বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫ শতাংশ করারোপ আইনের পরিপন্থী

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ করারোপ ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন’ পরিপন্থী বলে অভিহিত করেছে বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি। গতকাল এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ অভিমত দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি করারোপ প্রত্যাহার করে উচ্চশিক্ষা প্রসারে সরকারের কাছে প্রণোদনাও দাবি করেছে। সমিতির দাবি, ২০১০ সালের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনানুযায়ী ট্রাস্টের অধীনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত। ১৮৮২ সালের ট্রাস্ট আইনানুযায়ী ট্রাস্টের অধীনে পরিচালিত হওয়ায় অলাভজনক প্রতিষ্ঠান করযোগ্য নয়।

সমিতির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভূত আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ হারে আয়কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। যা ব্যাপক উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা সৃষ্টি করেছে দেশের উচ্চশিক্ষা প্রসারের অন্যতম অংশীদার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব মহল, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে।

‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ অনুযায়ী ট্রাস্টের অধীনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত। ট্রাস্ট আইন ১৮৮২ অনুযায়ী ট্রাস্টের অধীনে পরিচালিত হওয়ায় অলাভজনক প্রতিষ্ঠান করযোগ্য নয়। ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইনের আওতায় লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত মেডিকেল কলেজ ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সঙ্গে ট্রাস্ট আইনে অলাভজনক হিসেবে পরিচালিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর একই আওতায় সমভাবে আয়কর আরোপের প্রস্তাবনা আইনের পরিপন্থী। এটি কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষা প্রসারে ভূমিকার কথা তুলে ধরে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘শিক্ষা খাতকে অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় সরকার এ খাতে প্রাথমিক পর্যায় থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষা তথা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষার সব স্তরে বিপুল অঙ্কের ভর্তুকি ও অর্থ সহায়তা দিয়ে থাকে। বিশেষ করে উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জাতীয় বাজেট থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে নামমাত্র খরচে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ার সুযোগ পান। অন্যদিকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কোন সরকারি বরাদ্দ কিংবা অনুদান না পাওয়ায় এসব বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের টিউশন ফির ওপর নির্ভর করতে হয়। একটি কল্যাণকর রাষ্ট্র হিসেবে সরকার যেখানে মেধা সৃষ্টির লক্ষ্যে সর্বস্তরের শিক্ষা খাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ভর্তুকি দিয়ে থাকে, সেখানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর করারোপ করা হলে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে তা ব্যাপক বৈষম্য সৃষ্টি করবে।

শনিবার, ০৫ জুন ২০২১ , ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২৩ শাওয়াল ১৪৪২

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫ শতাংশ করারোপ আইনের পরিপন্থী

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ করারোপ ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন’ পরিপন্থী বলে অভিহিত করেছে বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি। গতকাল এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ অভিমত দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি করারোপ প্রত্যাহার করে উচ্চশিক্ষা প্রসারে সরকারের কাছে প্রণোদনাও দাবি করেছে। সমিতির দাবি, ২০১০ সালের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনানুযায়ী ট্রাস্টের অধীনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত। ১৮৮২ সালের ট্রাস্ট আইনানুযায়ী ট্রাস্টের অধীনে পরিচালিত হওয়ায় অলাভজনক প্রতিষ্ঠান করযোগ্য নয়।

সমিতির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভূত আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ হারে আয়কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। যা ব্যাপক উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা সৃষ্টি করেছে দেশের উচ্চশিক্ষা প্রসারের অন্যতম অংশীদার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব মহল, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে।

‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ অনুযায়ী ট্রাস্টের অধীনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত। ট্রাস্ট আইন ১৮৮২ অনুযায়ী ট্রাস্টের অধীনে পরিচালিত হওয়ায় অলাভজনক প্রতিষ্ঠান করযোগ্য নয়। ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইনের আওতায় লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত মেডিকেল কলেজ ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সঙ্গে ট্রাস্ট আইনে অলাভজনক হিসেবে পরিচালিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর একই আওতায় সমভাবে আয়কর আরোপের প্রস্তাবনা আইনের পরিপন্থী। এটি কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষা প্রসারে ভূমিকার কথা তুলে ধরে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘শিক্ষা খাতকে অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় সরকার এ খাতে প্রাথমিক পর্যায় থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষা তথা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষার সব স্তরে বিপুল অঙ্কের ভর্তুকি ও অর্থ সহায়তা দিয়ে থাকে। বিশেষ করে উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জাতীয় বাজেট থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে নামমাত্র খরচে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ার সুযোগ পান। অন্যদিকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কোন সরকারি বরাদ্দ কিংবা অনুদান না পাওয়ায় এসব বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের টিউশন ফির ওপর নির্ভর করতে হয়। একটি কল্যাণকর রাষ্ট্র হিসেবে সরকার যেখানে মেধা সৃষ্টির লক্ষ্যে সর্বস্তরের শিক্ষা খাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ভর্তুকি দিয়ে থাকে, সেখানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর করারোপ করা হলে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে তা ব্যাপক বৈষম্য সৃষ্টি করবে।