স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ মেরামত দেখতে গিয়ে তোপের মুখে এমপি

খুলনার কয়রার মহারাজপুর ইউনিয়নের দশহালিয়া এলাকায় কপোতাক্ষ নদের ভেঙে যাওয়া বাঁধ মেরামত দেখতে গিয়ে জনতার তোপের মুখে পড়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবু। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা কয়রা থানার ওসি রবিউল ইসলাম জানান, কিছু উচ্ছৃঙ্খল মানুষ একটু সমস্যা করছিল। পরে এমপি সাহেব বক্তৃতা করলে তারা আবার শান্ত হয়ে যায়। এটা তেমন কোন বড় ঘটনা নয়।

মহারাজপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর দেয়াড়া ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য বাবুল হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের পর বাঁধ ভেঙে মহারাজপুর ও পাশের বাগালী ইউনিয়নের অন্তত ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়। নিয়মিত জোয়ারভাটা আসা-যাওয়ার কারণে ওই বাঁধ এখনও মেরামত করা সম্ভব হয়নি। তাই স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধটি মেরামত করছিলেন এলাকার কয়েকশ’ মানুষ।

গতকল সাড়ে ১১টার দিকে একটি ট্রলার নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবু।

এ সময় বাঁধে কাজ করা উত্তেজিত জনতা সংসদ সদস্যকে দেখেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। কাঁদা ছুড়ে মারতে থাকেন ট্রলারের দিকে। বাধ্য হয়ে সেখান থেকে ট্রলার নিয়ে চলে যান বাবু। পরে অবশ্য তিনি ফিরে আসেন।

তবে ট্রলারে কাঁদা ছোড়ার ঘটনা অস্বীকার করে সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, ভাঙন এলাকায় কাজ করছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। সেখানে গেলে তাকে দেখে মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করে টেকসই বেড়িবাঁধের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। স্থানীয় মানুষ চান টেকসই বেড়িবাঁধ। প্রতিবছর ভাঙনে তারা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হন।

আক্তারুজ্জামান বাবু আরও বলেন, তাদের ওই দাবি যৌক্তিক। বারবার বাঁধ ভাঙে আর বারবার স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করতে হয় তাদের। এ কারণে এলাকার এমপির ওপর তাদের ক্ষোভও বেশি।

উপকূলের সবচেয়ে দুর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা খুলনার কয়রা উপজেলা। এবার ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবেও সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এ উপজেলার মানুষ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দেয়া তথ্যমতে, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে কপোতাক্ষ, কয়রা ও শাকবেড়িয়া নদীর পানি জোয়ারে ৬-৭ ফুট বৃদ্ধি পায়। ফলে উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের অন্তত ১১টি স্থানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ ভেঙে ও উপচে লোকালয় প্লাবিত হয়েছে। বাড়িঘরে জোয়ারের পানি ঢোকায় ২৫ হাজারের মতো মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

বুধবার, ০২ জুন ২০২১ , ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২০ শাওয়াল ১৪৪২

স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ মেরামত দেখতে গিয়ে তোপের মুখে এমপি

জেলা বার্তা পরিবেশক, খুলনা

খুলনার কয়রার মহারাজপুর ইউনিয়নের দশহালিয়া এলাকায় কপোতাক্ষ নদের ভেঙে যাওয়া বাঁধ মেরামত দেখতে গিয়ে জনতার তোপের মুখে পড়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবু। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা কয়রা থানার ওসি রবিউল ইসলাম জানান, কিছু উচ্ছৃঙ্খল মানুষ একটু সমস্যা করছিল। পরে এমপি সাহেব বক্তৃতা করলে তারা আবার শান্ত হয়ে যায়। এটা তেমন কোন বড় ঘটনা নয়।

মহারাজপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর দেয়াড়া ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য বাবুল হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের পর বাঁধ ভেঙে মহারাজপুর ও পাশের বাগালী ইউনিয়নের অন্তত ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়। নিয়মিত জোয়ারভাটা আসা-যাওয়ার কারণে ওই বাঁধ এখনও মেরামত করা সম্ভব হয়নি। তাই স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধটি মেরামত করছিলেন এলাকার কয়েকশ’ মানুষ।

গতকল সাড়ে ১১টার দিকে একটি ট্রলার নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবু।

এ সময় বাঁধে কাজ করা উত্তেজিত জনতা সংসদ সদস্যকে দেখেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। কাঁদা ছুড়ে মারতে থাকেন ট্রলারের দিকে। বাধ্য হয়ে সেখান থেকে ট্রলার নিয়ে চলে যান বাবু। পরে অবশ্য তিনি ফিরে আসেন।

তবে ট্রলারে কাঁদা ছোড়ার ঘটনা অস্বীকার করে সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, ভাঙন এলাকায় কাজ করছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। সেখানে গেলে তাকে দেখে মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করে টেকসই বেড়িবাঁধের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। স্থানীয় মানুষ চান টেকসই বেড়িবাঁধ। প্রতিবছর ভাঙনে তারা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হন।

আক্তারুজ্জামান বাবু আরও বলেন, তাদের ওই দাবি যৌক্তিক। বারবার বাঁধ ভাঙে আর বারবার স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করতে হয় তাদের। এ কারণে এলাকার এমপির ওপর তাদের ক্ষোভও বেশি।

উপকূলের সবচেয়ে দুর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা খুলনার কয়রা উপজেলা। এবার ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবেও সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এ উপজেলার মানুষ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দেয়া তথ্যমতে, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে কপোতাক্ষ, কয়রা ও শাকবেড়িয়া নদীর পানি জোয়ারে ৬-৭ ফুট বৃদ্ধি পায়। ফলে উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের অন্তত ১১টি স্থানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ ভেঙে ও উপচে লোকালয় প্লাবিত হয়েছে। বাড়িঘরে জোয়ারের পানি ঢোকায় ২৫ হাজারের মতো মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।