ডিসিসিআই’র স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তোরণ শীর্ষক ওয়েবিনার

এলডিসি উত্তোরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নেগোশিয়েশনের দক্ষতা বৃদ্ধির আহ্বান

এলডিসি উত্তোরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নেগোশিয়েশনের দক্ষতা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া রপ্তানিমুখী পণ্যের বহুমুখীকরণ, মানবসম্পদ ও প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা উন্নয়ন, কার্যকর নীতিমালা প্রণয়ন ও প্রয়োজনীয় সংষ্কারেরও আহ্বান জানান তারা। গতকাল ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ডিসিসিআই আয়োজিত ‘স্বল্পোনত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তোরণ’ শীর্ষক ওয়েবিনারের আয়োজন করা হয়। ওয়েবিনারে আলোচকরা এসব কথা বলেন।

ওয়েবিনারে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করেন। এছাড়া অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)’র সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।

স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, ‘স্বল্পন্নোত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উত্তরণের ফলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমাদের অবস্থান আরও দৃঢ়কল্পে ব্যবসা-বাণিজ্য সক্ষমতা বৃদ্ধি, বিনিয়োগ সম্প্রসারণ এবং সে অনুযায়ী পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি। এলডিসি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সরকারি-বেসরকারি সংস্থার সমন্বয়ে খাত ও বিষয়ভিত্তিক উপ-কমিটি গঠন করতে হবে। বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্টকরণ, বিনিয়োগ-ডিজিপি হার বৃদ্ধি, করহার-জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধিও জন্য একটি রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে। দেশের রপ্তানি বাণিজ্যের ঘাটতি কমাতে রিজিওনাল কানেক্টিভিটিসহ কৌশলগত পিটিএ এবং এফটিএ স্বাক্ষর করতে হবে।’

ডিসিসিআই সভাপতি আরও উল্লেখ করেন, এলডিসি হতে বাংলাদেশের উত্তরণের পরও সিএমএসএমই খাতের গুরুত্বের বিষয়টি নিরূপনকল্পে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, বিডা, এসএমই ফাউন্ডেশন এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় ঢাকা চেম্বার ‘এলডিসি হতে বাংলাদেশের উত্তরণের পরবর্তী সময়ে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে সিএমএসএমইদের চ্যালেঞ্জ চিহ্নিতকরণ ও করণীয় নির্ধারণ’ শীর্ষক একটি জরিপ পরিচালনায় আগ্রহী এবং এ বিষয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার সহযোগিতা কামনা করেন।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, ‘আমাদের উদ্যোগী জনগণের উদ্যোমের কারণে বাংলাদেশ আজ এলডিসি হতে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার পথে রয়েছে এবং এলডিসি উত্তোরণের বিষয়টি নিয়ে ভীত হওয়ার কোন কারণ নেই। চীন একটি উন্নয়নশীল দেশ হওয়া সত্ত্বেও সারা পৃথিবীতে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনায় নিজেদের আধিপত্য বজায় রেখেছে। আমাদের নিজস্ব একটি বৃহৎ বাজার রয়েছে এবং দেশের নাগরিকদের আরও ভালো সেবা প্রদানের লক্ষ্যে সবাইকে কাজ করতে হবে এবং এলডিসি হতে উত্তরণের পরবর্তী সময়ে আমাদের পণ্য উৎপাদন ব্যয় খুব বেশি বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই। তবে আমাদেরকে প্রতিযোগী সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। এশিয় ও আঞ্চলিক দেশেগুলোর বাজারের প্রতি আরও বেশি হারে মনোনিবেশ করতে হবে।’

মুখ্যসচিব বলেন, ‘পরিবেশ সুরক্ষা ও শিল্পায়নে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে দারুণ সাফল্য দেখিয়েছে, যার ফলে সারাবিশে^র ১০টি সেরা সবুজ কারখানার মধ্যে ৭টিই আমাদের দেশে রয়েছে। এলডিসি পরবর্তী সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সবার সহযোগিতা নিশ্চিতকল্পে ইতোমধ্যে একটি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উক্ত কমিটি সঠিক দিক-নির্দেশনা প্রদানে সক্ষম হবে।’

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় বেসরকারীখাতের অবদান থাকবে প্রায় ৮১ শতাংশ এবং দেশীয় উদ্যোক্তাদের আতœবিশাস বাড়াতে হবে। এলডিসি উত্তরণের পরবর্তী সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদেরকে এখনই প্রস্তুতি নিতে হবে যদিও এজন্য বাংলাদেশের আরও পাঁচবছর সময় রয়েছে। দেশের মানব সম্পদ ও প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বৃদ্ধি এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুবিধা গ্রহণের জন্য সবাইকে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। ২০২৬ সালের পর আরও ১২ বছর বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত রাখার জন্য সরকার ডব্লিউটিও-এর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে এবং ১১টি দেশের সঙ্গে পিটিএ এবং এফটিএ চুক্তির জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে।’

এফবিসিসিআই’র সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন সরকার ঘোষিত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের কার্যক্রম দ্রুত বাস্তবায়নের ওপর জোরারোপ করেন। তিনি নিটওয়্যার ও ওভেন শিল্পের ভ্যালু অ্যাডিশনের মাধ্যমে বিনিয়োগ আকর্ষণের প্রস্তাব করেন। এছাড়া এলডিসি পরবর্তী সময়ে টিকে থাকার জন্য ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পের আরও বিকাশ একান্ত অপরিহার্য বলে মত প্রকাশ করেন। তিনি সব বিষয়ে বেসরকারীখাতের অংশগ্রহণের ওপর জোরারোপ করেন।

নির্ধারিত আলোচনায় এমসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবির, ডব্লিউটিও-এর এলডিসি ইউনিট অফ দি ডেভেলপমেন্ট ডিভিশন-এর প্রধান তৌফিকুর রহমান, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমিতি’র সাবেক সভাপতি ড. মইনুল ইসলাম অংশগ্রহণ করেন।

তৌফিকুর রহমান বলেন, গত ১ দশকে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হয়েছে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে, তবে এলডিসি উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদারের পাশাপাশি নতুন নতুন বাজার খুঁজে বের করার ওপর জোরারোপ করেন। এছাড়া তিনি গবেষণা কার্যক্রম সম্প্রসারণ, রপ্তানিমুখী পণ্যকে সহায়তা প্রদানের আহ্বান জানান।

এমসিসিআই সভাপতি নিহাদ কবির বলেন, ‘এলডিসি উত্তরণের পরবর্তী সময়ে বেসরকারী খাতের উন্নয়নের সরকারের দিক-নির্দেশনা খুবই জরুরি। সেই সঙ্গে সরকারী এবং বেসরকারীখাতের মধ্যে ডায়ালগ আরও বৃদ্ধি করতে হবে। এলডিসি উত্তরণ আমাদের জন্য একটি সুবর্ণ সুযোগ, তবে এর জন্য আমাদেরকে প্রস্তুুতি নিতে হবে।

মানব সম্পদের দক্ষতা উন্নয়নের পাশাপাশি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। এছাড়া ডাটাবেইজ তৈরি, ডাটা বিশ্লেষনে সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় সক্ষমতা উন্নয়ন, এবং সরকারীও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে এখনই প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অধীনে বাণিজ্য বিষয়ক আন্তর্জাতিক যোগাযোগের জন্য চীফ নেগোশিয়েটর নিয়োগ করা যেতে পারে।’

ড. মইনুল ইসলাম বলেন, ‘বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে আমাদেরকে র্দুনীতি কমানো এবং বিদেশে পুঁজি পাচার রোধ করতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। রপ্তানিমুখী পণ্যের জন্য সহায়ক নীতিমালা প্রদানের পাশাপাশি বাংলাদেশের নতুন সমুদ্রসীমায় গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম বৃদ্ধি করতে হবে। কৃষিখাতের আধুনিকায়ন ও বহুমুখীখরনের ওপর আরও বেশি জোর দিতে হবে।’

ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এন কে এ মবিন ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। ঢাকা চেম্বারের সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন এবং পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা উক্ত ওয়েবিনারে যোগদান করেন।

রবিবার, ৩০ মে ২০২১ , ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১৭ শাওয়াল ১৪৪২

ডিসিসিআই’র স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তোরণ শীর্ষক ওয়েবিনার

এলডিসি উত্তোরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নেগোশিয়েশনের দক্ষতা বৃদ্ধির আহ্বান

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

image

এলডিসি উত্তোরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নেগোশিয়েশনের দক্ষতা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া রপ্তানিমুখী পণ্যের বহুমুখীকরণ, মানবসম্পদ ও প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা উন্নয়ন, কার্যকর নীতিমালা প্রণয়ন ও প্রয়োজনীয় সংষ্কারেরও আহ্বান জানান তারা। গতকাল ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ডিসিসিআই আয়োজিত ‘স্বল্পোনত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তোরণ’ শীর্ষক ওয়েবিনারের আয়োজন করা হয়। ওয়েবিনারে আলোচকরা এসব কথা বলেন।

ওয়েবিনারে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করেন। এছাড়া অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)’র সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।

স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, ‘স্বল্পন্নোত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উত্তরণের ফলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমাদের অবস্থান আরও দৃঢ়কল্পে ব্যবসা-বাণিজ্য সক্ষমতা বৃদ্ধি, বিনিয়োগ সম্প্রসারণ এবং সে অনুযায়ী পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি। এলডিসি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সরকারি-বেসরকারি সংস্থার সমন্বয়ে খাত ও বিষয়ভিত্তিক উপ-কমিটি গঠন করতে হবে। বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্টকরণ, বিনিয়োগ-ডিজিপি হার বৃদ্ধি, করহার-জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধিও জন্য একটি রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে। দেশের রপ্তানি বাণিজ্যের ঘাটতি কমাতে রিজিওনাল কানেক্টিভিটিসহ কৌশলগত পিটিএ এবং এফটিএ স্বাক্ষর করতে হবে।’

ডিসিসিআই সভাপতি আরও উল্লেখ করেন, এলডিসি হতে বাংলাদেশের উত্তরণের পরও সিএমএসএমই খাতের গুরুত্বের বিষয়টি নিরূপনকল্পে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, বিডা, এসএমই ফাউন্ডেশন এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় ঢাকা চেম্বার ‘এলডিসি হতে বাংলাদেশের উত্তরণের পরবর্তী সময়ে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে সিএমএসএমইদের চ্যালেঞ্জ চিহ্নিতকরণ ও করণীয় নির্ধারণ’ শীর্ষক একটি জরিপ পরিচালনায় আগ্রহী এবং এ বিষয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার সহযোগিতা কামনা করেন।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, ‘আমাদের উদ্যোগী জনগণের উদ্যোমের কারণে বাংলাদেশ আজ এলডিসি হতে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার পথে রয়েছে এবং এলডিসি উত্তোরণের বিষয়টি নিয়ে ভীত হওয়ার কোন কারণ নেই। চীন একটি উন্নয়নশীল দেশ হওয়া সত্ত্বেও সারা পৃথিবীতে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনায় নিজেদের আধিপত্য বজায় রেখেছে। আমাদের নিজস্ব একটি বৃহৎ বাজার রয়েছে এবং দেশের নাগরিকদের আরও ভালো সেবা প্রদানের লক্ষ্যে সবাইকে কাজ করতে হবে এবং এলডিসি হতে উত্তরণের পরবর্তী সময়ে আমাদের পণ্য উৎপাদন ব্যয় খুব বেশি বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই। তবে আমাদেরকে প্রতিযোগী সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। এশিয় ও আঞ্চলিক দেশেগুলোর বাজারের প্রতি আরও বেশি হারে মনোনিবেশ করতে হবে।’

মুখ্যসচিব বলেন, ‘পরিবেশ সুরক্ষা ও শিল্পায়নে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে দারুণ সাফল্য দেখিয়েছে, যার ফলে সারাবিশে^র ১০টি সেরা সবুজ কারখানার মধ্যে ৭টিই আমাদের দেশে রয়েছে। এলডিসি পরবর্তী সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সবার সহযোগিতা নিশ্চিতকল্পে ইতোমধ্যে একটি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উক্ত কমিটি সঠিক দিক-নির্দেশনা প্রদানে সক্ষম হবে।’

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় বেসরকারীখাতের অবদান থাকবে প্রায় ৮১ শতাংশ এবং দেশীয় উদ্যোক্তাদের আতœবিশাস বাড়াতে হবে। এলডিসি উত্তরণের পরবর্তী সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদেরকে এখনই প্রস্তুতি নিতে হবে যদিও এজন্য বাংলাদেশের আরও পাঁচবছর সময় রয়েছে। দেশের মানব সম্পদ ও প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বৃদ্ধি এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুবিধা গ্রহণের জন্য সবাইকে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। ২০২৬ সালের পর আরও ১২ বছর বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত রাখার জন্য সরকার ডব্লিউটিও-এর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে এবং ১১টি দেশের সঙ্গে পিটিএ এবং এফটিএ চুক্তির জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে।’

এফবিসিসিআই’র সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন সরকার ঘোষিত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের কার্যক্রম দ্রুত বাস্তবায়নের ওপর জোরারোপ করেন। তিনি নিটওয়্যার ও ওভেন শিল্পের ভ্যালু অ্যাডিশনের মাধ্যমে বিনিয়োগ আকর্ষণের প্রস্তাব করেন। এছাড়া এলডিসি পরবর্তী সময়ে টিকে থাকার জন্য ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পের আরও বিকাশ একান্ত অপরিহার্য বলে মত প্রকাশ করেন। তিনি সব বিষয়ে বেসরকারীখাতের অংশগ্রহণের ওপর জোরারোপ করেন।

নির্ধারিত আলোচনায় এমসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবির, ডব্লিউটিও-এর এলডিসি ইউনিট অফ দি ডেভেলপমেন্ট ডিভিশন-এর প্রধান তৌফিকুর রহমান, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমিতি’র সাবেক সভাপতি ড. মইনুল ইসলাম অংশগ্রহণ করেন।

তৌফিকুর রহমান বলেন, গত ১ দশকে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হয়েছে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে, তবে এলডিসি উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদারের পাশাপাশি নতুন নতুন বাজার খুঁজে বের করার ওপর জোরারোপ করেন। এছাড়া তিনি গবেষণা কার্যক্রম সম্প্রসারণ, রপ্তানিমুখী পণ্যকে সহায়তা প্রদানের আহ্বান জানান।

এমসিসিআই সভাপতি নিহাদ কবির বলেন, ‘এলডিসি উত্তরণের পরবর্তী সময়ে বেসরকারী খাতের উন্নয়নের সরকারের দিক-নির্দেশনা খুবই জরুরি। সেই সঙ্গে সরকারী এবং বেসরকারীখাতের মধ্যে ডায়ালগ আরও বৃদ্ধি করতে হবে। এলডিসি উত্তরণ আমাদের জন্য একটি সুবর্ণ সুযোগ, তবে এর জন্য আমাদেরকে প্রস্তুুতি নিতে হবে।

মানব সম্পদের দক্ষতা উন্নয়নের পাশাপাশি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। এছাড়া ডাটাবেইজ তৈরি, ডাটা বিশ্লেষনে সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় সক্ষমতা উন্নয়ন, এবং সরকারীও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে এখনই প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অধীনে বাণিজ্য বিষয়ক আন্তর্জাতিক যোগাযোগের জন্য চীফ নেগোশিয়েটর নিয়োগ করা যেতে পারে।’

ড. মইনুল ইসলাম বলেন, ‘বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে আমাদেরকে র্দুনীতি কমানো এবং বিদেশে পুঁজি পাচার রোধ করতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। রপ্তানিমুখী পণ্যের জন্য সহায়ক নীতিমালা প্রদানের পাশাপাশি বাংলাদেশের নতুন সমুদ্রসীমায় গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম বৃদ্ধি করতে হবে। কৃষিখাতের আধুনিকায়ন ও বহুমুখীখরনের ওপর আরও বেশি জোর দিতে হবে।’

ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এন কে এ মবিন ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। ঢাকা চেম্বারের সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন এবং পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা উক্ত ওয়েবিনারে যোগদান করেন।