বৃষ্টির কারণে এডিস মশার উপদ্রব বাড়ছে

ডেঙ্গু আক্রান্ত ৪৫ জন হাসপাতালে

বৃষ্টির কারণে সারাদেশে এডিস মশার উপদ্রব বাড়ছে। এ মশার কামড়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ জন ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরের গতকাল পর্যন্ত ২৪৭ জন ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এখনো রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছে ৪৫ জন। ছাড়পত্র নিয়েছে ২০২ জন। বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা নতুন করে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হলে তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে।

কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত বৃষ্টির কারণে এডিস মশার লার্ভার সৃষ্টি হয়। নির্মাণাধীন ভবনের ছাদে, বিভিন্ন খালে, নির্মাণাধীন কনস্টাকশান হাউজে ও পরিত্যক্ত বিভিন্ন পাত্রে জমে থাকা পানিতে এডিস মশার প্রজনন হয়। মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করা হলে উপদ্রব কমবে। এ মৌসুমে এডিস মশার উপদ্রব বাড়লেও কিউলিক্স মশার উপদ্রব কমছে।

মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মোস্তাক হোসেন গতকাল সন্ধ্যায় সংবাদকে জানান, বৃষ্টির পানিতে এডিস মশার ডিম ফুটে। পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা জিসিনপত্রে, বিভিন্ন সরকারি কোয়ার্টারের ছাদের পানিতে, থানা বাউন্ডারি এলাকায় আটক করে রাখা গাড়িতে বা ভাঙা গাড়ির যন্ত্রাংশে জমে থাকা পানিতে মশার ডিপোতে পরিণত হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

তার মতে, মশার উপদ্রব বাড়তে পারে এমন সব জায়গা পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। আর ঘরের মধ্যে মশা যাতে না ঢুকতে না পারে তার জন্য পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ দেন। এডিস মশার শুটকিট এখনই ধ্বংস করতে হবে। এজন্য কীটনাশক বা নিয়মিত মশার ওষুধ দিতে হবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনটেনসিভ কেয়ার মেডিসিন বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. দেবব্রত বনিক বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমায়। এরপর কেউ ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হলে তার মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে। ইতোমধ্যে কিছু কিছু রোগী জ্বর হওয়ার পর তারা কি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে না ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছে তা প্রাথমিকভাবে ঝুঝাও কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এখন জ্বরের রোগী অনেক বাড়ছে। এর মধ্যে অনেকেই ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানেসেথেসিয়া অ্যান্ড ইনটেনসিভ কেয়ার মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. একেএম আখতারুজ্জামান গতকাল সন্ধ্যায় সংবাদকে জানান, ডেঙ্গুজ্বর হলে শরীরে র‌্যাশ উঠবে। আর করোনা হলে শ্বাসকষ্ট শুরু হবে। ডেঙ্গুতে রক্তের অনুচক্রিকা কমে যায়। এতে রোগীর ইনফেকশানসহ নানা সমস্যা দেখা দিয়ে মৃত্যুও হতে পারে। এ মৌসুমে অবশ্যই মশারি ব্যবহার করতে হবে। বিকেলে ও ভোরে ডেঙ্গুজ্বরের বাহক এডিস মশা কামড়ায়। এখন ডেঙ্গুজ্বরের অনেক রোগী পাওয়া যাচ্ছে।

মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমাজেন্সি অপারেশন সেন্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. কামরুল কিবরিয়া জানান, গত ২২ জুন মঙ্গলবার থেকে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত এ পরিসংখানে জানা গেছে, ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তদের মধ্যে নতুন করে ১২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। ভর্তিকৃত সবাই রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

আরও খবর
আওয়ামী লীগ গঠনের উদ্দেশ্য পূরণ হয়েছে : তোফায়েল
আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
টিকা কিনতে ৯৪ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে এডিবি
সিদ্ধান্ত যথার্থ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তবে আলোচনা চান সিইসি
ভারতের সেরা পাঁচ রপ্তানি দেশের তালিকায় বাংলাদেশ
ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে আল্টিমেটাম সিপিবির
সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ঢাকা দখল ও দূষণমুক্ত রাখা হবে মেয়র আতিক
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর হতে অনুরোধ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের
মাদকবিরোধী অভিযানে প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়ানোর তাগিদ
মাকে বাঁচাতে গিয়ে বাবার অস্ত্রের আঘাতে প্রাণ হারালো ছেলে
মামলার রায় ও পর্যবেক্ষণে ‘অসঙ্গতি’, রাষ্ট্রপক্ষের আপিল দাবি

বৃহস্পতিবার, ২৪ জুন ২০২১ , ১০ আষাঢ় ১৪২৮ ১২ জিলকদ ১৪৪২

বৃষ্টির কারণে এডিস মশার উপদ্রব বাড়ছে

ডেঙ্গু আক্রান্ত ৪৫ জন হাসপাতালে

বাকী বিল্লাহ

বৃষ্টির কারণে সারাদেশে এডিস মশার উপদ্রব বাড়ছে। এ মশার কামড়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ জন ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরের গতকাল পর্যন্ত ২৪৭ জন ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এখনো রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছে ৪৫ জন। ছাড়পত্র নিয়েছে ২০২ জন। বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা নতুন করে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হলে তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে।

কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত বৃষ্টির কারণে এডিস মশার লার্ভার সৃষ্টি হয়। নির্মাণাধীন ভবনের ছাদে, বিভিন্ন খালে, নির্মাণাধীন কনস্টাকশান হাউজে ও পরিত্যক্ত বিভিন্ন পাত্রে জমে থাকা পানিতে এডিস মশার প্রজনন হয়। মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করা হলে উপদ্রব কমবে। এ মৌসুমে এডিস মশার উপদ্রব বাড়লেও কিউলিক্স মশার উপদ্রব কমছে।

মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মোস্তাক হোসেন গতকাল সন্ধ্যায় সংবাদকে জানান, বৃষ্টির পানিতে এডিস মশার ডিম ফুটে। পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা জিসিনপত্রে, বিভিন্ন সরকারি কোয়ার্টারের ছাদের পানিতে, থানা বাউন্ডারি এলাকায় আটক করে রাখা গাড়িতে বা ভাঙা গাড়ির যন্ত্রাংশে জমে থাকা পানিতে মশার ডিপোতে পরিণত হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

তার মতে, মশার উপদ্রব বাড়তে পারে এমন সব জায়গা পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। আর ঘরের মধ্যে মশা যাতে না ঢুকতে না পারে তার জন্য পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ দেন। এডিস মশার শুটকিট এখনই ধ্বংস করতে হবে। এজন্য কীটনাশক বা নিয়মিত মশার ওষুধ দিতে হবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনটেনসিভ কেয়ার মেডিসিন বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. দেবব্রত বনিক বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমায়। এরপর কেউ ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হলে তার মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে। ইতোমধ্যে কিছু কিছু রোগী জ্বর হওয়ার পর তারা কি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে না ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছে তা প্রাথমিকভাবে ঝুঝাও কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এখন জ্বরের রোগী অনেক বাড়ছে। এর মধ্যে অনেকেই ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানেসেথেসিয়া অ্যান্ড ইনটেনসিভ কেয়ার মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. একেএম আখতারুজ্জামান গতকাল সন্ধ্যায় সংবাদকে জানান, ডেঙ্গুজ্বর হলে শরীরে র‌্যাশ উঠবে। আর করোনা হলে শ্বাসকষ্ট শুরু হবে। ডেঙ্গুতে রক্তের অনুচক্রিকা কমে যায়। এতে রোগীর ইনফেকশানসহ নানা সমস্যা দেখা দিয়ে মৃত্যুও হতে পারে। এ মৌসুমে অবশ্যই মশারি ব্যবহার করতে হবে। বিকেলে ও ভোরে ডেঙ্গুজ্বরের বাহক এডিস মশা কামড়ায়। এখন ডেঙ্গুজ্বরের অনেক রোগী পাওয়া যাচ্ছে।

মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমাজেন্সি অপারেশন সেন্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. কামরুল কিবরিয়া জানান, গত ২২ জুন মঙ্গলবার থেকে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত এ পরিসংখানে জানা গেছে, ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তদের মধ্যে নতুন করে ১২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। ভর্তিকৃত সবাই রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।