ঢাকার সঙ্গে সারাদেশের দূরপাল্লার বাস-লঞ্চের পর ট্রেনও বন্ধ ঘোষণা

ঢাকার সঙ্গে সারাদেশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য দূরপাল্লার বাস ও লঞ্চের পর ট্রেনও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল সকাল ৬টা থেকে বাস ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ হলেও চালু ছিল ট্রেন সার্ভিস। কিন্তু রেলওয়ের পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল রাত ১২টা থেকে তাও বন্ধ ঘোষণা হয়। এর মাধ্যমে সারাদেশের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলো। তবে হাঠাৎ করে ট্রেন সার্ভিস বন্ধ ঘোষাণায় বিপাকে পড়েছে সাধারণ যাত্রীরা।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচেনায় করোনাভাইরাসে সংক্রমণের বিস্তার রোধে সরকার গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, মাদারীপুর জেলায় সার্বিক জনসাধারণের চলাচল ৩০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করায় ঢাকার সঙ্গে অন্য জেলার লোকজনের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ে ২২ জুন রাত ১২টা হতে আগামী ৩০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত ঢাকার সঙ্গে সারাদেশের যাত্রীবাহী রেল যোগাযোগ বন্ধ ঘোষণা করেছে। রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের যশোর এবং খুলনাগামী সব ট্রেন বাতিল করা হয়েছে।

এছাড়া করোনা বেড়ে যাওয়ায় ঢাকা থেকে সারাদেশে সব ধরনের যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। গতকাল ভোর ছয়টা থেকে এ নিষেধাজ্ঞা শুরু হলেও দক্ষিণাঞ্চলের অনেক যাত্রীকে না জেনে ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে আসা রেশমা জানান, ‘আমি চরফ্যাশন যাব। টার্মিনালে এসে শুনি লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। লঞ্চ চলাচলের কোন সুযোগ নেই। তাই গন্তব্যে যেতে না পেরে বাসায় ফিরে যাচ্ছি।’ চাঁনখারপুল থেকে আসা আরেক যাত্রী মঈন জানান, ‘ভোলার দৌলতখানে যাওয়ার উদ্দেশ নিয়ে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে এসেছি। লঞ্চঘাটের লোকজনের কাছ থেকে জানতে পারি, গতকাল থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ। লালকুঠি ঘাট এলাকায় মাইক্রোবাসে চাঁদপুর যাওয়ার জন্য চালক ডাকছেন। চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ যেতে জনপ্রতি ৮০০ টাকা ভাড়া দাবি করা হচ্ছে। ছেলেমেয়েসহ চারজনের ৩ হাজার ২০০ টাকা ভাড়া চেয়েছে। কোন উপায় না পেয়ে ২ হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে চাঁদপুরে রওনা হচ্ছি।’

ঢাকা নদীবন্দর সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাত ১২টা পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার উদ্দেশে ৮১টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে। গতকাল ৫টা থেকে সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত বন্দরে ৪৯টি লঞ্চ এসেছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল (যাপ) সংস্থার ঢাকা নদীবন্দরের প্রচার সম্পাদক ও সালাউদ্দিন গাজী লঞ্চের মালিক বাবু গাজী বলেন, করোনার কারণে ঢাকাসহ সারাদেশে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় ভোলা ও শরীয়তপুর রুটে তার দুটি লঞ্চ যাওয়ার কথা ছিল। সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকায় সেগুলোও বন্ধ রাখা হবে। সারাদেশে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় কর্মচারীরা অলস সময় কাটাচ্ছেন।

নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক জয়নাল আবেদীন বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী গতকাল সকাল ছয়টা থেকে ঢাকা নদীবন্দরসহ সারাদেশে যাত্রীবাহী নৌ চলাচল বন্ধ রয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে।

বুধবার, ২৩ জুন ২০২১ , ৯ আষাঢ় ১৪২৮ ১১ জিলকদ ১৪৪২

ঢাকার সঙ্গে সারাদেশের দূরপাল্লার বাস-লঞ্চের পর ট্রেনও বন্ধ ঘোষণা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

ঢাকার সঙ্গে সারাদেশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য দূরপাল্লার বাস ও লঞ্চের পর ট্রেনও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল সকাল ৬টা থেকে বাস ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ হলেও চালু ছিল ট্রেন সার্ভিস। কিন্তু রেলওয়ের পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল রাত ১২টা থেকে তাও বন্ধ ঘোষণা হয়। এর মাধ্যমে সারাদেশের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলো। তবে হাঠাৎ করে ট্রেন সার্ভিস বন্ধ ঘোষাণায় বিপাকে পড়েছে সাধারণ যাত্রীরা।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচেনায় করোনাভাইরাসে সংক্রমণের বিস্তার রোধে সরকার গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, মাদারীপুর জেলায় সার্বিক জনসাধারণের চলাচল ৩০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করায় ঢাকার সঙ্গে অন্য জেলার লোকজনের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ে ২২ জুন রাত ১২টা হতে আগামী ৩০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত ঢাকার সঙ্গে সারাদেশের যাত্রীবাহী রেল যোগাযোগ বন্ধ ঘোষণা করেছে। রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের যশোর এবং খুলনাগামী সব ট্রেন বাতিল করা হয়েছে।

এছাড়া করোনা বেড়ে যাওয়ায় ঢাকা থেকে সারাদেশে সব ধরনের যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। গতকাল ভোর ছয়টা থেকে এ নিষেধাজ্ঞা শুরু হলেও দক্ষিণাঞ্চলের অনেক যাত্রীকে না জেনে ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে আসা রেশমা জানান, ‘আমি চরফ্যাশন যাব। টার্মিনালে এসে শুনি লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। লঞ্চ চলাচলের কোন সুযোগ নেই। তাই গন্তব্যে যেতে না পেরে বাসায় ফিরে যাচ্ছি।’ চাঁনখারপুল থেকে আসা আরেক যাত্রী মঈন জানান, ‘ভোলার দৌলতখানে যাওয়ার উদ্দেশ নিয়ে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে এসেছি। লঞ্চঘাটের লোকজনের কাছ থেকে জানতে পারি, গতকাল থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ। লালকুঠি ঘাট এলাকায় মাইক্রোবাসে চাঁদপুর যাওয়ার জন্য চালক ডাকছেন। চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ যেতে জনপ্রতি ৮০০ টাকা ভাড়া দাবি করা হচ্ছে। ছেলেমেয়েসহ চারজনের ৩ হাজার ২০০ টাকা ভাড়া চেয়েছে। কোন উপায় না পেয়ে ২ হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে চাঁদপুরে রওনা হচ্ছি।’

ঢাকা নদীবন্দর সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাত ১২টা পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার উদ্দেশে ৮১টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে। গতকাল ৫টা থেকে সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত বন্দরে ৪৯টি লঞ্চ এসেছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল (যাপ) সংস্থার ঢাকা নদীবন্দরের প্রচার সম্পাদক ও সালাউদ্দিন গাজী লঞ্চের মালিক বাবু গাজী বলেন, করোনার কারণে ঢাকাসহ সারাদেশে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় ভোলা ও শরীয়তপুর রুটে তার দুটি লঞ্চ যাওয়ার কথা ছিল। সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকায় সেগুলোও বন্ধ রাখা হবে। সারাদেশে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় কর্মচারীরা অলস সময় কাটাচ্ছেন।

নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক জয়নাল আবেদীন বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী গতকাল সকাল ছয়টা থেকে ঢাকা নদীবন্দরসহ সারাদেশে যাত্রীবাহী নৌ চলাচল বন্ধ রয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে।