বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ‘গার্ড অব অনারে’ নারী কর্মকর্তায় আপত্তি সংসদীয় কমিটির

বীর মুক্তিযোদ্ধারা মারা যাওয়ার পর ‘গার্ড অব অনার’ প্রদানে নারী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) বিকল্প চায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। যেসব জায়গায় নারী ইউএনও রয়েছেন, সেখানে পুরুষ কোন ব্যক্তিকে দিয়ে গার্ড অব অনার প্রদানের সুপারিশ করার কথা বলেছে। পাশাপাশি গার্ড অব অনার প্রদানের ক্ষেত্রে দিনের বেলায় আয়োজন করার সুপারিশ করা হয়। গতকাল সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এসব ?সুপারিশ করা হয়।

কমিটির সভাপতি শাজাহান খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে সদস্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক, রাজি উদ্দিন আহমেদ, মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম, কাজী ফিরোজ রশীদ, ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল এবং মোছলেম উদ্দিন আহমদ অংশগ্রহণ করেন।

এ প্রসঙ্গে কমিটির সভাপতি শাজাহান খান বলেন, ‘মহিলা ইউএনও গার্ড অব অনার দিতে গেলে স্থানীয় পর্যায়ে অনেকে প্রশ্ন তোলেন। মহিলারা তো জানাজায় থাকতে পারেন না। সেক্ষেত্রে মহিলা গার্ড অব অনার দেন এরকম একটি ব্যাপার আর কি। সেজন্য এ বিষয়ে বৈঠকে একটি প্রস্তাব এসেছে। মহিলার বিকল্প একজন পুরুষকে দিয়ে গার্ড অব অনার দেয়ার বিষয়টি এসেছে। আমরা মন্ত্রণালয়কে এটা পরীক্ষা করে দেখতে বলেছি।’

বৈঠকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে ‘জিয়া শিশুপার্ক’-এর স্থানে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের সুপারিশ করেছে কমিটি। এ প্রসঙ্গে কমিটির সভাপতি বলেন, ‘সার্কিট হাউজের সামনের যে জায়গাটিতে পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিল, সেখানে জিয়াউর রহমান শিশুপার্ক করা হয়েছে। আমরা সেখানে আত্মসমর্পণের স্মৃতি রক্ষার্থে একটি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপনের সুপারিশ করেছি। আমরা বলেছি, সেখানে যে কক্ষটিতে জিয়াউর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে, সেটা সংরক্ষিত থাকবে। কিন্তু শিশুপার্কের স্থলে স্মৃতিস্তম্ভ হবে।’

দ্রুত সময়ের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের পূর্ণাঙ্গ তালিকা সম্পন্ন করার পাশাপাশি রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ করার সুপারিশ করা হয় বৈঠকে। এছাড়া নির্ধারিত হাসপাতালে মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করাসহ ওষুধ খরচ বাবদ নির্ধারিত ৫০ হাজার টাকা থেকে ৭৫ হাজার টাকায় উন্নীতকরণ এবং বিশেষায়িত সরকারি হাসপাতালগুলোতে শতভাগ পরীক্ষা- নিরীক্ষা বিনামূল্যে করার বিষয়ে সংশোধিত নীতিমালাটি আগামী বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়।

বৈঠকে কিছু জায়গায় বিভিন্ন দিবসে স্বাধীনতাবিরোধীদের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন সম্পর্কিত ঘটনার সমাধানের লক্ষ্যে সমস্যার বিবরণীর একটি সারসংক্ষেপ ক্যাবিনেটে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংজ্ঞা সংগ্রহ ও চিহ্নিত রাজাকারের পরবর্তী প্রজন্মকে সরকারি চাকরি প্রদানের ক্ষেত্রে বৈঠকে আন্তর্জাতিক নীতিমালা অনুসরণের সুপারিশ করা হয়।

সোমবার, ১৪ জুন ২০২১ , ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২ জিলকদ ১৪৪২

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ‘গার্ড অব অনারে’ নারী কর্মকর্তায় আপত্তি সংসদীয় কমিটির

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

বীর মুক্তিযোদ্ধারা মারা যাওয়ার পর ‘গার্ড অব অনার’ প্রদানে নারী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) বিকল্প চায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। যেসব জায়গায় নারী ইউএনও রয়েছেন, সেখানে পুরুষ কোন ব্যক্তিকে দিয়ে গার্ড অব অনার প্রদানের সুপারিশ করার কথা বলেছে। পাশাপাশি গার্ড অব অনার প্রদানের ক্ষেত্রে দিনের বেলায় আয়োজন করার সুপারিশ করা হয়। গতকাল সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এসব ?সুপারিশ করা হয়।

কমিটির সভাপতি শাজাহান খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে সদস্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক, রাজি উদ্দিন আহমেদ, মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম, কাজী ফিরোজ রশীদ, ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল এবং মোছলেম উদ্দিন আহমদ অংশগ্রহণ করেন।

এ প্রসঙ্গে কমিটির সভাপতি শাজাহান খান বলেন, ‘মহিলা ইউএনও গার্ড অব অনার দিতে গেলে স্থানীয় পর্যায়ে অনেকে প্রশ্ন তোলেন। মহিলারা তো জানাজায় থাকতে পারেন না। সেক্ষেত্রে মহিলা গার্ড অব অনার দেন এরকম একটি ব্যাপার আর কি। সেজন্য এ বিষয়ে বৈঠকে একটি প্রস্তাব এসেছে। মহিলার বিকল্প একজন পুরুষকে দিয়ে গার্ড অব অনার দেয়ার বিষয়টি এসেছে। আমরা মন্ত্রণালয়কে এটা পরীক্ষা করে দেখতে বলেছি।’

বৈঠকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে ‘জিয়া শিশুপার্ক’-এর স্থানে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের সুপারিশ করেছে কমিটি। এ প্রসঙ্গে কমিটির সভাপতি বলেন, ‘সার্কিট হাউজের সামনের যে জায়গাটিতে পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিল, সেখানে জিয়াউর রহমান শিশুপার্ক করা হয়েছে। আমরা সেখানে আত্মসমর্পণের স্মৃতি রক্ষার্থে একটি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপনের সুপারিশ করেছি। আমরা বলেছি, সেখানে যে কক্ষটিতে জিয়াউর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে, সেটা সংরক্ষিত থাকবে। কিন্তু শিশুপার্কের স্থলে স্মৃতিস্তম্ভ হবে।’

দ্রুত সময়ের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের পূর্ণাঙ্গ তালিকা সম্পন্ন করার পাশাপাশি রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ করার সুপারিশ করা হয় বৈঠকে। এছাড়া নির্ধারিত হাসপাতালে মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করাসহ ওষুধ খরচ বাবদ নির্ধারিত ৫০ হাজার টাকা থেকে ৭৫ হাজার টাকায় উন্নীতকরণ এবং বিশেষায়িত সরকারি হাসপাতালগুলোতে শতভাগ পরীক্ষা- নিরীক্ষা বিনামূল্যে করার বিষয়ে সংশোধিত নীতিমালাটি আগামী বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়।

বৈঠকে কিছু জায়গায় বিভিন্ন দিবসে স্বাধীনতাবিরোধীদের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন সম্পর্কিত ঘটনার সমাধানের লক্ষ্যে সমস্যার বিবরণীর একটি সারসংক্ষেপ ক্যাবিনেটে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংজ্ঞা সংগ্রহ ও চিহ্নিত রাজাকারের পরবর্তী প্রজন্মকে সরকারি চাকরি প্রদানের ক্ষেত্রে বৈঠকে আন্তর্জাতিক নীতিমালা অনুসরণের সুপারিশ করা হয়।