করোনাকালের সাথী

আবদুল মান্নান খান

করোনায় আক্রান্ত হয়ে কঠিনভাবে ৪৫ দিন ঘরবন্দি জীবন কাটাতে হয়েছিল সব মিলিয়ে। দুইবার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছিল যে কারণে টেলিভিশন হয়ে দাঁড়ায় আমার অন্যতম সাথী।

এক সময় টেলিভিশন দেখার মধ্যে দেখা হতো খবর আর পছন্দের বিশেষ কোন অনুষ্ঠানাদি থাকলে। তারপর বেসরকারি চ্যানেল চালু হলো। চালু হলো টকশো নামের অনুষ্ঠান। জনপ্রিয় হয়ে উঠল কিছু চ্যানেল কিছু অনুষ্ঠান। এর মধ্যে নানা বিষয়ে কথা বলার একটা খোলা মঞ্চ হিসেবে য়েন দেখা দিল কোন একটা চ্যানেলের ‘তৃতীয় মাত্রা’ নামের টকশো অনুষ্ঠানটি। আওয়ামী লীগ বিএনপি এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বড় বড় নেতা, দেশের বড় বড় উকিল ব্যারেস্টার, বড় বড় ব্যবসায়ী শিল্পপতিসহ বিভিন্ন পেশাজীবীরা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তাদের অভিজ্ঞতা মতাদর্শ পছন্দ-অপছন্দের কথা তুলে ধরেন খোলা মনে। বাদ প্রতিবাদ হয়, জমে ওঠে অনুষ্ঠানটি। এ অবস্থায় পারত পক্ষে অনুষ্ঠানটি দেখা আর বাদ যায় না আমার। একই সঙ্গে প্রায় সব চ্যানেলে চলে এলো টকশো। যেটা ভালো লাগে সেটা দেখা বা কোনটাই না দেখে অন্য কিছু দেখা। না হয় দেশের বাইরের কোন অনুষ্ঠান খুঁজে দেখা।

এভাবেই শুরু হলো ভারতের বাংলা চ্যানেল দেখা। এককালে যখন সিনেমা দেখতাম তখনো হিন্দি-উর্দু সিনেমা আমাকে আকৃষ্ট করত না তেমন। এখনও করে না। তবে জনপ্রিয় কিছু হিন্দি ছবি যে দেখা হয়নি তা বলা যাবে না। তখন ইংরেজি সিনেমার দিকে একটু টানও ছিল বৈকি। যাহোক, শুরু হলো ঘরবন্দি হয়ে উত্তম সুচিত্রার অথবা ওদের সেই যুগের বাংলা সিনেমা দেখা। না হলে তার পরের ছবি, না হলে তারও পরের ছবি যা যখন টেলিভিশনে দেখায় দেখতে ধাকি। এখানে সে যুগের একটা বাংলা সিনেমার কথা না বলে পারছি না। সিনেমাটা সেকালে দেখিনি, নামও শুনেছিলাম কিনা মনে পড়ে না। ছবিটার নাম ‘যমালয়ে জীবন্ত মানুষ’। নায়ক ঢাকার ভানু। ঢাকার ভানু কথাটা একটা কৌতুক থেকে পাওয়া। যেমন ভানু এক বাসায় পৌঁছে দরজায় নড়া নাড়লেন। ভেতর থেকে একজন জিজ্ঞেস করলেন, কে। ‘আমি ঢাকার ভানু’। দরজা খুলে দিয়ে ভদ্রলোক জানতে চাইলেন, আপনি ঢাকার ভানু বললেন যে’। উত্তরে সে যুগের প্রখ্যাত কৌতুক অভিনেতা ভানু বন্দোপাধ্যায় বললেন, আরে মশাই আপনি তো পরেই জানতে চাইতেন, কোন ভানু। তাই আগেই বলে দিয়েছি’। আসলেই তিনি এবং তার পরিবার ছিলেন ঢাকার মানুষ। দেশ বিভাগের শিকার হয়ে তারা ওপার চলে যান।

এক সময় সিনেমা দেখা থেকে শুরু হলো ভারতের একটা বাংলা চ্যানেলে সিরিয়াল দেখা যেমন গোপাল ভাঁড়, সিআইডি এসব। এর মাঝে একদিন চোখ আটকে গেল আরেকটা বাংলা চ্যানেলে। যার দু’তিনটা সিরিয়াল আমাকে পেয়ে বসল যেমন রানী রাশমণি, নেতাজী, সা-রে-গা-মা এমন।

‘রানী রাসমণি’ পুরানো দিনের কাহিনী। বিদ্যাসাগরের বিধবা বিবাহ আইন পাস করানোর চেষ্টাকে রানী রাসমণি সমর্থন করেন। ব্রাহ্মণ সমাজ বিদ্যাসাগরের ওপর ভীষণ ক্ষ্যাপা। তাকে প্রাণে মেরে ফেলতেও উদ্ধত হয়। রানী রাসমণি বিদ্যাসাগরকে সমর্থন করায় তার এবং তার পরিবারের প্রতিও তারা নানাভাবে হেনস্তার সৃষ্টি করে। বিদ্যাসাগর দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এ আইন তিনি পাস করাবেনই। তার কণ্ঠে উচ্চারিত একটা ডায়লগ কাঁপিয়ে দেয় ব্রাহ্মণ সমাজকে। ডায়লগটা এরকম, ‘আমি ইশ্বরচন্দ্র শর্মা, ব্রাহ্মণ সমাজের মাথার ওপর পা রেখে বলছি, বিধবা বিবাহ আইন আমি পাস করাবোই’। বাপরে! কি সাংঘাতিক ডায়লগ। সিরিয়ালটা আমার দারুণ লেগেছে। মনে মনে ভাবি বর্তমান প্রজন্ম দেখুক তৎকালীন সমাজে সতিদাহ প্রথা বিলোপ করা বিধবা বিবাহ প্রথা চালু করা কী কঠিন কাজ ছিল।

সেকালের কথা বাদ দিলাম আমার নিজের দেখা একালের একটা ঘটনা বলি। পরীক্ষা দিতে যাবে দুই পরীক্ষার্থী তার একজন ব্রাহ্মণ। অব্রাহ্মণ ছেলেটা পড়ালেখায় বেশি ভালো। ব্রাহ্মণ ছেলেটা এসেছে অব্রাহ্মণ ছেলেটাকে ডেকে নিয়ে এক সঙ্গে যাবে বলে। বেরিয়ে যাবার সময় অব্রাহ্মণ ছেলেটার মা তার ছেলেকে বললেন, ওকে ভক্তি করো আগে তারপর রওনা দাও’। এ কথা শুনে ছেলে বলছে, কেন ওকে ভক্তি করতে হবে। ও আমার সহপাঠী ও আমার বন্ধু। মা তখন বললেন, ও যে ব্রাহ্মণ’।

নেতাজী সিরিয়ালটিও আমাকে ভীষণভাবে আকৃষ্ট করে। একটা কথা বলতেই হয়, দেশবিভাগ আমাকে আহত করে সেই ছোট বেলা থেকেই। ছোট বেলার বন্ধু খেলার সাথি একদিন সকাল বেলা শুনলাম ওরা নেই। কেথায় গেল, ভারতে চলে গেছে। এদেশ এ মাটি এ জন্মভূমি নাকি ওদের না। সেই শুরু এনিয়ে আমার মনের খসখচানি। কেন দেশ ভাগ হলো এর কারণ জানতে জীবনভর যেখানে যা পেয়েছি পড়তে চেষ্টা করেছি জানতে চেষ্টা করেছি।

কিন্তু সন্তোষজনক কিছু খুঁজে পাইনি বরং কষ্টই পেয়েছি। গান্ধী, নেতাজীর সঙ্গে একমত হতে পারলেন না। সর্বভারতীয় নেতা গান্ধীজী বিনা রক্তপাতে ভারত স্বাধীন করতে চাইলেন। অহিংস নীতির পথ তৈরি করলেন। নেতাজীর কথা ছিল বিনা রক্তপাতে ভারতের স্বাধীনতা আসবে না। গান্ধীজী বললেন আসবে। বললেন, ওরা তোমাদের লাঠিপেটা করলে বিনিময়ে তোমরা ওদের ফুল দাও। ওরা একগালে চড় মারলে তোমরা আরেক গাল বাড়িয়ে দাও। গান্ধীজীর এপথে নেতাজী থাকতে পারলেন না। তিনি কংগ্রেস ছাড়লেন আলাদা দল করলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশরা যখন রিজেদের ঘর সামলাতে ব্যস্ত তখন নেতাজী অক্ষ শক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়ে ব্রিটিশদের ভারত ছাড়তে বাধ্য করতে চাইলেন। দেশ ত্যাগ করলেন ইত্যাদি। শেষে গান্ধীজী জয়ী হলেন। তবে একটা সত্য কথা এখানে এসেই যায় তা হলো, সেই রক্তপাত তো ঠিকই হলো। ভীষণ রকমভাবে হলো। রক্তের বন্যা বয়ে গেল সারা ভারতবর্ষ জুড়ে হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গায়। লক্ষ-কোটি মানুষ বাস্তুহারা হলো। আর কী হলো, ভারত তার অখ-তা হারালো। হ্যাঁ, আজ আমরা ‘এক সাগর’ রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের গর্বিত নাগরিক। তারপরও ভারত বিভাগের দাগ মুছে ফেলা যাবে না।

এভাবেই টেলিভিশন করোনাকালে আমার দুঃসহ সময় পার করতে সহযোগিতা করেছে। এখন দুই ডোজ টিকা নিয়েছি। ভালোই তো আছি।

[লেখক : প্রাবন্ধিক]

বৃহস্পতিবার, ২৪ জুন ২০২১ , ১০ আষাঢ় ১৪২৮ ১২ জিলকদ ১৪৪২

করোনাকালের সাথী

আবদুল মান্নান খান

করোনায় আক্রান্ত হয়ে কঠিনভাবে ৪৫ দিন ঘরবন্দি জীবন কাটাতে হয়েছিল সব মিলিয়ে। দুইবার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছিল যে কারণে টেলিভিশন হয়ে দাঁড়ায় আমার অন্যতম সাথী।

এক সময় টেলিভিশন দেখার মধ্যে দেখা হতো খবর আর পছন্দের বিশেষ কোন অনুষ্ঠানাদি থাকলে। তারপর বেসরকারি চ্যানেল চালু হলো। চালু হলো টকশো নামের অনুষ্ঠান। জনপ্রিয় হয়ে উঠল কিছু চ্যানেল কিছু অনুষ্ঠান। এর মধ্যে নানা বিষয়ে কথা বলার একটা খোলা মঞ্চ হিসেবে য়েন দেখা দিল কোন একটা চ্যানেলের ‘তৃতীয় মাত্রা’ নামের টকশো অনুষ্ঠানটি। আওয়ামী লীগ বিএনপি এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বড় বড় নেতা, দেশের বড় বড় উকিল ব্যারেস্টার, বড় বড় ব্যবসায়ী শিল্পপতিসহ বিভিন্ন পেশাজীবীরা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তাদের অভিজ্ঞতা মতাদর্শ পছন্দ-অপছন্দের কথা তুলে ধরেন খোলা মনে। বাদ প্রতিবাদ হয়, জমে ওঠে অনুষ্ঠানটি। এ অবস্থায় পারত পক্ষে অনুষ্ঠানটি দেখা আর বাদ যায় না আমার। একই সঙ্গে প্রায় সব চ্যানেলে চলে এলো টকশো। যেটা ভালো লাগে সেটা দেখা বা কোনটাই না দেখে অন্য কিছু দেখা। না হয় দেশের বাইরের কোন অনুষ্ঠান খুঁজে দেখা।

এভাবেই শুরু হলো ভারতের বাংলা চ্যানেল দেখা। এককালে যখন সিনেমা দেখতাম তখনো হিন্দি-উর্দু সিনেমা আমাকে আকৃষ্ট করত না তেমন। এখনও করে না। তবে জনপ্রিয় কিছু হিন্দি ছবি যে দেখা হয়নি তা বলা যাবে না। তখন ইংরেজি সিনেমার দিকে একটু টানও ছিল বৈকি। যাহোক, শুরু হলো ঘরবন্দি হয়ে উত্তম সুচিত্রার অথবা ওদের সেই যুগের বাংলা সিনেমা দেখা। না হলে তার পরের ছবি, না হলে তারও পরের ছবি যা যখন টেলিভিশনে দেখায় দেখতে ধাকি। এখানে সে যুগের একটা বাংলা সিনেমার কথা না বলে পারছি না। সিনেমাটা সেকালে দেখিনি, নামও শুনেছিলাম কিনা মনে পড়ে না। ছবিটার নাম ‘যমালয়ে জীবন্ত মানুষ’। নায়ক ঢাকার ভানু। ঢাকার ভানু কথাটা একটা কৌতুক থেকে পাওয়া। যেমন ভানু এক বাসায় পৌঁছে দরজায় নড়া নাড়লেন। ভেতর থেকে একজন জিজ্ঞেস করলেন, কে। ‘আমি ঢাকার ভানু’। দরজা খুলে দিয়ে ভদ্রলোক জানতে চাইলেন, আপনি ঢাকার ভানু বললেন যে’। উত্তরে সে যুগের প্রখ্যাত কৌতুক অভিনেতা ভানু বন্দোপাধ্যায় বললেন, আরে মশাই আপনি তো পরেই জানতে চাইতেন, কোন ভানু। তাই আগেই বলে দিয়েছি’। আসলেই তিনি এবং তার পরিবার ছিলেন ঢাকার মানুষ। দেশ বিভাগের শিকার হয়ে তারা ওপার চলে যান।

এক সময় সিনেমা দেখা থেকে শুরু হলো ভারতের একটা বাংলা চ্যানেলে সিরিয়াল দেখা যেমন গোপাল ভাঁড়, সিআইডি এসব। এর মাঝে একদিন চোখ আটকে গেল আরেকটা বাংলা চ্যানেলে। যার দু’তিনটা সিরিয়াল আমাকে পেয়ে বসল যেমন রানী রাশমণি, নেতাজী, সা-রে-গা-মা এমন।

‘রানী রাসমণি’ পুরানো দিনের কাহিনী। বিদ্যাসাগরের বিধবা বিবাহ আইন পাস করানোর চেষ্টাকে রানী রাসমণি সমর্থন করেন। ব্রাহ্মণ সমাজ বিদ্যাসাগরের ওপর ভীষণ ক্ষ্যাপা। তাকে প্রাণে মেরে ফেলতেও উদ্ধত হয়। রানী রাসমণি বিদ্যাসাগরকে সমর্থন করায় তার এবং তার পরিবারের প্রতিও তারা নানাভাবে হেনস্তার সৃষ্টি করে। বিদ্যাসাগর দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এ আইন তিনি পাস করাবেনই। তার কণ্ঠে উচ্চারিত একটা ডায়লগ কাঁপিয়ে দেয় ব্রাহ্মণ সমাজকে। ডায়লগটা এরকম, ‘আমি ইশ্বরচন্দ্র শর্মা, ব্রাহ্মণ সমাজের মাথার ওপর পা রেখে বলছি, বিধবা বিবাহ আইন আমি পাস করাবোই’। বাপরে! কি সাংঘাতিক ডায়লগ। সিরিয়ালটা আমার দারুণ লেগেছে। মনে মনে ভাবি বর্তমান প্রজন্ম দেখুক তৎকালীন সমাজে সতিদাহ প্রথা বিলোপ করা বিধবা বিবাহ প্রথা চালু করা কী কঠিন কাজ ছিল।

সেকালের কথা বাদ দিলাম আমার নিজের দেখা একালের একটা ঘটনা বলি। পরীক্ষা দিতে যাবে দুই পরীক্ষার্থী তার একজন ব্রাহ্মণ। অব্রাহ্মণ ছেলেটা পড়ালেখায় বেশি ভালো। ব্রাহ্মণ ছেলেটা এসেছে অব্রাহ্মণ ছেলেটাকে ডেকে নিয়ে এক সঙ্গে যাবে বলে। বেরিয়ে যাবার সময় অব্রাহ্মণ ছেলেটার মা তার ছেলেকে বললেন, ওকে ভক্তি করো আগে তারপর রওনা দাও’। এ কথা শুনে ছেলে বলছে, কেন ওকে ভক্তি করতে হবে। ও আমার সহপাঠী ও আমার বন্ধু। মা তখন বললেন, ও যে ব্রাহ্মণ’।

নেতাজী সিরিয়ালটিও আমাকে ভীষণভাবে আকৃষ্ট করে। একটা কথা বলতেই হয়, দেশবিভাগ আমাকে আহত করে সেই ছোট বেলা থেকেই। ছোট বেলার বন্ধু খেলার সাথি একদিন সকাল বেলা শুনলাম ওরা নেই। কেথায় গেল, ভারতে চলে গেছে। এদেশ এ মাটি এ জন্মভূমি নাকি ওদের না। সেই শুরু এনিয়ে আমার মনের খসখচানি। কেন দেশ ভাগ হলো এর কারণ জানতে জীবনভর যেখানে যা পেয়েছি পড়তে চেষ্টা করেছি জানতে চেষ্টা করেছি।

কিন্তু সন্তোষজনক কিছু খুঁজে পাইনি বরং কষ্টই পেয়েছি। গান্ধী, নেতাজীর সঙ্গে একমত হতে পারলেন না। সর্বভারতীয় নেতা গান্ধীজী বিনা রক্তপাতে ভারত স্বাধীন করতে চাইলেন। অহিংস নীতির পথ তৈরি করলেন। নেতাজীর কথা ছিল বিনা রক্তপাতে ভারতের স্বাধীনতা আসবে না। গান্ধীজী বললেন আসবে। বললেন, ওরা তোমাদের লাঠিপেটা করলে বিনিময়ে তোমরা ওদের ফুল দাও। ওরা একগালে চড় মারলে তোমরা আরেক গাল বাড়িয়ে দাও। গান্ধীজীর এপথে নেতাজী থাকতে পারলেন না। তিনি কংগ্রেস ছাড়লেন আলাদা দল করলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশরা যখন রিজেদের ঘর সামলাতে ব্যস্ত তখন নেতাজী অক্ষ শক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়ে ব্রিটিশদের ভারত ছাড়তে বাধ্য করতে চাইলেন। দেশ ত্যাগ করলেন ইত্যাদি। শেষে গান্ধীজী জয়ী হলেন। তবে একটা সত্য কথা এখানে এসেই যায় তা হলো, সেই রক্তপাত তো ঠিকই হলো। ভীষণ রকমভাবে হলো। রক্তের বন্যা বয়ে গেল সারা ভারতবর্ষ জুড়ে হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গায়। লক্ষ-কোটি মানুষ বাস্তুহারা হলো। আর কী হলো, ভারত তার অখ-তা হারালো। হ্যাঁ, আজ আমরা ‘এক সাগর’ রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের গর্বিত নাগরিক। তারপরও ভারত বিভাগের দাগ মুছে ফেলা যাবে না।

এভাবেই টেলিভিশন করোনাকালে আমার দুঃসহ সময় পার করতে সহযোগিতা করেছে। এখন দুই ডোজ টিকা নিয়েছি। ভালোই তো আছি।

[লেখক : প্রাবন্ধিক]