‘৮০ শতাংশ মানুষ পর্যায়ক্রমে টিকা পাবে’ সময় লাগবে ৪ বছর

দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে পর্যায়ক্রমে করোনার টিকার আওতায় আনার পরিকল্পনার কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে দেয়া প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রতি মাসে ২৫ লাখ মানুষ টিকা পাবেন। অর্থমন্ত্রীর এ হিসেবে দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ অর্থাৎ ১৩ কোটি ৮২ লাখ ৪৭ হাজার ৫০৮ জন মানুষকে নতুন করোনাভাইরাসের টিকা দেয়ার খসড়া পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী যদি মাসে ২৫ লাখ লোককে টিকা দেয়া হয় তবে ১৩ কোটি ৮২ লাখ লোককে টিকা দিতে প্রায় ৪ বছর সময় লাগবে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অর্থমন্ত্রীর এ পরিকল্পনার বিরোধিতা করে বলেছেন, অর্থমন্ত্রীর কথা মতো টিকা দেয়া হলে অনেক বছর লেগে যাবে দেশের সব মানুষকে টিকা দিতে। এ সময়ে আবার সবাইকে নতুন করে টিকা দেয়ার প্রয়োজন পড়বে। ফলে টিকা কার্যক্রম অনন্তকাল চলতে হবে।

বাজেটে করোনার টিকা আনার ব্যাপারে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, সরকারের করোনাবিষয়ক কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ সংবাদকে বলেন, মাসে এত কম সংখ্যক টিকা এনে দেশ থেকে করোনা নির্মূলের যে পরিকল্পনা সরকার গ্রহণ করেছে তা সফল হতে পারবে না। এতে করোনা থেকে মুক্ত হতে দীর্ঘ সময় লেগে যাবে। আমাদের প্রতি মাসে আরও বেশি সংখ্যক টিকা আনতে হবে। কম সময়ে বেশি সংখ্যক লোককে টিকা দিতে না পারলে আমরা যেভাবে করোনা মোকাবিলার চিন্তা করছি তা সম্ভব হবে না। আমি মনে করি এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে দেশের সব লোককে টিকা দেয়া সম্পন্ন করতে হবে। এজন্য মাসে আরও অনেক বেশি সংখ্যক টিকা আনতে হবে। তা না হলে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে না। আমি মনে করি, আরও বেশি সংখ্যক টিকা আনা সরকারের পক্ষে সম্ভব। কিছু দিনের মধ্যে আরও অনেক ধরনের টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার অনুমোদন পাবে এবং টিকার উৎপাদনও এখনকার চেয়ে অনেক বাড়বে। ফলে এখন টিকা চাহিদা এবং উৎপাদনের যে সংকট চলছে তা থাকবে না। তখন সরকারও দেশের সব লোককে দেয়ার জন্য আরও বেশি সংখ্যক টিকা আনতে পারবে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, অর্থমন্ত্রী পরিকল্পনা অনুযায়ী করোনা টিকা দিতে হলে অনন্তকাল ধরে টিকা কার্যক্রম চালাতে হবে। সারাদেশের লোককে এক বছরের মধ্যে টিকা দেয়া শেষ করা দরকার। কারণ এক বছরই টিকা স্থায়ীত্ব। এক বছর পর আবার টিকা নিতে হবে। এভাবে যদি টিকা দিতেই ৪ বছর লেগে যায় তবে প্রথম বছর যাদের দেয়া হলো তাদের দ্বিতীয় বছর আবার দিতে হবে। এভাবে টিকা দেয়া চলতে থাকবে। ফলে আমরা যে দ্রুত করোনা দেশ থেকে তাড়াতে চাই সে চেষ্টা কখনওই বাস্তবের মুখ দেখবে না।

শনিবার, ০৫ জুন ২০২১ , ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২৩ শাওয়াল ১৪৪২

‘৮০ শতাংশ মানুষ পর্যায়ক্রমে টিকা পাবে’ সময় লাগবে ৪ বছর

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে পর্যায়ক্রমে করোনার টিকার আওতায় আনার পরিকল্পনার কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে দেয়া প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রতি মাসে ২৫ লাখ মানুষ টিকা পাবেন। অর্থমন্ত্রীর এ হিসেবে দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ অর্থাৎ ১৩ কোটি ৮২ লাখ ৪৭ হাজার ৫০৮ জন মানুষকে নতুন করোনাভাইরাসের টিকা দেয়ার খসড়া পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী যদি মাসে ২৫ লাখ লোককে টিকা দেয়া হয় তবে ১৩ কোটি ৮২ লাখ লোককে টিকা দিতে প্রায় ৪ বছর সময় লাগবে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অর্থমন্ত্রীর এ পরিকল্পনার বিরোধিতা করে বলেছেন, অর্থমন্ত্রীর কথা মতো টিকা দেয়া হলে অনেক বছর লেগে যাবে দেশের সব মানুষকে টিকা দিতে। এ সময়ে আবার সবাইকে নতুন করে টিকা দেয়ার প্রয়োজন পড়বে। ফলে টিকা কার্যক্রম অনন্তকাল চলতে হবে।

বাজেটে করোনার টিকা আনার ব্যাপারে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, সরকারের করোনাবিষয়ক কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ সংবাদকে বলেন, মাসে এত কম সংখ্যক টিকা এনে দেশ থেকে করোনা নির্মূলের যে পরিকল্পনা সরকার গ্রহণ করেছে তা সফল হতে পারবে না। এতে করোনা থেকে মুক্ত হতে দীর্ঘ সময় লেগে যাবে। আমাদের প্রতি মাসে আরও বেশি সংখ্যক টিকা আনতে হবে। কম সময়ে বেশি সংখ্যক লোককে টিকা দিতে না পারলে আমরা যেভাবে করোনা মোকাবিলার চিন্তা করছি তা সম্ভব হবে না। আমি মনে করি এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে দেশের সব লোককে টিকা দেয়া সম্পন্ন করতে হবে। এজন্য মাসে আরও অনেক বেশি সংখ্যক টিকা আনতে হবে। তা না হলে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে না। আমি মনে করি, আরও বেশি সংখ্যক টিকা আনা সরকারের পক্ষে সম্ভব। কিছু দিনের মধ্যে আরও অনেক ধরনের টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার অনুমোদন পাবে এবং টিকার উৎপাদনও এখনকার চেয়ে অনেক বাড়বে। ফলে এখন টিকা চাহিদা এবং উৎপাদনের যে সংকট চলছে তা থাকবে না। তখন সরকারও দেশের সব লোককে দেয়ার জন্য আরও বেশি সংখ্যক টিকা আনতে পারবে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, অর্থমন্ত্রী পরিকল্পনা অনুযায়ী করোনা টিকা দিতে হলে অনন্তকাল ধরে টিকা কার্যক্রম চালাতে হবে। সারাদেশের লোককে এক বছরের মধ্যে টিকা দেয়া শেষ করা দরকার। কারণ এক বছরই টিকা স্থায়ীত্ব। এক বছর পর আবার টিকা নিতে হবে। এভাবে যদি টিকা দিতেই ৪ বছর লেগে যায় তবে প্রথম বছর যাদের দেয়া হলো তাদের দ্বিতীয় বছর আবার দিতে হবে। এভাবে টিকা দেয়া চলতে থাকবে। ফলে আমরা যে দ্রুত করোনা দেশ থেকে তাড়াতে চাই সে চেষ্টা কখনওই বাস্তবের মুখ দেখবে না।