গৃহহীনদের ঘর নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করুন

আশ্রয়ণ প্রকল্প নিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের অন্ত নেই। এমন কোন দিন নেই যেদিন এ নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয় না। গত মঙ্গলবার সংবাদে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। বরিশাল সদর উপজেলার রায়পাশা কড়াপুর ইউনিয়নের শোলনা গ্রামে ঘর বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিরা নির্মাণ কাজ দেখে গভীর হতাশা প্রকাশ করেছেন। তাদের আশঙ্কা, নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে যেভাবে ঘর তৈরি করা হচ্ছে তা টেকসই হবে না। আশ্রয়ণ প্রকল্পের এসব ঘর উঠলে একদিন ঘরচাপা পড়ে মারা যেতে হবে বলে তারা আশঙ্কা করছেন।

তাদের এ আশঙ্কা অমূলক নয়। দেশের বিভিন্ন স্থানে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর ভেঙে পড়ার খবর গণমাধ্যমের কল্যাণে আমরা জেনেছি। খবর অনুযায়ী, প্রকল্পের অনেক ঘরই নির্মাণের কিছুদিন পরেই ভেঙে পড়েছে। লালমনিরহাটে একটি ঘরের চাল বাতাসে উড়ে গেছে, ভেঙে পড়েছে পিলার। আবার কোথাও কোথাও নির্মাণাধীন অবস্থায় ভেঙে পড়েছে প্রকল্পের ঘর। কুড়িগ্রামের রৌমারীতে প্রকল্পের ঘর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই ভেঙে পড়েছে।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর পাওয়া গেছে। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করার কারণে ঘরগুলো ভেঙে গেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগীরা। পরিমাণমতো সিমেন্ট না দেয়ায় দেওয়াল ধসে পড়া, পলেস্তরা মজবুত না হওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। সরকার গৃহহীন মানুষদের স্বপ্ন দেখিয়েছে যে, এসব ঘর তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই হবে, সেখানে তারা নিরাপদে বসবাস করবেন। বাস্তবে প্রকল্পের ঘর গৃহহীনদের দুঃস্বপ্ন ও দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রকল্পের ঘর বণ্টনের ক্ষেত্রে অনিয়ম ও আর্থিক লেনদেনের খবর পাওয়া গেছে। ঘর পেতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৫ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকার আর্থিক লেনদেন হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মাণ করা নিঃসন্দেহে একটি ভালো উদ্যোগ। কিন্তু দুর্নীতিবাজ লুটেরা একটি চক্রের কারণে সরকারের ভালো একটি উদ্যোগ মাঠে মারা যেতে বসেছে। গৃহহীনদের টেকসই ঘর দেয়ার উদ্যোগ সফল করতে হলে প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম-দুর্নীতি কঠোর হাতে দমন করতে হবে। অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে যে বা যারাই জড়িত থাক না কেন সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা জরুরি। ঘর নির্মাণ ও বণ্টনের সঙ্গে যুক্ত কর্তাব্যক্তিদের কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। প্রকৃত গৃহহীনরা যেন ঘর পান সেটা যে কোন মূল্যে নিশ্চিত করতে হবে।

বৃহস্পতিবার, ০৩ জুন ২০২১ , ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২১ শাওয়াল ১৪৪২

গৃহহীনদের ঘর নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করুন

আশ্রয়ণ প্রকল্প নিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের অন্ত নেই। এমন কোন দিন নেই যেদিন এ নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয় না। গত মঙ্গলবার সংবাদে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। বরিশাল সদর উপজেলার রায়পাশা কড়াপুর ইউনিয়নের শোলনা গ্রামে ঘর বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিরা নির্মাণ কাজ দেখে গভীর হতাশা প্রকাশ করেছেন। তাদের আশঙ্কা, নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে যেভাবে ঘর তৈরি করা হচ্ছে তা টেকসই হবে না। আশ্রয়ণ প্রকল্পের এসব ঘর উঠলে একদিন ঘরচাপা পড়ে মারা যেতে হবে বলে তারা আশঙ্কা করছেন।

তাদের এ আশঙ্কা অমূলক নয়। দেশের বিভিন্ন স্থানে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর ভেঙে পড়ার খবর গণমাধ্যমের কল্যাণে আমরা জেনেছি। খবর অনুযায়ী, প্রকল্পের অনেক ঘরই নির্মাণের কিছুদিন পরেই ভেঙে পড়েছে। লালমনিরহাটে একটি ঘরের চাল বাতাসে উড়ে গেছে, ভেঙে পড়েছে পিলার। আবার কোথাও কোথাও নির্মাণাধীন অবস্থায় ভেঙে পড়েছে প্রকল্পের ঘর। কুড়িগ্রামের রৌমারীতে প্রকল্পের ঘর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই ভেঙে পড়েছে।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর পাওয়া গেছে। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করার কারণে ঘরগুলো ভেঙে গেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগীরা। পরিমাণমতো সিমেন্ট না দেয়ায় দেওয়াল ধসে পড়া, পলেস্তরা মজবুত না হওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। সরকার গৃহহীন মানুষদের স্বপ্ন দেখিয়েছে যে, এসব ঘর তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই হবে, সেখানে তারা নিরাপদে বসবাস করবেন। বাস্তবে প্রকল্পের ঘর গৃহহীনদের দুঃস্বপ্ন ও দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রকল্পের ঘর বণ্টনের ক্ষেত্রে অনিয়ম ও আর্থিক লেনদেনের খবর পাওয়া গেছে। ঘর পেতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৫ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকার আর্থিক লেনদেন হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মাণ করা নিঃসন্দেহে একটি ভালো উদ্যোগ। কিন্তু দুর্নীতিবাজ লুটেরা একটি চক্রের কারণে সরকারের ভালো একটি উদ্যোগ মাঠে মারা যেতে বসেছে। গৃহহীনদের টেকসই ঘর দেয়ার উদ্যোগ সফল করতে হলে প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম-দুর্নীতি কঠোর হাতে দমন করতে হবে। অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে যে বা যারাই জড়িত থাক না কেন সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা জরুরি। ঘর নির্মাণ ও বণ্টনের সঙ্গে যুক্ত কর্তাব্যক্তিদের কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। প্রকৃত গৃহহীনরা যেন ঘর পান সেটা যে কোন মূল্যে নিশ্চিত করতে হবে।