লকডাউনেও ৭ জেলায় বেড়েছে সংক্রমণ

ঢাকায় হাসপাতালে রোগীর চাপ

দেশে দৈনিক করোনা সংক্রমণ আবারও ছয় হাজার ছাড়িয়েছে। আড়াই মাসের মধ্যে গত একদিনে দেশে সবচেয়ে বেশি মানুষের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। গত একদিনে ঢাকা জেলা (মহানগরসহ) ও বিভাগে শনাক্ত কিছুটা কমেছে। তবে ‘লকডাউন’ থাকা পার্শ্ববর্তী সাত জেলায় শনাক্ত বেড়েছে। এই সাত জেলায় নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে গতকাল শনাক্তের হার ছিল ২৪ শতাংশের বেশি।

গত কিছুদিন ধরে রাজধানী ও আশপাশের জেলাগুলোতে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ঢাকার ‘কোভিড ডেডিকেটেড’ হাসপাতালগুলোতে রোগী চাপ বেড়েছে। এসব হাসপাতালে গুরুতর রোগীদের জন্য ‘আইসিইউ’র সংকট দেখা দিয়েছে।

রাজধানীর ১৫টি সরকারি এবং ২৮টি বেসরকারি হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে গতকাল অন্তত্য চারটি সরকারি হাসপাতালে কোন ‘আইসিইউ’ খালি ছিল না। ৩/৪টি বেসরকারি হাসপাতালেও ‘আইসিইউ’ স্বল্পতা ছিল। ১৫ দিন আগেও রাজধানীর প্রায় সব হাসপাতালেই ‘আইসিইউ’ খালি ছিল।

৭ জেলায় সংক্রমণে লাফ

রাজধানী ‘ঢাকা’ রক্ষায় ২২ জুন সকাল থেকে পার্শ্ববর্তী সাত জেলায় ‘লকডাউন’ বা বিধিনিষেধ চলছে। জেলাগুলো হলো নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, মাদারীপুর, রাজবাড়ী ও গোপালগঞ্জ। এসব জেলায় একদিনে রোগী বেড়েছে শতাধিক।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এই সাত জেলায় গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৩৮৯টি নমুনা পরীক্ষায় ৩৩৬ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া গেছে। পরীক্ষা বিবেচনায় সংক্রমণের হার ২৪ দশমিক ১৯ শতাংশ। এর আগে ২৩ জুন ওই সাত জেলায় ২০৯ জন এবং ২২ জুন ১৯৭ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়।

ঢাকায় শনাক্তের হার প্রায় ১৩ শতাংশ

ঢাকা জেলায় (মহানগরসহ) গত একদিনে ১২ হাজার ১৫৮টি নমুনা পরীক্ষায় এক হাজার ৫৭২ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। পরীক্ষা অনুপাতে সংক্রমণের হার ১২ দশমিক ৯২ শতাংশ। আগের দিন ঢাকায় দুই হাজার ৬৪ জন ‘কোভিড-১৯’ রোগী শনাক্ত হয়, শনাক্তের হার ছিল ১৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ।

হাসপাতালে রোগী ভর্তির চাপ

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গতকালের তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে রোগী ভর্তির চাপ বেড়েছে। এসব হাসপাতালে ‘আইসিইউ’র চাহিদাও বাড়ছে।

ঢাকার ১৫টি সরকারি হাসপাতালে তিন হাজার ৪৫৫টি সাধারণ শয্যার মধ্যে গতকাল খালি ছিল দুই হাজার ২০৮টি। এসব হাসপাতালের ৩৮৪টি ‘আইসিইউ’ শয্যার মধ্যে খালি ছিল ১৮০টি।

এর মধ্যে ৫০০ শয্যা কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতাল, ৫০০ শয্যা মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও শহীদ সোহরাওয়ার্র্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কোন ‘আইসিইউ’ খালি ছিল না।

এর আগে গত ২০ জুন ১৫টি সরকারি হাসপাতালে দুই হাজার ৩২১টি সাধারণ শয্যা ও ১৯৭টি আইসিইউ এবং ১৫ জুন দুই হাজার ৫১৪টি সাধারণ শয্যা ও ২২৭টি আইসিইউ ফাঁকা ছিল।

শনাক্তের সংখ্যায় এগিয়ে ঢাকা, সংক্রমণের হারে শীর্ষে খুলনা বিভাগ

গত একদিনে ঢাকা বিভাগে ১৩টি জেলায় ১৪ হাজার ৮০৬টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এসব পরীক্ষায় দুই হাজার ২৭১ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

এদিন খুলনা বিভাগের ১০টি জেলায় দুই হাজার ৪০৬টি নমুনা পরীক্ষায় ৯১৭ জনের দেহে সংক্রমণ পাওয়া গেছে। শনাক্তের হার ৩৮ দশমিক ১১ শতাংশ।

রংপুর বিভাগের ৮টি জেলায় ২৪ ঘণ্টায় দুই হাজার ২২৭টি নমুনা পরীক্ষায় ৮৪৩ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষা অনুপাতে সংক্রমণের হার ৩৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ।

রাজশাহী বিভাগের ৮টি জেলায় গত একদিনে পাঁচ হাজার ৮৬৫টি নমুনা পরীক্ষায় এক হাজার ১৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষা বিবেচনায় সংক্রমণের হার ১৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি জেলায় ২৪ ঘণ্টায় তিন হাজার ২১১টি নমুনা পরীক্ষায় ৬১১ জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। সংক্রমণের হার ১৯ দশমিক ০২ শতাংশ।

ময়মনসিংহ বিভাগের চারটি জেলায় একদিনে ৮৯৫টি নমুনা পরীক্ষায় ১৫১ জনের করোনা সংক্রমণ পাওয়া গেছে। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে সংক্রমণের হার ১৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ।

বরিশাল বিভাগের ছয়টি জেলায় একদিনে ৩৮৭টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এসব পরীক্ষায় ১২২ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমণের হার ৩১ দশমিক ৫২ শতাংশ।

সিলেট বিভাগের চার জেলায় ২৪ ঘণ্টায় ৫৯৪টি নমুনা পরীক্ষায় ১২৫ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ পাওয়া গেছে। সংক্রমণের হার ২১ দশমিক ০৪ শতাংশ।

এছাড়া সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত জেলাগুলোর মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় দিনাজপুরে ৪৮৩ জন, রাজশাহীতে ৩১৪ জন, খুলনায় ২৬০ জন, চট্টগ্রামে ২৪৭ জন, নওগাঁয় ২২১ জন, যশোরে ১৯১ জন, ঠাকুরগাঁওয়ে ১৮৮, টাঙ্গাইলে ১৭৫ জন, কুষ্টিয়ায় ১৩৯ জন, নোয়াখালীতে ১১৮ জন, ফরিদপুরে ১২২ জন ও রাজবাড়ীতে ৯৪ জনের করোনা সংক্রমণ পাওয়া গেছে।

আড়াই মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ শনাক্ত

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ছয় হাজার ৫৮ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে।

এই সংখ্যা গত আড়াই মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে গত ১২ এপ্রিল এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছিল। ওইদিন ৭ হাজার ২০১ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছিল।

২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে আট লাখ ৭২ হাজার ৯৩৫ জনে।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় ৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের নিয়ে দেশে করোনায় মোট ১৩ হাজার ৮৬৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।

করোনা আক্রান্তদের মধ্যে গত একদিনে তিন হাজার ২৩০ জন সুস্থ হয়েছেন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন সাত লাখ ৯৪ হাজার ৭৮৩ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৫৫৪টি ল্যাবে ৩০ হাজার ৩৯১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৬৮ লাখ ৩৫ হাজার ৪৬৬টি নমুনা। দেশে এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ, যা আগের দিন ছিল ২০ দশমিক ২৭ শতাংশ। আর এ পর্যন্ত শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯১ দশমিক ০৫ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ।

গত একদিনে মৃত্যু হওয়া ৮৫ জনের সর্বোচ্চ ২৩ জন ছিলেন খুলনা বিভাগের বাসিন্দা। ঢাকা বিভাগে ১৩ জন, রাজশাহী বিভাগে ২০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭ জন, বরিশাল বিভাগে ৩ জন, রংপুর বিভাগে ৭ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

তাদের মধ্যে পুরুষ ৫৫ জন এবং নারী ২৬ জন। এর মধ্যে ৬২ জন সরকারি হাসপাতালে, ১৪ জন বেসরকারি হাসপাতালে এবং পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে বাসায়।

বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত একদিনে মৃত্যু হওয়া ৩৬ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ১৮ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৯ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৯ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ৮ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে এবং ১ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ছিল।

শুক্রবার, ২৫ জুন ২০২১ , ১১ আষাঢ় ১৪২৮ ১৩ জিলকদ ১৪৪২

লকডাউনেও ৭ জেলায় বেড়েছে সংক্রমণ

ঢাকায় হাসপাতালে রোগীর চাপ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

করোনায় আক্রান্ত রোগীদের ভিড় বাড়ছে রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে। গতকাল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বারান্দায় মুমূর্ষু রোগী -সংবাদ

দেশে দৈনিক করোনা সংক্রমণ আবারও ছয় হাজার ছাড়িয়েছে। আড়াই মাসের মধ্যে গত একদিনে দেশে সবচেয়ে বেশি মানুষের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। গত একদিনে ঢাকা জেলা (মহানগরসহ) ও বিভাগে শনাক্ত কিছুটা কমেছে। তবে ‘লকডাউন’ থাকা পার্শ্ববর্তী সাত জেলায় শনাক্ত বেড়েছে। এই সাত জেলায় নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে গতকাল শনাক্তের হার ছিল ২৪ শতাংশের বেশি।

গত কিছুদিন ধরে রাজধানী ও আশপাশের জেলাগুলোতে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ঢাকার ‘কোভিড ডেডিকেটেড’ হাসপাতালগুলোতে রোগী চাপ বেড়েছে। এসব হাসপাতালে গুরুতর রোগীদের জন্য ‘আইসিইউ’র সংকট দেখা দিয়েছে।

রাজধানীর ১৫টি সরকারি এবং ২৮টি বেসরকারি হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে গতকাল অন্তত্য চারটি সরকারি হাসপাতালে কোন ‘আইসিইউ’ খালি ছিল না। ৩/৪টি বেসরকারি হাসপাতালেও ‘আইসিইউ’ স্বল্পতা ছিল। ১৫ দিন আগেও রাজধানীর প্রায় সব হাসপাতালেই ‘আইসিইউ’ খালি ছিল।

৭ জেলায় সংক্রমণে লাফ

রাজধানী ‘ঢাকা’ রক্ষায় ২২ জুন সকাল থেকে পার্শ্ববর্তী সাত জেলায় ‘লকডাউন’ বা বিধিনিষেধ চলছে। জেলাগুলো হলো নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, মাদারীপুর, রাজবাড়ী ও গোপালগঞ্জ। এসব জেলায় একদিনে রোগী বেড়েছে শতাধিক।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এই সাত জেলায় গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৩৮৯টি নমুনা পরীক্ষায় ৩৩৬ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া গেছে। পরীক্ষা বিবেচনায় সংক্রমণের হার ২৪ দশমিক ১৯ শতাংশ। এর আগে ২৩ জুন ওই সাত জেলায় ২০৯ জন এবং ২২ জুন ১৯৭ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়।

ঢাকায় শনাক্তের হার প্রায় ১৩ শতাংশ

ঢাকা জেলায় (মহানগরসহ) গত একদিনে ১২ হাজার ১৫৮টি নমুনা পরীক্ষায় এক হাজার ৫৭২ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। পরীক্ষা অনুপাতে সংক্রমণের হার ১২ দশমিক ৯২ শতাংশ। আগের দিন ঢাকায় দুই হাজার ৬৪ জন ‘কোভিড-১৯’ রোগী শনাক্ত হয়, শনাক্তের হার ছিল ১৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ।

হাসপাতালে রোগী ভর্তির চাপ

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গতকালের তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে রোগী ভর্তির চাপ বেড়েছে। এসব হাসপাতালে ‘আইসিইউ’র চাহিদাও বাড়ছে।

ঢাকার ১৫টি সরকারি হাসপাতালে তিন হাজার ৪৫৫টি সাধারণ শয্যার মধ্যে গতকাল খালি ছিল দুই হাজার ২০৮টি। এসব হাসপাতালের ৩৮৪টি ‘আইসিইউ’ শয্যার মধ্যে খালি ছিল ১৮০টি।

এর মধ্যে ৫০০ শয্যা কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতাল, ৫০০ শয্যা মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও শহীদ সোহরাওয়ার্র্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কোন ‘আইসিইউ’ খালি ছিল না।

এর আগে গত ২০ জুন ১৫টি সরকারি হাসপাতালে দুই হাজার ৩২১টি সাধারণ শয্যা ও ১৯৭টি আইসিইউ এবং ১৫ জুন দুই হাজার ৫১৪টি সাধারণ শয্যা ও ২২৭টি আইসিইউ ফাঁকা ছিল।

শনাক্তের সংখ্যায় এগিয়ে ঢাকা, সংক্রমণের হারে শীর্ষে খুলনা বিভাগ

গত একদিনে ঢাকা বিভাগে ১৩টি জেলায় ১৪ হাজার ৮০৬টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এসব পরীক্ষায় দুই হাজার ২৭১ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

এদিন খুলনা বিভাগের ১০টি জেলায় দুই হাজার ৪০৬টি নমুনা পরীক্ষায় ৯১৭ জনের দেহে সংক্রমণ পাওয়া গেছে। শনাক্তের হার ৩৮ দশমিক ১১ শতাংশ।

রংপুর বিভাগের ৮টি জেলায় ২৪ ঘণ্টায় দুই হাজার ২২৭টি নমুনা পরীক্ষায় ৮৪৩ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষা অনুপাতে সংক্রমণের হার ৩৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ।

রাজশাহী বিভাগের ৮টি জেলায় গত একদিনে পাঁচ হাজার ৮৬৫টি নমুনা পরীক্ষায় এক হাজার ১৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষা বিবেচনায় সংক্রমণের হার ১৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি জেলায় ২৪ ঘণ্টায় তিন হাজার ২১১টি নমুনা পরীক্ষায় ৬১১ জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। সংক্রমণের হার ১৯ দশমিক ০২ শতাংশ।

ময়মনসিংহ বিভাগের চারটি জেলায় একদিনে ৮৯৫টি নমুনা পরীক্ষায় ১৫১ জনের করোনা সংক্রমণ পাওয়া গেছে। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে সংক্রমণের হার ১৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ।

বরিশাল বিভাগের ছয়টি জেলায় একদিনে ৩৮৭টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এসব পরীক্ষায় ১২২ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমণের হার ৩১ দশমিক ৫২ শতাংশ।

সিলেট বিভাগের চার জেলায় ২৪ ঘণ্টায় ৫৯৪টি নমুনা পরীক্ষায় ১২৫ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ পাওয়া গেছে। সংক্রমণের হার ২১ দশমিক ০৪ শতাংশ।

এছাড়া সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত জেলাগুলোর মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় দিনাজপুরে ৪৮৩ জন, রাজশাহীতে ৩১৪ জন, খুলনায় ২৬০ জন, চট্টগ্রামে ২৪৭ জন, নওগাঁয় ২২১ জন, যশোরে ১৯১ জন, ঠাকুরগাঁওয়ে ১৮৮, টাঙ্গাইলে ১৭৫ জন, কুষ্টিয়ায় ১৩৯ জন, নোয়াখালীতে ১১৮ জন, ফরিদপুরে ১২২ জন ও রাজবাড়ীতে ৯৪ জনের করোনা সংক্রমণ পাওয়া গেছে।

আড়াই মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ শনাক্ত

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ছয় হাজার ৫৮ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে।

এই সংখ্যা গত আড়াই মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে গত ১২ এপ্রিল এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছিল। ওইদিন ৭ হাজার ২০১ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছিল।

২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে আট লাখ ৭২ হাজার ৯৩৫ জনে।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় ৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের নিয়ে দেশে করোনায় মোট ১৩ হাজার ৮৬৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।

করোনা আক্রান্তদের মধ্যে গত একদিনে তিন হাজার ২৩০ জন সুস্থ হয়েছেন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন সাত লাখ ৯৪ হাজার ৭৮৩ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৫৫৪টি ল্যাবে ৩০ হাজার ৩৯১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৬৮ লাখ ৩৫ হাজার ৪৬৬টি নমুনা। দেশে এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ, যা আগের দিন ছিল ২০ দশমিক ২৭ শতাংশ। আর এ পর্যন্ত শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯১ দশমিক ০৫ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ।

গত একদিনে মৃত্যু হওয়া ৮৫ জনের সর্বোচ্চ ২৩ জন ছিলেন খুলনা বিভাগের বাসিন্দা। ঢাকা বিভাগে ১৩ জন, রাজশাহী বিভাগে ২০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭ জন, বরিশাল বিভাগে ৩ জন, রংপুর বিভাগে ৭ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

তাদের মধ্যে পুরুষ ৫৫ জন এবং নারী ২৬ জন। এর মধ্যে ৬২ জন সরকারি হাসপাতালে, ১৪ জন বেসরকারি হাসপাতালে এবং পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে বাসায়।

বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত একদিনে মৃত্যু হওয়া ৩৬ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ১৮ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৯ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৯ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ৮ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে এবং ১ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ছিল।