ভারতে টিকটকের ফাঁদে ফেলে পাচার করা এক তরুণীকে ৭৭ দিন আটকে নির্যাতনের ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন টিকটক গ্রুপের সদস্য মেহেদি হাসান বাবু এবং মহিউদ্দিন। গতকাল ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাস ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এর আগে নির্যাতনের ঘটনায় র্যাবের হাতে আটক হওয়া আশরাফুল ম-ল ওরফে বস রাফি এবং আব্দুর রহমান শেখ ওরফে আরমানও জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে ভারতে নারী পাচারের নানা কথাও তুলে ধরেন তারা।
ভারতে পাচার হয়ে নির্যাতনের শিকার হওয়া এক তরুণী দেশে ফিরে গত ১ জুন হাতিরঝিল থানায় টিকটক গ্রুপের ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে। তারা হলেনÑ রিফাদুল ইসলাম হৃদয়, আনিস, আবদুল কাদের, মেহেদী হাসান বাবু, মহিউদ্দিন, হারুন বকুল ওরফে ছোট খোকন, সবুজ, রুবেল ওরফে রাহুল, সোনিয়া, আকিল ও ডালিম। পুলিশ অভিযান চালিয়ে মামলার আসামি মেহেদী হাসান বাবু, মহিউদ্দিন এবং আব্দুল কাদেরকে গ্রেপ্তার করে। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে ১ হাজারের বেশি নারীকে ভারতে পাচারের অভিযোগ ওঠে। সিনেমার নায়িকা ও মডেল বানানোসহ বিভিন্ন প্রলোভনে নারীদের ভারতে অবৈধভাবে পাচার করা হতো বলে মামলায় অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী নারী। গত ৩ জুন মেহেদী হাসান বাবু, মহিউদ্দিন এবং আব্দুল কাদেরের ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। বুধবার সেই রিমান্ড শেষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামিদের আদালতে হাজির করেন। এ সময় মেহেদি হাসান বাবু ও মহিউদ্দিন স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ডের আবেদন করেন তিনি। অপরদিকে, আব্দুল কাদেরকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। এরপর তিনজনকেই জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক। এদিকে মঙ্গলবার আমিরুল ইসলাম ও আবদুস সালাম মোল্লার ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
ভারতের বেঙ্গালুরুতে বাংলাদেশের এক তরুণীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের বেঙ্গালুরু পুলিশ রিফাজুল ইসলাম বাবু ওরফে টিকটক বাবু ওরফে হৃদয় বাবু, সাগর, মোহাম্মদ বাবা শেখ ও দুই নারীসহ মোট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে। এর সূত্র ধরে র্যাব টিকটক গ্রুপের প্রধান আশরাফুল ইসলাম ওরফে বস রাফি, সহযোগী আব্দুর রহমান শেখ আরমান, ম্যাডাম সাহিদা এবং মো. ইসমাইল সরদারকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। গত মঙ্গলবার দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন বস রাফি ও তার সহযোগী আব্দুর রহমান শেখ ওরফে আরমান। র্যাবের তদন্তে বেরিয়ে আসে টিকটক হৃদয়, মেহেদী হাসান বাবুসহ গ্রেপ্তারকৃতরা বস রাফির হয়ে কাজ করতেন। বস রাফি ভারত ও বাংলাদেশে কমপক্ষে ৫০টি গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ করেন। বস রাফি গত ৮ বছরে ৫ শতাধিক মেয়েকে ভারতসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করেছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠা রিসোর্টে টিকটক গ্রুপের নানা ধরনের পার্টি হয়। এসব পার্টিতে আমন্ত্রণ জানানো হয় মেয়েদের। সেখান থেকে তাদের নানা কৌশলে সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে পাচার করা হয়।
বৃহস্পতিবার, ১০ জুন ২০২১ , ২৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২৮ শাওয়াল ১৪৪২
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
ভারতে টিকটকের ফাঁদে ফেলে পাচার করা এক তরুণীকে ৭৭ দিন আটকে নির্যাতনের ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন টিকটক গ্রুপের সদস্য মেহেদি হাসান বাবু এবং মহিউদ্দিন। গতকাল ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাস ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এর আগে নির্যাতনের ঘটনায় র্যাবের হাতে আটক হওয়া আশরাফুল ম-ল ওরফে বস রাফি এবং আব্দুর রহমান শেখ ওরফে আরমানও জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে ভারতে নারী পাচারের নানা কথাও তুলে ধরেন তারা।
ভারতে পাচার হয়ে নির্যাতনের শিকার হওয়া এক তরুণী দেশে ফিরে গত ১ জুন হাতিরঝিল থানায় টিকটক গ্রুপের ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে। তারা হলেনÑ রিফাদুল ইসলাম হৃদয়, আনিস, আবদুল কাদের, মেহেদী হাসান বাবু, মহিউদ্দিন, হারুন বকুল ওরফে ছোট খোকন, সবুজ, রুবেল ওরফে রাহুল, সোনিয়া, আকিল ও ডালিম। পুলিশ অভিযান চালিয়ে মামলার আসামি মেহেদী হাসান বাবু, মহিউদ্দিন এবং আব্দুল কাদেরকে গ্রেপ্তার করে। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে ১ হাজারের বেশি নারীকে ভারতে পাচারের অভিযোগ ওঠে। সিনেমার নায়িকা ও মডেল বানানোসহ বিভিন্ন প্রলোভনে নারীদের ভারতে অবৈধভাবে পাচার করা হতো বলে মামলায় অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী নারী। গত ৩ জুন মেহেদী হাসান বাবু, মহিউদ্দিন এবং আব্দুল কাদেরের ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। বুধবার সেই রিমান্ড শেষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামিদের আদালতে হাজির করেন। এ সময় মেহেদি হাসান বাবু ও মহিউদ্দিন স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ডের আবেদন করেন তিনি। অপরদিকে, আব্দুল কাদেরকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। এরপর তিনজনকেই জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক। এদিকে মঙ্গলবার আমিরুল ইসলাম ও আবদুস সালাম মোল্লার ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
ভারতের বেঙ্গালুরুতে বাংলাদেশের এক তরুণীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের বেঙ্গালুরু পুলিশ রিফাজুল ইসলাম বাবু ওরফে টিকটক বাবু ওরফে হৃদয় বাবু, সাগর, মোহাম্মদ বাবা শেখ ও দুই নারীসহ মোট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে। এর সূত্র ধরে র্যাব টিকটক গ্রুপের প্রধান আশরাফুল ইসলাম ওরফে বস রাফি, সহযোগী আব্দুর রহমান শেখ আরমান, ম্যাডাম সাহিদা এবং মো. ইসমাইল সরদারকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। গত মঙ্গলবার দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন বস রাফি ও তার সহযোগী আব্দুর রহমান শেখ ওরফে আরমান। র্যাবের তদন্তে বেরিয়ে আসে টিকটক হৃদয়, মেহেদী হাসান বাবুসহ গ্রেপ্তারকৃতরা বস রাফির হয়ে কাজ করতেন। বস রাফি ভারত ও বাংলাদেশে কমপক্ষে ৫০টি গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ করেন। বস রাফি গত ৮ বছরে ৫ শতাধিক মেয়েকে ভারতসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করেছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠা রিসোর্টে টিকটক গ্রুপের নানা ধরনের পার্টি হয়। এসব পার্টিতে আমন্ত্রণ জানানো হয় মেয়েদের। সেখান থেকে তাদের নানা কৌশলে সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে পাচার করা হয়।