মাদকবিরোধী অভিযানে প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়ানোর তাগিদ

মাদক বিক্রি ও ব্যবহারে মাদক কারবারিরা প্রযুক্তিনির্ভর হওয়ায় মাদক নিয়ন্ত্রণে অধিদপ্তরও তার কার্যক্রমে প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়াতে চায়। জনবল সঙ্কট দূর করে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কার্যক্রমে গতি ফেরাতে নেয়া হয়েছে একাধিক প্রকল্প। মাদকবিরোধী অভিযানে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তার জন্য অস্ত্র প্রদান করা হলে মাদক নির্মূলে সফলতা বাড়বে অধিদপ্তরের। গত সোমবার নিজ কার্যালয়ে সংবাদকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে এ কথা বলেন মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আহসানুল জব্বার।

নিজ কার্যালয়ে ডিজি আহসানুল জব্বার বলেন, স্বল্প জনবলে খালি হাতে মাদকবিরোধী অভিযানে অন্যান্য বাহিনীর তুলনায় এগিয়ে আছে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। নতুন নতুন মাদকের প্রবেশ ও ব্যবহার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে পুরোনো পদ্ধতিতে। নতুন মাদক আইস, এলএসডির বড় চালান উদ্ধারে প্রথম অভিযান চালিয়েছে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে দেশের বাইরে মাদক পাচারকারী চক্রের বিরুদ্ধেও অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। সব মিলিয়ে মাদক নির্মূলের পাশাপাশি মাদকের কুফল তুলে ধরে প্রচার কার্যক্রম অব্যাহত আছে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের।

ডিজি আহসানুল জব্বার বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা মাদকবিরোধী অভিযানে যাচ্ছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। যেখানে পুলিশসহ অনান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাদকবিরোধী অভিযানে গেলে তাদের কাছে অস্ত্র থাকে সেখানে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকজন যাচ্ছে একেবারেই খালি হাতে। এখন মাদক ব্যবসায়ীরা মাদকের পাশাপাশি অস্ত্রও রাখছে। অনেক অভিযানে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকজন মাদকের পাশাপাশি অস্ত্র উদ্ধার করেছে। তাই মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা ও সৈনিকদের অনুকূলে অস্ত্র প্রদানের জন্য প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। এটি নিয়ে জাতীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক হয়েছে। কমিটির অধিকাংশ সদস্য মাদক নিয়ন্ত্রণে অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের অস্ত্র প্রদানের বিষয়ে মত দিয়েছেন। এখন অস্ত্র দিলে সেটি কিভাবে ব্যবহার হবে, তার সংরক্ষণ কিভাবে হবে, অস্ত্র ব্যবহারের প্রশিক্ষণ, কোন পর্যায়ের কর্মকর্তারা অস্ত্র ব্যবহার করতে পারবেন এসব বিষয়গুলোও রয়েছে। আশাকরি এর একটি গাইডলাইন তৈরি হবে এবং বিষয়টি সমাধান হবে। এক প্রশ্নের জবাবে ডিজি আহসানুল জব্বার বলেন, জলবল সঙ্কট দূর করার জন্য জনবল নিয়োগ হচ্ছে। পর্যাপ্ত যানবাহন কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে মাদকের রাসায়নিক পরীক্ষাগারের সংখ্যা বাড়ানোসহ বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কার্যক্রমে পুরোপুরি শক্তিশালী করতে গৃহীত প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে।

মাদক ব্যবসায় নতুন নতুন মাদক যুক্ত এবং উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণীদের মাদকে আসক্ত হওয়ার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার বিষয়ে আহসানুল জব্বার বলেন, নতুন নতুন মাদক যুক্ত হলেও এগুলো নির্র্মূলে নতুন ধরনের কৌশল নেয়া হচ্ছে। সারাদেশে স্কুল-কলেজগুলোতে মাদকবিরোধী সভা করা হচ্ছে। মাদকবিরোধী কমিটি গঠন করা হচ্ছে। মাদকের নানাবিধ কুফল, ক্ষতি তুলে ধরে প্রচার কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। আর আমি বলব, ঘরে ঘরে প্রত্যেক অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। ছেলেমেয়েরা যাতে মাদকে আসক্ত হয়ে না পড়ে সেটি পরিবারের সদস্যদের আগে খেয়াল রাখতে হবে।

দেশে নতুন নতুন মাদকের বিস্তার ঘটেছে। মাদক ব্যবসায়ীরা এখন মাদক ব্যবসায় নতুন কৌশল নিচ্ছে। অনলাইনে মাদকের আদান প্রদানের বিষয়ে বেশি ঝুকছে মাদক কারবারিরা। মাদক সেবীরা নিজেরাই তৈরি করছেন ল্যাব। কয়েকরকম মাদকের মিশ্রণ ঘটিয়ে বানাচ্ছেন এক ধরনের মাদক যা ঝাক্কি বা ককটেল নামে পরিচিত। ফেনসিডিল, গাঁজা, হেরোইন, প্যাথেডিন, ইয়াবার যুগ পার করে এখন ক্রিস্টাল মেথ বা আইস, এলএসডির মতো মাদকের কারবার চলছে। প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ মাদক ঢুকছে দেশে। সীমান্ত পথ দিয়ে আসা এসব মাদকের চোরাচালানে দেশী-বিদেশী চক্র থেকে শুরু বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ জড়িয়ে পড়ছে।

আরও খবর
আওয়ামী লীগ গঠনের উদ্দেশ্য পূরণ হয়েছে : তোফায়েল
আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
টিকা কিনতে ৯৪ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে এডিবি
সিদ্ধান্ত যথার্থ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তবে আলোচনা চান সিইসি
ভারতের সেরা পাঁচ রপ্তানি দেশের তালিকায় বাংলাদেশ
ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে আল্টিমেটাম সিপিবির
সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ঢাকা দখল ও দূষণমুক্ত রাখা হবে মেয়র আতিক
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর হতে অনুরোধ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের
বৃষ্টির কারণে এডিস মশার উপদ্রব বাড়ছে
মাকে বাঁচাতে গিয়ে বাবার অস্ত্রের আঘাতে প্রাণ হারালো ছেলে
মামলার রায় ও পর্যবেক্ষণে ‘অসঙ্গতি’, রাষ্ট্রপক্ষের আপিল দাবি

বৃহস্পতিবার, ২৪ জুন ২০২১ , ১০ আষাঢ় ১৪২৮ ১২ জিলকদ ১৪৪২

মাদকবিরোধী অভিযানে প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়ানোর তাগিদ

সাইফ বাবলু

মাদক বিক্রি ও ব্যবহারে মাদক কারবারিরা প্রযুক্তিনির্ভর হওয়ায় মাদক নিয়ন্ত্রণে অধিদপ্তরও তার কার্যক্রমে প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়াতে চায়। জনবল সঙ্কট দূর করে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কার্যক্রমে গতি ফেরাতে নেয়া হয়েছে একাধিক প্রকল্প। মাদকবিরোধী অভিযানে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তার জন্য অস্ত্র প্রদান করা হলে মাদক নির্মূলে সফলতা বাড়বে অধিদপ্তরের। গত সোমবার নিজ কার্যালয়ে সংবাদকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে এ কথা বলেন মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আহসানুল জব্বার।

নিজ কার্যালয়ে ডিজি আহসানুল জব্বার বলেন, স্বল্প জনবলে খালি হাতে মাদকবিরোধী অভিযানে অন্যান্য বাহিনীর তুলনায় এগিয়ে আছে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। নতুন নতুন মাদকের প্রবেশ ও ব্যবহার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে পুরোনো পদ্ধতিতে। নতুন মাদক আইস, এলএসডির বড় চালান উদ্ধারে প্রথম অভিযান চালিয়েছে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে দেশের বাইরে মাদক পাচারকারী চক্রের বিরুদ্ধেও অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। সব মিলিয়ে মাদক নির্মূলের পাশাপাশি মাদকের কুফল তুলে ধরে প্রচার কার্যক্রম অব্যাহত আছে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের।

ডিজি আহসানুল জব্বার বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা মাদকবিরোধী অভিযানে যাচ্ছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। যেখানে পুলিশসহ অনান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাদকবিরোধী অভিযানে গেলে তাদের কাছে অস্ত্র থাকে সেখানে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকজন যাচ্ছে একেবারেই খালি হাতে। এখন মাদক ব্যবসায়ীরা মাদকের পাশাপাশি অস্ত্রও রাখছে। অনেক অভিযানে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকজন মাদকের পাশাপাশি অস্ত্র উদ্ধার করেছে। তাই মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা ও সৈনিকদের অনুকূলে অস্ত্র প্রদানের জন্য প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। এটি নিয়ে জাতীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক হয়েছে। কমিটির অধিকাংশ সদস্য মাদক নিয়ন্ত্রণে অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের অস্ত্র প্রদানের বিষয়ে মত দিয়েছেন। এখন অস্ত্র দিলে সেটি কিভাবে ব্যবহার হবে, তার সংরক্ষণ কিভাবে হবে, অস্ত্র ব্যবহারের প্রশিক্ষণ, কোন পর্যায়ের কর্মকর্তারা অস্ত্র ব্যবহার করতে পারবেন এসব বিষয়গুলোও রয়েছে। আশাকরি এর একটি গাইডলাইন তৈরি হবে এবং বিষয়টি সমাধান হবে। এক প্রশ্নের জবাবে ডিজি আহসানুল জব্বার বলেন, জলবল সঙ্কট দূর করার জন্য জনবল নিয়োগ হচ্ছে। পর্যাপ্ত যানবাহন কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে মাদকের রাসায়নিক পরীক্ষাগারের সংখ্যা বাড়ানোসহ বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কার্যক্রমে পুরোপুরি শক্তিশালী করতে গৃহীত প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে।

মাদক ব্যবসায় নতুন নতুন মাদক যুক্ত এবং উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণীদের মাদকে আসক্ত হওয়ার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার বিষয়ে আহসানুল জব্বার বলেন, নতুন নতুন মাদক যুক্ত হলেও এগুলো নির্র্মূলে নতুন ধরনের কৌশল নেয়া হচ্ছে। সারাদেশে স্কুল-কলেজগুলোতে মাদকবিরোধী সভা করা হচ্ছে। মাদকবিরোধী কমিটি গঠন করা হচ্ছে। মাদকের নানাবিধ কুফল, ক্ষতি তুলে ধরে প্রচার কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। আর আমি বলব, ঘরে ঘরে প্রত্যেক অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। ছেলেমেয়েরা যাতে মাদকে আসক্ত হয়ে না পড়ে সেটি পরিবারের সদস্যদের আগে খেয়াল রাখতে হবে।

দেশে নতুন নতুন মাদকের বিস্তার ঘটেছে। মাদক ব্যবসায়ীরা এখন মাদক ব্যবসায় নতুন কৌশল নিচ্ছে। অনলাইনে মাদকের আদান প্রদানের বিষয়ে বেশি ঝুকছে মাদক কারবারিরা। মাদক সেবীরা নিজেরাই তৈরি করছেন ল্যাব। কয়েকরকম মাদকের মিশ্রণ ঘটিয়ে বানাচ্ছেন এক ধরনের মাদক যা ঝাক্কি বা ককটেল নামে পরিচিত। ফেনসিডিল, গাঁজা, হেরোইন, প্যাথেডিন, ইয়াবার যুগ পার করে এখন ক্রিস্টাল মেথ বা আইস, এলএসডির মতো মাদকের কারবার চলছে। প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ মাদক ঢুকছে দেশে। সীমান্ত পথ দিয়ে আসা এসব মাদকের চোরাচালানে দেশী-বিদেশী চক্র থেকে শুরু বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ জড়িয়ে পড়ছে।