১৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩০টি সাইলো নির্মাণ করা হবে

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) দেশের বিভিন্ন স্থানে ধান শুকানো, সংরক্ষণ ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক সুবিধাসম্বলিত আধুনিক মানের ৩০টি সাইলো নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৪০০ কোটি ২২ লাখ টাকা। মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এনইসি সভাকক্ষে একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এই প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে সভায় যুক্ত হন। সভাশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান প্রকল্পের বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, একনেকে ৬ হাজার ৬৫১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে  ১০টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৫ হাজার ২১৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থাকবে ৭৯৪ কোটি ৩ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক অর্থায়ন সহায়তা পাওয়া যাবে ৬৩৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে ধান শুকানো, সংরক্ষণ ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক সুবিধাদিসহ আধুনিক মানের সাইলো নির্মাণের লক্ষ্যে যে প্রকল্প নেয়া হয়েছে, এর আওতায় প্রাথমিকভাবে ৩০টি সাইলো নির্মাণ করা হবে।

খাদ্য অধিদপ্তর জুলাই, ২০২১ থেকে ডিসেম্বর ২০২৩ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

প্রকল্পের আওতায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় ২৪ জেলায় ৩০টি উপজেলায় ৩০টি সাইলো নির্মাণ হবে। এতে আগামী ৩ বছরের মধ্যে সরকারি খাদ্য ব্যবস্থাপনা দেড় লাখ টন ধারণ ক্ষমতায় উন্নীত হবে। আধুনিক মানের সাইলো তৈরির ফলে সারাবছর কৃষকের কাছে হতে সরাসরি ধান ক্রয়ের সুযোগ হবে। কৃষক সহজেই সরকারি খাদ্য গুদামে ধান বিক্রয় করতে উৎসাহিত হবেন এবং উৎপাদিত ধানের ন্যায্য মূল্য পাবেন। অধিকন্তু, কীটনাশকবিহীন মজুদ ব্যবস্থার মাধ্যমে ২ থেকে ৩ বছর শস্যের পুষ্টিমান বজায় রেখে খাদ্য মজুদ ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হবে।

এমএ মান্নান জানান, প্রধানমন্ত্রী ভোলা, পটুয়াখালী ও বগুড়ার মতো এলাকা যেখানে ফসল বেশি উৎপাদন হয় সেখানে সাইলো নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নদীর নাব্যতা নিশ্চিত করতে নিয়মিতভাবে নদীর রক্ষণাবেক্ষণ ড্রেজিং পরিচালনার ওপর আবারও জোর দিয়েছেন। পানির স্বাভাবিক প্রবাহের ক্ষেত্রে কোন অপ্রাকৃত বাধা যেন তৈরি না করতে পারে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকতে বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী পুষ্টিসম্পন্ন ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য আলু বীজ, শাকসবজি এবং অন্যান্য ফসলের ক্ষেত্রে দেশে টিস্যু কালচার পদ্ধতিতে চাষাবাদ বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

৩৪৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে  বিপিএটিসির প্রশিক্ষণ সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের প্রথম সংশোধনী অনুমোদনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী ২ থেকে ৩ মাসের পরিবর্তে ১০ মাসভিত্তিক কোর্স করার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেছেন। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বিপিএটিসির কার্যক্রম আরও বাড়বে বলে প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এক প্রশ্নের উত্তরে মান্নান জানান, কোভিড-১৯ অতিমারীর ক্ষতিকর প্রভাব নিরুপণে সরকার আরও একটি সমীক্ষা চালাবে। চিলমারীতে নদীর বন্দর প্রকল্পটি  প্রতিবেশি দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

অপর এক প্রশ্নের উত্তরে পরিসংখ্যান ও তথ্য বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) দেশে দারিদ্র্য নির্ধারণে তাৎক্ষণিক সমীক্ষা করে না। তিনি জানান, আয় এবং ব্যয়ের সর্বশেষ খানা জরিপ ২০১৬ সালে করা হয় এবং পরবর্তী সমীক্ষার ফলাফল এক বছরের মধ্যে পাওয়া যাবে।

একনেকে অনুমোদিত অন্য প্রকল্পসমূহ হলো- বরিশাল লক্ষ্মীপাশা-দুমকির ২৭তম কিলোমিটারে পা-ব-পায়রা নদীর উপর নলুয়া-বাহেরচর সেতু নির্মাণ প্রকল্প, মধুপুর-ময়মনসিংহ জাতীয় মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প, চিলমারী এলাকায় নদীবন্দর নির্মাণ প্রকল্প, বিপিএটিসির প্রশিক্ষণ সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প, বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস-এর আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্প। এছাড়া সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলাধীন ব্রাক্ষ্মণগ্রাম-হাটপাঁচিল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় যমুনা নদীর ডানতীর সংরক্ষণ এবং বেতিল স্পার-১ ও এনায়েতপুর স্পার-২ শক্তিশালীকরণ কাজ প্রকল্প, ঠাকুরগাঁও জেলার টাঙ্গন ব্যারেজ, বুড়িবাঁধ ও ভুল্লিবাঁধ সেচ প্রকল্পগুলো পুনর্বাসন, নদী তীর সংরক্ষণ ও সম্মিলিত পানি নিয়ন্ত্রণ অবকাঠামো প্রকল্প এবং বাখরাবাদ-মেঘনাঘাট-হরিপুর গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণ প্রকল্প।

image
আরও খবর
জাতিসংঘের ৭৬তম সাধারণ পরিষদের সহ-সভাপতি বাংলাদেশ
দুর্নীতি নয়, দুর্নীতির তথ্য প্রকাশে বেশি নিয়ন্ত্রণ সরকারের
দেশে করোনার টিকা নিয়েছেন ১ কোটি ৪৮ লাখ ৭৫৬ জন
সরকারি স্থাপনায় মশার লার্ভা পেলে ৪ গুণ জরিমানা মেয়র তাপস
সংসদ ভবন এলাকায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
আমদানি-রপ্তানি শুরুর ব্যবস্থা নিতে দাবি দু’দেশের ব্যবসায়ীদের
বিএনপি হয়তো বজ্রপাতে মৃত্যুর দায়ও সরকারকে দেবে কাদের
শাজাহান খান ও শাহাবুদ্দিন মোল্লা, পরস্পরের পদত্যাগ দাবি
মেগা প্রজেক্ট হয়, মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হয় না মির্জা ফখরুল
টেকনাফে পাহাড় কেটে রোহিঙ্গা ক্যাম্প নির্মাণ
১৭৬ কোটি টাকা জালিয়াতি ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

বুধবার, ০৯ জুন ২০২১ , ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২৭ শাওয়াল ১৪৪২

১৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩০টি সাইলো নির্মাণ করা হবে

বাসস

image

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) দেশের বিভিন্ন স্থানে ধান শুকানো, সংরক্ষণ ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক সুবিধাসম্বলিত আধুনিক মানের ৩০টি সাইলো নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৪০০ কোটি ২২ লাখ টাকা। মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এনইসি সভাকক্ষে একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এই প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে সভায় যুক্ত হন। সভাশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান প্রকল্পের বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, একনেকে ৬ হাজার ৬৫১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে  ১০টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৫ হাজার ২১৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থাকবে ৭৯৪ কোটি ৩ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক অর্থায়ন সহায়তা পাওয়া যাবে ৬৩৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে ধান শুকানো, সংরক্ষণ ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক সুবিধাদিসহ আধুনিক মানের সাইলো নির্মাণের লক্ষ্যে যে প্রকল্প নেয়া হয়েছে, এর আওতায় প্রাথমিকভাবে ৩০টি সাইলো নির্মাণ করা হবে।

খাদ্য অধিদপ্তর জুলাই, ২০২১ থেকে ডিসেম্বর ২০২৩ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

প্রকল্পের আওতায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় ২৪ জেলায় ৩০টি উপজেলায় ৩০টি সাইলো নির্মাণ হবে। এতে আগামী ৩ বছরের মধ্যে সরকারি খাদ্য ব্যবস্থাপনা দেড় লাখ টন ধারণ ক্ষমতায় উন্নীত হবে। আধুনিক মানের সাইলো তৈরির ফলে সারাবছর কৃষকের কাছে হতে সরাসরি ধান ক্রয়ের সুযোগ হবে। কৃষক সহজেই সরকারি খাদ্য গুদামে ধান বিক্রয় করতে উৎসাহিত হবেন এবং উৎপাদিত ধানের ন্যায্য মূল্য পাবেন। অধিকন্তু, কীটনাশকবিহীন মজুদ ব্যবস্থার মাধ্যমে ২ থেকে ৩ বছর শস্যের পুষ্টিমান বজায় রেখে খাদ্য মজুদ ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হবে।

এমএ মান্নান জানান, প্রধানমন্ত্রী ভোলা, পটুয়াখালী ও বগুড়ার মতো এলাকা যেখানে ফসল বেশি উৎপাদন হয় সেখানে সাইলো নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নদীর নাব্যতা নিশ্চিত করতে নিয়মিতভাবে নদীর রক্ষণাবেক্ষণ ড্রেজিং পরিচালনার ওপর আবারও জোর দিয়েছেন। পানির স্বাভাবিক প্রবাহের ক্ষেত্রে কোন অপ্রাকৃত বাধা যেন তৈরি না করতে পারে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকতে বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী পুষ্টিসম্পন্ন ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য আলু বীজ, শাকসবজি এবং অন্যান্য ফসলের ক্ষেত্রে দেশে টিস্যু কালচার পদ্ধতিতে চাষাবাদ বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

৩৪৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে  বিপিএটিসির প্রশিক্ষণ সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের প্রথম সংশোধনী অনুমোদনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী ২ থেকে ৩ মাসের পরিবর্তে ১০ মাসভিত্তিক কোর্স করার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেছেন। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বিপিএটিসির কার্যক্রম আরও বাড়বে বলে প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এক প্রশ্নের উত্তরে মান্নান জানান, কোভিড-১৯ অতিমারীর ক্ষতিকর প্রভাব নিরুপণে সরকার আরও একটি সমীক্ষা চালাবে। চিলমারীতে নদীর বন্দর প্রকল্পটি  প্রতিবেশি দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

অপর এক প্রশ্নের উত্তরে পরিসংখ্যান ও তথ্য বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) দেশে দারিদ্র্য নির্ধারণে তাৎক্ষণিক সমীক্ষা করে না। তিনি জানান, আয় এবং ব্যয়ের সর্বশেষ খানা জরিপ ২০১৬ সালে করা হয় এবং পরবর্তী সমীক্ষার ফলাফল এক বছরের মধ্যে পাওয়া যাবে।

একনেকে অনুমোদিত অন্য প্রকল্পসমূহ হলো- বরিশাল লক্ষ্মীপাশা-দুমকির ২৭তম কিলোমিটারে পা-ব-পায়রা নদীর উপর নলুয়া-বাহেরচর সেতু নির্মাণ প্রকল্প, মধুপুর-ময়মনসিংহ জাতীয় মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প, চিলমারী এলাকায় নদীবন্দর নির্মাণ প্রকল্প, বিপিএটিসির প্রশিক্ষণ সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প, বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস-এর আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্প। এছাড়া সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলাধীন ব্রাক্ষ্মণগ্রাম-হাটপাঁচিল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় যমুনা নদীর ডানতীর সংরক্ষণ এবং বেতিল স্পার-১ ও এনায়েতপুর স্পার-২ শক্তিশালীকরণ কাজ প্রকল্প, ঠাকুরগাঁও জেলার টাঙ্গন ব্যারেজ, বুড়িবাঁধ ও ভুল্লিবাঁধ সেচ প্রকল্পগুলো পুনর্বাসন, নদী তীর সংরক্ষণ ও সম্মিলিত পানি নিয়ন্ত্রণ অবকাঠামো প্রকল্প এবং বাখরাবাদ-মেঘনাঘাট-হরিপুর গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণ প্রকল্প।