একনেকে প্রাইমারি শিক্ষার্থীদের প্রকল্প বাতিল

প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থীদের পুষ্টির চাহিদা পূরণে প্রস্তাবিত ‘প্রাইমারি স্কুল মিল’ প্রকল্প বাতিল করে দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ১৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ‘প্রাইমারি স্কুল প্রকল্প’ উপস্থাপন করা হলে তা বাতিল করা হয়। সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভাপতিত্ব করেন একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রকল্পটির বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান সাংবাদিকদের জানান, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, খিচুড়ি রান্নার ব্যবস্থা বাদ দিয়ে অন্য কী করা যায় সেটি ভাবতে হবে। কেননা রান্নাবান্না অনেক সময় নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এছাড়া প্রকল্পে সরকারি অর্থের পাশাপাশি স্থানীয় বিত্তবানদের কীভাবে অংশগ্রহণ করানো যায় সেটি তিনি ভাবতে বলেছেন।

সূত্র জানায়, প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের রান্না করা খাবার না দিয়ে রান্না ছাড়া খাবারের পক্ষে মত দেন। তিনি প্রকল্পটি নতুনভাবে উপস্থাপনের নির্দেশ দেন।

জানা যায়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পুষ্টির জোগান বাড়াতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এ প্রকল্পের আওতায় দেশের ৪৯২ উপজেলা ও সিটি করপোরেশন এবং পৌরসভার ২১টি শিক্ষা থানার শিক্ষার্থীদের দুপুরে স্কুলে গরম খাবার দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। গরম খাবার বলতে মূলত ডাল আর স্থানীয় সবজি দিয়ে খিচুড়ি রান্না করে শিক্ষার্থীদের খাওয়ানো।

২০২১ সালের জুন থেকে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত পাঁচ বছরমেয়াদি এ প্রকল্পের জন্য শুরুতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৯ হাজার ২৮৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে খিচুড়ি রান্না ও পরিবেশনের প্রশিক্ষণ নিতে এক হাজার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিদেশ সফরের একটি প্রস্তাব ছিল, যা নিয়ে গত বছর ব্যাপক সমালোচনা হয়। শেষ পর্যন্ত এক হাজার লোকের বিদেশ সফরের ওই অংশটি বাদ দিয়ে ব্যয়ের পরিমাণ ১৭ হাজার ২৯০ কোটি টাকা করা হয়। সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে এ প্রকল্পের পুরো অর্থ জোগানোর কথা ছিল।

কোন ধরনের ফিজিবিলিটি স্টাডি ছাড়া ১৭ হাজার কোটি টাকার মতো একটি বড় প্রকল্প কীভাবে এলো এমন প্রশ্ন ওঠে একনেক সভার পরে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে। এ বিষয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের খাবার দেয়ার বিষয়ে বিশ্ব খাদ্য সংস্থার সহায়তায় একটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। বলা যেতে পারে এটি তারই ধারাবাহিক প্রকল্প। প্রকল্পটি যেহেতু নতুন করে তোলা হবে তখন সার্বিক বিষয় বিবেচনা করা হবে।’

বুধবার, ০২ জুন ২০২১ , ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২০ শাওয়াল ১৪৪২

একনেকে প্রাইমারি শিক্ষার্থীদের প্রকল্প বাতিল

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থীদের পুষ্টির চাহিদা পূরণে প্রস্তাবিত ‘প্রাইমারি স্কুল মিল’ প্রকল্প বাতিল করে দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ১৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ‘প্রাইমারি স্কুল প্রকল্প’ উপস্থাপন করা হলে তা বাতিল করা হয়। সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভাপতিত্ব করেন একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রকল্পটির বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান সাংবাদিকদের জানান, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, খিচুড়ি রান্নার ব্যবস্থা বাদ দিয়ে অন্য কী করা যায় সেটি ভাবতে হবে। কেননা রান্নাবান্না অনেক সময় নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এছাড়া প্রকল্পে সরকারি অর্থের পাশাপাশি স্থানীয় বিত্তবানদের কীভাবে অংশগ্রহণ করানো যায় সেটি তিনি ভাবতে বলেছেন।

সূত্র জানায়, প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের রান্না করা খাবার না দিয়ে রান্না ছাড়া খাবারের পক্ষে মত দেন। তিনি প্রকল্পটি নতুনভাবে উপস্থাপনের নির্দেশ দেন।

জানা যায়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পুষ্টির জোগান বাড়াতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এ প্রকল্পের আওতায় দেশের ৪৯২ উপজেলা ও সিটি করপোরেশন এবং পৌরসভার ২১টি শিক্ষা থানার শিক্ষার্থীদের দুপুরে স্কুলে গরম খাবার দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। গরম খাবার বলতে মূলত ডাল আর স্থানীয় সবজি দিয়ে খিচুড়ি রান্না করে শিক্ষার্থীদের খাওয়ানো।

২০২১ সালের জুন থেকে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত পাঁচ বছরমেয়াদি এ প্রকল্পের জন্য শুরুতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৯ হাজার ২৮৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে খিচুড়ি রান্না ও পরিবেশনের প্রশিক্ষণ নিতে এক হাজার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিদেশ সফরের একটি প্রস্তাব ছিল, যা নিয়ে গত বছর ব্যাপক সমালোচনা হয়। শেষ পর্যন্ত এক হাজার লোকের বিদেশ সফরের ওই অংশটি বাদ দিয়ে ব্যয়ের পরিমাণ ১৭ হাজার ২৯০ কোটি টাকা করা হয়। সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে এ প্রকল্পের পুরো অর্থ জোগানোর কথা ছিল।

কোন ধরনের ফিজিবিলিটি স্টাডি ছাড়া ১৭ হাজার কোটি টাকার মতো একটি বড় প্রকল্প কীভাবে এলো এমন প্রশ্ন ওঠে একনেক সভার পরে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে। এ বিষয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের খাবার দেয়ার বিষয়ে বিশ্ব খাদ্য সংস্থার সহায়তায় একটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। বলা যেতে পারে এটি তারই ধারাবাহিক প্রকল্প। প্রকল্পটি যেহেতু নতুন করে তোলা হবে তখন সার্বিক বিষয় বিবেচনা করা হবে।’