ইয়াস ক্ষতিগ্রস্তদের আর্তনাদে ভারি হচ্ছে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো

শুকনো খাবারে দিনাতিপাত, সরকারি সাহায্য পৌঁছেনি

ঘুর্ণিঝড় ইয়াস ক্ষতিগ্রস্তরা গত চার দিনেও তাদের ঘরে চুলা জ্বলেনি। শুকনো খাবার খেয়ে দিনাতিপাত করছেন তারা। রয়েছে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট। আমাদের জেলা বার্তা পরিবেশক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত-

কলাপাড়া

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের জলোচ্ছাসের তোড়ে বিধ্বস্ত বাঁধের ওপরই ঝুপড়ি তৈরি করে এখন বেঁচে থাকার চেষ্টা করছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো। পটুয়াখালীর কলাপাড়ার লালুয়া ইউনিয়নের সাতটি গ্রাম গত চারদিন ধরে রামনাবাদ নদীর পানিতে তিন-চার ফুট তলিয়ে থাকায় বাঁধের ওপর ঘর তোলার হিড়িক পড়ে। গত শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় দুই শতাধিক পরিবার শিশু, বৃদ্ধদের নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে চান্দুপাড়া বাঁধের ওপর। এসব পরিবারে নেই বিশুদ্ধ পানি, রান্নার চুলা ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা। তারপরও জলোচ্ছাস থেকে বাঁচতে পাঁচ-দশফুট দৈর্ঘ্য-প্রস্থের পলিথিন, তাল ও কলাপাতার ছাউনি দেয়া ঘরে পরিবার নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। এদের চিড়া ও চিনি ছাড়া চারদিনেও দেয়া হয়নি কোন সহায়তা। যদিও স্থানীয় সংসদ সদস্য বলেন, দুর্গত এ পরিবারগুলোকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

সিডরের পর গত ১৩ বছরে একাধিক ঝড়, জলোচ্ছাসে কলাপাড়ার লালুয়া ইউনিয়নের ৩০ হাজার মানুষ যুদ্ধ করে বেঁচে থাকলেও এবার ঘূর্ণিঝড় ইয়াস তান্ডবের পর যেন অসহায় হয়ে পড়েছে। ঝড়ের ঝাপটায় ঘরের কিছুটা ক্ষতি হলেও সেখানে এখন বসবাসের উপায় নেই। প্রতিদিন সকাল ও রাতে দুই বেলা রাবনাবাদ নদীর তোড়ে ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হচ্ছে। নদীর পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় অধিকাংশ গ্রামে দেখা দিয়েছে স্থায়ী জলাবদ্ধতা। এ কারণে সম্পদ নষ্ট হলেও জীবন বাঁচাতে খোলা আকাশের নিচে চাঁদের আলোতে ঝুপড়ি তৈরি করে এখন কোন রকম দিন-রাত পার করছে পরিবারগুলো। স্যানিটেশন ব্যবস্থা না থাকায় এবং বিশুদ্ধ পানির অভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছে বাঁধে আশ্রয় নেয়া পরিবারের শিশু ও বৃদ্ধরা। কিন্তু তাদের সহায়তায় নেয়া হচ্ছে না কোন স্থায়ী পদক্ষেপ।

লালুয়া ইউপি চেয়ারম্যান শওকত হোসেন বিশ্বাস তপন বলেন,হাজার হাজার মানুষ এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে। রাস্তার ওপর খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছে পরিবারগুলো। অনেক পরিবারের সঙ্গতি থাকলেও রান্নার চুলা না থাকায় রান্না করতে পারছে না। এসব পরিবারগুলো দীর্ঘমেয়াদী সমস্যায় পড়েছে ভাঙ্গা বাঁধের কারণে। এখন যদি বৃষ্টি হয় তাহলে পরিবারগুলোকে ভিজতে হবে।

এদিকে শুক্রবার বিকেলে লালুয়া ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মহিব্বুর রহমান। এ সময় তিনি নিজ উদ্যোগে তিন শতাধিক পরিবারের মাঝে খাদ্য সহায়তা বিতরণ করেন। এবং জরুরী ভিত্তিতে বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট সমাধান এবং স্থায়ী বাঁধ মেরামতের আশ্বাস দেন।

চরফ্যাশন

চরফ্যাসনে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পানিবন্দী চরকুকরী মুকরী, চরপাতিলা ঢালচর, চর নিজাম, চর মানিকা ও নজরুল নগর ইউনিয়নের দুর্গতরা ত্রাণ পাননি। আঘাত হানার চারদিন পরও দুর্গতদের ভাগ্যে জোটেনি সরকারি সহায়তা। বসতঘর হারিয়ে আশ্রয়হীন ৫০ হাজার পরিবার বৈরি আবহাওয়া ও ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে তীব্র জোয়ারের সঙ্গে লড়াই করে খোলা আকাশের নিচে অনাহারে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এদিকে অতি জোয়ারে টানে গত শুক্রবার আরও ভোগান্তি বেড়েছে পানিবন্দী প্রায় ৫০ হাজার মানুষের। এ অবস্থা থেকে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সরকারের সহায়তা চেয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কেটে গেলেও অতি জোয়ার যেন পরিবারগুলো মরার ওপর খাড়া ঘাঁ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

দুর্গটনাকবলিত এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অসহায় হয়ে পরেছে ঢালচর, কুকরী মুকরী ইউনিয়নসহ ২১টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের পানিবন্দী মানুষ। ঘরের মালামাল স্র্রোতে ভেসে যাওয়ায় গত ৪ দিন রান্না হয়নি পরিবারগুলোতে। উপজেলা প্রশাসনের দেয়া শুকনা খাবার মুড়ি, বিস্কুট খেয়ে চারদিন কেটেছে পানিবন্দীদের।

কুকরী মুকরী ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাসেম মহাজন জানান, উপজেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ কুকরী মুকরী ইউনিয়ন। ওই ইউনিয়নের চর কুকরী মুকরী ও পাতিলা গ্রামের ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সম্পূর্ণ এলাকার প্রায় ১৪ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পরেছে। তাদের শুকনা খবার ও নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে। চর পতিলার প্রায় ৫ হাজার মানুষের মধ্যে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রুহুল আমিন জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা প্রস্তুত করে অতি শীঘ্রই ত্রাণ বরাদ্দ দেয়া হবে।

ভোলা

ভোলায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে চারদিন পর গত শুক্রবার দুপুর থেকে খাদ্য সহায়তার প্যাকেট ও হাইজিন পার্সেল দিয়ে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করেছে বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির ভোলা শাখা । গত শুক্রবার দুপুরে রাজাপুর ইউনিয়নের চরসীতারাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনে ঝড়ের রাতে আশ্রয় নেয়া শতাধিক নারীকে ত্রাণের প্যাকেট দেয়া হয়। এছাড়া আরো এক শ’ পরিবারের বাড়ি বাড়ি ওই খাদ্য সহয়তার প্যাকেট দেয়া হয়। প্যাকেটের মধ্যে ছিলে ১২টি সাবান, ৮টি পিস কাপড় ধোয়ার সাবান, স্যানিটারি প্যাড, টয়লেট টিস্যু, টয়লেট ব্রাস, টুথ ব্রাশ, টুথপেস্ট, তরল সাবান, নারিকেল তেল, তোয়ালে, চিরুনি, মাস্ক, ওরস্যালাইনসহ হাইজিন পার্সেল, খাবারের প্যাকেটে ছিল চিড়া তিন কেজি, এক কেজি চিনি, ১০ প্যাক বিস্কুট, বিশুদ্ধ ৫ লিটার পানি। এছাড়া দেয়া হয় ৫ হাজার টাকা মূল্যেও একটি করে টার্পলিন (তেরপাল) ।

বিতরণকালে অংশ নেন রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সম্পাদক আজিজুল ইসলাম, সাবেক পৌর কাউন্সিলর ফেরদৌস আহমেদ, ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান।

image

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) : পলিথিনের ঝুপড়ি ঘরে চার দিন চুলা জ্বলেনি জোসনার পরিবারের। গত শুক্রবার বিকেলে তিনি মাটির চুলা তৈরি করছেন -সংবাদ

আরও খবর
তারাকান্দায় বঙ্গবন্ধু সামাজিক পার্ক নির্মাণের উদ্যোগ
ডোমারে ক্লিনিকে অস্ত্রোপচারের সময় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ
কিশোরগঞ্জে নতুন করোনা রোগী ৯
রাজশাহীতে অস্ত্র গাঁজা : আটক ৩
নিয়ামতপুর সড়কে হত ১ আহত ১
সৈয়দপুরে হস্তান্তরের অপেক্ষায় পৌর কমিউনিটি সেন্টার
বর্ষার আগে নিজেরাই জলকপাট সারাতে অনুমোদন চান গত বন্যার ভুক্তভোগী কৃষক
টাকা না পেয়ে ধস্তাধস্তি নিজের চাকুতে মৃত্যু মাদকাসক্তের
প্রতিবন্ধী শিশু বাবা-মার কাছে ফিরতে চায়
ক্ষুদ্র-মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য বাজেটে বরাদ্দ চান এফবিসিসিআই সভাপতি
খাতভিত্তিক লেনদেনের শীর্ষে ব্যাংক ও বীমা খাত

রবিবার, ৩০ মে ২০২১ , ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১৭ শাওয়াল ১৪৪২

ইয়াস ক্ষতিগ্রস্তদের আর্তনাদে ভারি হচ্ছে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো

শুকনো খাবারে দিনাতিপাত, সরকারি সাহায্য পৌঁছেনি

সংবাদ ন্যাশনাল ডেস্ক

image

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) : পলিথিনের ঝুপড়ি ঘরে চার দিন চুলা জ্বলেনি জোসনার পরিবারের। গত শুক্রবার বিকেলে তিনি মাটির চুলা তৈরি করছেন -সংবাদ

ঘুর্ণিঝড় ইয়াস ক্ষতিগ্রস্তরা গত চার দিনেও তাদের ঘরে চুলা জ্বলেনি। শুকনো খাবার খেয়ে দিনাতিপাত করছেন তারা। রয়েছে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট। আমাদের জেলা বার্তা পরিবেশক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত-

কলাপাড়া

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের জলোচ্ছাসের তোড়ে বিধ্বস্ত বাঁধের ওপরই ঝুপড়ি তৈরি করে এখন বেঁচে থাকার চেষ্টা করছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো। পটুয়াখালীর কলাপাড়ার লালুয়া ইউনিয়নের সাতটি গ্রাম গত চারদিন ধরে রামনাবাদ নদীর পানিতে তিন-চার ফুট তলিয়ে থাকায় বাঁধের ওপর ঘর তোলার হিড়িক পড়ে। গত শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় দুই শতাধিক পরিবার শিশু, বৃদ্ধদের নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে চান্দুপাড়া বাঁধের ওপর। এসব পরিবারে নেই বিশুদ্ধ পানি, রান্নার চুলা ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা। তারপরও জলোচ্ছাস থেকে বাঁচতে পাঁচ-দশফুট দৈর্ঘ্য-প্রস্থের পলিথিন, তাল ও কলাপাতার ছাউনি দেয়া ঘরে পরিবার নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। এদের চিড়া ও চিনি ছাড়া চারদিনেও দেয়া হয়নি কোন সহায়তা। যদিও স্থানীয় সংসদ সদস্য বলেন, দুর্গত এ পরিবারগুলোকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

সিডরের পর গত ১৩ বছরে একাধিক ঝড়, জলোচ্ছাসে কলাপাড়ার লালুয়া ইউনিয়নের ৩০ হাজার মানুষ যুদ্ধ করে বেঁচে থাকলেও এবার ঘূর্ণিঝড় ইয়াস তান্ডবের পর যেন অসহায় হয়ে পড়েছে। ঝড়ের ঝাপটায় ঘরের কিছুটা ক্ষতি হলেও সেখানে এখন বসবাসের উপায় নেই। প্রতিদিন সকাল ও রাতে দুই বেলা রাবনাবাদ নদীর তোড়ে ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হচ্ছে। নদীর পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় অধিকাংশ গ্রামে দেখা দিয়েছে স্থায়ী জলাবদ্ধতা। এ কারণে সম্পদ নষ্ট হলেও জীবন বাঁচাতে খোলা আকাশের নিচে চাঁদের আলোতে ঝুপড়ি তৈরি করে এখন কোন রকম দিন-রাত পার করছে পরিবারগুলো। স্যানিটেশন ব্যবস্থা না থাকায় এবং বিশুদ্ধ পানির অভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছে বাঁধে আশ্রয় নেয়া পরিবারের শিশু ও বৃদ্ধরা। কিন্তু তাদের সহায়তায় নেয়া হচ্ছে না কোন স্থায়ী পদক্ষেপ।

লালুয়া ইউপি চেয়ারম্যান শওকত হোসেন বিশ্বাস তপন বলেন,হাজার হাজার মানুষ এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে। রাস্তার ওপর খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছে পরিবারগুলো। অনেক পরিবারের সঙ্গতি থাকলেও রান্নার চুলা না থাকায় রান্না করতে পারছে না। এসব পরিবারগুলো দীর্ঘমেয়াদী সমস্যায় পড়েছে ভাঙ্গা বাঁধের কারণে। এখন যদি বৃষ্টি হয় তাহলে পরিবারগুলোকে ভিজতে হবে।

এদিকে শুক্রবার বিকেলে লালুয়া ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মহিব্বুর রহমান। এ সময় তিনি নিজ উদ্যোগে তিন শতাধিক পরিবারের মাঝে খাদ্য সহায়তা বিতরণ করেন। এবং জরুরী ভিত্তিতে বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট সমাধান এবং স্থায়ী বাঁধ মেরামতের আশ্বাস দেন।

চরফ্যাশন

চরফ্যাসনে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পানিবন্দী চরকুকরী মুকরী, চরপাতিলা ঢালচর, চর নিজাম, চর মানিকা ও নজরুল নগর ইউনিয়নের দুর্গতরা ত্রাণ পাননি। আঘাত হানার চারদিন পরও দুর্গতদের ভাগ্যে জোটেনি সরকারি সহায়তা। বসতঘর হারিয়ে আশ্রয়হীন ৫০ হাজার পরিবার বৈরি আবহাওয়া ও ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে তীব্র জোয়ারের সঙ্গে লড়াই করে খোলা আকাশের নিচে অনাহারে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এদিকে অতি জোয়ারে টানে গত শুক্রবার আরও ভোগান্তি বেড়েছে পানিবন্দী প্রায় ৫০ হাজার মানুষের। এ অবস্থা থেকে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সরকারের সহায়তা চেয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কেটে গেলেও অতি জোয়ার যেন পরিবারগুলো মরার ওপর খাড়া ঘাঁ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

দুর্গটনাকবলিত এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অসহায় হয়ে পরেছে ঢালচর, কুকরী মুকরী ইউনিয়নসহ ২১টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের পানিবন্দী মানুষ। ঘরের মালামাল স্র্রোতে ভেসে যাওয়ায় গত ৪ দিন রান্না হয়নি পরিবারগুলোতে। উপজেলা প্রশাসনের দেয়া শুকনা খাবার মুড়ি, বিস্কুট খেয়ে চারদিন কেটেছে পানিবন্দীদের।

কুকরী মুকরী ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাসেম মহাজন জানান, উপজেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ কুকরী মুকরী ইউনিয়ন। ওই ইউনিয়নের চর কুকরী মুকরী ও পাতিলা গ্রামের ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সম্পূর্ণ এলাকার প্রায় ১৪ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পরেছে। তাদের শুকনা খবার ও নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে। চর পতিলার প্রায় ৫ হাজার মানুষের মধ্যে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রুহুল আমিন জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা প্রস্তুত করে অতি শীঘ্রই ত্রাণ বরাদ্দ দেয়া হবে।

ভোলা

ভোলায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে চারদিন পর গত শুক্রবার দুপুর থেকে খাদ্য সহায়তার প্যাকেট ও হাইজিন পার্সেল দিয়ে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করেছে বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির ভোলা শাখা । গত শুক্রবার দুপুরে রাজাপুর ইউনিয়নের চরসীতারাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনে ঝড়ের রাতে আশ্রয় নেয়া শতাধিক নারীকে ত্রাণের প্যাকেট দেয়া হয়। এছাড়া আরো এক শ’ পরিবারের বাড়ি বাড়ি ওই খাদ্য সহয়তার প্যাকেট দেয়া হয়। প্যাকেটের মধ্যে ছিলে ১২টি সাবান, ৮টি পিস কাপড় ধোয়ার সাবান, স্যানিটারি প্যাড, টয়লেট টিস্যু, টয়লেট ব্রাস, টুথ ব্রাশ, টুথপেস্ট, তরল সাবান, নারিকেল তেল, তোয়ালে, চিরুনি, মাস্ক, ওরস্যালাইনসহ হাইজিন পার্সেল, খাবারের প্যাকেটে ছিল চিড়া তিন কেজি, এক কেজি চিনি, ১০ প্যাক বিস্কুট, বিশুদ্ধ ৫ লিটার পানি। এছাড়া দেয়া হয় ৫ হাজার টাকা মূল্যেও একটি করে টার্পলিন (তেরপাল) ।

বিতরণকালে অংশ নেন রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সম্পাদক আজিজুল ইসলাম, সাবেক পৌর কাউন্সিলর ফেরদৌস আহমেদ, ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান।