রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রোগীদের ব্যবহৃত বেড কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে গোপনে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময় এক চিকিৎসককে হাতেনাতে আটক করেছে এলাকাবাসী। এ ঘটনা নিয়ে হাসপাতালে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে রংপুর নগরীর বুড়িরহাট রোড এলাকার কমিউনিটি প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে এ ঘটনাটি ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. রেজাউল ইসলাম।
অভিযুক্ত ওই চিকিৎসকের নাম একেএম শাহীনুর রহমান। তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের মেডিকেল অফিসার। পাঁচ বছর ধরে হাসপাতালে চাকরি করছেন। তার গ্রামের বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী জানান, বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে একটি ভ্যানে করে হাসপাতালের রোগীদের জন্য ব্যবহৃত বেড নিয়ে যাওয়ার সময় এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়। তারা ভ্যানটিকে আটক করে। এ সময় ডা. শাহীনুর রহমান স্বীকার করে বেডটি সে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে যাচ্ছেন। অনুমতিপত্র বা কোন বৈধ কাগজপত্র আছে কিনা জানতে চাইলে চিকিৎসকের সঙ্গে এলাকাবাসীর কথা কাটাকাটি ও বাকবিত-া হয়। এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হলে এ প্রতিনিধি খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে গেলে বেড নিয়ে যাওয়া চিকিৎসক ডা. শাহীনুর রহমান জানান, তার মা দেড় মাস ধরে হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছে। শারীরিক অবস্থা খুব একটা ভালো না।
বর্তমানে তার মাকে কেবিনে রাখা হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়িতে নেয়ার কথা চলছিল। বাড়িতে যাতে বেডে থাকতে অসুবিধা না হয়, এ কারণে হাসপাতালের স্টোর রুমে পড়ে থাকা পুরাতন বেডটি লিখিত দিয়ে তিনি গ্রহণ করে বাসায় নিয়ে যাচ্ছিলেন কিন্তু স্থানীয়দের সন্দেহ হওয়াতে তা আটক করে কোন প্রমাণপত্র দেখাতে না পারায় এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে বেডটি হাসপাতালে ফেরত দেয়া হয় বলে জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, আমি দীর্ঘ পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে হাসপাতালে নবম গ্রেডের কর্মকর্তা হিসেবে রয়েছি। হাসপাতালের সম্পদ নষ্ট হোক, এমনটা কখনও করিনি। শুধু মানবিক দিক থেকে নিজের মায়ের থাকার সুবিধার কথা চিন্তা করে স্টোর কিপার বেলাল ও ৩০নং ওয়ার্ড ইনচার্জ মমতাকে অবগত করে মুচলেকার মাধ্যমে বেডটি নিয়েছিলাম। আমার অন্য কোন উদ্দেশ্য ছিল না। তবে আজকের ঘটনার পর অনুভব করছি, আইনগতভাবে এটা নেয়া আমার ঠিক হয়নি।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের স্টোর কিপার বেলাল হোসেন এবং ৩০নং ওয়ার্ড ইনচার্জ মমতার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাদের পাওয়া যায়নি। তবে নাম না প্রকাশের শর্তে একজন সিনিয়র স্টাফ নার্স বলেন, মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেই বেডটি তিনি নিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে আইনগতভাবে তার বেড নিয়ে যাওয়া সঠিক হয়নি বলে জানান তিনি।
সার্বিক বিষয়ে জানতে হাসপাতালের পরিচালক ডা. রেজাউল করিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, হাসপাতাল থেকে সরকারি বেড নিয়ে যাওয়ার আগে তাকে জানানো হয়নি। তবে ওই চিকিৎসক তার মায়ের জন্য স্টোর কিপার ও ওয়ার্ড ইনচার্জকে অবগত করে হাসপাতালের পুরনো একটি বেড বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছিলেন বলে শুনেছি। পুরো ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান। তবে তার অনুমতি ছাড়াই হাসপাতাল থেকে বেডটি বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে স্বীকার করেন পরিচালক।
বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন ২০২১ , ৩ আষাড় ১৪২৮ ৫ জিলকদ ১৪৪২
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, রংপুর
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রোগীদের ব্যবহৃত বেড কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে গোপনে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময় এক চিকিৎসককে হাতেনাতে আটক করেছে এলাকাবাসী। এ ঘটনা নিয়ে হাসপাতালে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে রংপুর নগরীর বুড়িরহাট রোড এলাকার কমিউনিটি প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে এ ঘটনাটি ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. রেজাউল ইসলাম।
অভিযুক্ত ওই চিকিৎসকের নাম একেএম শাহীনুর রহমান। তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের মেডিকেল অফিসার। পাঁচ বছর ধরে হাসপাতালে চাকরি করছেন। তার গ্রামের বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী জানান, বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে একটি ভ্যানে করে হাসপাতালের রোগীদের জন্য ব্যবহৃত বেড নিয়ে যাওয়ার সময় এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়। তারা ভ্যানটিকে আটক করে। এ সময় ডা. শাহীনুর রহমান স্বীকার করে বেডটি সে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে যাচ্ছেন। অনুমতিপত্র বা কোন বৈধ কাগজপত্র আছে কিনা জানতে চাইলে চিকিৎসকের সঙ্গে এলাকাবাসীর কথা কাটাকাটি ও বাকবিত-া হয়। এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হলে এ প্রতিনিধি খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে গেলে বেড নিয়ে যাওয়া চিকিৎসক ডা. শাহীনুর রহমান জানান, তার মা দেড় মাস ধরে হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছে। শারীরিক অবস্থা খুব একটা ভালো না।
বর্তমানে তার মাকে কেবিনে রাখা হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়িতে নেয়ার কথা চলছিল। বাড়িতে যাতে বেডে থাকতে অসুবিধা না হয়, এ কারণে হাসপাতালের স্টোর রুমে পড়ে থাকা পুরাতন বেডটি লিখিত দিয়ে তিনি গ্রহণ করে বাসায় নিয়ে যাচ্ছিলেন কিন্তু স্থানীয়দের সন্দেহ হওয়াতে তা আটক করে কোন প্রমাণপত্র দেখাতে না পারায় এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে বেডটি হাসপাতালে ফেরত দেয়া হয় বলে জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, আমি দীর্ঘ পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে হাসপাতালে নবম গ্রেডের কর্মকর্তা হিসেবে রয়েছি। হাসপাতালের সম্পদ নষ্ট হোক, এমনটা কখনও করিনি। শুধু মানবিক দিক থেকে নিজের মায়ের থাকার সুবিধার কথা চিন্তা করে স্টোর কিপার বেলাল ও ৩০নং ওয়ার্ড ইনচার্জ মমতাকে অবগত করে মুচলেকার মাধ্যমে বেডটি নিয়েছিলাম। আমার অন্য কোন উদ্দেশ্য ছিল না। তবে আজকের ঘটনার পর অনুভব করছি, আইনগতভাবে এটা নেয়া আমার ঠিক হয়নি।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের স্টোর কিপার বেলাল হোসেন এবং ৩০নং ওয়ার্ড ইনচার্জ মমতার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাদের পাওয়া যায়নি। তবে নাম না প্রকাশের শর্তে একজন সিনিয়র স্টাফ নার্স বলেন, মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেই বেডটি তিনি নিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে আইনগতভাবে তার বেড নিয়ে যাওয়া সঠিক হয়নি বলে জানান তিনি।
সার্বিক বিষয়ে জানতে হাসপাতালের পরিচালক ডা. রেজাউল করিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, হাসপাতাল থেকে সরকারি বেড নিয়ে যাওয়ার আগে তাকে জানানো হয়নি। তবে ওই চিকিৎসক তার মায়ের জন্য স্টোর কিপার ও ওয়ার্ড ইনচার্জকে অবগত করে হাসপাতালের পুরনো একটি বেড বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছিলেন বলে শুনেছি। পুরো ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান। তবে তার অনুমতি ছাড়াই হাসপাতাল থেকে বেডটি বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে স্বীকার করেন পরিচালক।