উদাসীন হলে চড়া মূল্য দিতে হবে

চলতি মাসে দেশের করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তারা বলছে, দেশে করোনার ভারতীয় বা ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের সামাজিক সংক্রমণ ঘটছে। এ ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ক্ষমতা অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে বেশি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আশঙ্কা, করোনার সংক্রমণ বাড়লে মৃত্যুও বাড়বে।

সীমান্তবর্তী জেলার পাশাপাশি অন্যান্য জেলায়ও ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ঘটছে। করোনায় আক্রান্ত নতুন রোগী, শনাক্তের হার, মৃত্যু ইতোমধ্যে বাড়তে শুরু করেছে। সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে মৃত্যুর ঘটনা বেশি ঘটছে। করোনার সংক্রমণ শনাক্তের হার আবার ১১ শতাংশে উঠেছে। কিছু দিন আগেও সংক্রমণের হার ছিল ৬-৭ শতাংশ। অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, কোভিডের রোগী বাড়তে শুরু করার দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে মৃত্যুর হার ঊর্ধ্বমুখী হয়। করোনার সংক্রমণ বাড়া মানে অবধারিতভাবে সামগ্রিক চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর চাপ বাড়া। প্রতিবেশী ভারতকে ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের ভয়াবহ চাপ মোকাবিলা করতে হয়েছে। আমরা চাই না, বাংলাদেশ এমন চাপে পড়ুক। বিশ্বজুড়ে করোনার যে প্রবণতা তাতে এর সংক্রমণ বন্ধ করা এখন পর্যন্ত অসম্ভব। তবে সংক্রমণের গতিকে যদি ধীর করা যায় তাহলেও হয়তো বড় কোন বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব হবে। এজন্য জরুরি হচ্ছে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। এ ছাড়া করোনা মোকাবিলার মোক্ষম আর কোন অস্ত্র এ মুহূর্তে আমাদের নেই।

করোনার সংক্রমণ বাড়ার কারণে সীমান্তবর্তী দুটি জেলা পূর্ণ এবং সাতটি জেলায় এলাকাভিত্তিক ‘লকডাউন’ দেয়া হয়েছে। তবে লকডাউন ঘোষণা করাই যথেষ্ট নয়, তা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা জরুরি। দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় ৫ এপ্রিল সারা দেশে বিধিনিষেধ জারি করা হয়। ১৬ জুন পর্যন্ত বিধিনিষেধ বাড়ানো হয়েছে। তবে বিধিনিষেধ মানার ক্ষেত্রে মানুষের উদাসীনতা রয়েছে। এ উদাসীনতা চলতে থাকলে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। সীমান্তে কঠোর নজরদারি চালাতে হবে। সীমান্ত এলাকায় করোনার টেস্ট ও কন্টাক্ট ট্রেসিং কার্যক্রম জোরদার করতে হবে।

করোনা মোকাবিলায় রোগী ব্যবস্থাপনায় জোর দিতে হবে। সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর নির্ধারিত কোন কোন হাসপাতালে শয্যা সংকট দেখা দিয়েছে। অনেক হাসপাতালেই নেই আইসিইউ। করোনার জন্য আরও হাসপাতাল বাড়ানো যায় কিনা সেটা ভেবে দেখতে হবে। জরুরি ভিত্তিতে অস্থায়ী হাসপাতাল করা যেতে পারে। সেখানে পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও নার্স নিশ্চিত করতে হবে। সব হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে জরুরিভাবে।

মঙ্গলবার, ০৮ জুন ২০২১ , ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২৬ শাওয়াল ১৪৪২

ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট

উদাসীন হলে চড়া মূল্য দিতে হবে

চলতি মাসে দেশের করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তারা বলছে, দেশে করোনার ভারতীয় বা ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের সামাজিক সংক্রমণ ঘটছে। এ ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ক্ষমতা অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে বেশি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আশঙ্কা, করোনার সংক্রমণ বাড়লে মৃত্যুও বাড়বে।

সীমান্তবর্তী জেলার পাশাপাশি অন্যান্য জেলায়ও ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ঘটছে। করোনায় আক্রান্ত নতুন রোগী, শনাক্তের হার, মৃত্যু ইতোমধ্যে বাড়তে শুরু করেছে। সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে মৃত্যুর ঘটনা বেশি ঘটছে। করোনার সংক্রমণ শনাক্তের হার আবার ১১ শতাংশে উঠেছে। কিছু দিন আগেও সংক্রমণের হার ছিল ৬-৭ শতাংশ। অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, কোভিডের রোগী বাড়তে শুরু করার দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে মৃত্যুর হার ঊর্ধ্বমুখী হয়। করোনার সংক্রমণ বাড়া মানে অবধারিতভাবে সামগ্রিক চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর চাপ বাড়া। প্রতিবেশী ভারতকে ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের ভয়াবহ চাপ মোকাবিলা করতে হয়েছে। আমরা চাই না, বাংলাদেশ এমন চাপে পড়ুক। বিশ্বজুড়ে করোনার যে প্রবণতা তাতে এর সংক্রমণ বন্ধ করা এখন পর্যন্ত অসম্ভব। তবে সংক্রমণের গতিকে যদি ধীর করা যায় তাহলেও হয়তো বড় কোন বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব হবে। এজন্য জরুরি হচ্ছে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। এ ছাড়া করোনা মোকাবিলার মোক্ষম আর কোন অস্ত্র এ মুহূর্তে আমাদের নেই।

করোনার সংক্রমণ বাড়ার কারণে সীমান্তবর্তী দুটি জেলা পূর্ণ এবং সাতটি জেলায় এলাকাভিত্তিক ‘লকডাউন’ দেয়া হয়েছে। তবে লকডাউন ঘোষণা করাই যথেষ্ট নয়, তা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা জরুরি। দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় ৫ এপ্রিল সারা দেশে বিধিনিষেধ জারি করা হয়। ১৬ জুন পর্যন্ত বিধিনিষেধ বাড়ানো হয়েছে। তবে বিধিনিষেধ মানার ক্ষেত্রে মানুষের উদাসীনতা রয়েছে। এ উদাসীনতা চলতে থাকলে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। সীমান্তে কঠোর নজরদারি চালাতে হবে। সীমান্ত এলাকায় করোনার টেস্ট ও কন্টাক্ট ট্রেসিং কার্যক্রম জোরদার করতে হবে।

করোনা মোকাবিলায় রোগী ব্যবস্থাপনায় জোর দিতে হবে। সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর নির্ধারিত কোন কোন হাসপাতালে শয্যা সংকট দেখা দিয়েছে। অনেক হাসপাতালেই নেই আইসিইউ। করোনার জন্য আরও হাসপাতাল বাড়ানো যায় কিনা সেটা ভেবে দেখতে হবে। জরুরি ভিত্তিতে অস্থায়ী হাসপাতাল করা যেতে পারে। সেখানে পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও নার্স নিশ্চিত করতে হবে। সব হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে জরুরিভাবে।