গোয়ালন্দে পদ্মাপাড়ে ভাঙন আতঙ্কে হাজারও পরিবার

হুমকিতে ফেরি-লঞ্চঘাট

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়নে কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি ও স্র্রোতের কারণে ভাঙনের কবলে পড়েছে পদ্মা পাড়ের হাজারও পরিবার, হুমকিতে রয়েছে ঘরবাড়ি, ফসলি জমিসহ দৌলতদিয়া লঞ্চ ও ফেরি ঘাট।

গত কয়েক বছরের বর্ষায় ভয়াবহ নদী ভাঙনের ক্ষত কাটতে না কাটতেই আবারও বর্ষার শুরুতে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে চরম আতঙ্কে রয়েছে পদ্মা পাড়ের মানুষ। লঞ্চ ঘাটের ভাঙন ঠেকাতে বালু ভর্তি জিওটিউব ব্যাগ ফেলা হলেও স্থায়ীভাবে দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়নের ভাঙন কবলিত এলাকার ভাঙন ঠেকাতে নেয়া হচ্ছে না কোন পদক্ষেপ।

সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে পদ্মা পাড়ের মানুষেরা। শুধুমাত্র লঞ্চঘাটের ভাঙন রোধে জিওটিউব ব্যাগ ফেলে আপদকালীন ভাঙন রক্ষার ব্যবস্থা নিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। স্থানীয়রা জানান,শুধুমাত্র লঞ্চঘাট নয়, দেবগ্রাম ইউনিয়নের মুন্সী পাড়া, কাওয়াজানি ও মধ্য কাওয়াজানি এলাকা এবং দৌলতদিয়া ইউনিয়নের সাত্তার ফকির পাড়া, ছিদ্দিক কাজীর পাড়া, মজিদ শেখের পাড়া ও ১নং ব্যাপারী পাড়া, সাহাজদ্দিন ব্যাপারী পাড়া, লালু মন্ডল পাড়া, নতুন পাড়া এলাকার ভাঙ্গন রোধে স্থায়ীভাবে ব্যবস্থা না নিলে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আরো নতুন নতুন এলাকা বিলীন হয়ে যাবার আশঙ্কা রয়েছে। নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলে ভাঙন আরো বাড়বে। তাই ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধের দাবি জানান এলাকাবাসী।

এলাকাবাসী ক্ষোভের সাথে জানান, ভাঙন মৌসুমে বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের সরকারি কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা নদী বাঁধের আশ্বাস দিলেও তার কোন বাস্তবায়ন হয় না। যে কারণে প্রতি বছর পদ্মা নদীর ভাঙনে বসতি ও আবাদি জমি নদী গর্ভে চলে যায়। শুকনো মৌসুম নদী বাঁধের উপযুক্ত সময় হলেও তখন নদী বাঁধের কোন উদ্যোগ নেয়া হয় না তবে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নদী ভাঙনের উপক্রম হলেই পানি উন্নয়ন বোর্ড তোর-জোর করে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকাতে ব্যস্ত হয়ে ওঠে তাতে ভাঙন রোধে কোন উপকারে আসে না বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। গত বুধবার দুপুরে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা মুন্সি। তিনি বলেন, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ২ বার কথা বলেছি। তিনি রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আ. আহাদকে দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম এলাকার ভাঙন রোধের জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে বললেও সে এখন অবদি কোন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। আগামী (৩০ জুন) এক সপ্তাহের মধ্যে ভাঙন রোধে স্থায়ী কোন ব্যবস্থা না নিলে গোয়ালন্দ উপজেলার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অচল করে দেয়া হবে।

রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী আ. আহাদ বলেন,পানি সম্পদমন্ত্রী আমাদের ইনস্ট্র্রাকশন দিয়েছেন যে ২০টা প্যাকেজে ১ কিলোমিটারে ৫০ মিটার করে কাজ করতে, আমরা বোর্ডে নোট দিয়ে অনুমোদনের জন্য বোর্ডে পাঠাইছি, বোর্ড আমাকে বলেছে একই জায়গায় দুই ডিপার্টমেন্ট কাজ করলে জিনিসটা দ্রুততার সঙ্গে হয়ে যাবে, এটা তোমরা বিআইডব্লিউটিএর সঙ্গে যোগাযোগ কর। তারা যদি এখানে কাজ করে আমরা এখানে কাজ করব না, তো আমি তাদের ২-৩ বার অফিসিয়ালি চিঠি দিয়েছি এবং সমন্বয় কমিটির মিটিংয়ে জানিয়েছি, ইউএনও সাহেবও বিষয়টা জানেন।

এরপরে তারা অফিসিয়ালি জানিয়েছে দৌলতদিয়া ঘাটের ১ নম্বর ঘাট থেকে ৬ নম্বর ঘাট পর্যন্ত বিআইডব্লিউটিএ কাজ করবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড করবে লঞ্চঘাট থেকে পশ্চিমে চরের মধ্যে কাজেই সেখানে আমাদের কাজ করার কোন সুযোগ নেই। রাজবাড়ী-১ আসনের এমপি মহোদ্বয়ের নির্দেশে আপাতত লঞ্চঘাটে জরুরি ভিত্তিতে ২টা প্যাকেজে জিওটিউব দিয়ে কাজ করছি। আর চরের মধ্যে পশ্চিমদিকে প্রটেক্টিভ ওয়ার্কের আওতায় যে কাজ তা অনেক টাকার কাজ।

এখনে কষ্ট রেসু হিসাব করে পারমিটার খরচ হবে ৬০-৮০ হাজার টাকা। এখন এই জায়গায় এতগুলো ব্যাগ ফেলব এর এগেনিস্টে আসলেই ভাঙতেছে কিনা এখানে কাজের কোন যৌক্তিকতা আছে কিনা। তাছাড়াও ওখানে বিআইডব্লিউটিএর একটা ডেপুটি করা আছে।

সামনের শুকনো মৌসুমে এখানে কাজ শুরু হবে। তাহলে এই মুহূর্তে চরের মধ্যে যদি আমরা কাজ করি তাহলে টাকাগুলো অপচয় হয় কিনা এগুলো চিন্তা করে আমরা চরের মধ্যে এখন পর্যন্ত কোন কাজে হাত দেইনি। তবে জরুরীভাবে যদি ভাঙ্গে তাহলে আমরা জরুরী ভিত্তিতে ভাঙনরোধে কাজ করব।

শুক্রবার, ২৫ জুন ২০২১ , ১১ আষাঢ় ১৪২৮ ১৩ জিলকদ ১৪৪২

গোয়ালন্দে পদ্মাপাড়ে ভাঙন আতঙ্কে হাজারও পরিবার

হুমকিতে ফেরি-লঞ্চঘাট

প্রতিনিধি, গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী)

image

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) : পদ্মার ভাঙন দেখছেন এলাকার নেতারা -সংবাদ

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়নে কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি ও স্র্রোতের কারণে ভাঙনের কবলে পড়েছে পদ্মা পাড়ের হাজারও পরিবার, হুমকিতে রয়েছে ঘরবাড়ি, ফসলি জমিসহ দৌলতদিয়া লঞ্চ ও ফেরি ঘাট।

গত কয়েক বছরের বর্ষায় ভয়াবহ নদী ভাঙনের ক্ষত কাটতে না কাটতেই আবারও বর্ষার শুরুতে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে চরম আতঙ্কে রয়েছে পদ্মা পাড়ের মানুষ। লঞ্চ ঘাটের ভাঙন ঠেকাতে বালু ভর্তি জিওটিউব ব্যাগ ফেলা হলেও স্থায়ীভাবে দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়নের ভাঙন কবলিত এলাকার ভাঙন ঠেকাতে নেয়া হচ্ছে না কোন পদক্ষেপ।

সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে পদ্মা পাড়ের মানুষেরা। শুধুমাত্র লঞ্চঘাটের ভাঙন রোধে জিওটিউব ব্যাগ ফেলে আপদকালীন ভাঙন রক্ষার ব্যবস্থা নিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। স্থানীয়রা জানান,শুধুমাত্র লঞ্চঘাট নয়, দেবগ্রাম ইউনিয়নের মুন্সী পাড়া, কাওয়াজানি ও মধ্য কাওয়াজানি এলাকা এবং দৌলতদিয়া ইউনিয়নের সাত্তার ফকির পাড়া, ছিদ্দিক কাজীর পাড়া, মজিদ শেখের পাড়া ও ১নং ব্যাপারী পাড়া, সাহাজদ্দিন ব্যাপারী পাড়া, লালু মন্ডল পাড়া, নতুন পাড়া এলাকার ভাঙ্গন রোধে স্থায়ীভাবে ব্যবস্থা না নিলে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আরো নতুন নতুন এলাকা বিলীন হয়ে যাবার আশঙ্কা রয়েছে। নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলে ভাঙন আরো বাড়বে। তাই ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধের দাবি জানান এলাকাবাসী।

এলাকাবাসী ক্ষোভের সাথে জানান, ভাঙন মৌসুমে বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের সরকারি কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা নদী বাঁধের আশ্বাস দিলেও তার কোন বাস্তবায়ন হয় না। যে কারণে প্রতি বছর পদ্মা নদীর ভাঙনে বসতি ও আবাদি জমি নদী গর্ভে চলে যায়। শুকনো মৌসুম নদী বাঁধের উপযুক্ত সময় হলেও তখন নদী বাঁধের কোন উদ্যোগ নেয়া হয় না তবে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নদী ভাঙনের উপক্রম হলেই পানি উন্নয়ন বোর্ড তোর-জোর করে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকাতে ব্যস্ত হয়ে ওঠে তাতে ভাঙন রোধে কোন উপকারে আসে না বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। গত বুধবার দুপুরে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা মুন্সি। তিনি বলেন, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ২ বার কথা বলেছি। তিনি রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আ. আহাদকে দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম এলাকার ভাঙন রোধের জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে বললেও সে এখন অবদি কোন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। আগামী (৩০ জুন) এক সপ্তাহের মধ্যে ভাঙন রোধে স্থায়ী কোন ব্যবস্থা না নিলে গোয়ালন্দ উপজেলার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অচল করে দেয়া হবে।

রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী আ. আহাদ বলেন,পানি সম্পদমন্ত্রী আমাদের ইনস্ট্র্রাকশন দিয়েছেন যে ২০টা প্যাকেজে ১ কিলোমিটারে ৫০ মিটার করে কাজ করতে, আমরা বোর্ডে নোট দিয়ে অনুমোদনের জন্য বোর্ডে পাঠাইছি, বোর্ড আমাকে বলেছে একই জায়গায় দুই ডিপার্টমেন্ট কাজ করলে জিনিসটা দ্রুততার সঙ্গে হয়ে যাবে, এটা তোমরা বিআইডব্লিউটিএর সঙ্গে যোগাযোগ কর। তারা যদি এখানে কাজ করে আমরা এখানে কাজ করব না, তো আমি তাদের ২-৩ বার অফিসিয়ালি চিঠি দিয়েছি এবং সমন্বয় কমিটির মিটিংয়ে জানিয়েছি, ইউএনও সাহেবও বিষয়টা জানেন।

এরপরে তারা অফিসিয়ালি জানিয়েছে দৌলতদিয়া ঘাটের ১ নম্বর ঘাট থেকে ৬ নম্বর ঘাট পর্যন্ত বিআইডব্লিউটিএ কাজ করবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড করবে লঞ্চঘাট থেকে পশ্চিমে চরের মধ্যে কাজেই সেখানে আমাদের কাজ করার কোন সুযোগ নেই। রাজবাড়ী-১ আসনের এমপি মহোদ্বয়ের নির্দেশে আপাতত লঞ্চঘাটে জরুরি ভিত্তিতে ২টা প্যাকেজে জিওটিউব দিয়ে কাজ করছি। আর চরের মধ্যে পশ্চিমদিকে প্রটেক্টিভ ওয়ার্কের আওতায় যে কাজ তা অনেক টাকার কাজ।

এখনে কষ্ট রেসু হিসাব করে পারমিটার খরচ হবে ৬০-৮০ হাজার টাকা। এখন এই জায়গায় এতগুলো ব্যাগ ফেলব এর এগেনিস্টে আসলেই ভাঙতেছে কিনা এখানে কাজের কোন যৌক্তিকতা আছে কিনা। তাছাড়াও ওখানে বিআইডব্লিউটিএর একটা ডেপুটি করা আছে।

সামনের শুকনো মৌসুমে এখানে কাজ শুরু হবে। তাহলে এই মুহূর্তে চরের মধ্যে যদি আমরা কাজ করি তাহলে টাকাগুলো অপচয় হয় কিনা এগুলো চিন্তা করে আমরা চরের মধ্যে এখন পর্যন্ত কোন কাজে হাত দেইনি। তবে জরুরীভাবে যদি ভাঙ্গে তাহলে আমরা জরুরী ভিত্তিতে ভাঙনরোধে কাজ করব।