সিদ্ধান্ত যথার্থ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তবে আলোচনা চান সিইসি

জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেয়ার সিদ্ধান্ত যথার্থ বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বলেছেন, ‘ইসি দেবে না, সে রকম অবস্থানে ইসি নেই। তবে এটা টেবিল-চেয়ার নয় যে উঠিয়ে নিয়ে গেল। এটা নিয়ে আলোচনায় বসতে হবে।’

গতকাল রাজধানীতে দুটি পৃথক অনুষ্ঠানে এনআইডি ইস্যু নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিইসি এসব মন্তব্য করেন।

এনআইডি নিবন্ধন কার্যক্রম ইসির কাছ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগের অধীনে নেয়ার বিষয়ে সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এ বিষয়ে আইন সংশোধনের নির্দেশনা দিয়ে গত ১৭ মে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে চিঠি দেয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। ২০ মে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে ইসিকে চিঠি পাঠানোর হয়। পরে ইসি এনআইডি কার্যক্রম নিজেদের কাছে রাখার যুক্তি দেখিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চিঠি দেয়।

মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে গতকাল কারা অধিদপ্তরে কারাবন্দী পোষ্যদের বঙ্গবন্ধু বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘সরকার জেনে-বুঝে ও সবার মতামত নিয়েই এনআইডি সেবাকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত ও পরামর্শ নেয়া হয়েছে। এখন বিষয়টি নিয়ে অহেতুক কথা হচ্ছে।’

একই দিন রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ভবনে মেডিকেল ক্যাম্প উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি কেএম নূরুল হুদা বলেন, ‘সরকারের অবশ্যই কিছু যুক্তি আছে। ইসিরও কিছু যুক্তি আছে। এগুলো নিয়ে আলোচনা হবে। তাদের (সরকারের) বক্তব্য হলো এই সেবা ইসির অধীনে থাকে না। সেই যুক্তিটা ঠিক। আসলেই অন্য কোন দেশে এটা থাকার বিষয় না। আর ইসির যুক্তি হলো এ কাজ অনেক পরিশ্রমের ফসল। এ কাজ করার জন্য ইসির কয়েক হাজার নিবেদিত কর্মী তৈরি হয়েছে এবং তারা অত্যন্ত প্রফেশনাল।’

গত মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ পুনরায় এনআইডি নিবন্ধন কার্যক্রমের দায়িত্ব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগের কাছে দেয়ার কথা উল্লেখ করে ইসির কাছে চিঠি পাঠায়। চিঠিতে বলা হয়, ‘গত ১৭ মে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পাঠানো পত্রের আলোকে সরকার জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম আইনানুগভাবে নির্বাচন কমিশন থেকে সুরক্ষাসেবা বিভাগে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এমতাবস্থায়, নির্দেশনাসমূহ যথাযথভাবে প্রতিপালনের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’

নির্দেশনা চূড়ান্ত হয়েছে কিনা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে নূরুল হুদা বলেন, ‘চূড়ান্ত হয়েছে, এ রকম বলা যায় না। তারা (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) নিতে চায়।’

এক যুগের অভিজ্ঞতার আলোকে ইসি যে সেবা দিচ্ছে, অন্য কোন বিভাগের পক্ষে তা সম্ভব না দাবি করে সিইসি বলেন, ‘এত দিনের ভুলভ্রান্তি শেষে, সব পেরিয়ে অত্যন্ত উচ্চপর্যায়ের প্রযুক্তিসম্পন্ন কাজ তারা তৈরি করতে পেরেছে। এটার জন্য ইসি গর্ববোধ করে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ইসি বলেছিল, এতগুলো লোক আবার তৈরি করা, আবার ১২ বছর ঘুরে অন্য কোন ডিপার্টমেন্টের পক্ষে সম্ভব না।’

এনআইডি নিবন্ধন কার্যক্রম স্থানান্তর করলে ইসি সমস্যায় পড়বে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ‘এই উইং অনেক বড়। কীভাবে নেবে না নেবে, এ বিষয়ে নিশ্চয়ই সচিবপর্যায়ে কথাবার্তা হবে। ইসির সুবিধা-অসুবিধাগুলো তাদের জানানো হবে।’

আরও খবর
আওয়ামী লীগ গঠনের উদ্দেশ্য পূরণ হয়েছে : তোফায়েল
আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
টিকা কিনতে ৯৪ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে এডিবি
ভারতের সেরা পাঁচ রপ্তানি দেশের তালিকায় বাংলাদেশ
ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে আল্টিমেটাম সিপিবির
সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ঢাকা দখল ও দূষণমুক্ত রাখা হবে মেয়র আতিক
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর হতে অনুরোধ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের
মাদকবিরোধী অভিযানে প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়ানোর তাগিদ
বৃষ্টির কারণে এডিস মশার উপদ্রব বাড়ছে
মাকে বাঁচাতে গিয়ে বাবার অস্ত্রের আঘাতে প্রাণ হারালো ছেলে
মামলার রায় ও পর্যবেক্ষণে ‘অসঙ্গতি’, রাষ্ট্রপক্ষের আপিল দাবি

বৃহস্পতিবার, ২৪ জুন ২০২১ , ১০ আষাঢ় ১৪২৮ ১২ জিলকদ ১৪৪২

এনআইডি সেবা ইসি থেকে স্বরাষ্ট্রে

সিদ্ধান্ত যথার্থ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তবে আলোচনা চান সিইসি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেয়ার সিদ্ধান্ত যথার্থ বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বলেছেন, ‘ইসি দেবে না, সে রকম অবস্থানে ইসি নেই। তবে এটা টেবিল-চেয়ার নয় যে উঠিয়ে নিয়ে গেল। এটা নিয়ে আলোচনায় বসতে হবে।’

গতকাল রাজধানীতে দুটি পৃথক অনুষ্ঠানে এনআইডি ইস্যু নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিইসি এসব মন্তব্য করেন।

এনআইডি নিবন্ধন কার্যক্রম ইসির কাছ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগের অধীনে নেয়ার বিষয়ে সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এ বিষয়ে আইন সংশোধনের নির্দেশনা দিয়ে গত ১৭ মে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে চিঠি দেয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। ২০ মে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে ইসিকে চিঠি পাঠানোর হয়। পরে ইসি এনআইডি কার্যক্রম নিজেদের কাছে রাখার যুক্তি দেখিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চিঠি দেয়।

মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে গতকাল কারা অধিদপ্তরে কারাবন্দী পোষ্যদের বঙ্গবন্ধু বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘সরকার জেনে-বুঝে ও সবার মতামত নিয়েই এনআইডি সেবাকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত ও পরামর্শ নেয়া হয়েছে। এখন বিষয়টি নিয়ে অহেতুক কথা হচ্ছে।’

একই দিন রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ভবনে মেডিকেল ক্যাম্প উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি কেএম নূরুল হুদা বলেন, ‘সরকারের অবশ্যই কিছু যুক্তি আছে। ইসিরও কিছু যুক্তি আছে। এগুলো নিয়ে আলোচনা হবে। তাদের (সরকারের) বক্তব্য হলো এই সেবা ইসির অধীনে থাকে না। সেই যুক্তিটা ঠিক। আসলেই অন্য কোন দেশে এটা থাকার বিষয় না। আর ইসির যুক্তি হলো এ কাজ অনেক পরিশ্রমের ফসল। এ কাজ করার জন্য ইসির কয়েক হাজার নিবেদিত কর্মী তৈরি হয়েছে এবং তারা অত্যন্ত প্রফেশনাল।’

গত মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ পুনরায় এনআইডি নিবন্ধন কার্যক্রমের দায়িত্ব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগের কাছে দেয়ার কথা উল্লেখ করে ইসির কাছে চিঠি পাঠায়। চিঠিতে বলা হয়, ‘গত ১৭ মে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পাঠানো পত্রের আলোকে সরকার জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম আইনানুগভাবে নির্বাচন কমিশন থেকে সুরক্ষাসেবা বিভাগে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এমতাবস্থায়, নির্দেশনাসমূহ যথাযথভাবে প্রতিপালনের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’

নির্দেশনা চূড়ান্ত হয়েছে কিনা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে নূরুল হুদা বলেন, ‘চূড়ান্ত হয়েছে, এ রকম বলা যায় না। তারা (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) নিতে চায়।’

এক যুগের অভিজ্ঞতার আলোকে ইসি যে সেবা দিচ্ছে, অন্য কোন বিভাগের পক্ষে তা সম্ভব না দাবি করে সিইসি বলেন, ‘এত দিনের ভুলভ্রান্তি শেষে, সব পেরিয়ে অত্যন্ত উচ্চপর্যায়ের প্রযুক্তিসম্পন্ন কাজ তারা তৈরি করতে পেরেছে। এটার জন্য ইসি গর্ববোধ করে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ইসি বলেছিল, এতগুলো লোক আবার তৈরি করা, আবার ১২ বছর ঘুরে অন্য কোন ডিপার্টমেন্টের পক্ষে সম্ভব না।’

এনআইডি নিবন্ধন কার্যক্রম স্থানান্তর করলে ইসি সমস্যায় পড়বে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ‘এই উইং অনেক বড়। কীভাবে নেবে না নেবে, এ বিষয়ে নিশ্চয়ই সচিবপর্যায়ে কথাবার্তা হবে। ইসির সুবিধা-অসুবিধাগুলো তাদের জানানো হবে।’