জনবলসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত ইউপি স্বাস্থ্যকেন্দ্র

নানা সমস্যায় জর্জড়িত ভৈরব উপজেলার শিবপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র। প্রয়োজনীয় লোকবল সঙ্কটের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবনের ভেতর দেয়াল চুষে বৃষ্টির পানি পড়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম নষ্টসহ চিকিৎসা সেবাদানে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয় এ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে দীর্ঘদিন ধরে ফার্মাসিস্ট, পরিবার কল্যাণ সহকারী ও আয়া পদটি খালি রয়েছে। মাঠ পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরা সেবা দানের কথা থাকলেও ঠিকমতো তারা মাঠে সেবা দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ রয়েছে।

জানা যায়, ১৯৯০ সালে ভৈরব উপজেলার শিবপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি চালু হয়। কেন্দ্রটিতে নরমাল ডেলিভারি, প্রসূতি সেবা, কিশোর-কিশোরী স্বাস্থ্য সেবা, সাধারণ স্বাস্থ্যসেবাসহ নানা সেবা দিয়ে আসছে।

বর্তমানে একজন স্বাস্থ্য পরিদর্শিকা এবং উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার এবং একজন নৈশপ্রহরী কাম অফিস সহায়ক দিয়ে চলছে সেবা কার্যক্রম। এরমধ্যে মেডিক্যাল অফিসার হাবিবুর রহমান অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন সাদেকপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে। যার ফলে তিনি নিয়মিত এ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আসেন না। এছাড়া মাঠ পর্যায়ে ৪ জন স্বাস্থ্যসেবী থাকলেও তারা ঠিকমতো মাঠে যায় না বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে গর্ভবতী মাসহ বিভিন্ন রোগীরা স্বাস্থ্য সেবা ও পরিবার-পরিকল্পনা সেবা পরামর্শ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

মাঠ পর্যায়ে সেবা গ্রহিতাদের বিনামূল্যে বরাদ্দকৃত ইনজেকশন ও সুখী ট্যাবলেট টাকার বিনিময়ে দেয়া হয় বলে মাহফুজা আক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। গত ৯ মে রোববার বেলা ১১টার দিকে সরেজমিনে শিবপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে গেলে মেডিক্যাল অফিসার, স্বাস্থ্য পরিদর্শিকা, আয়াসহ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কাউকে পাওয়া যায়নি। সেবা নিতে আসা রহিমা বেগম, সালেহা বেগমসহ অনেকেই জানান, আগে বাড়িতে বসে তারা স্বাস্থ্যসেবাসহ বিভিন্ন পরামর্শ পেতেন। এখন আর স্বাস্থ্য কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে সেবা দেননা। তাই বাধ্য হয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসেছেন। এখানে এসেও কাউকে পাননি। পরে ১ ঘণ্টা অপেক্ষা করে স্বাস্থ্য পরিদর্শিকা শাহিদা আক্তারের মোবাইলে ফোন দিলে তিনি জানান, মাসিক রিপোর্ট জমা দেয়ার জন্য উপজেলা পরিবার-পরিকল্পনা অফিসে আছেন তিনি। এ বিষয়ে উপ-সহকারী মেডিক্যাল অফিসার হাবিবুর রহমান একই কথা জানান। এছাড়া তিনি আরো জানান, তিনি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন সাদেকপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে। এ কারণে প্রতিদিন এখানে দায়িত্ব পালন করতে পারেন না । উপজেলা পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাফি উদ্দিন মাফফুজা আক্তারের অনিয়ম-দুর্নীতির কথা স্বীকার করে বলেন, তাকে ইতোপূর্বেও সতর্ক করা হয়েছে। ফার্মাসিস্ট, পরিবার কল্যাণ সহকারী ও আয়া পদে লোকবল না থাকায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলেও জানান।

তাছাড়া ভবনটি মেরামত ও ভাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণের জন্য স্বাস্থ্য প্রকৌশল কল্যাণ অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০২০ সালে ১৫ লাখ টাকার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিগত ৫ মাসেও কাজ শুরু করেনি। কবে নাগাদ বা কোন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করবে তাও তিনি জানেন না।

সোমবার, ৩১ মে ২০২১ , ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১৮ শাওয়াল ১৪৪২

জনবলসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত ইউপি স্বাস্থ্যকেন্দ্র

প্রতিনিধি, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ)

image

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) : সংস্কারবিহীন শিবপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র -সংবাদ

নানা সমস্যায় জর্জড়িত ভৈরব উপজেলার শিবপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র। প্রয়োজনীয় লোকবল সঙ্কটের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবনের ভেতর দেয়াল চুষে বৃষ্টির পানি পড়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম নষ্টসহ চিকিৎসা সেবাদানে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয় এ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে দীর্ঘদিন ধরে ফার্মাসিস্ট, পরিবার কল্যাণ সহকারী ও আয়া পদটি খালি রয়েছে। মাঠ পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরা সেবা দানের কথা থাকলেও ঠিকমতো তারা মাঠে সেবা দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ রয়েছে।

জানা যায়, ১৯৯০ সালে ভৈরব উপজেলার শিবপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি চালু হয়। কেন্দ্রটিতে নরমাল ডেলিভারি, প্রসূতি সেবা, কিশোর-কিশোরী স্বাস্থ্য সেবা, সাধারণ স্বাস্থ্যসেবাসহ নানা সেবা দিয়ে আসছে।

বর্তমানে একজন স্বাস্থ্য পরিদর্শিকা এবং উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার এবং একজন নৈশপ্রহরী কাম অফিস সহায়ক দিয়ে চলছে সেবা কার্যক্রম। এরমধ্যে মেডিক্যাল অফিসার হাবিবুর রহমান অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন সাদেকপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে। যার ফলে তিনি নিয়মিত এ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আসেন না। এছাড়া মাঠ পর্যায়ে ৪ জন স্বাস্থ্যসেবী থাকলেও তারা ঠিকমতো মাঠে যায় না বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে গর্ভবতী মাসহ বিভিন্ন রোগীরা স্বাস্থ্য সেবা ও পরিবার-পরিকল্পনা সেবা পরামর্শ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

মাঠ পর্যায়ে সেবা গ্রহিতাদের বিনামূল্যে বরাদ্দকৃত ইনজেকশন ও সুখী ট্যাবলেট টাকার বিনিময়ে দেয়া হয় বলে মাহফুজা আক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। গত ৯ মে রোববার বেলা ১১টার দিকে সরেজমিনে শিবপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে গেলে মেডিক্যাল অফিসার, স্বাস্থ্য পরিদর্শিকা, আয়াসহ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কাউকে পাওয়া যায়নি। সেবা নিতে আসা রহিমা বেগম, সালেহা বেগমসহ অনেকেই জানান, আগে বাড়িতে বসে তারা স্বাস্থ্যসেবাসহ বিভিন্ন পরামর্শ পেতেন। এখন আর স্বাস্থ্য কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে সেবা দেননা। তাই বাধ্য হয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসেছেন। এখানে এসেও কাউকে পাননি। পরে ১ ঘণ্টা অপেক্ষা করে স্বাস্থ্য পরিদর্শিকা শাহিদা আক্তারের মোবাইলে ফোন দিলে তিনি জানান, মাসিক রিপোর্ট জমা দেয়ার জন্য উপজেলা পরিবার-পরিকল্পনা অফিসে আছেন তিনি। এ বিষয়ে উপ-সহকারী মেডিক্যাল অফিসার হাবিবুর রহমান একই কথা জানান। এছাড়া তিনি আরো জানান, তিনি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন সাদেকপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে। এ কারণে প্রতিদিন এখানে দায়িত্ব পালন করতে পারেন না । উপজেলা পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাফি উদ্দিন মাফফুজা আক্তারের অনিয়ম-দুর্নীতির কথা স্বীকার করে বলেন, তাকে ইতোপূর্বেও সতর্ক করা হয়েছে। ফার্মাসিস্ট, পরিবার কল্যাণ সহকারী ও আয়া পদে লোকবল না থাকায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলেও জানান।

তাছাড়া ভবনটি মেরামত ও ভাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণের জন্য স্বাস্থ্য প্রকৌশল কল্যাণ অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০২০ সালে ১৫ লাখ টাকার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিগত ৫ মাসেও কাজ শুরু করেনি। কবে নাগাদ বা কোন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করবে তাও তিনি জানেন না।