ঢাকায় পাতালরেল চলবে ২০২৬ সালে

২০২২ সালের মার্চে ঢাকায় পাতাল মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ শুরু হবে। সবার আগে বানানো হবে ডিপো। তারপর পর্যায়ক্রমে পাতাল রেলপথ, স্টেশনসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শুরু হবে। ২০২৬ সালে পাতালরেলে যাত্রী পরিবহন শুরুর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

গতকাল এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম এ এন ছিদ্দিক।

তিনি বলেন, ‘২০২২ সালের মার্চে ঢাকায় পাতাল মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজ শুরু হবে। ২০২৬ সালে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে পুরো লাইনটি দিয়ে প্রতিদিন আট লাখ যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব হবে।

‘রেললাইনটি নির্মাণে খরচ ধরা হয়েছে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা।’

এই প্রকল্পের আওতায় পাতালরেল নির্মাণ করা হবে দুই অংশে।

ডিএমটিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, প্রথম অংশটি পুরোপুরি পাতালপথে যা ঢাকার বিমানবন্দর রেলস্টেশন থেকে কমলাপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত হবে। এর দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার।

দ্বিতীয় অংশ ১১ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার হবে উড়ালপথ, যা কমলাপুর থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত নির্মাণ করা হবে।

বর্তমানে এমআরটি-৬ নামে পরিচিত দেশের প্রথম মেট্রোরেলের কাজ চলছে।

রাজধানীর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটারের এই প্রকল্প ২০২২ সালের জুনে শেষ করে যাত্রী পরিবহন শুরু করার লক্ষ্য রয়েছে সরকারের বলে তিনি উল্লেখ করেন। এর মধ্যে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার অংশের কাজ বেশ এগিয়েছে। এ জন্য জাপান থেকে দুই সেট রেল কোচও এসেছে। এর মধ্যে প্রথম ট্রেন সেট সংযোজেনর পর পরীক্ষামূলক ট্রায়ালও হয়েছে উত্তরার দিয়াবাড়ি ডিপোতে।

নতুন পাতাল রেলের জন্য এমআরটি-১ প্রকল্পের মাধ্যমে ডিপো স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে জানিয়ে ডিএমটিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, ১২টি প্যাকেজের আওতায় ডিপোর ভূমি উন্নয়ন ও আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে।

মেট্রোরেলে প্রতিটি সেটে থাকবে চারটি যাত্রীবাহী কোচ, দুই দিকে দুটো ইঞ্জিন। ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রতি স্কয়ার মিটারে ৮ জনের হিসাবে ব্যস্ততম সময়ে প্রায় ১৭০০ যাত্রী চলাচল করতে পারবে।

মেট্রোরেলে প্রতিটি সেটে থাকবে চারটি যাত্রীবাহী কোচ, দুই দিকে দুটো ইঞ্জিন। ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রতি স্কয়ার মিটারে ৮ জনের হিসাবে ব্যস্ততম সময়ে প্রায় ১৭০০ যাত্রী চলাচল করতে পারবে।

এজন্য দরপত্রও আহ্বান করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে দরপত্রের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে জানিয়ে সাবেক এই সচিব আরও জানান, দরপত্র সম্পন্ন হলে ছয় মাসের মধ্যে রূপগঞ্জের পিতলগঞ্জে ডিপো নির্মাণের কাজ শুরু করা সম্ভব হবে।

পাতালরেলের জন্য ২৫টি ট্রেন কেনা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি ট্রেনে আটটি করে কোচ থাকবে। একটি ট্রেনে এক সঙ্গে ৩ হাজার ৮৮ যাত্রী পরিবহন করা যাবে। এর মোট স্টেশন থাকবে ২১টি।’

২০৩০ সালের মধ্যে সরকার ঢাকা ও তার আশপাশে ছয়টি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের প্রকল্প নিয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। তার মধ্যে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার উড়ালপথে মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, যা লাইন-৬ নামে পরিচিত।

এর আগে এমআরটি-১ প্রকল্পের এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) কর্মকর্তারা ঢাকায় দেশের প্রথম পাতাল রেললাইন নির্মাণে জাপানের ঋণ সহায়তা দিতে সম্মতির কথা জানিয়েছিলেন।

শুক্রবার, ১৮ জুন ২০২১ , ৪ আষাড় ১৪২৮ ৬ জিলকদ ১৪৪২

ঢাকায় পাতালরেল চলবে ২০২৬ সালে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

২০২২ সালের মার্চে ঢাকায় পাতাল মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ শুরু হবে। সবার আগে বানানো হবে ডিপো। তারপর পর্যায়ক্রমে পাতাল রেলপথ, স্টেশনসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শুরু হবে। ২০২৬ সালে পাতালরেলে যাত্রী পরিবহন শুরুর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

গতকাল এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম এ এন ছিদ্দিক।

তিনি বলেন, ‘২০২২ সালের মার্চে ঢাকায় পাতাল মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজ শুরু হবে। ২০২৬ সালে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে পুরো লাইনটি দিয়ে প্রতিদিন আট লাখ যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব হবে।

‘রেললাইনটি নির্মাণে খরচ ধরা হয়েছে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা।’

এই প্রকল্পের আওতায় পাতালরেল নির্মাণ করা হবে দুই অংশে।

ডিএমটিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, প্রথম অংশটি পুরোপুরি পাতালপথে যা ঢাকার বিমানবন্দর রেলস্টেশন থেকে কমলাপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত হবে। এর দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার।

দ্বিতীয় অংশ ১১ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার হবে উড়ালপথ, যা কমলাপুর থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত নির্মাণ করা হবে।

বর্তমানে এমআরটি-৬ নামে পরিচিত দেশের প্রথম মেট্রোরেলের কাজ চলছে।

রাজধানীর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটারের এই প্রকল্প ২০২২ সালের জুনে শেষ করে যাত্রী পরিবহন শুরু করার লক্ষ্য রয়েছে সরকারের বলে তিনি উল্লেখ করেন। এর মধ্যে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার অংশের কাজ বেশ এগিয়েছে। এ জন্য জাপান থেকে দুই সেট রেল কোচও এসেছে। এর মধ্যে প্রথম ট্রেন সেট সংযোজেনর পর পরীক্ষামূলক ট্রায়ালও হয়েছে উত্তরার দিয়াবাড়ি ডিপোতে।

নতুন পাতাল রেলের জন্য এমআরটি-১ প্রকল্পের মাধ্যমে ডিপো স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে জানিয়ে ডিএমটিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, ১২টি প্যাকেজের আওতায় ডিপোর ভূমি উন্নয়ন ও আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে।

মেট্রোরেলে প্রতিটি সেটে থাকবে চারটি যাত্রীবাহী কোচ, দুই দিকে দুটো ইঞ্জিন। ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রতি স্কয়ার মিটারে ৮ জনের হিসাবে ব্যস্ততম সময়ে প্রায় ১৭০০ যাত্রী চলাচল করতে পারবে।

মেট্রোরেলে প্রতিটি সেটে থাকবে চারটি যাত্রীবাহী কোচ, দুই দিকে দুটো ইঞ্জিন। ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রতি স্কয়ার মিটারে ৮ জনের হিসাবে ব্যস্ততম সময়ে প্রায় ১৭০০ যাত্রী চলাচল করতে পারবে।

এজন্য দরপত্রও আহ্বান করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে দরপত্রের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে জানিয়ে সাবেক এই সচিব আরও জানান, দরপত্র সম্পন্ন হলে ছয় মাসের মধ্যে রূপগঞ্জের পিতলগঞ্জে ডিপো নির্মাণের কাজ শুরু করা সম্ভব হবে।

পাতালরেলের জন্য ২৫টি ট্রেন কেনা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি ট্রেনে আটটি করে কোচ থাকবে। একটি ট্রেনে এক সঙ্গে ৩ হাজার ৮৮ যাত্রী পরিবহন করা যাবে। এর মোট স্টেশন থাকবে ২১টি।’

২০৩০ সালের মধ্যে সরকার ঢাকা ও তার আশপাশে ছয়টি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের প্রকল্প নিয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। তার মধ্যে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার উড়ালপথে মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, যা লাইন-৬ নামে পরিচিত।

এর আগে এমআরটি-১ প্রকল্পের এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) কর্মকর্তারা ঢাকায় দেশের প্রথম পাতাল রেললাইন নির্মাণে জাপানের ঋণ সহায়তা দিতে সম্মতির কথা জানিয়েছিলেন।