বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব

মোস্তাফা জব্বার

তিন ॥

একদিকে ১৯৭৪ সালের খাদ্যাভাব বঙ্গবন্ধুকে যেমন খুব মর্মাহত করেছিল, অন্যদিকে এর পরবর্তী পরিস্থিতি সামাল দিতে তিনি হিমশিম খাচ্ছিলেন। সাম্রাজ্যবাদী ষড়যন্ত্রে বাংলাদেশের খাদ্যপ্রাপ্তিতে যে ভয়াবহ সংকট তৈরি হয় তা উতরে যাবার পথ খুঁজছিলেন বঙ্গবন্ধু। অন্যদিকে সেই পরিস্থিতিতে কাজে লাগিয়ে বাম উগ্রপন্থিরা দেশকে অস্থিতিশীল করার, নৈরাজ্য সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করতে থাকে। তারা নাশকতামূলক কর্মকান্ড ও রাজনৈতিক হত্যাকান্ডও শুরু করে। বস্তুত সারাদেশ যখন খাদ্যাভাবে জর্জরিত তখন চরমপন্থিদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চরম আকার ধারণ করে। তাদের প্রকাশ্য আহ্বান ছিল বঙ্গবন্ধুর সরকারকে উৎখাত করা। সমাজতন্ত্র বা বিপ্লবের নামে নানা ধরনের গোপন কর্মকান্ডও চলতে থাকে। আর এদিকে সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে শ্রেণীহীন ‘স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ববাংলা’ গঠন করার লক্ষ্যে আরেক স্লোগানধারী সিরাজ শিকদারের নেতৃত্বাধীন পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টির ক্যাডাররা ১৯৭২ সালের মাঝামাঝি থেকে ১৯৭৩ সালের মে মাস পর্যন্ত ৪৯২৫টি গুপ্তহত্যা করেছিল। ৬০টি থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি লুট করে জনজীবনকে অস্থির করে তুলছিল। ১৯৭২-৭৩ সালের এই সময়টাতে পাকিস্তানপন্থি জামায়াতে ইসলামী, নেজামে ইসলাম, মুসলিম লীগ, পিডিপিসহ বেশিরভাগ পাকিস্তানি অনুচর রাজনৈতিক দলগুলো গোপনে জুলফিকার আলীর প্রেসক্রিপশনে ‘মুসলিম বাংলা’ কায়েমের জন্য তাদের সব শক্তি নিয়ে তৎপরতা চালিয়েছিল।

অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, মাওলানা ভাসানী এদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশকে আমি ভিয়েতনামে পরিণত করব।’ সেই সময়টিতে তিনি খুব দায়িত্বহীনের মতো অনেক আচরণ করেছিলেন। তিনি হিন্দুদের উদ্দেশ্যে বলে বসলেন, ‘জয় বাংলা এবং আওয়ামী লীগ তোমাদের রক্ষা করতে পারবে না। তোমাদের ভাগ্য বিহারিদের মতোই হবে।’ দুর্ভিক্ষের চরম সংকটকালে এই উগ্র বামপন্থি ও মুসলিম বাংলা কায়েমকারীরা নাশকতামূলক কর্মকান্ড ও গোপন তৎপরতা বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছিল। প্রচুর রাজনৈতিক কর্মী হত্যা, খাদ্য ও পাটের গুদামে আগুন, খাদ্য বহনকারী ট্রেন-ট্রাক ধ্বংস, থানা লুট, সার কারখানায় নাশকতা, সন্দীপ চ্যানেলে গমভর্তি জাহাজ ডুবানো, ভাসানীসহ অনেক বিরোধী রাজনৈতিক নেতার দায়িত্বহীন আচরণ, বারবার অস্ত্রের জোরে সরকার উৎখাতের হুমকি, চারজন সংসদ সদস্যকে হত্যা, সবশেষে ১৯৭৪ সালের ডিসেম্বরে ঈদের জামাতে সংসদ সদস্য গোলাম কিবরিয়াকে হত্যার পর বঙ্গবন্ধু আর ধৈর্য ধরে থাকতে পারলেন না। এগুলোর সঙ্গে যোগ হয়েছিল তার নিজ দলের কিছু নেতাদের লুটপাট, চোরাচালান ও ক্ষমতার অপব্যবহার, যা তার ভিশনের সঙ্গে কোনভাবেই যাচ্ছিল না। তিনি দুর্নীতির অভিযোগে তার নিজ দলের অনেক গণপরিষদ সদস্য ও এমসিএকে বহিষ্কার করেছিলেন। প্রায় সাড়ে তিন বছরের প্রতিটি দিন এমন বৈরী পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে করতে তিনি একেবারে শেষে ১৯৭৪ সালের ২৮ ডিসেম্বরে রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ করেন দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে। কাউকেই তিনি আর ভরসা করতে পারছিলেন না। দুর্ভিক্ষে এত মানুষের মৃত্যু তাকে বিমর্ষ ও ডেসপারেট করে তুলেছিল। এত নাশকতা, এত বৈরিতা, এত দুর্নীতি একসময় তাকে বাধ্য করেছে নিজের হাতে ক্ষমতা নিয়ে নিতে, বাকশাল গঠন করতে।

বাকশালকে তিনি ‘দ্বিতীয় বিপ্লব’ বলেছিলেন। ১৯৭১ সালে রাজনৈতিক স্বাধীনতার পর এটি ছিল বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মুক্তির বিপ্লব। তবে বাকশালের মতো বিপ্লবী উদ্যোগ পৃথিবীর ইতিহাসে অভূতপূর্ব নয়। এর আগেও অনেক দেশে হয়েছে। কিন্তু এর আগে যেটি কখনোই হয়নি সেটিই করে দেখালেন বঙ্গবন্ধু। তিনি সেটি করলেন দেশের বিদ্যমান আইন ও সংবিধানের বিধি মেনে। বাকশালের মূল কার্যক্রম কি ছিল কয়েকটি উদাহরণ থেকে সেটি স্পষ্ট হতে পারে।

১৯৭৫ সালের ২৬ মার্চে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত জনসভায় বঙ্গবন্ধু তার দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি ও কার্যক্রম সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করে বলেন ‘একটা কথা ভুলে গেলে চলবে না, আমাদের প্রত্যেক বছর ৩০ লাখ লোক বাড়ে। আমার জায়গা হলো ৫৫ হাজার বর্গমাইল। যদি প্রত্যেক বছর ৩০ লাখ লোক বাড়ে তাহলে ২৫-৩০ বছরে বাংলার কোন জমি থাকবে না চাষের জন্য। বাংলার মানুষের বাংলার মানুষের মাংস খাবে, সে জন্য আজকে আমাদের পপুলেশন কন্ট্রোল, ফ্যামিলি প্ল্যানিং করতে হবে। এটা হলো তিন নম্বর কাজ। এক নম্বর হলো দুর্নীতিবাজ খতম করুন। দুই নম্বর হলো কারখানায়-খেতে খামারে প্রোডাকশন বাড়ান, তিন নম্বর পপুলেশন প্ল্যানিং আর চার নম্বর হলো জাতীয় ঐক্য। জাতীয় ঐক্য গড়ার জন্য এক দল করা হয়েছে। যারা দেশকে ভালোবাসে, যারা এর আদর্শে বিশ্বাস করে, চারটি রাষ্ট্রীয় আদর্শ মেনে সৎ পথে চলে তারা সবাই এই দলের সদস্য হতে পারবেন। যারা বিদেশি এজেন্ট, যারা বহিঃশত্রুর কাছ থেকে পয়সা নেয় এতে তাদের স্থান নেই। সরকারি কর্মচারীরাও এই দলের সদস্য হতে পারবে। কারণ তারাও এই জাতির একটা অংশ। তাদেরও অধিকার থাকবে এই দলের সদস্য হওয়ার। এই জন্য সবাই যে যেখানে আছি একতাবদ্ধ হয়ে দেশের কাজে লাগাতে হবে।’

ওই ভাষণে তিনি আরও বলেছিলেন, ‘ভিক্ষুক জাতির ইজ্জত নাই। একটা লোককে আপনি ভিক্ষা দেন এক টাকা বা আটআনা পয়সা, একটা জাতি যখন ভিক্ষুক হয় মানুষের কাছে হাত পাতে আমাদের খাবার দাও, আমাকে টাকা দাও, সেই জাতির ইজ্জত থাকতে পারে না। আমি ভিক্ষুক জাতির নেতা থাকতে চাই না।’

তিনি বলেন, আঘাত করতে চাই এ ঘুণে ধরা সমাজ ব্যবস্থাকে আমি আপনাদের সমর্থন চাই আমি জানি আপনাদের সমর্থন আছে কিন্তু একটা কথা এ যে নতুন সিস্টেমে যেতে চাচ্ছি, গ্রামে গ্রামে বহুমুখী কো-অপারেটিভ করা হবে, ভুল করবেন না, আমি আপনাদের জমি নেব না, পাঁচ বছরের প্ল্যান এ বাংলাদেশে ৬৫ হাজার গ্রামে কো-অপারেটিভ হবে, প্রত্যেকটি গ্রামে গ্রামে এ কো-অপারেটিভে জমির মালিকের জমি থাকবে। যারা কাজ করতে পারে তাকে কো অপারেটিভে সদস্য হতে হবে। এগুলো বহুমুখী কো-অপারেটিভ হবে, পয়সা যাবে তাদের কাছে, ফার্টিলাইজার যাবে তাদের কাছে, টেস্ট রিলিফ যাবে তাদের কাছে, প্রোগ্রাম যাবে তাদের কাছে। পাঁচ বছরের প্ল্যানে প্রত্যেকটি গ্রামে পাঁচশত থেকে হাজার ফ্যামিলি পর্যন্ত নিয়ে কম্পলসারি কো-অপারেটিভ হবে, আপনাদের জমির ফসল আপনি নেবেন, অংশ যাবে কো-অপারেটিভে, অংশ যাবে গভর্মেন্টের হাতে। তিনগুণ ফসল হবে।

অর্থাৎ আধুনিকীকরণ করে কৃষি উৎপাদন বাড়িয়ে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে চেয়েছিলেন। শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, ‘আজকে একটা কথা বলি, শ্রমিক ভাইয়েরা আপনাদের কষ্ট আছে, এত কষ্ট আমি জানি তাই ভুলতে পারছি না। বিশেষ করে ফিক্সড ইনকাম গ্রুপের কষ্টের সীমা নাই। প্রোডাকশন বাড়াতে পারলেই তারপর আপনাদের উন্নতি হবে। এছাড়া তিনি বলেন, থানায় থানায় একটি করে কাউন্সিল হবে। এই কাউন্সিলে রাজনৈতিক কর্মী, সরকারি কর্মচারী যেই হয় একজন তার চেয়ারম্যান হবে, এই থানা কাউন্সিলে থাকবে বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের সরকারি কর্মচারী, তার মধ্যে আমাদের কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি থাকবে, যুবক প্রতিনিধি থাকবে, কৃষক প্রতিনিধি থাকবে তারাই থানাকে চালাবে আর সমস্ত মহকুমা গুলি জেলা হয়ে যাবে। সেই মহকুমায় একটি করে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ হবে, চেয়ারম্যান থাকবে, সব কর্মচারী একসঙ্গে তার মধ্যে থাকবে। তারা সরকার চালাবে। এভাবে আমি একটা সিস্টেমের চিন্তা করছি।’ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রথম সভায় বঙ্গবন্ধু বলেন, শাসনব্যবস্থা বিকেন্দ্রীকরণ করা হবে। জেলা গভর্নরের কাছে যাবে আমার টেস্ট রিলিপ, লোন, বিল, সেচ প্রকল্প টাকা। কেন্দ্রীয় প্রশাসনের ডাইরেক্ট কন্ট্রোলে এডমিনিস্ট্রেটিভ কাউন্সিল ডিস্ট্রিক্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ এডমিনিস্টেশন পরিচালনা করবে।

ব্রিটিশ আমলের সেই ঘুণে ধরা এডমিনিস্ট্রেটিভ সিস্টেম দিয়ে বাংলার মানুষের মঙ্গল হতে পারে না। ‘ইট মাস্ট গো’, সেজন্য আমূল পরিবর্তন দরকার হয়ে পড়েছে। দ্যাট ইজ অলসো অ্যা রেভ্যুলেশন। ডেডিকেটেড ওয়ার্কার দরকার. এটা ডেডিকেটেড ওয়ার্কার ব্যতীত হতে পারে না। আজকে আমি চাচ্ছি, আর্মির মধ্যে হোক, নেভীর মধ্যে হোক, এয়ারফোর্সের মধ্যে হোক, বিড়িআর হোক, রক্ষী বাহিনী হোক, পুলিশ বাহিনী হোক, সিভিল এডমিনিস্ট্রেটিভ হোক, পলিটিশিয়ান হোক, যেখানেই হোক ভালো লোক যেখানেই আছে তাদের এক জায়গায় করে কাজে লাগাতে হবে।

অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু তার দ্বিতীয় বিপ্লব কর্মসূচির মাধ্যমে সর্বস্তরের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে নতুনভাবে সবকিছু ঢেলে সাজিয়ে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করে দেশের উন্নতি করতে চেয়েছেন। তিন সমস্ত মহকুমাগুলোকে জেলায় রূপান্তর করেন, সেখানে জেলা গভর্নর নিয়োগ করেন, কারণ আমাদের জেলা ছিল ১৯টা, সেখানে প্রায় ৬০টা জেলা করেন পরবর্তীতে ৬১টা হয়। ৬০ জন জেলা গভর্নরও তিনি নিয়োগ দিয়েছিলেন এবং তাদের ট্রেনিংয়েরও ব্যবস্থা করেন, তিনি নিজেই বলেছেন ১৫ জুলাই থেকে এ গভর্নরদের ট্রেনিং শুরু হবে, ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডিস্ট্রিক্ট হয়ে যাবে, এক বছরের মধ্যে থানা এডমিনিস্ট্রেটিভ কাউন্সিল করতে হবে। সেখানে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ অর্থাৎ বাকশালের রিপ্রেজেন্টিটিভ থাকবে। কৃষকের রিপ্রেজেন্টেটিভ থাকবে, শ্রমিকের থাকবে যুবকের থাকবে, মহিলাদের থাকবে, একজন গভর্নর থাকবে যিনি হবে হেড অব এডমিনিস্ট্রেশন। সেখানে পার্লামেন্টের মেম্বার নয় এমন পলিটিক্যাল ওয়ার্কার হতে পারে, সেখানে সরকারি কর্মচারী যাকে বিশ্বাস করি তিনি হতে পারেন। নেশানস মাস্ট বি ইউনাইটেড এগেনেস্ট করাপশান। পাবলিক অপিনিয়ন মবিলাইজড না করলে শুধু আইন দিয়ে করাপশান বন্ধ করা যাবে না, এবং সেই সঙ্গে সিস্টেমে পরিবর্তন করতে হবে। ঘুণে ধরা সিস্টেম দিয়ে করাপশন বন্ধ করা যায় না। এ সিস্টেম করাপশন পয়দা করে করাপশন চলে। সেজন্য আমার দ্বিতীয় বিপ্লবের ডাক, ভেঙে ফেলে সব নতুন করে গড়তে হবে।

গভর্নরদের ট্রেনিং এর উদ্বোধনী ভাষণে তিনি বলেন, গভর্নরশিপের যে ক্ষমতা আমরা আইনে দিয়েছি তা কম নয়। আমরা সোজাসুজি কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে জেলার কানেকশন রাখতে চাই। তেমনি জেলার সঙ্গে থানার, থানার সঙ্গে ইউনিয়নের কানেকশন রাখতে চাই। গভর্নরদের উদ্দেশ্য করে বঙ্গবন্ধু বলেন, আপনাদের যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তা সঙ্গে সঙ্গে কাউন্সিল করে দেয়া হয়েছে সেখানে পার্টি থাকবে। পার্টির যিনি সেক্রেটারি থাকবে আপনার চেয়ে তার ক্ষমতা কোন অংশে কম থাকবে না। একদিকে আপনি যেমন রেস্পনসিবল ফর দি এডমিনিস্ট্রেশন তেমনি পার্টির যিনি সেক্রেটারি থাকবেন তিনিও রেসপন্সিবল সমস্ত পার্টির জন্য। যখন গভর্নরের সঙ্গে কাউন্সিল মিটিং কম করবেন তখন নিশ্চয়ই সেক্রেটারি সেখানে উপস্থিত হবে। আবার যখন সেক্রেটারির সঙ্গে পার্টির মিটিং কল করবেন তখন গভর্নর সাহেব তার সামনে গিয়ে বসবেন।

খুব সহজেই বোঝা যায় বঙ্গবন্ধু কি অসাধারণ প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা ও মেধা নিয়ে দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

ঢাকা। ২৬ মার্চ, ২০১৯। আপডেট: ৩০ মে, ২০২১।

[লেখক : তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, কলামিস্ট, দেশের প্রথম ডিজিটাল নিউজ সার্ভিস আবাস-এর চেয়ারম্যান- সাংবাদিক, বিজয় কিবোর্ড ও সফটওয়্যার এবং বিজয় ডিজিটাল শিক্ষা সফটওয়্যারের উদ্ভাবক]

mustafajabbar@gmail.com

মঙ্গলবার, ০১ জুন ২০২১ , ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১৯ শাওয়াল ১৪৪২

বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব

মোস্তাফা জব্বার

তিন ॥

একদিকে ১৯৭৪ সালের খাদ্যাভাব বঙ্গবন্ধুকে যেমন খুব মর্মাহত করেছিল, অন্যদিকে এর পরবর্তী পরিস্থিতি সামাল দিতে তিনি হিমশিম খাচ্ছিলেন। সাম্রাজ্যবাদী ষড়যন্ত্রে বাংলাদেশের খাদ্যপ্রাপ্তিতে যে ভয়াবহ সংকট তৈরি হয় তা উতরে যাবার পথ খুঁজছিলেন বঙ্গবন্ধু। অন্যদিকে সেই পরিস্থিতিতে কাজে লাগিয়ে বাম উগ্রপন্থিরা দেশকে অস্থিতিশীল করার, নৈরাজ্য সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করতে থাকে। তারা নাশকতামূলক কর্মকান্ড ও রাজনৈতিক হত্যাকান্ডও শুরু করে। বস্তুত সারাদেশ যখন খাদ্যাভাবে জর্জরিত তখন চরমপন্থিদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চরম আকার ধারণ করে। তাদের প্রকাশ্য আহ্বান ছিল বঙ্গবন্ধুর সরকারকে উৎখাত করা। সমাজতন্ত্র বা বিপ্লবের নামে নানা ধরনের গোপন কর্মকান্ডও চলতে থাকে। আর এদিকে সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে শ্রেণীহীন ‘স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ববাংলা’ গঠন করার লক্ষ্যে আরেক স্লোগানধারী সিরাজ শিকদারের নেতৃত্বাধীন পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টির ক্যাডাররা ১৯৭২ সালের মাঝামাঝি থেকে ১৯৭৩ সালের মে মাস পর্যন্ত ৪৯২৫টি গুপ্তহত্যা করেছিল। ৬০টি থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি লুট করে জনজীবনকে অস্থির করে তুলছিল। ১৯৭২-৭৩ সালের এই সময়টাতে পাকিস্তানপন্থি জামায়াতে ইসলামী, নেজামে ইসলাম, মুসলিম লীগ, পিডিপিসহ বেশিরভাগ পাকিস্তানি অনুচর রাজনৈতিক দলগুলো গোপনে জুলফিকার আলীর প্রেসক্রিপশনে ‘মুসলিম বাংলা’ কায়েমের জন্য তাদের সব শক্তি নিয়ে তৎপরতা চালিয়েছিল।

অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, মাওলানা ভাসানী এদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশকে আমি ভিয়েতনামে পরিণত করব।’ সেই সময়টিতে তিনি খুব দায়িত্বহীনের মতো অনেক আচরণ করেছিলেন। তিনি হিন্দুদের উদ্দেশ্যে বলে বসলেন, ‘জয় বাংলা এবং আওয়ামী লীগ তোমাদের রক্ষা করতে পারবে না। তোমাদের ভাগ্য বিহারিদের মতোই হবে।’ দুর্ভিক্ষের চরম সংকটকালে এই উগ্র বামপন্থি ও মুসলিম বাংলা কায়েমকারীরা নাশকতামূলক কর্মকান্ড ও গোপন তৎপরতা বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছিল। প্রচুর রাজনৈতিক কর্মী হত্যা, খাদ্য ও পাটের গুদামে আগুন, খাদ্য বহনকারী ট্রেন-ট্রাক ধ্বংস, থানা লুট, সার কারখানায় নাশকতা, সন্দীপ চ্যানেলে গমভর্তি জাহাজ ডুবানো, ভাসানীসহ অনেক বিরোধী রাজনৈতিক নেতার দায়িত্বহীন আচরণ, বারবার অস্ত্রের জোরে সরকার উৎখাতের হুমকি, চারজন সংসদ সদস্যকে হত্যা, সবশেষে ১৯৭৪ সালের ডিসেম্বরে ঈদের জামাতে সংসদ সদস্য গোলাম কিবরিয়াকে হত্যার পর বঙ্গবন্ধু আর ধৈর্য ধরে থাকতে পারলেন না। এগুলোর সঙ্গে যোগ হয়েছিল তার নিজ দলের কিছু নেতাদের লুটপাট, চোরাচালান ও ক্ষমতার অপব্যবহার, যা তার ভিশনের সঙ্গে কোনভাবেই যাচ্ছিল না। তিনি দুর্নীতির অভিযোগে তার নিজ দলের অনেক গণপরিষদ সদস্য ও এমসিএকে বহিষ্কার করেছিলেন। প্রায় সাড়ে তিন বছরের প্রতিটি দিন এমন বৈরী পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে করতে তিনি একেবারে শেষে ১৯৭৪ সালের ২৮ ডিসেম্বরে রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ করেন দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে। কাউকেই তিনি আর ভরসা করতে পারছিলেন না। দুর্ভিক্ষে এত মানুষের মৃত্যু তাকে বিমর্ষ ও ডেসপারেট করে তুলেছিল। এত নাশকতা, এত বৈরিতা, এত দুর্নীতি একসময় তাকে বাধ্য করেছে নিজের হাতে ক্ষমতা নিয়ে নিতে, বাকশাল গঠন করতে।

বাকশালকে তিনি ‘দ্বিতীয় বিপ্লব’ বলেছিলেন। ১৯৭১ সালে রাজনৈতিক স্বাধীনতার পর এটি ছিল বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মুক্তির বিপ্লব। তবে বাকশালের মতো বিপ্লবী উদ্যোগ পৃথিবীর ইতিহাসে অভূতপূর্ব নয়। এর আগেও অনেক দেশে হয়েছে। কিন্তু এর আগে যেটি কখনোই হয়নি সেটিই করে দেখালেন বঙ্গবন্ধু। তিনি সেটি করলেন দেশের বিদ্যমান আইন ও সংবিধানের বিধি মেনে। বাকশালের মূল কার্যক্রম কি ছিল কয়েকটি উদাহরণ থেকে সেটি স্পষ্ট হতে পারে।

১৯৭৫ সালের ২৬ মার্চে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত জনসভায় বঙ্গবন্ধু তার দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি ও কার্যক্রম সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করে বলেন ‘একটা কথা ভুলে গেলে চলবে না, আমাদের প্রত্যেক বছর ৩০ লাখ লোক বাড়ে। আমার জায়গা হলো ৫৫ হাজার বর্গমাইল। যদি প্রত্যেক বছর ৩০ লাখ লোক বাড়ে তাহলে ২৫-৩০ বছরে বাংলার কোন জমি থাকবে না চাষের জন্য। বাংলার মানুষের বাংলার মানুষের মাংস খাবে, সে জন্য আজকে আমাদের পপুলেশন কন্ট্রোল, ফ্যামিলি প্ল্যানিং করতে হবে। এটা হলো তিন নম্বর কাজ। এক নম্বর হলো দুর্নীতিবাজ খতম করুন। দুই নম্বর হলো কারখানায়-খেতে খামারে প্রোডাকশন বাড়ান, তিন নম্বর পপুলেশন প্ল্যানিং আর চার নম্বর হলো জাতীয় ঐক্য। জাতীয় ঐক্য গড়ার জন্য এক দল করা হয়েছে। যারা দেশকে ভালোবাসে, যারা এর আদর্শে বিশ্বাস করে, চারটি রাষ্ট্রীয় আদর্শ মেনে সৎ পথে চলে তারা সবাই এই দলের সদস্য হতে পারবেন। যারা বিদেশি এজেন্ট, যারা বহিঃশত্রুর কাছ থেকে পয়সা নেয় এতে তাদের স্থান নেই। সরকারি কর্মচারীরাও এই দলের সদস্য হতে পারবে। কারণ তারাও এই জাতির একটা অংশ। তাদেরও অধিকার থাকবে এই দলের সদস্য হওয়ার। এই জন্য সবাই যে যেখানে আছি একতাবদ্ধ হয়ে দেশের কাজে লাগাতে হবে।’

ওই ভাষণে তিনি আরও বলেছিলেন, ‘ভিক্ষুক জাতির ইজ্জত নাই। একটা লোককে আপনি ভিক্ষা দেন এক টাকা বা আটআনা পয়সা, একটা জাতি যখন ভিক্ষুক হয় মানুষের কাছে হাত পাতে আমাদের খাবার দাও, আমাকে টাকা দাও, সেই জাতির ইজ্জত থাকতে পারে না। আমি ভিক্ষুক জাতির নেতা থাকতে চাই না।’

তিনি বলেন, আঘাত করতে চাই এ ঘুণে ধরা সমাজ ব্যবস্থাকে আমি আপনাদের সমর্থন চাই আমি জানি আপনাদের সমর্থন আছে কিন্তু একটা কথা এ যে নতুন সিস্টেমে যেতে চাচ্ছি, গ্রামে গ্রামে বহুমুখী কো-অপারেটিভ করা হবে, ভুল করবেন না, আমি আপনাদের জমি নেব না, পাঁচ বছরের প্ল্যান এ বাংলাদেশে ৬৫ হাজার গ্রামে কো-অপারেটিভ হবে, প্রত্যেকটি গ্রামে গ্রামে এ কো-অপারেটিভে জমির মালিকের জমি থাকবে। যারা কাজ করতে পারে তাকে কো অপারেটিভে সদস্য হতে হবে। এগুলো বহুমুখী কো-অপারেটিভ হবে, পয়সা যাবে তাদের কাছে, ফার্টিলাইজার যাবে তাদের কাছে, টেস্ট রিলিফ যাবে তাদের কাছে, প্রোগ্রাম যাবে তাদের কাছে। পাঁচ বছরের প্ল্যানে প্রত্যেকটি গ্রামে পাঁচশত থেকে হাজার ফ্যামিলি পর্যন্ত নিয়ে কম্পলসারি কো-অপারেটিভ হবে, আপনাদের জমির ফসল আপনি নেবেন, অংশ যাবে কো-অপারেটিভে, অংশ যাবে গভর্মেন্টের হাতে। তিনগুণ ফসল হবে।

অর্থাৎ আধুনিকীকরণ করে কৃষি উৎপাদন বাড়িয়ে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে চেয়েছিলেন। শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, ‘আজকে একটা কথা বলি, শ্রমিক ভাইয়েরা আপনাদের কষ্ট আছে, এত কষ্ট আমি জানি তাই ভুলতে পারছি না। বিশেষ করে ফিক্সড ইনকাম গ্রুপের কষ্টের সীমা নাই। প্রোডাকশন বাড়াতে পারলেই তারপর আপনাদের উন্নতি হবে। এছাড়া তিনি বলেন, থানায় থানায় একটি করে কাউন্সিল হবে। এই কাউন্সিলে রাজনৈতিক কর্মী, সরকারি কর্মচারী যেই হয় একজন তার চেয়ারম্যান হবে, এই থানা কাউন্সিলে থাকবে বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের সরকারি কর্মচারী, তার মধ্যে আমাদের কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি থাকবে, যুবক প্রতিনিধি থাকবে, কৃষক প্রতিনিধি থাকবে তারাই থানাকে চালাবে আর সমস্ত মহকুমা গুলি জেলা হয়ে যাবে। সেই মহকুমায় একটি করে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ হবে, চেয়ারম্যান থাকবে, সব কর্মচারী একসঙ্গে তার মধ্যে থাকবে। তারা সরকার চালাবে। এভাবে আমি একটা সিস্টেমের চিন্তা করছি।’ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রথম সভায় বঙ্গবন্ধু বলেন, শাসনব্যবস্থা বিকেন্দ্রীকরণ করা হবে। জেলা গভর্নরের কাছে যাবে আমার টেস্ট রিলিপ, লোন, বিল, সেচ প্রকল্প টাকা। কেন্দ্রীয় প্রশাসনের ডাইরেক্ট কন্ট্রোলে এডমিনিস্ট্রেটিভ কাউন্সিল ডিস্ট্রিক্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ এডমিনিস্টেশন পরিচালনা করবে।

ব্রিটিশ আমলের সেই ঘুণে ধরা এডমিনিস্ট্রেটিভ সিস্টেম দিয়ে বাংলার মানুষের মঙ্গল হতে পারে না। ‘ইট মাস্ট গো’, সেজন্য আমূল পরিবর্তন দরকার হয়ে পড়েছে। দ্যাট ইজ অলসো অ্যা রেভ্যুলেশন। ডেডিকেটেড ওয়ার্কার দরকার. এটা ডেডিকেটেড ওয়ার্কার ব্যতীত হতে পারে না। আজকে আমি চাচ্ছি, আর্মির মধ্যে হোক, নেভীর মধ্যে হোক, এয়ারফোর্সের মধ্যে হোক, বিড়িআর হোক, রক্ষী বাহিনী হোক, পুলিশ বাহিনী হোক, সিভিল এডমিনিস্ট্রেটিভ হোক, পলিটিশিয়ান হোক, যেখানেই হোক ভালো লোক যেখানেই আছে তাদের এক জায়গায় করে কাজে লাগাতে হবে।

অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু তার দ্বিতীয় বিপ্লব কর্মসূচির মাধ্যমে সর্বস্তরের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে নতুনভাবে সবকিছু ঢেলে সাজিয়ে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করে দেশের উন্নতি করতে চেয়েছেন। তিন সমস্ত মহকুমাগুলোকে জেলায় রূপান্তর করেন, সেখানে জেলা গভর্নর নিয়োগ করেন, কারণ আমাদের জেলা ছিল ১৯টা, সেখানে প্রায় ৬০টা জেলা করেন পরবর্তীতে ৬১টা হয়। ৬০ জন জেলা গভর্নরও তিনি নিয়োগ দিয়েছিলেন এবং তাদের ট্রেনিংয়েরও ব্যবস্থা করেন, তিনি নিজেই বলেছেন ১৫ জুলাই থেকে এ গভর্নরদের ট্রেনিং শুরু হবে, ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডিস্ট্রিক্ট হয়ে যাবে, এক বছরের মধ্যে থানা এডমিনিস্ট্রেটিভ কাউন্সিল করতে হবে। সেখানে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ অর্থাৎ বাকশালের রিপ্রেজেন্টিটিভ থাকবে। কৃষকের রিপ্রেজেন্টেটিভ থাকবে, শ্রমিকের থাকবে যুবকের থাকবে, মহিলাদের থাকবে, একজন গভর্নর থাকবে যিনি হবে হেড অব এডমিনিস্ট্রেশন। সেখানে পার্লামেন্টের মেম্বার নয় এমন পলিটিক্যাল ওয়ার্কার হতে পারে, সেখানে সরকারি কর্মচারী যাকে বিশ্বাস করি তিনি হতে পারেন। নেশানস মাস্ট বি ইউনাইটেড এগেনেস্ট করাপশান। পাবলিক অপিনিয়ন মবিলাইজড না করলে শুধু আইন দিয়ে করাপশান বন্ধ করা যাবে না, এবং সেই সঙ্গে সিস্টেমে পরিবর্তন করতে হবে। ঘুণে ধরা সিস্টেম দিয়ে করাপশন বন্ধ করা যায় না। এ সিস্টেম করাপশন পয়দা করে করাপশন চলে। সেজন্য আমার দ্বিতীয় বিপ্লবের ডাক, ভেঙে ফেলে সব নতুন করে গড়তে হবে।

গভর্নরদের ট্রেনিং এর উদ্বোধনী ভাষণে তিনি বলেন, গভর্নরশিপের যে ক্ষমতা আমরা আইনে দিয়েছি তা কম নয়। আমরা সোজাসুজি কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে জেলার কানেকশন রাখতে চাই। তেমনি জেলার সঙ্গে থানার, থানার সঙ্গে ইউনিয়নের কানেকশন রাখতে চাই। গভর্নরদের উদ্দেশ্য করে বঙ্গবন্ধু বলেন, আপনাদের যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তা সঙ্গে সঙ্গে কাউন্সিল করে দেয়া হয়েছে সেখানে পার্টি থাকবে। পার্টির যিনি সেক্রেটারি থাকবে আপনার চেয়ে তার ক্ষমতা কোন অংশে কম থাকবে না। একদিকে আপনি যেমন রেস্পনসিবল ফর দি এডমিনিস্ট্রেশন তেমনি পার্টির যিনি সেক্রেটারি থাকবেন তিনিও রেসপন্সিবল সমস্ত পার্টির জন্য। যখন গভর্নরের সঙ্গে কাউন্সিল মিটিং কম করবেন তখন নিশ্চয়ই সেক্রেটারি সেখানে উপস্থিত হবে। আবার যখন সেক্রেটারির সঙ্গে পার্টির মিটিং কল করবেন তখন গভর্নর সাহেব তার সামনে গিয়ে বসবেন।

খুব সহজেই বোঝা যায় বঙ্গবন্ধু কি অসাধারণ প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা ও মেধা নিয়ে দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

ঢাকা। ২৬ মার্চ, ২০১৯। আপডেট: ৩০ মে, ২০২১।

[লেখক : তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, কলামিস্ট, দেশের প্রথম ডিজিটাল নিউজ সার্ভিস আবাস-এর চেয়ারম্যান- সাংবাদিক, বিজয় কিবোর্ড ও সফটওয়্যার এবং বিজয় ডিজিটাল শিক্ষা সফটওয়্যারের উদ্ভাবক]

mustafajabbar@gmail.com