চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর ইউনিয়নে লক্ষীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৫১ সালে স্থাপিত হয়। প্রায় ৭০ বছরের এ পুরোনো স্কুলটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ওই এলাকার ভূমিদস্যুরা স্কুল মাঠের সরকারি জমি অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই স্কুলের দখলকৃত জায়গাটি হুক্কাপুর স্কুল মাঠ বলে পরিচিত। ওই মাঠের ৫ বিঘার অধিক জমি স্থানীয় কিছু ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে দখল করে আসছে। সেখানে চায়ের স্টল, মুদি দোকান, খড়েরপালা, গরুর গোহাল ঘর বানিয়ে নিজ দখলে রেখেছে ওই এলাকার কতিপয় দখলদারেরা।
স্থানীয় বাসিন্দা ফজলুল হক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে স্কুলের সরকারি জমি স্কুল কমিটির কতিপয় সদস্যদের সুবিধা দিয়ে ভোগ দখল করে আসছে ওই এলাকার কিছু অসাধু ব্যক্তিরা। এখানে লক্ষীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাহিদা পারভীন ও সহকারী শিক্ষক আতিকুর রহমান তার স্বজনদের সুযোগ দিয়ে দীর্ঘদিন যাবত দখলে রেখেছেন। তিনি আরও বলেন, আতিকুর মাস্টার গতবছরের মার্চ মাসে মাঠের প্রায় ৬-৭টি গাছ কেটে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে প্রধান শিক্ষক নাহিদা পারভীন ও সহকারী শিক্ষক আতিকুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি এড়িয়ে যান। এ ব্যাপারে ওই স্কুলের সভাপতি, রংপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোফিজুল ইসলামের কাছে গাছ কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এর সত্যতা স্বীকার করেছেন।
এ বিষয়ে লক্ষীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাহিদা পারভীনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি গাছ কাটার বিষয়টি স্বীকার করেছেন এবং দখলদারদের উচ্ছেদ করার লক্ষ্যে গত ২০২০ সালে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর চিঠি পাঠানো হয়েছে। এখনও পর্যন্ত উচ্ছেদের কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
ওই স্কুল কমিটির সভাপতি তোফিজুল ইসলাম বলেন, ইতোপূর্বে ওই স্কুল মাঠের দখলদারদের উচ্ছেদ করার জন্য তারা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু করোনাকালীন সময় হওয়ায় সেটা আর বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। তবে স্কুল কমিটির সঙ্গে পুনরায় বসে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, সাইফুল ইসলাম এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান এ বিষয়ে তার কাছে এখনও কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ এলে তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন। উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল মজিদ জানান, গত ২০২০সালের ৩ অক্টোবর খ্রি. কমিটির রেজুলেশন অনুযায়ী রহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের সার্ভেয়ার ও স্থানীয় সার্ভেয়ার দ্বারা সীমানা নির্ধারণ করা হয় এবং গাছ কাটার বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিস এবং সংশ্লিষ্ট ক্লাস্টারের সহকারী শিক্ষা অফিসারও অবগত নন তবে গাছ কাটার বিষয়টি বেআইনী। তিনি আরও বলেন, দখলকৃত স্কুলের জমিগুলো শীঘ্রই দখলমুক্ত করা হবে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মিজানুর রহমান এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান দখলকৃত জমির ব্যাপারে স্কুল কর্তৃপক্ষ কোন তথ্য বা অভিযোগ আমাকে দেয়নি, দিলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মঙ্গলবার, ২২ জুন ২০২১ , ৮ আষাঢ় ১৪২৮ ১০ জিলকদ ১৪৪২
প্রতিনিধি, গোমস্তাপুর (চাঁপাইনবাবগঞ্জ)
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর ইউনিয়নে লক্ষীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৫১ সালে স্থাপিত হয়। প্রায় ৭০ বছরের এ পুরোনো স্কুলটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ওই এলাকার ভূমিদস্যুরা স্কুল মাঠের সরকারি জমি অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই স্কুলের দখলকৃত জায়গাটি হুক্কাপুর স্কুল মাঠ বলে পরিচিত। ওই মাঠের ৫ বিঘার অধিক জমি স্থানীয় কিছু ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে দখল করে আসছে। সেখানে চায়ের স্টল, মুদি দোকান, খড়েরপালা, গরুর গোহাল ঘর বানিয়ে নিজ দখলে রেখেছে ওই এলাকার কতিপয় দখলদারেরা।
স্থানীয় বাসিন্দা ফজলুল হক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে স্কুলের সরকারি জমি স্কুল কমিটির কতিপয় সদস্যদের সুবিধা দিয়ে ভোগ দখল করে আসছে ওই এলাকার কিছু অসাধু ব্যক্তিরা। এখানে লক্ষীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাহিদা পারভীন ও সহকারী শিক্ষক আতিকুর রহমান তার স্বজনদের সুযোগ দিয়ে দীর্ঘদিন যাবত দখলে রেখেছেন। তিনি আরও বলেন, আতিকুর মাস্টার গতবছরের মার্চ মাসে মাঠের প্রায় ৬-৭টি গাছ কেটে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে প্রধান শিক্ষক নাহিদা পারভীন ও সহকারী শিক্ষক আতিকুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি এড়িয়ে যান। এ ব্যাপারে ওই স্কুলের সভাপতি, রংপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোফিজুল ইসলামের কাছে গাছ কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এর সত্যতা স্বীকার করেছেন।
এ বিষয়ে লক্ষীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাহিদা পারভীনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি গাছ কাটার বিষয়টি স্বীকার করেছেন এবং দখলদারদের উচ্ছেদ করার লক্ষ্যে গত ২০২০ সালে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর চিঠি পাঠানো হয়েছে। এখনও পর্যন্ত উচ্ছেদের কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
ওই স্কুল কমিটির সভাপতি তোফিজুল ইসলাম বলেন, ইতোপূর্বে ওই স্কুল মাঠের দখলদারদের উচ্ছেদ করার জন্য তারা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু করোনাকালীন সময় হওয়ায় সেটা আর বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। তবে স্কুল কমিটির সঙ্গে পুনরায় বসে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, সাইফুল ইসলাম এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান এ বিষয়ে তার কাছে এখনও কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ এলে তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন। উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল মজিদ জানান, গত ২০২০সালের ৩ অক্টোবর খ্রি. কমিটির রেজুলেশন অনুযায়ী রহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের সার্ভেয়ার ও স্থানীয় সার্ভেয়ার দ্বারা সীমানা নির্ধারণ করা হয় এবং গাছ কাটার বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিস এবং সংশ্লিষ্ট ক্লাস্টারের সহকারী শিক্ষা অফিসারও অবগত নন তবে গাছ কাটার বিষয়টি বেআইনী। তিনি আরও বলেন, দখলকৃত স্কুলের জমিগুলো শীঘ্রই দখলমুক্ত করা হবে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মিজানুর রহমান এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান দখলকৃত জমির ব্যাপারে স্কুল কর্তৃপক্ষ কোন তথ্য বা অভিযোগ আমাকে দেয়নি, দিলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।