ভারতে ফের দৈনিক মৃত্যু ৪ হাজার ছাড়ালো

মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ে ৭১৯ চিকিৎসকের মৃত্যু

করোনা মহামারীতে বিপর্যস্ত ভারত কয়েকদিন মোটামুটি কমতির দিকে থাকলেও ফের বাড়ছে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা। কয়েকদিন আগে দৈনিক মৃত্যু প্রায় দুই হাজারের কোঠায় নেমে এলেও গতকালও ফের তা ছাড়িয়েছে চার হাজারেরও বেশি। তবে আগের দিনের তুলনায় কমেছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা। একই সঙ্গে কমেছে সক্রিয় রোগীর সংখ্যাও। এএনআই

গতকাল ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৮৪ হাজার ৩৩২ জন মানুষ। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন সংক্রমিত রোগী কমেছে ৭ হাজারের বেশি। সর্বশেষ এ সংখ্যাসহ মহামারীর শুরু থেকে দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৯৩ লাখ ৫৯ হাজার ১৫৫ জনে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪ হাজার ২ জন। আগের দিনের তুলনায় মৃত্যু বেড়েছে প্রায় ৬০০। মহামারীর শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৩ লাখ ৬৭ হাজার ৮১ জন।

দৈনিক আক্রান্তের থেকে বেশি মানুষ সুস্থ হয়ে ওঠাতেই ভারতে প্রতিদিনই কমছে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা। এক সময় দেশটিতে ৩৭ লাখের বেশি সক্রিয় রোগী থাকলেও কমতে কমতে সেই সংখ্যা নেমে এসেছে ১০ লাখের ঘরে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে সক্রিয় রোগী কমেছে প্রায় ৪১ হাজার। দেশটিতে এখন মোট সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১০ লাখ ৮০ হাজার ৬৯০ জন। দৈনিক মৃত্যু হঠাৎ করে বাড়লেও ভারতে সংক্রমণের হার মোটামুটি নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। গত ৫ দিন ধরেই দেশটির সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের নিচে রয়েছে। দেশে নতুন আক্রান্তের থেকে সুস্থ বেশি হওয়ায় কমছে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা। প্রায় মাসখানেক ধরেই তা ধারাবাহিক ভাবে কমছে। গত মে মাসের তুলনায় জুন মাসের শুরু থেকেই গতি পেয়েছে ভারতের করোনা টিকাদান কর্মসূচিতে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে টিকা পেয়েছেন ৩৪ লাখ ৩৩ হাজারেরও বেশি মানুষ। এ নিয়ে দেশে মোট টিকা দেয়া হয়েছে প্রায় ২৫ কোটি মানুষকে। এদিকে, কোভিড-১৯ মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত ভারতে এখন পর্যন্ত ৭১৯ জন চিকিৎসক মারা গেছেন বলে জানিয়েছে দ্য ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)।

সবচেয়ে বেশি চিকিৎসক মারা গেছেন বিহার রাজ্যে। তারপরই রাজধানী দিল্লির অবস্থান। আইএমএর তথ্যানুযায়ী বিহারে ১১১ জন, দিল্লিতে ১০৯ জন, উত্তর প্রদেশে ৭৯ জন, পশ্চিমবঙ্গে ৬৩ এবং রাজস্থানে ৪৩ জন চিকিৎসক মারা গেছেন। এছাড়া অন্ধ্রপ্রদেশে ৩৫ জন, তেলেঙ্গানায় ৩৬ জন, তামিলনাড়ুতে ৩২ জন, কেরালায় ২৪ জন এবং কর্নাটকে ৯ জন চিকিৎসকের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে।

কোভিড-১৯ মহামারী বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ার পর ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা। যাদের এই মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সম্মুখসারির যোদ্ধা বলা হচ্ছে। নিজের জীবনের পরোয়া না করে তারা রোগীদের প্রাণ রক্ষা করতে দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।

এ বছরের শুরুতে বেশ খানিকটা কমে এলেও গত মার্চ থেকে ভারতে পুনরায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়তে থাকে। যাকে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ বলা হচ্ছে। এপ্রিল নাগাদ সংক্রমণের বিস্তার লাগামহীন অবস্থায় পৌঁছায়। ওই সময়ে দেশটিতে টানা কয়েক দিন দৈনিক চার লাখের বেশি নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল।

বর্তমানে দৈনিক শনাক্ত এক লাখের নিচে নেমে এসেছে। কিন্তু দৈনিক মৃত্যু এখনো অনেক বেশি।

image

করোনায় বিধ্বস্ত ভারতে কয়েকদিন মোটামুটি মৃত্যু কম থাকলেও ফের বাড়ছে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা। মৃত এক ব্যক্তিকে নিয়ে যাচ্ছেন স্বজনেরা -রয়টার্স

আরও খবর
জনসনের ৬ কোটি ডোজ টিকা ব্যবহারের উপযোগী নয়
ভারতে আবারও তীব্র হচ্ছে কৃষক আন্দোলন
বাইডেনের হুঁশিয়ারির জবাব দিলেন পুতিন
জম্মু-কাশ্মীরে হামলায় দুই পুলিশসহ নিহত ৪

রবিবার, ১৩ জুন ২০২১ , ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ৩১ রজব ১৪৪২

ভারতে ফের দৈনিক মৃত্যু ৪ হাজার ছাড়ালো

মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ে ৭১৯ চিকিৎসকের মৃত্যু

image

করোনায় বিধ্বস্ত ভারতে কয়েকদিন মোটামুটি মৃত্যু কম থাকলেও ফের বাড়ছে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা। মৃত এক ব্যক্তিকে নিয়ে যাচ্ছেন স্বজনেরা -রয়টার্স

করোনা মহামারীতে বিপর্যস্ত ভারত কয়েকদিন মোটামুটি কমতির দিকে থাকলেও ফের বাড়ছে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা। কয়েকদিন আগে দৈনিক মৃত্যু প্রায় দুই হাজারের কোঠায় নেমে এলেও গতকালও ফের তা ছাড়িয়েছে চার হাজারেরও বেশি। তবে আগের দিনের তুলনায় কমেছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা। একই সঙ্গে কমেছে সক্রিয় রোগীর সংখ্যাও। এএনআই

গতকাল ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৮৪ হাজার ৩৩২ জন মানুষ। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন সংক্রমিত রোগী কমেছে ৭ হাজারের বেশি। সর্বশেষ এ সংখ্যাসহ মহামারীর শুরু থেকে দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৯৩ লাখ ৫৯ হাজার ১৫৫ জনে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪ হাজার ২ জন। আগের দিনের তুলনায় মৃত্যু বেড়েছে প্রায় ৬০০। মহামারীর শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৩ লাখ ৬৭ হাজার ৮১ জন।

দৈনিক আক্রান্তের থেকে বেশি মানুষ সুস্থ হয়ে ওঠাতেই ভারতে প্রতিদিনই কমছে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা। এক সময় দেশটিতে ৩৭ লাখের বেশি সক্রিয় রোগী থাকলেও কমতে কমতে সেই সংখ্যা নেমে এসেছে ১০ লাখের ঘরে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে সক্রিয় রোগী কমেছে প্রায় ৪১ হাজার। দেশটিতে এখন মোট সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১০ লাখ ৮০ হাজার ৬৯০ জন। দৈনিক মৃত্যু হঠাৎ করে বাড়লেও ভারতে সংক্রমণের হার মোটামুটি নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। গত ৫ দিন ধরেই দেশটির সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের নিচে রয়েছে। দেশে নতুন আক্রান্তের থেকে সুস্থ বেশি হওয়ায় কমছে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা। প্রায় মাসখানেক ধরেই তা ধারাবাহিক ভাবে কমছে। গত মে মাসের তুলনায় জুন মাসের শুরু থেকেই গতি পেয়েছে ভারতের করোনা টিকাদান কর্মসূচিতে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে টিকা পেয়েছেন ৩৪ লাখ ৩৩ হাজারেরও বেশি মানুষ। এ নিয়ে দেশে মোট টিকা দেয়া হয়েছে প্রায় ২৫ কোটি মানুষকে। এদিকে, কোভিড-১৯ মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত ভারতে এখন পর্যন্ত ৭১৯ জন চিকিৎসক মারা গেছেন বলে জানিয়েছে দ্য ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)।

সবচেয়ে বেশি চিকিৎসক মারা গেছেন বিহার রাজ্যে। তারপরই রাজধানী দিল্লির অবস্থান। আইএমএর তথ্যানুযায়ী বিহারে ১১১ জন, দিল্লিতে ১০৯ জন, উত্তর প্রদেশে ৭৯ জন, পশ্চিমবঙ্গে ৬৩ এবং রাজস্থানে ৪৩ জন চিকিৎসক মারা গেছেন। এছাড়া অন্ধ্রপ্রদেশে ৩৫ জন, তেলেঙ্গানায় ৩৬ জন, তামিলনাড়ুতে ৩২ জন, কেরালায় ২৪ জন এবং কর্নাটকে ৯ জন চিকিৎসকের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে।

কোভিড-১৯ মহামারী বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ার পর ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা। যাদের এই মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সম্মুখসারির যোদ্ধা বলা হচ্ছে। নিজের জীবনের পরোয়া না করে তারা রোগীদের প্রাণ রক্ষা করতে দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।

এ বছরের শুরুতে বেশ খানিকটা কমে এলেও গত মার্চ থেকে ভারতে পুনরায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়তে থাকে। যাকে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ বলা হচ্ছে। এপ্রিল নাগাদ সংক্রমণের বিস্তার লাগামহীন অবস্থায় পৌঁছায়। ওই সময়ে দেশটিতে টানা কয়েক দিন দৈনিক চার লাখের বেশি নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল।

বর্তমানে দৈনিক শনাক্ত এক লাখের নিচে নেমে এসেছে। কিন্তু দৈনিক মৃত্যু এখনো অনেক বেশি।