বিশ্বব্যাপী করোনায় মৃত্যু ৩৮ লাখ ২৭ হাজার ছাড়াল

বিশ্বব্যাপী এখন পর্যন্ত মোট ১৭ কোটি ৭০ লাখ ২০ হাজার ৪৬৫ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এরই মধ্যে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩৮ লাখ ২৭ হাজার ৪৩৭ জন। আর এখন পর্যন্ত করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১৬ কোটি ১২ লাখ ১ হাজার ৯১২ জন। সারাবিশ্বে গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন আরও ৬ হাজার ৮৩৪ জন। এছাড়া নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন তিন লাখ ৭ হাজার ২৫২ জন।

বিশ্বে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র এখনো সবার ওপরে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে তিন কোটি ৪৩ লাখ ৩৫ হাজার ২৩৯ জনের। এর মধ্যে মারা গেছেন ছয় লাখ ১৫ হাজার ২৩২ জন। আর সুস্থ হয়েছেন দুই কোটি ৮৪ লাখ ৩৬ হাজার ৯৮১ জন। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। দেশটিতে এখন পর্যন্ত দুই কোটি ৯৫ লাখ ৭০ হাজার ৩৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছেন তিন লাখ ৭৭ হাজার ৬১ জন। আর সুস্থ হয়েছেন দুই কোটি ৮২ লাখ ৭২ হাজার ৭৮০ জন।

তৃতীয় স্থানে রয়েছে ব্রাজিল।

দেশটিতে এখন পর্যন্ত এক কোটি ৭৪ লাখ ৫৪ হাজার ৮৬১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে চার লাখ ৮৮ হাজার ৪০৪ জনের। আর সুস্থ হয়েছেন এক কোটি ৫৮ লাখ ৫৪ হাজার ২৬৪ জন। তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছে ফ্রান্স, পঞ্চম স্থানে তুরস্ক, ষষ্ঠ স্থানে রাশিয়া, সপ্তম যুক্তরাজ্য, অষ্টম ইতালি, নবম আর্জেন্টিনা এবং দশম স্থানে রয়েছে কলম্বিয়া।

সংক্রমণ ও মৃত্যুর তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান এখন ৩২তম। দেশে এখন পর্যন্ত আট লাখ ২৯ হাজার ৯৯৭২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছেন ১৩ হাজার ১৭২ জন। আর সুস্থ হয়ে উঠেছেন সাত লাখ ৬৮ হাজার ৮৩০ জন। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। দেশটিতে করোনায় প্রথম রোগীর মৃত্যু হয় ২০২০ সালের ৯ জানুয়ারি। ওই বছরের ১৩ জানুয়ারি চীনের বাইরে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় থাইল্যান্ডে। পরে ধীরে ধীরে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে।

করোনা প্রাদুর্ভাবের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এরপর ২ ফেব্রুয়ারি চীনের বাইরে করোনায় প্রথম কোন রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ফিলিপাইনে। ওই বছরেরই ১১ মার্চ করোনাকে বৈশ্বিক মহামারী ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। করোনা সংক্রমণের শুরুর দিকে ইউরোপ এবং পরে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক প্রাণহানি হলেও বর্তমানে সেসব দেশে মহামারী অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশে করোনায় ব্যাপক প্রাণহানি অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে ভারতে। দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় যা শনাক্ত হয়েছে, সেটি গত ৭৭ দিনের মধ্যে সর্বনি¤œ। এই সময়ে দেশটিতে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৬০ হাজার ৪৭১ জনের। এ নিয়ে ভারতে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৯৫ লাখ ৭০ হাজার ৪৮৮ জনের।

ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে আরও ২ হাজার ৭২৬ জনের। এতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৩১ জনের। এ ছাড়া সুস্থতার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় দেশটিতে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা কমে গেছে। ভারতে এখন সক্রিয় রোগী রয়েছে ৯ লাখ ১৩ হাজার ৩৭৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটির তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র, কেরালা, কর্নাটক ও অন্ধ্র প্রদেশ রাজ্য থেকেই সবচেয়ে বেশি শনাক্ত হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের ৬৬ শতাংশই এসেছে এই পাঁচ রাজ্য থেকে। ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয় গত মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে। তখন থেকেই করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে বাড়তে থাকে মৃত্যু। এপ্রিলে দেশটিতে দৈনিক করোনা শনাক্ত চার লাখ ছাড়িয়েছিল। তখন কয়েক দিন চার লাখের ওপরে শনাক্ত হয়। এরপর সেই সংখ্যা তিন লাখে নামে। যা এক মাসের বেশি সময় ধরে অব্যাহত ছিল। এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে ভারতে দৈনিক চার হাজারের বেশি করে মারা গেছে শুধু করোনায়। এটা সরকারি হিসাব। এর বাইরেও অসংখ্য মানুষ করোনায় মারা গেছে বলে দাবি করেছে বেশ কিছু মানবাধিকার সংগঠন ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এরই মধ্যে দেশটির কয়েকটি রাজ্যে নতুন করে মৃত্যুর হিসাব করা হয়েছে। সেসব রাজ্যে বেড়ে গেছে মৃত্যুর সংখ্যা। এ ছাড়া দেশটিতে সরকারের দেখানো মৃত্যুর সংখ্যার চেয়ে প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা ৭ গুণ বলেও কয়েকটি সংস্থা দাবি করেছে। এ ছাড়া অক্সিজেন-স্বল্পতাতেও বিভিন্ন হাসপাতালে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে মহারাষ্ট্র রাজ্যে। সেখানে এখন পর্যন্ত এক লাখের বেশি মানুষ মারা গেছে।

image

করোনায় মৃত ব্যক্তিদের একসঙ্গে মাটিচাপা দেয়া হচ্ছে -রয়াটার্স

আরও খবর
ইয়েমেনে নৌকাডুবিতে ৩ শতাধিক ব্যক্তির মৃত্যুর শঙ্কা
ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়েছে ৭৪ দেশে

বুধবার, ১৬ জুন ২০২১ , ২ আষাড় ১৪২৮ ৪ জিলকদ ১৪৪২

বিশ্বব্যাপী করোনায় মৃত্যু ৩৮ লাখ ২৭ হাজার ছাড়াল

ভারতে ৭৭ দিন পর সর্বনিম্ন শনাক্ত

image

করোনায় মৃত ব্যক্তিদের একসঙ্গে মাটিচাপা দেয়া হচ্ছে -রয়াটার্স

বিশ্বব্যাপী এখন পর্যন্ত মোট ১৭ কোটি ৭০ লাখ ২০ হাজার ৪৬৫ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এরই মধ্যে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩৮ লাখ ২৭ হাজার ৪৩৭ জন। আর এখন পর্যন্ত করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১৬ কোটি ১২ লাখ ১ হাজার ৯১২ জন। সারাবিশ্বে গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন আরও ৬ হাজার ৮৩৪ জন। এছাড়া নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন তিন লাখ ৭ হাজার ২৫২ জন।

বিশ্বে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র এখনো সবার ওপরে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে তিন কোটি ৪৩ লাখ ৩৫ হাজার ২৩৯ জনের। এর মধ্যে মারা গেছেন ছয় লাখ ১৫ হাজার ২৩২ জন। আর সুস্থ হয়েছেন দুই কোটি ৮৪ লাখ ৩৬ হাজার ৯৮১ জন। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। দেশটিতে এখন পর্যন্ত দুই কোটি ৯৫ লাখ ৭০ হাজার ৩৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছেন তিন লাখ ৭৭ হাজার ৬১ জন। আর সুস্থ হয়েছেন দুই কোটি ৮২ লাখ ৭২ হাজার ৭৮০ জন।

তৃতীয় স্থানে রয়েছে ব্রাজিল।

দেশটিতে এখন পর্যন্ত এক কোটি ৭৪ লাখ ৫৪ হাজার ৮৬১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে চার লাখ ৮৮ হাজার ৪০৪ জনের। আর সুস্থ হয়েছেন এক কোটি ৫৮ লাখ ৫৪ হাজার ২৬৪ জন। তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছে ফ্রান্স, পঞ্চম স্থানে তুরস্ক, ষষ্ঠ স্থানে রাশিয়া, সপ্তম যুক্তরাজ্য, অষ্টম ইতালি, নবম আর্জেন্টিনা এবং দশম স্থানে রয়েছে কলম্বিয়া।

সংক্রমণ ও মৃত্যুর তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান এখন ৩২তম। দেশে এখন পর্যন্ত আট লাখ ২৯ হাজার ৯৯৭২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছেন ১৩ হাজার ১৭২ জন। আর সুস্থ হয়ে উঠেছেন সাত লাখ ৬৮ হাজার ৮৩০ জন। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। দেশটিতে করোনায় প্রথম রোগীর মৃত্যু হয় ২০২০ সালের ৯ জানুয়ারি। ওই বছরের ১৩ জানুয়ারি চীনের বাইরে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় থাইল্যান্ডে। পরে ধীরে ধীরে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে।

করোনা প্রাদুর্ভাবের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এরপর ২ ফেব্রুয়ারি চীনের বাইরে করোনায় প্রথম কোন রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ফিলিপাইনে। ওই বছরেরই ১১ মার্চ করোনাকে বৈশ্বিক মহামারী ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। করোনা সংক্রমণের শুরুর দিকে ইউরোপ এবং পরে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক প্রাণহানি হলেও বর্তমানে সেসব দেশে মহামারী অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশে করোনায় ব্যাপক প্রাণহানি অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে ভারতে। দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় যা শনাক্ত হয়েছে, সেটি গত ৭৭ দিনের মধ্যে সর্বনি¤œ। এই সময়ে দেশটিতে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৬০ হাজার ৪৭১ জনের। এ নিয়ে ভারতে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৯৫ লাখ ৭০ হাজার ৪৮৮ জনের।

ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে আরও ২ হাজার ৭২৬ জনের। এতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৩১ জনের। এ ছাড়া সুস্থতার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় দেশটিতে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা কমে গেছে। ভারতে এখন সক্রিয় রোগী রয়েছে ৯ লাখ ১৩ হাজার ৩৭৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটির তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র, কেরালা, কর্নাটক ও অন্ধ্র প্রদেশ রাজ্য থেকেই সবচেয়ে বেশি শনাক্ত হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের ৬৬ শতাংশই এসেছে এই পাঁচ রাজ্য থেকে। ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয় গত মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে। তখন থেকেই করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে বাড়তে থাকে মৃত্যু। এপ্রিলে দেশটিতে দৈনিক করোনা শনাক্ত চার লাখ ছাড়িয়েছিল। তখন কয়েক দিন চার লাখের ওপরে শনাক্ত হয়। এরপর সেই সংখ্যা তিন লাখে নামে। যা এক মাসের বেশি সময় ধরে অব্যাহত ছিল। এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে ভারতে দৈনিক চার হাজারের বেশি করে মারা গেছে শুধু করোনায়। এটা সরকারি হিসাব। এর বাইরেও অসংখ্য মানুষ করোনায় মারা গেছে বলে দাবি করেছে বেশ কিছু মানবাধিকার সংগঠন ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এরই মধ্যে দেশটির কয়েকটি রাজ্যে নতুন করে মৃত্যুর হিসাব করা হয়েছে। সেসব রাজ্যে বেড়ে গেছে মৃত্যুর সংখ্যা। এ ছাড়া দেশটিতে সরকারের দেখানো মৃত্যুর সংখ্যার চেয়ে প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা ৭ গুণ বলেও কয়েকটি সংস্থা দাবি করেছে। এ ছাড়া অক্সিজেন-স্বল্পতাতেও বিভিন্ন হাসপাতালে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে মহারাষ্ট্র রাজ্যে। সেখানে এখন পর্যন্ত এক লাখের বেশি মানুষ মারা গেছে।