রাজশাহীর বাগমারায় কুচিয়ামারা খালের মুখে বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও ফসল রক্ষায় নির্মিত জলকপাট এখন কৃষকদের এখন গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গেটের কপাট ভেঙ্গে যাওয়ায় আতঙ্কে রয়েছেন কৃষকরা। বর্ষার আগে এটি মেরামত করা না হলে শতকোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা। এটি দ্রুত মেরামতের দাবি জানিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডে লিখিত আবেদন করেছেন। তবে এখনও সাড়া মেলেনি।
উপজেলার সইপাড়া-ভবানীগঞ্জ সড়কের বাগমারার গণিপুর ও বাসুপাড়ার সীমান্ত এলাকায় কুচুয়ামারা খালের মুখে সুইচগেটটি স্থাপন করা হয়।
ফকিন্নি নদী থেকে খাল দিয়ে পানি সোনাবিলে প্রবেশ করে ও বেরিয়ে যায়। বন্যা নিয়ন্ত্রণ, ফসল রক্ষা ও চাষাবাদের সুবিধার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড জলকপাটটি নির্মাণ করে। এটি নির্মাণের ফলে বাসুপাড়া ও গণিপুর ইউনিয়নের সোনাবিলে চাষাবাদে সুফল মেলে ও বন্যায় তা ফসল রক্ষা পায়। এছাড়াও চাষের সুবিধার জন্য খালে পানি ধরে রাখাও সম্ভব হয়। দুই ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার কৃষক এই স্লুইচগেটটির সুফল ভোগ করে আসছিলেন।
এদিকে দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় গেটটির কপাট নষ্ট হয়ে ভেঙ্গে যাওয়ার পাশাপাশি কপাটগুলো অকেজ হয়ে পড়েছে। গত শুক্রবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কপাটের উভয় পাশে টিনের পাতে আটকে স্থানীয়রা পানি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।
স্থানীয় কৃষকেরা জানান, জলকপাট নষ্ট হওয়ার কারণে গেল বন্যায় সোনাবিল ও তার আশপাশের কৃষকেরা ক্ষতির শিকার হন। কপাট নষ্ট থাকার কারণে সহজে নদী থেকে বন্যার পানি বিলে প্রবেশ করে। এরফলে মাছ, পানবরজ, ধান, সবজি ও ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়। স্থানীয় তাদের ভাষ্যমতে, জলকপাট নষ্ট থাকায় গতবছরের বন্যায় প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
বাগমারা গ্রামের পানচাষি মজনুর রহমান জানান, এটি নষ্ট থাকার কারণে গতবছরে বন্যার পানি বিলে ঢুকে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানবরজসহ তার প্রায় ১২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
গণিপুর ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, গতবছরের বন্যায় কপাট দিয়ে সরাসরি পানি বিলে প্রবেশ করে একডালা, বাগমারা, মাঝিগ্রাম, মোহাম্মদপুর, বালানগর, চকমহব্বতপুরসহ কয়েকটি গ্রামের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শত শত কৃষক নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। জরুরী ভিত্তিতে এটি সংস্কারের দাবি জানান তিনি।
কৃষকেরা বলেন, বর্ষার আগে এটি সংস্কার করা না হলে আবারও ব্যাপক ক্ষতির শঙ্কা রয়েছে। সরকারিভাবে সংস্কার করা না হলে নিজেরা তা ঠিক করবেন বলে জানিয়েছেন। তবে এজন্য কর্তৃপক্ষের অনুমতি চেয়েছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, জলকপাটটি নষ্ট থাকায় ওই এলাকার কৃষকদের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
বর্ষার আগে এটি সংস্কার করা হলে চাষিরা আতঙ্কমুক্ত থাকতে ও নির্বিঘ্নে চাষাবাদ করতে পারবেন।
এই বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড রাজশাহী উপ-সহকারী প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের জলকপাট সংস্কারের বিষয়টি বগুড়া মেকানিক্যাল দপ্তর দেখভাল করে। আবেদনপত্রটি সেখানে পাঠানো হয়েছে। তারা এই বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন।
রবিবার, ৩০ মে ২০২১ , ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১৭ শাওয়াল ১৪৪২
সুব্রত দাস, রাজশাহী
রাজশাহীর বাগমারায় কুচিয়ামারা খালের মুখে বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও ফসল রক্ষায় নির্মিত জলকপাট এখন কৃষকদের এখন গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গেটের কপাট ভেঙ্গে যাওয়ায় আতঙ্কে রয়েছেন কৃষকরা। বর্ষার আগে এটি মেরামত করা না হলে শতকোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা। এটি দ্রুত মেরামতের দাবি জানিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডে লিখিত আবেদন করেছেন। তবে এখনও সাড়া মেলেনি।
উপজেলার সইপাড়া-ভবানীগঞ্জ সড়কের বাগমারার গণিপুর ও বাসুপাড়ার সীমান্ত এলাকায় কুচুয়ামারা খালের মুখে সুইচগেটটি স্থাপন করা হয়।
ফকিন্নি নদী থেকে খাল দিয়ে পানি সোনাবিলে প্রবেশ করে ও বেরিয়ে যায়। বন্যা নিয়ন্ত্রণ, ফসল রক্ষা ও চাষাবাদের সুবিধার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড জলকপাটটি নির্মাণ করে। এটি নির্মাণের ফলে বাসুপাড়া ও গণিপুর ইউনিয়নের সোনাবিলে চাষাবাদে সুফল মেলে ও বন্যায় তা ফসল রক্ষা পায়। এছাড়াও চাষের সুবিধার জন্য খালে পানি ধরে রাখাও সম্ভব হয়। দুই ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার কৃষক এই স্লুইচগেটটির সুফল ভোগ করে আসছিলেন।
এদিকে দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় গেটটির কপাট নষ্ট হয়ে ভেঙ্গে যাওয়ার পাশাপাশি কপাটগুলো অকেজ হয়ে পড়েছে। গত শুক্রবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কপাটের উভয় পাশে টিনের পাতে আটকে স্থানীয়রা পানি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।
স্থানীয় কৃষকেরা জানান, জলকপাট নষ্ট হওয়ার কারণে গেল বন্যায় সোনাবিল ও তার আশপাশের কৃষকেরা ক্ষতির শিকার হন। কপাট নষ্ট থাকার কারণে সহজে নদী থেকে বন্যার পানি বিলে প্রবেশ করে। এরফলে মাছ, পানবরজ, ধান, সবজি ও ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়। স্থানীয় তাদের ভাষ্যমতে, জলকপাট নষ্ট থাকায় গতবছরের বন্যায় প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
বাগমারা গ্রামের পানচাষি মজনুর রহমান জানান, এটি নষ্ট থাকার কারণে গতবছরে বন্যার পানি বিলে ঢুকে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানবরজসহ তার প্রায় ১২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
গণিপুর ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, গতবছরের বন্যায় কপাট দিয়ে সরাসরি পানি বিলে প্রবেশ করে একডালা, বাগমারা, মাঝিগ্রাম, মোহাম্মদপুর, বালানগর, চকমহব্বতপুরসহ কয়েকটি গ্রামের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শত শত কৃষক নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। জরুরী ভিত্তিতে এটি সংস্কারের দাবি জানান তিনি।
কৃষকেরা বলেন, বর্ষার আগে এটি সংস্কার করা না হলে আবারও ব্যাপক ক্ষতির শঙ্কা রয়েছে। সরকারিভাবে সংস্কার করা না হলে নিজেরা তা ঠিক করবেন বলে জানিয়েছেন। তবে এজন্য কর্তৃপক্ষের অনুমতি চেয়েছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, জলকপাটটি নষ্ট থাকায় ওই এলাকার কৃষকদের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
বর্ষার আগে এটি সংস্কার করা হলে চাষিরা আতঙ্কমুক্ত থাকতে ও নির্বিঘ্নে চাষাবাদ করতে পারবেন।
এই বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড রাজশাহী উপ-সহকারী প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের জলকপাট সংস্কারের বিষয়টি বগুড়া মেকানিক্যাল দপ্তর দেখভাল করে। আবেদনপত্রটি সেখানে পাঠানো হয়েছে। তারা এই বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন।