কে এই নাসির

ঢাকা বোট ক্লাবে চলচ্চিত্র নায়িকা পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার আবাসন ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। ছাত্রজীবন থেকে জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার সুবাদে তিনি এখন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য। রাজনীতি ও ব্যবসার সুবাধে সরকারি বিভিন্ন পদস্ত কর্মকর্তার সঙ্গে তার রয়েছে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। পুলিশ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে নানা প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে চলেফেরা নাসির মাহমুদের। এক সময় উত্তরা ক্লাবের সভাপতি ছিলেন। ঢাকা বোট ক্লাবের প্রভাবশালী সদস্য তিনি। প্রভাবশালী হলেও পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগ ওঠার পর আলোচনা শুরু হয় তাকে নিয়ে।

পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, নাসির উদ্দিন মাহমুদের পরিচয় তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেন। থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএম হলে। রাজনীতি শুরু করে শিক্ষাজীবন থেকেই। ওই সময় তিনি এসএম হলের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এরশাদের দলে যোগ দিয়ে রাজনীতি আরও পাকাপোক্ত করেন তিনি। হয়ে যান এরশাদ ঘেঁষা। এরপর তিনি জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য হন। বর্তমানে তিনি কুঞ্জ ডেভেলপার্স নামে একটি কোম্পানির চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন। এর আগে তিনি বেশ কয়েকবার উত্তরা ক্লাবের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর গত ২০১৩-১৪ সালের দিকে ঢাকা বোট ক্লাবের সদস্য হন। ঢাকা বোট ক্লাবের একবার সভাপতিও ছিলেন তিনি। অবশ্য তিনি এই ক্লাবের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্যও।

অন্যদিকে গ্রেপ্তার হওয়া অমি পরীমনির রূপসজ্জা শিল্পী জিমির বাল্যবন্ধু। জিমির সুবাধে পরীমনি অমিকে চিনে। পরীমনির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যাওয়ার বিষয়ে অমি জড়িত। মূলত ৮ জুন রাতে অমিই পরীমনিকে নিয়ে গিয়েছিল। পরীমনির সঙ্গে জিমি ছাড়াও তার ছোট বোন বনি ছিল। পরীমনির অভিযোগ অমি তাকে প্রতারণা করে বোট ক্লাবে নিয়ে গিয়েছিল। গত ৮ জুন গভীর রাতে বোট ক্লাবের ভেতরে নায়িকা পরীমনিকে হত্যা ও ধর্ষণের চেষ্টা চালান। সেই অভিযোগে গতকাল সাভারে মামলা হওয়ার পর ডিবি পুলিশ নাসির উদ্দিন মাহমুদকে উত্তরার একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে।

সেই রাতে কী ঘটেছিল?

বড় পর্দার নায়িকা পরীমনি ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনার পরই ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয় সারাদেশে। ঘটনার চারদিন পর পরীমনি মুখ খোলার পর একের পর এক বেড়িয়ে আসছে বোট ক্লাব সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তবে সেই রাতে ঢাকা বোট ক্লাবে পরীমনির সঙ্গে আসলে কী ঘটনা ঘটেছিল সে বিষয়েই আগ্রহ সবার। ক্লাব বন্ধ হওয়ায় কেন তিনি সেখানে গিয়েছিলেন? তাকেই কেনই বা হত্যা ও ধর্ষণ চেষ্টা করা হলো? অভিযুক্ত নাসির উদ্দিন মাহমুদ কী সহযোগীদের নিয়ে আগে থেকেই এমন ঘটনা ঘটানোর জন্য প্রস্তুত ছিলেন? জনমনে এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। যদিও রাত ১১টায় ক্লাব বন্ধ হওয়ার নিয়ম থাকায় ঘটনাটি পরিকল্পিতভাবেই ঘটানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে, পরীমনি ও ঘটনার সময় ক্লাবে উপস্থিত এক সদস্যের বক্তব্যে ঢাকা বোট ক্লাবে আসলে কী ঘটেছিল সেই চিত্র উঠে এসেছে। কিন্তু এ ঘটনায় গ্রেপ্তারের সময় অভিযুক্ত নাসির উদ্দিন মাহমুদ নিজেকে নির্দোষ দাবি করে উল্টো পরীমনিকে অভিযুক্ত করেছেন।

ঘটনার দিন ক্লাবটিতে উপস্থিত সদস্যদের দেয়া তথ্যানুসারে, নিয়ম অনুযায়ী রাত ১১টার সময় বন্ধ করে দেয়ার কথা ক্লাবটি। কিন্তু ভিড় বেশি থাকলে এ নিয়ম মানা হয় না। বুধবার ১১টার পরও ক্লাবটিতে ৩০-৩৫ জন উপস্থিত থাকায় ক্লাবটি বন্ধ করা হয়নি। উপস্থিত মানুষদের বেশিরভাগই নিচতলায় অবস্থান করছিলেন। যাদের মধ্যে মাত্র দুই তিনজন মহিলা ছিলেন। এ সময় ক্লাবের ২য় তলার বারে অবস্থান করছিলেন ক্লাবের কার্যনির্বাহী সদস্য অভিযুক্ত নাসির উদ্দিন মাহমুদ। এর কিছু সময় পর ২য় তলার বারে পরীমনি ও তার রূপসজ্জাশিল্পী জিমি উপস্থিত হন। তারা যাওয়ার বেশকিছুক্ষণ পর ঝগড়া শুরু হয়। নিচতলা থেকে ঝগড়াও শুনতে পান তখন রেস্টুরেন্টে উপস্থিত থাকা সদস্যরা। বেশ কিছুক্ষণ ঝগড়া চলার পর গাড়িতে উঠে চলে যান পরীমনি ও জিমি। বেশি ড্রিংক করে অনেকে অস্বাভাবিক আচরণ করায় নিরাপত্তাকর্র্মী কিংবা উপস্থিত অন্য কেউ তখন বিষয়টি গুরুত্ব দেননি।

বুধবার রাতে ক্লাবটিতে উপস্থিত থাকা সদস্য হাবিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, নিচতলা থেকেই তিনি ঝগড়ার শব্দ শুনতে পান। উপরতলার বারে নাসির উদ্দিন মাহমুদ উপস্থিত আছেন বলে জানতেন। কিন্তু পরীমনি সেখানে গিয়েছিলেন বা পরীমনির সঙ্গে অশোভন আচরণ করা হয়েছে সে বিষয়ে কিছু বুঝতে পারেননি তারা। পরে বিষয়টি গণমাধ্যমে আসার পর নিশ্চিত হয়েছেন, সেদিন পরীমনির সঙ্গেই ঝগড়া করা হয়েছে।

এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত নাসির উদ্দিন আহমেদ উত্তরা থেকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশের গাড়িতে উঠানোর আগে সাংবাদিকদের সামনে পরীমণির আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি বুধবার (৯ জুন) রাতে যখন ক্লাব থেকে বের হচ্ছিলেন তখন তারা (পরীমনি ও তার বন্ধু) ক্লাবে ঢোকে। তারা তখন মদ্যপ অবস্থায় ছিল। তাদের মধ্যে একটি ছেলে উশৃঙ্খল ছিল। ক্লাবে ঢোকার পর আমাদের বারের কাউন্টার থেকে বড় বড় ও দামি ড্রিংকসের বোতল জোর করে নেয়ার চেষ্টা করে তারা। তখন তিনি তাদের কাছে গিয়ে বলেন, আপনারা ড্রিংকসগুলা নিতে পারেন না। তিনি তাদের বাধা দেন। তিনি বলেন, এটা শুধুমাত্র ক্লাবের মেম্বারদের জন্য। এখান থেকে মদ নিতে হলে তোমাদের কোন সদস্যের অ্যাকাউন্টের বিপরীতে নিতে হবে। তারপর তিনি সিকিউরিটিদের ডাক দেন। নিরাপত্তারক্ষীরা এসে তাদের নিয়ে যায়।

তবে, নাসিরের এ অভিযোগ অস্বীকার করে গতকাল রাত সাড়ে ৮টায় বনানীর নিজ বাসায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পরীমনি বলেন, সে (নাসির) ভিকটিম হলে ৪ দিন ধরে সরি বলে কেন সমাধানের চেষ্টা করেছে। চারদিন ধরে কারও সহযোগিতা আমি পাইনি। এখন গণমাধ্যমসহ সবার যে সহযোগিতা পাচ্ছি, তাতে খুব আশাবাদী। শেষ পর্যন্ত লড়ে দেখতে চাই। নাসির উদ্দিন মাহমুদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, গত রোববার প্রথমে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ করে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেন আলোচিত এ অভিনেত্রী। প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চান তিনি। পরে রাতে সংবাদ সম্মেলনে ও পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দেন পরীমনি।

আরও খবর
ফরিদপুরে একদিনে শনাক্ত বেড়েছে ৩০০ শতাংশ
ঢাকা মেডিকেলে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস রোগী শনাক্ত
ফাইজার ও সিনোফার্মের টিকা দেয়া আগামী সপ্তাহ থেকে শুরু স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
বালিশকাণ্ডের সেই ঠিকাদারের অপকাণ্ড, কৃষকের জমিতে পুকুর খনন
দিনাজপুর-চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদায় আজ থেকে কঠোর লকডাউন
করোনা মোকাবিলায় ঝুঁকি না নিয়ে স্থানীয়ভাবে লকডাউনের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
দেশে করোনার টিকা মজুদ আছে ১ লাখ ২৬ হাজার ডোজ
গার্ড অব অনার প্রদানে নারী ইউএনওর বিকল্প সুপারিশের বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড়
ঘাতক এএসআইর দায় স্বীকার
চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত আরও তিনজনের মৃত্যু
পরীমনির মামলায় গ্রেপ্তার নাসির, অমি

মঙ্গলবার, ১৫ জুন ২০২১ , ১ আষাড় ১৪২৮ ৩ জিলকদ ১৪৪২

কে এই নাসির

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

ঢাকা বোট ক্লাবে চলচ্চিত্র নায়িকা পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার আবাসন ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। ছাত্রজীবন থেকে জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার সুবাদে তিনি এখন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য। রাজনীতি ও ব্যবসার সুবাধে সরকারি বিভিন্ন পদস্ত কর্মকর্তার সঙ্গে তার রয়েছে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। পুলিশ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে নানা প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে চলেফেরা নাসির মাহমুদের। এক সময় উত্তরা ক্লাবের সভাপতি ছিলেন। ঢাকা বোট ক্লাবের প্রভাবশালী সদস্য তিনি। প্রভাবশালী হলেও পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগ ওঠার পর আলোচনা শুরু হয় তাকে নিয়ে।

পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, নাসির উদ্দিন মাহমুদের পরিচয় তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেন। থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএম হলে। রাজনীতি শুরু করে শিক্ষাজীবন থেকেই। ওই সময় তিনি এসএম হলের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এরশাদের দলে যোগ দিয়ে রাজনীতি আরও পাকাপোক্ত করেন তিনি। হয়ে যান এরশাদ ঘেঁষা। এরপর তিনি জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য হন। বর্তমানে তিনি কুঞ্জ ডেভেলপার্স নামে একটি কোম্পানির চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন। এর আগে তিনি বেশ কয়েকবার উত্তরা ক্লাবের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর গত ২০১৩-১৪ সালের দিকে ঢাকা বোট ক্লাবের সদস্য হন। ঢাকা বোট ক্লাবের একবার সভাপতিও ছিলেন তিনি। অবশ্য তিনি এই ক্লাবের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্যও।

অন্যদিকে গ্রেপ্তার হওয়া অমি পরীমনির রূপসজ্জা শিল্পী জিমির বাল্যবন্ধু। জিমির সুবাধে পরীমনি অমিকে চিনে। পরীমনির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যাওয়ার বিষয়ে অমি জড়িত। মূলত ৮ জুন রাতে অমিই পরীমনিকে নিয়ে গিয়েছিল। পরীমনির সঙ্গে জিমি ছাড়াও তার ছোট বোন বনি ছিল। পরীমনির অভিযোগ অমি তাকে প্রতারণা করে বোট ক্লাবে নিয়ে গিয়েছিল। গত ৮ জুন গভীর রাতে বোট ক্লাবের ভেতরে নায়িকা পরীমনিকে হত্যা ও ধর্ষণের চেষ্টা চালান। সেই অভিযোগে গতকাল সাভারে মামলা হওয়ার পর ডিবি পুলিশ নাসির উদ্দিন মাহমুদকে উত্তরার একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে।

সেই রাতে কী ঘটেছিল?

বড় পর্দার নায়িকা পরীমনি ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনার পরই ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয় সারাদেশে। ঘটনার চারদিন পর পরীমনি মুখ খোলার পর একের পর এক বেড়িয়ে আসছে বোট ক্লাব সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তবে সেই রাতে ঢাকা বোট ক্লাবে পরীমনির সঙ্গে আসলে কী ঘটনা ঘটেছিল সে বিষয়েই আগ্রহ সবার। ক্লাব বন্ধ হওয়ায় কেন তিনি সেখানে গিয়েছিলেন? তাকেই কেনই বা হত্যা ও ধর্ষণ চেষ্টা করা হলো? অভিযুক্ত নাসির উদ্দিন মাহমুদ কী সহযোগীদের নিয়ে আগে থেকেই এমন ঘটনা ঘটানোর জন্য প্রস্তুত ছিলেন? জনমনে এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। যদিও রাত ১১টায় ক্লাব বন্ধ হওয়ার নিয়ম থাকায় ঘটনাটি পরিকল্পিতভাবেই ঘটানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে, পরীমনি ও ঘটনার সময় ক্লাবে উপস্থিত এক সদস্যের বক্তব্যে ঢাকা বোট ক্লাবে আসলে কী ঘটেছিল সেই চিত্র উঠে এসেছে। কিন্তু এ ঘটনায় গ্রেপ্তারের সময় অভিযুক্ত নাসির উদ্দিন মাহমুদ নিজেকে নির্দোষ দাবি করে উল্টো পরীমনিকে অভিযুক্ত করেছেন।

ঘটনার দিন ক্লাবটিতে উপস্থিত সদস্যদের দেয়া তথ্যানুসারে, নিয়ম অনুযায়ী রাত ১১টার সময় বন্ধ করে দেয়ার কথা ক্লাবটি। কিন্তু ভিড় বেশি থাকলে এ নিয়ম মানা হয় না। বুধবার ১১টার পরও ক্লাবটিতে ৩০-৩৫ জন উপস্থিত থাকায় ক্লাবটি বন্ধ করা হয়নি। উপস্থিত মানুষদের বেশিরভাগই নিচতলায় অবস্থান করছিলেন। যাদের মধ্যে মাত্র দুই তিনজন মহিলা ছিলেন। এ সময় ক্লাবের ২য় তলার বারে অবস্থান করছিলেন ক্লাবের কার্যনির্বাহী সদস্য অভিযুক্ত নাসির উদ্দিন মাহমুদ। এর কিছু সময় পর ২য় তলার বারে পরীমনি ও তার রূপসজ্জাশিল্পী জিমি উপস্থিত হন। তারা যাওয়ার বেশকিছুক্ষণ পর ঝগড়া শুরু হয়। নিচতলা থেকে ঝগড়াও শুনতে পান তখন রেস্টুরেন্টে উপস্থিত থাকা সদস্যরা। বেশ কিছুক্ষণ ঝগড়া চলার পর গাড়িতে উঠে চলে যান পরীমনি ও জিমি। বেশি ড্রিংক করে অনেকে অস্বাভাবিক আচরণ করায় নিরাপত্তাকর্র্মী কিংবা উপস্থিত অন্য কেউ তখন বিষয়টি গুরুত্ব দেননি।

বুধবার রাতে ক্লাবটিতে উপস্থিত থাকা সদস্য হাবিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, নিচতলা থেকেই তিনি ঝগড়ার শব্দ শুনতে পান। উপরতলার বারে নাসির উদ্দিন মাহমুদ উপস্থিত আছেন বলে জানতেন। কিন্তু পরীমনি সেখানে গিয়েছিলেন বা পরীমনির সঙ্গে অশোভন আচরণ করা হয়েছে সে বিষয়ে কিছু বুঝতে পারেননি তারা। পরে বিষয়টি গণমাধ্যমে আসার পর নিশ্চিত হয়েছেন, সেদিন পরীমনির সঙ্গেই ঝগড়া করা হয়েছে।

এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত নাসির উদ্দিন আহমেদ উত্তরা থেকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশের গাড়িতে উঠানোর আগে সাংবাদিকদের সামনে পরীমণির আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি বুধবার (৯ জুন) রাতে যখন ক্লাব থেকে বের হচ্ছিলেন তখন তারা (পরীমনি ও তার বন্ধু) ক্লাবে ঢোকে। তারা তখন মদ্যপ অবস্থায় ছিল। তাদের মধ্যে একটি ছেলে উশৃঙ্খল ছিল। ক্লাবে ঢোকার পর আমাদের বারের কাউন্টার থেকে বড় বড় ও দামি ড্রিংকসের বোতল জোর করে নেয়ার চেষ্টা করে তারা। তখন তিনি তাদের কাছে গিয়ে বলেন, আপনারা ড্রিংকসগুলা নিতে পারেন না। তিনি তাদের বাধা দেন। তিনি বলেন, এটা শুধুমাত্র ক্লাবের মেম্বারদের জন্য। এখান থেকে মদ নিতে হলে তোমাদের কোন সদস্যের অ্যাকাউন্টের বিপরীতে নিতে হবে। তারপর তিনি সিকিউরিটিদের ডাক দেন। নিরাপত্তারক্ষীরা এসে তাদের নিয়ে যায়।

তবে, নাসিরের এ অভিযোগ অস্বীকার করে গতকাল রাত সাড়ে ৮টায় বনানীর নিজ বাসায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পরীমনি বলেন, সে (নাসির) ভিকটিম হলে ৪ দিন ধরে সরি বলে কেন সমাধানের চেষ্টা করেছে। চারদিন ধরে কারও সহযোগিতা আমি পাইনি। এখন গণমাধ্যমসহ সবার যে সহযোগিতা পাচ্ছি, তাতে খুব আশাবাদী। শেষ পর্যন্ত লড়ে দেখতে চাই। নাসির উদ্দিন মাহমুদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, গত রোববার প্রথমে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ করে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেন আলোচিত এ অভিনেত্রী। প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চান তিনি। পরে রাতে সংবাদ সম্মেলনে ও পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দেন পরীমনি।