ঘাতক এএসআইর দায় স্বীকার

কুষ্টিয়ায় দ্বিতীয় স্ত্রী, সৎ সন্তান ও এক যুবককে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা মামলার আসামি সহকারী উপ-পুলিশ পরিদর্শক সৌমেন কুমার রায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। কুষ্টিয়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিমের আদালতে এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

তিন খুনের ঘটনার অভিযোগে গ্রেপ্তার পুলিশের সাময়িক বরখাস্ত এএসআই সৌমেন কুমার রায়কে আদালতে তোলা হয়। সোমবার দুপুর ১টায় কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক রেজাউল হকের আদালতে তোলা হয় তাকে। বিচারকের খাস কামরায় শুনানি শেষে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন সৌমেন। তার জবানবন্দি রেকর্র্ড করেন বিচারক। এরপর তা লিপিবদ্ধ করা হয়।

আসমার সঙ্গে অন্য কোন পুরুষের সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি সৌমেন। তাই ক্ষোভ থেকে গুলি চালিয়ে হত্যা করেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করা আসমা খাতুন ও শাকিলকে। তবে রবিনকে হত্যা করে অনুতপ্ত সৌমেন। কুষ্টিয়ার আদালতে বিচারকের সামনে দেয়া জবানবন্দিতে সৌমেন এসব কথা বলেছেন। আদালতের একটি সূত্র জানিয়েছে, খুলনা থেকে মূলত আসেন আসমাকে নিয়ে যেতে। কুমারখালীর বাগুলাট ইউনিয়নের নাতুড়িয়া নানাবাড়ি অবস্থান করা আসমা রোববার রবিনকে সঙ্গে নিয়ে শহরের বাসায় আসেন। বাসায় যান সৌমেনও।

মালামাল গুছিয়ে তারা রওনা দেয়ার জন্য বের হলে আসমা পথের মধ্যে যাবে না বাগড়া দেয়। এ সময় কয়েকবার কথা কাটাকাটি হয়। পরে শাকিলের সঙ্গে যোগযোগ করে এক সঙ্গে হক কাস্টমস মোড়ে। সেখানে বাদানুবাদের একপর্যায়ে গুলি করে হত্যা করেন আসমা, শাকিল ও রবিনকে। প্রথমে কাউকে হত্যা করার উদ্দেশ্য ছিল না বলে জানায় সে।

পরিস্থিতিতে পড়ে সে হত্যা করে আসমা, শাকিল ও রবিনকে। কুষ্টিয়া মডেল থানায় যে মামলা হয়েছে তাতে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে থানার ওসি (তদন্ত) নিশিকান্তকে। তিনি আদালতে সাংবাদিকদের বলেন, ‘মামলার আসামি সৌমেন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। সে একাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। বিস্তারিত বলেছে আদালতে। জবানবন্দি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল ইসলাম বলেন, থানায় মামলা হয়েছে। মামলার আসামি সৌমেনকে আদালতে তোলা হয়। সে দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। মামলাটি তদন্ত শুরু হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে আদালতে চার্জশিট দেয়া হবে। জবানবন্দি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলায় বাদী ন্যায়বিচার পাবে বলে আমরা আশা করছি। পুলিশ ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে।

এর আগে সরকারি পিস্তল দিয়ে গুলি করে ৩ জনকে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত খুলনা ফুলতলা থানার বরখাস্ত হওয়া এএসআই সৌমেন কুমার রায়কে সোমবার দুপুর ১টার দিকে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. রেজাউল করিমের আদালতে হাজির করা হয়। কড়া প্রহরা সৌমেনকে আদালতে প্রাঙ্গণে আনা হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি (তদন্ত) নিশিকান্ড সরকার জানান, তিনজনকেই গুলি করে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সৌমেনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি আবেদন করা হলে বিচারক তার জবানবন্দি রেকর্ড করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

মঙ্গলবার, ১৫ জুন ২০২১ , ১ আষাড় ১৪২৮ ৩ জিলকদ ১৪৪২

কুষ্টিয়ায় গুলি করে ৩ জনকে হত্যা

ঘাতক এএসআইর দায় স্বীকার

জেলা বার্তা পরিবেশক, কুষ্টিয়া

কুষ্টিয়ায় দ্বিতীয় স্ত্রী, সৎ সন্তান ও এক যুবককে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা মামলার আসামি সহকারী উপ-পুলিশ পরিদর্শক সৌমেন কুমার রায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। কুষ্টিয়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিমের আদালতে এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

তিন খুনের ঘটনার অভিযোগে গ্রেপ্তার পুলিশের সাময়িক বরখাস্ত এএসআই সৌমেন কুমার রায়কে আদালতে তোলা হয়। সোমবার দুপুর ১টায় কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক রেজাউল হকের আদালতে তোলা হয় তাকে। বিচারকের খাস কামরায় শুনানি শেষে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন সৌমেন। তার জবানবন্দি রেকর্র্ড করেন বিচারক। এরপর তা লিপিবদ্ধ করা হয়।

আসমার সঙ্গে অন্য কোন পুরুষের সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি সৌমেন। তাই ক্ষোভ থেকে গুলি চালিয়ে হত্যা করেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করা আসমা খাতুন ও শাকিলকে। তবে রবিনকে হত্যা করে অনুতপ্ত সৌমেন। কুষ্টিয়ার আদালতে বিচারকের সামনে দেয়া জবানবন্দিতে সৌমেন এসব কথা বলেছেন। আদালতের একটি সূত্র জানিয়েছে, খুলনা থেকে মূলত আসেন আসমাকে নিয়ে যেতে। কুমারখালীর বাগুলাট ইউনিয়নের নাতুড়িয়া নানাবাড়ি অবস্থান করা আসমা রোববার রবিনকে সঙ্গে নিয়ে শহরের বাসায় আসেন। বাসায় যান সৌমেনও।

মালামাল গুছিয়ে তারা রওনা দেয়ার জন্য বের হলে আসমা পথের মধ্যে যাবে না বাগড়া দেয়। এ সময় কয়েকবার কথা কাটাকাটি হয়। পরে শাকিলের সঙ্গে যোগযোগ করে এক সঙ্গে হক কাস্টমস মোড়ে। সেখানে বাদানুবাদের একপর্যায়ে গুলি করে হত্যা করেন আসমা, শাকিল ও রবিনকে। প্রথমে কাউকে হত্যা করার উদ্দেশ্য ছিল না বলে জানায় সে।

পরিস্থিতিতে পড়ে সে হত্যা করে আসমা, শাকিল ও রবিনকে। কুষ্টিয়া মডেল থানায় যে মামলা হয়েছে তাতে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে থানার ওসি (তদন্ত) নিশিকান্তকে। তিনি আদালতে সাংবাদিকদের বলেন, ‘মামলার আসামি সৌমেন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। সে একাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। বিস্তারিত বলেছে আদালতে। জবানবন্দি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল ইসলাম বলেন, থানায় মামলা হয়েছে। মামলার আসামি সৌমেনকে আদালতে তোলা হয়। সে দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। মামলাটি তদন্ত শুরু হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে আদালতে চার্জশিট দেয়া হবে। জবানবন্দি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলায় বাদী ন্যায়বিচার পাবে বলে আমরা আশা করছি। পুলিশ ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে।

এর আগে সরকারি পিস্তল দিয়ে গুলি করে ৩ জনকে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত খুলনা ফুলতলা থানার বরখাস্ত হওয়া এএসআই সৌমেন কুমার রায়কে সোমবার দুপুর ১টার দিকে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. রেজাউল করিমের আদালতে হাজির করা হয়। কড়া প্রহরা সৌমেনকে আদালতে প্রাঙ্গণে আনা হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি (তদন্ত) নিশিকান্ড সরকার জানান, তিনজনকেই গুলি করে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সৌমেনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি আবেদন করা হলে বিচারক তার জবানবন্দি রেকর্ড করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।