আগস্টে ১০ লাখ কোভ্যাক্সের অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা আসবে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
চীনা টিকার দাম প্রকাশ করায় সেখান থেকে টিকা পেতে দেরি হচ্ছে বলে দাবি করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তার ভাষ্য, এটা না হলে আগেই টিকা পাওয়া যেত। আগামী আগস্টে ১০ লাখ কোভ্যাক্সের অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা আসবে বলে জানিয়েছেন তিনি। গতকাল টিকা সংক্রান্ত বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন মন্ত্রী।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন দেশ থেকে করোনাভাইরাসের টিকা আনার চেষ্টা হচ্ছে। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র থেকে কোভ্যাক্সের ১০ লাখ টিকা আসবে। কিন্তু টিকা কবে আসবে সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত নন। আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি। রাশিয়া থেকেও টিকা আনার বিষয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে জানিয়েছেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আজও আলোচনা আছে। আজও জানা যেতে পারে। টিকা কিনে আনার পাশাপাশি দেশে উৎপাদন নিয়েও কাজ চলছে।’
জাহিদ মালেক বলেন, জনসমক্ষে টিকার দাম বলে দেয়ায় চীন একটু নারাজ হয়েছে। তবে টিকা আমদানি সংক্রান্ত কাগজপত্র সই করে চীনে পাঠানো হয়েছে। ‘এখন তারা একটি সময়সীমা জানাবে, কবে কত টিকা দেবে। এখনও জানায়নি,’ বলেন মন্ত্রী। এখন এই টিকা পেতে কত দেরি হবে তা তিনি বুঝতে পারছেন না। তবে আশা করছেন এ মাসের মধ্যেই জানাবে চীন।
চীন থেকে দেড় কোটি ডোজ টিকা কেনার প্রস্তাব সম্প্রতি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদনের পর এক ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব শাহিদা আকতার প্রতি ডোজ টিকার দাম কত হচ্ছে, সেটিও জানিয়েছিলেন। এই দাম জানানোর পর টিকা নিয়ে কিছুটি জটিলতা হচ্ছে বলে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে।
এই আলোচনার মধ্যেই ১ জুন শাহিদা আকতারকে ওএসডি করে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এতে অন্য আদেশের মতো জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। চায়না ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যালস গ্রুপ বা সিনোফার্ম থেকে বাংলাদেশ করোনাভাইরাসের দেড় কোটি টিকা কিনতে যাচ্ছে। বাণিজ্যিক চুক্তির আওতায় প্রথম চালানে সিনোফার্মের ৫০ লাখ টিকা জুনে দেশে আসার কথা। তিন মাসে সিনোফার্মের কাছ থেকে দেড় কোটি টিকা কিনতে দুই পক্ষের মধ্যে তিনটি চুক্তি সইয়ের বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের উৎপাদনশীল দেশগুলোতে টিকার সুষম বণ্টন হয়নি। তাই টিকা নিয়ে সংকট সৃষ্টি হয়েছে। আমরা চায়নার ভ্যাক্সিন পাওয়ার জন্য অপেক্ষায় আছি। তিনি আরও বলেন, দেশে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি প্রতিষ্ঠানেও টিকা উৎপাদনের চেষ্টা চলছে। এছাড়া মন্ত্রী উল্লেখ করেন, ১১ লাখ টিকা সরকারি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীসহ বিদেশগামী যাত্রী, সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের দেয়া হবে
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, সীমান্ত এলাকাসহ নোয়াখালী এবং মানিকগঞ্জে পর্যন্ত চলে আসছে। অর্থাৎ ঢাকার কাছাকাছি চলে আসছে। এখন সাবধান না থাকলে বিপদ হবে। করোনার সংক্রমণ বেশি। এসব এলাকার আম ব্যবসায়ীদের জন্য সংক্রমণ বাড়তে পারে। যেখানে বাড়ছে সেখানেই লকডাউন দেয়া হচ্ছে। এ সময় মন্ত্রী করোনার টেস্ট বাড়ানোর ওপর জোর দেন। এখন ৫০০টি জায়গায় টেস্ট হচ্ছে। এটা আরও বাড়াতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অন্যদিকে, শর্তপূরণ সাপেক্ষে দেশীয় গ্লোব বায়োটেকের করোনা ভাইরাসের টিকা ‘বঙ্গভ্যাক্স’র হিউম্যান ট্রায়ালের নীতিগত অনুমোদনের সিদ্ধান্ত দিয়েছে বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ (বিএমআরসি)। বিএমআরসির পরিচালক অধ্যাপক ডা. রুহুল আমিন বলেন, সরাসরি অনুমতি দেয়া হয়েছে বলা যাবে না। তবে শর্ত দেয়া হয়েছে। ভুল ত্রুটি ঠিক করলে আমরা অনুমতি দিয়ে দেব। শর্ত পূরণ করলে অনুমোদন দেয়া হবে। বিএমআরসির অনুমতি পেলে শীঘ্রই মানুষের ওপর দেশীয় এই টিকার ট্রায়াল চালানো হবে। গত ১৭ জানুয়ারি টিকার ট্রায়ালের জন্য নৈতিক ছাড়পত্র পেতে আবেদন করা হয়।
বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন ২০২১ , ৩ আষাড় ১৪২৮ ৫ জিলকদ ১৪৪২
আগস্টে ১০ লাখ কোভ্যাক্সের অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা আসবে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
চীনা টিকার দাম প্রকাশ করায় সেখান থেকে টিকা পেতে দেরি হচ্ছে বলে দাবি করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তার ভাষ্য, এটা না হলে আগেই টিকা পাওয়া যেত। আগামী আগস্টে ১০ লাখ কোভ্যাক্সের অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা আসবে বলে জানিয়েছেন তিনি। গতকাল টিকা সংক্রান্ত বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন মন্ত্রী।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন দেশ থেকে করোনাভাইরাসের টিকা আনার চেষ্টা হচ্ছে। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র থেকে কোভ্যাক্সের ১০ লাখ টিকা আসবে। কিন্তু টিকা কবে আসবে সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত নন। আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি। রাশিয়া থেকেও টিকা আনার বিষয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে জানিয়েছেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আজও আলোচনা আছে। আজও জানা যেতে পারে। টিকা কিনে আনার পাশাপাশি দেশে উৎপাদন নিয়েও কাজ চলছে।’
জাহিদ মালেক বলেন, জনসমক্ষে টিকার দাম বলে দেয়ায় চীন একটু নারাজ হয়েছে। তবে টিকা আমদানি সংক্রান্ত কাগজপত্র সই করে চীনে পাঠানো হয়েছে। ‘এখন তারা একটি সময়সীমা জানাবে, কবে কত টিকা দেবে। এখনও জানায়নি,’ বলেন মন্ত্রী। এখন এই টিকা পেতে কত দেরি হবে তা তিনি বুঝতে পারছেন না। তবে আশা করছেন এ মাসের মধ্যেই জানাবে চীন।
চীন থেকে দেড় কোটি ডোজ টিকা কেনার প্রস্তাব সম্প্রতি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদনের পর এক ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব শাহিদা আকতার প্রতি ডোজ টিকার দাম কত হচ্ছে, সেটিও জানিয়েছিলেন। এই দাম জানানোর পর টিকা নিয়ে কিছুটি জটিলতা হচ্ছে বলে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে।
এই আলোচনার মধ্যেই ১ জুন শাহিদা আকতারকে ওএসডি করে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এতে অন্য আদেশের মতো জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। চায়না ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যালস গ্রুপ বা সিনোফার্ম থেকে বাংলাদেশ করোনাভাইরাসের দেড় কোটি টিকা কিনতে যাচ্ছে। বাণিজ্যিক চুক্তির আওতায় প্রথম চালানে সিনোফার্মের ৫০ লাখ টিকা জুনে দেশে আসার কথা। তিন মাসে সিনোফার্মের কাছ থেকে দেড় কোটি টিকা কিনতে দুই পক্ষের মধ্যে তিনটি চুক্তি সইয়ের বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের উৎপাদনশীল দেশগুলোতে টিকার সুষম বণ্টন হয়নি। তাই টিকা নিয়ে সংকট সৃষ্টি হয়েছে। আমরা চায়নার ভ্যাক্সিন পাওয়ার জন্য অপেক্ষায় আছি। তিনি আরও বলেন, দেশে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি প্রতিষ্ঠানেও টিকা উৎপাদনের চেষ্টা চলছে। এছাড়া মন্ত্রী উল্লেখ করেন, ১১ লাখ টিকা সরকারি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীসহ বিদেশগামী যাত্রী, সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের দেয়া হবে
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, সীমান্ত এলাকাসহ নোয়াখালী এবং মানিকগঞ্জে পর্যন্ত চলে আসছে। অর্থাৎ ঢাকার কাছাকাছি চলে আসছে। এখন সাবধান না থাকলে বিপদ হবে। করোনার সংক্রমণ বেশি। এসব এলাকার আম ব্যবসায়ীদের জন্য সংক্রমণ বাড়তে পারে। যেখানে বাড়ছে সেখানেই লকডাউন দেয়া হচ্ছে। এ সময় মন্ত্রী করোনার টেস্ট বাড়ানোর ওপর জোর দেন। এখন ৫০০টি জায়গায় টেস্ট হচ্ছে। এটা আরও বাড়াতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অন্যদিকে, শর্তপূরণ সাপেক্ষে দেশীয় গ্লোব বায়োটেকের করোনা ভাইরাসের টিকা ‘বঙ্গভ্যাক্স’র হিউম্যান ট্রায়ালের নীতিগত অনুমোদনের সিদ্ধান্ত দিয়েছে বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ (বিএমআরসি)। বিএমআরসির পরিচালক অধ্যাপক ডা. রুহুল আমিন বলেন, সরাসরি অনুমতি দেয়া হয়েছে বলা যাবে না। তবে শর্ত দেয়া হয়েছে। ভুল ত্রুটি ঠিক করলে আমরা অনুমতি দিয়ে দেব। শর্ত পূরণ করলে অনুমোদন দেয়া হবে। বিএমআরসির অনুমতি পেলে শীঘ্রই মানুষের ওপর দেশীয় এই টিকার ট্রায়াল চালানো হবে। গত ১৭ জানুয়ারি টিকার ট্রায়ালের জন্য নৈতিক ছাড়পত্র পেতে আবেদন করা হয়।