলিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের ১৪৪ টাকা। নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতিলিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৫৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সে হিসেবে প্রতিলিটারে দাম বাড়ল ১২ টাকা। শুক্রবার থেকে এ দাম কার্যকর হয়। গত বৃহস্পতিবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘোষণা দেয় সংগঠনটি।

গত মাসে ৫ টাকা দর বৃদ্ধির পর আবার ৩ টাকা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় সংগঠনটি। তখন প্রতিলিটার বোতলজাত সয়াবিন ১৪৪ টাকা মূল্য ঠিক করা হয়। এই দর এক লাফে ৯ টাকা বৃদ্ধি করা হলো। তেলের দাম বাড়িয়ে নতুন মূল্য তালিকাও জানিয়েছে সংগঠনটি। নতুন দামে এখন থেকে এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৫৩ টাকা, পাঁচ লিটারের এক বোতল তেল দাম পড়বে ৭২৮ টাকা। খোলা সয়াবিন তেল লিটারপ্রতি ১২৯ টাকা ও পাম সুপার তেল ১১২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বাজারে সবজির চাহিদা থাকলেও সরবরাহ কম আবার কিছু সবজির সরবরাহ বন্ধ আছে তাই বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে অন্য সবজির দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। বাজারে আগের মতো ফুলকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকায়।

সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে শসা, বেগুন, পটোল, ঢেঁড়সের দাম। মানভেদে শসার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৫ থেকে ৩৫ টাকার মধ্যে। পটোলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা। ঢেঁড়সের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়।

দামবৃদ্ধির এ তালিকায় রয়েছে বরবটি, কাঁচকলা, পাকা টমেটো, গাজর। গত সপ্তাহে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বরবটির দাম বেড়ে ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৩০ টাকা হালি বিক্রি হওয়া কাঁচকলার দাম বেড়ে ৪০ টাকা হয়েছে।

গাজরের দাম বেড়ে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা। পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা। এছাড়া, ঝিঙে আগের মতো ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। এক কেজি কচুরলতি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। উচ্ছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা।

সবজির দামের বিষয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জহুরুল বলেন, ‘এখন সবজির দাম একটু বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। কারণ, বাজারে এখন সরবরাহ তুলনামূলক কম। সামনে সবজির দাম আরও বাড়তে পারে।’

এছাড়া, শুকনা মরিচ প্রতিকেজি ১৮০ টাকা, রসুন ৮০ থেকে ১৪০ টাকা, আদা ৮০ থেকে ১৫০ টাকা, হলুদ ১৮০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে প্রতিকেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায় আর প্যাকেট চিনির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৮ টাকা করে।

এসব বাজারে প্রতিকেজি বিআর-২৮ চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, মিনিকেট ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা, নাজিরশাইল ৬২ থেকে ৬৪ টাকা, মোটা চাল ৪০ থেকে ৪২ টাকা, পোলাওয়ের চাল ৯০ থেকে ১০০ টাকায়।

এসব বাজারে লাল ডিম ডজন বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। হাঁসের ডিমের দাম কমে ডজন এখন ১২০ টাকায়। দেশি মুরগির ডিম ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়।

বাজারের মুরগি বিক্রেতা আসলাম মিয়া বলেন, ‘বন্যার কারণে বাজারে মুরগি কম আসছে বলে দাম চড়া যাচ্ছে। পণ্যের যাতায়াত স্বাভাবিক হলে মুরগির দাম আবার কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

অন্যদিকে ঈদের পর থেকেই সোনালি মুরগির দাম কমছে। দফায় দফায় দাম কমে এই মুরগির দাম কেজিপ্রতি লেয়ার মুরগির চেয়েও কমে গেছে। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৪০ টাকায় বিক্রি করছেন। লাল লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা। আর সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২১০ থেকে ২৩০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৩০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যে।

তিনি আরও বলেন, ‘সোনালি মুরগির দাম কমে যাওয়ায় মানুষ এখন এই মুরগি কিনছে বেশি। বাজারেও সোনালি মুরগির সরবরাহ অনেক ভালো। তবে আমাদের ধারণা, কিছুদিনের মধ্যে এর দাম বেড়ে যেতে পারে।’

বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে গরু-খাসির মাংস, মসলাসহ অন্য পণ্যের দাম। প্রতিকেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, বকরির মাংস ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা ও গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ টাকায়।

শনিবার, ২৯ মে ২০২১ , ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১৬ শাওয়াল ১৪৪২

দামে রেকর্ড গড়েছে ভোজ্যতেল

সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে সবজি চাল চিনি নিত্যপণ্যে

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

image

দেশে সর্বোচ্চ দামের রেকর্ড গড়েছে ভোজ্যতেল। গত বৃহস্পতিবার সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ১২ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে তেল পরিশোধন ও বিপণনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। এছাড়া রাজধানীর বাজারগুলোতে সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দাম বেড়েছে।

বর্তমানে বাজারে প্রতিলিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের ১৪৪ টাকা। নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতিলিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৫৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সে হিসেবে প্রতিলিটারে দাম বাড়ল ১২ টাকা। শুক্রবার থেকে এ দাম কার্যকর হয়। গত বৃহস্পতিবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘোষণা দেয় সংগঠনটি।

গত মাসে ৫ টাকা দর বৃদ্ধির পর আবার ৩ টাকা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় সংগঠনটি। তখন প্রতিলিটার বোতলজাত সয়াবিন ১৪৪ টাকা মূল্য ঠিক করা হয়। এই দর এক লাফে ৯ টাকা বৃদ্ধি করা হলো। তেলের দাম বাড়িয়ে নতুন মূল্য তালিকাও জানিয়েছে সংগঠনটি। নতুন দামে এখন থেকে এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৫৩ টাকা, পাঁচ লিটারের এক বোতল তেল দাম পড়বে ৭২৮ টাকা। খোলা সয়াবিন তেল লিটারপ্রতি ১২৯ টাকা ও পাম সুপার তেল ১১২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বাজারে সবজির চাহিদা থাকলেও সরবরাহ কম আবার কিছু সবজির সরবরাহ বন্ধ আছে তাই বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে অন্য সবজির দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। বাজারে আগের মতো ফুলকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকায়।

সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে শসা, বেগুন, পটোল, ঢেঁড়সের দাম। মানভেদে শসার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৫ থেকে ৩৫ টাকার মধ্যে। পটোলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা। ঢেঁড়সের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়।

দামবৃদ্ধির এ তালিকায় রয়েছে বরবটি, কাঁচকলা, পাকা টমেটো, গাজর। গত সপ্তাহে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বরবটির দাম বেড়ে ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৩০ টাকা হালি বিক্রি হওয়া কাঁচকলার দাম বেড়ে ৪০ টাকা হয়েছে।

গাজরের দাম বেড়ে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা। পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা। এছাড়া, ঝিঙে আগের মতো ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। এক কেজি কচুরলতি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। উচ্ছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা।

সবজির দামের বিষয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জহুরুল বলেন, ‘এখন সবজির দাম একটু বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। কারণ, বাজারে এখন সরবরাহ তুলনামূলক কম। সামনে সবজির দাম আরও বাড়তে পারে।’

এছাড়া, শুকনা মরিচ প্রতিকেজি ১৮০ টাকা, রসুন ৮০ থেকে ১৪০ টাকা, আদা ৮০ থেকে ১৫০ টাকা, হলুদ ১৮০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে প্রতিকেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায় আর প্যাকেট চিনির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৮ টাকা করে।

এসব বাজারে প্রতিকেজি বিআর-২৮ চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, মিনিকেট ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা, নাজিরশাইল ৬২ থেকে ৬৪ টাকা, মোটা চাল ৪০ থেকে ৪২ টাকা, পোলাওয়ের চাল ৯০ থেকে ১০০ টাকায়।

এসব বাজারে লাল ডিম ডজন বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। হাঁসের ডিমের দাম কমে ডজন এখন ১২০ টাকায়। দেশি মুরগির ডিম ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়।

বাজারের মুরগি বিক্রেতা আসলাম মিয়া বলেন, ‘বন্যার কারণে বাজারে মুরগি কম আসছে বলে দাম চড়া যাচ্ছে। পণ্যের যাতায়াত স্বাভাবিক হলে মুরগির দাম আবার কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

অন্যদিকে ঈদের পর থেকেই সোনালি মুরগির দাম কমছে। দফায় দফায় দাম কমে এই মুরগির দাম কেজিপ্রতি লেয়ার মুরগির চেয়েও কমে গেছে। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৪০ টাকায় বিক্রি করছেন। লাল লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা। আর সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২১০ থেকে ২৩০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৩০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যে।

তিনি আরও বলেন, ‘সোনালি মুরগির দাম কমে যাওয়ায় মানুষ এখন এই মুরগি কিনছে বেশি। বাজারেও সোনালি মুরগির সরবরাহ অনেক ভালো। তবে আমাদের ধারণা, কিছুদিনের মধ্যে এর দাম বেড়ে যেতে পারে।’

বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে গরু-খাসির মাংস, মসলাসহ অন্য পণ্যের দাম। প্রতিকেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, বকরির মাংস ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা ও গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ টাকায়।