ফোনে আড়িপাতা বন্ধে পদক্ষেপ জানতে চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ

ফোনে আড়িপাতা বন্ধে ৭ দিনের মধ্যে পদক্ষেপ জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্টদের লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবী। ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) এ আইনি নোটিশ প্রেরণ করা হয়।

গতকাল রেজিস্ট্রি ডাকযোগে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবীর পক্ষে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির এ নোটিশ প্রেরণ করেন। ১০ আইনজীবী হলেন অ্যাডভোকেট রেজওয়ানা ফেরদৌস, উত্তম কুমার বনিক, শাহ নাবিলা কাশফী, ফরহাদ আহমেদ সিদ্দীকী, মোহাম্মদ নওয়াব আলী, মোহাম্মদ ইবরাহিম খলিল, মুস্তাফিজুর রহমান, জিএম মুজাহিদুর রহমান (মুন্না), ইমরুল কায়েস ও একরামুল কবির।

নোটিশে ফোনালাপে আড়িপাতা প্রতিরোধে আইন অনুযায়ী বিটিআরসি কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। ২০১৩ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ১৬টি আড়িপাতার ঘটনা নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে। তার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার ফোনালাপ, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ফোনালাপ, প্রয়াত সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ ও রাজশাহী মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার নাজমুল হাসানের ফোনালাপ উল্লেখযোগ্য। এসব আড়িপাতার ঘটনা বাংলাদেশের গণমাধ্যমে বহুল প্রচারিত হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

নোটিশে বলা হয়, সার্বজনীন মানবাধিকার সনদপত্র, নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী পৃথিবীর সব আধুনিক ব্যবস্থায় ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার স্বীকৃত ও সংরক্ষিত। এরই ধারাবাহিকতায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৪৩ অনুচ্ছেদে চিঠিপত্র ও যোগাযোগের অন্যান্য উপায়ের গোপনীয়তা সংরক্ষণ নাগরিকের মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এই অধিকার সংবিধান কর্তৃক নিশ্চিত করা হয়েছে। অর্থাৎ সংবিধানের তৃতীয়ভাগে উল্লিখিত মৌলিক অধিকারগুলোর মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সংরক্ষণ অন্যতম।

এছাড়া ২০০১ সালের ১৬ এপ্রিল বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি অ্যাক্ট, ২০০১ প্রণয়ন করা হয়। এই আইনের ধারা ৬ অনুযায়ী টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন প্রতিষ্ঠিত হয়। ধারা ৩০(চ) অনুযায়ী টেলিযোগাযোগের একান্ততা রক্ষা নিশ্চিত করা এই কমিশনের দায়িত্ব। কিন্তু লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, এই ধরনের ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনা অহরহ ঘটছে। অথচ বাংলাদেশের সংবিধান ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী কমিশনের দায়িত্ব হলো ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সংরক্ষণ নিশ্চিত করা।

আগামী ৭ দিনের মধ্যে আড়িপাতা বন্ধে নেয়া পদক্ষেপ জানাতে বলা হয়েছে। অন্যথায় উচ্চ আদালতে রিট করা হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী শিশির মনির।

আরও খবর
পরিকল্পিত পদক্ষেপেই বাংলাদেশ শীর্ষ এসডিজি বাস্তবায়নকারী দেশের একটি হতে পেরেছে : প্রধানমন্ত্রী
আজ আওয়ামী লীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী
জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগ মুক্তি অনিশ্চিত
এত মৃত্যুদণ্ডের পরও স্ত্রী হত্যা কমছে না প্রধান বিচারপতি
একনেকে গাজীপুর-টাঙ্গাইল গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে প্রকল্প অনুমোদন
সিলেটে শিশু সাঈদ হত্যা : ৩ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল
বাজারে জাল টাকার ছড়াছড়ি
ঢাকা-বরিশাল রুটের বিমান ভাড়া তিনগুণ বাড়লো
নকল মাস্ক, শারমিনকে অব্যাহতি দিয়ে পুলিশের প্রতিবেদন
মাদ্রাসা বন্ধে আসাম সরকারকে শপথনামা দাখিলের নির্দেশ হাইকোর্টের
খিলগাঁওয়ে খালে পড়ে যুবক নিখোঁজ

বুধবার, ২৩ জুন ২০২১ , ৯ আষাঢ় ১৪২৮ ১১ জিলকদ ১৪৪২

ফোনে আড়িপাতা বন্ধে পদক্ষেপ জানতে চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ

আদালত বার্তা পরিবেশক

ফোনে আড়িপাতা বন্ধে ৭ দিনের মধ্যে পদক্ষেপ জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্টদের লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবী। ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) এ আইনি নোটিশ প্রেরণ করা হয়।

গতকাল রেজিস্ট্রি ডাকযোগে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবীর পক্ষে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির এ নোটিশ প্রেরণ করেন। ১০ আইনজীবী হলেন অ্যাডভোকেট রেজওয়ানা ফেরদৌস, উত্তম কুমার বনিক, শাহ নাবিলা কাশফী, ফরহাদ আহমেদ সিদ্দীকী, মোহাম্মদ নওয়াব আলী, মোহাম্মদ ইবরাহিম খলিল, মুস্তাফিজুর রহমান, জিএম মুজাহিদুর রহমান (মুন্না), ইমরুল কায়েস ও একরামুল কবির।

নোটিশে ফোনালাপে আড়িপাতা প্রতিরোধে আইন অনুযায়ী বিটিআরসি কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। ২০১৩ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ১৬টি আড়িপাতার ঘটনা নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে। তার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার ফোনালাপ, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ফোনালাপ, প্রয়াত সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ ও রাজশাহী মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার নাজমুল হাসানের ফোনালাপ উল্লেখযোগ্য। এসব আড়িপাতার ঘটনা বাংলাদেশের গণমাধ্যমে বহুল প্রচারিত হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

নোটিশে বলা হয়, সার্বজনীন মানবাধিকার সনদপত্র, নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী পৃথিবীর সব আধুনিক ব্যবস্থায় ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার স্বীকৃত ও সংরক্ষিত। এরই ধারাবাহিকতায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৪৩ অনুচ্ছেদে চিঠিপত্র ও যোগাযোগের অন্যান্য উপায়ের গোপনীয়তা সংরক্ষণ নাগরিকের মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এই অধিকার সংবিধান কর্তৃক নিশ্চিত করা হয়েছে। অর্থাৎ সংবিধানের তৃতীয়ভাগে উল্লিখিত মৌলিক অধিকারগুলোর মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সংরক্ষণ অন্যতম।

এছাড়া ২০০১ সালের ১৬ এপ্রিল বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি অ্যাক্ট, ২০০১ প্রণয়ন করা হয়। এই আইনের ধারা ৬ অনুযায়ী টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন প্রতিষ্ঠিত হয়। ধারা ৩০(চ) অনুযায়ী টেলিযোগাযোগের একান্ততা রক্ষা নিশ্চিত করা এই কমিশনের দায়িত্ব। কিন্তু লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, এই ধরনের ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনা অহরহ ঘটছে। অথচ বাংলাদেশের সংবিধান ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী কমিশনের দায়িত্ব হলো ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সংরক্ষণ নিশ্চিত করা।

আগামী ৭ দিনের মধ্যে আড়িপাতা বন্ধে নেয়া পদক্ষেপ জানাতে বলা হয়েছে। অন্যথায় উচ্চ আদালতে রিট করা হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী শিশির মনির।