১৪ দিন শাটডাউনের সুপারিশ জাতীয় কমিটির

করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ ঠেকাতে সারাদেশে ১৪ দিনের পূর্ণ ‘শাটডাউন’-এর সুপারিশ করেছে ‘কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি’। গতকাল কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মো. সহিদুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এদিকে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানিয়েছেন ‘কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি’ সারাদেশে পূর্ণ শাটডাউনের পরামর্শ দিয়েছে। তাদের এ পরামর্শ যৌক্তিক। পূর্ণ শাটডাউনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সরকারি সিদ্ধান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পূর্ণ শাটডাউন কার্যকর করা হবে।

‘কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি’ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি’র ৩৮তম সভায় দেশে কোভিড-১৯ রোগের সাম্প্রতিক ক্রমবর্ধমান সংক্রমণ বিষয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ ও আলোচনা হয়।

পরামর্শক কমিটি সভায় করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সম্পূর্ণ শাটডাউনের সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে রোগের বিস্তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া ও জনগণের জীবনের ক্ষতি প্রতিরোধ করার জন্য কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে সারাদেশে কমপক্ষে ১৪ দিন সম্পূর্ণ ‘শাটডাউন’ দেয়ার সুপারিশ করছে। জরুরি সেবা ছাড়া যানবাহন, অফিস-আদালতসহ সবকিছু বন্ধ রাখা প্রয়োজন। এ ব্যবস্থা কঠোরভাবে পালন করতে না পারলে আমাদের যত প্রস্তুতিই থাকুক না কেন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অপ্রতুল হয়ে পড়বে।’

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সম্প্রতি জানিয়েছে, করোনা পরিস্থিতির বর্তমান প্রেক্ষাপটে সাধারণ মানুষকে যদি স্বাস্থ্য বিধি মানানো না যায় তবে করোনা পরিস্থিতির আরও অবনতি আশঙ্কা রয়েছে।

‘কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি’র বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘কোভিড-১৯ রোগের বিশেষ ডেলটা প্রজাতির সামাজিক সংক্রমণ চিহ্নিত হয়েছে ও দেশে ইতোমধ্যে রোগের প্রকোপ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এ প্রজাতির জীবাণুর সংক্রমণ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে সারাদেশেই উচ্চ সংক্রমণ, পঞ্চাশোর্ধ জেলায় অতি উচ্চ সংক্রমণ লক্ষ্য করা যায়।’ সভায় আরও বলা হয় ‘রোগ প্রতিরোধের জন্য খন্ড খন্ডভাবে গৃহীত কর্মসূচির উপযোগীতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। অন্যান্য দেশ, বিশেষত পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের অভিজ্ঞতা কঠোর ব্যবস্থা ছাড়া এর বিস্তৃতি প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। ভারতের শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞের সঙ্গেও আলোচনা করা হয়েছে। তাদের মতামত অনুযায়ী যেসব স্থানে পূর্ণ ‘শাটডাউন’ প্রয়োগ করা হয়েছে সেখানে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’

পরামর্শক কমিটির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য সর্বাত্মক উদ্যোগ নিয়েছেন। এজন্য সভায় তাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। এ রোগ থেকে পূর্ণ মুক্তির জন্য ৮০ শতাংশের ঊর্ধ্বে মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়া প্রয়োজন। বিদেশ থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহ, লাইসেন্সের মাধ্যমে দেশে ভ্যাকসিন উৎপাদন করা ও নিজস্ব ভ্যাকসিন তৈরির জন্য সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে গবেষণা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টার প্রতি কমিটি পূর্ণ সমর্থন জানায়।’

গত বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ‘কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি’র ৩৮তম সভা থেকে এ সুপারিশ করা হয় বলে বিবৃতিতে জানানো হয়।

শুক্রবার, ২৫ জুন ২০২১ , ১১ আষাঢ় ১৪২৮ ১৩ জিলকদ ১৪৪২

১৪ দিন শাটডাউনের সুপারিশ জাতীয় কমিটির

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ ঠেকাতে সারাদেশে ১৪ দিনের পূর্ণ ‘শাটডাউন’-এর সুপারিশ করেছে ‘কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি’। গতকাল কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মো. সহিদুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এদিকে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানিয়েছেন ‘কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি’ সারাদেশে পূর্ণ শাটডাউনের পরামর্শ দিয়েছে। তাদের এ পরামর্শ যৌক্তিক। পূর্ণ শাটডাউনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সরকারি সিদ্ধান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পূর্ণ শাটডাউন কার্যকর করা হবে।

‘কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি’ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি’র ৩৮তম সভায় দেশে কোভিড-১৯ রোগের সাম্প্রতিক ক্রমবর্ধমান সংক্রমণ বিষয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ ও আলোচনা হয়।

পরামর্শক কমিটি সভায় করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সম্পূর্ণ শাটডাউনের সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে রোগের বিস্তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া ও জনগণের জীবনের ক্ষতি প্রতিরোধ করার জন্য কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে সারাদেশে কমপক্ষে ১৪ দিন সম্পূর্ণ ‘শাটডাউন’ দেয়ার সুপারিশ করছে। জরুরি সেবা ছাড়া যানবাহন, অফিস-আদালতসহ সবকিছু বন্ধ রাখা প্রয়োজন। এ ব্যবস্থা কঠোরভাবে পালন করতে না পারলে আমাদের যত প্রস্তুতিই থাকুক না কেন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অপ্রতুল হয়ে পড়বে।’

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সম্প্রতি জানিয়েছে, করোনা পরিস্থিতির বর্তমান প্রেক্ষাপটে সাধারণ মানুষকে যদি স্বাস্থ্য বিধি মানানো না যায় তবে করোনা পরিস্থিতির আরও অবনতি আশঙ্কা রয়েছে।

‘কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি’র বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘কোভিড-১৯ রোগের বিশেষ ডেলটা প্রজাতির সামাজিক সংক্রমণ চিহ্নিত হয়েছে ও দেশে ইতোমধ্যে রোগের প্রকোপ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এ প্রজাতির জীবাণুর সংক্রমণ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে সারাদেশেই উচ্চ সংক্রমণ, পঞ্চাশোর্ধ জেলায় অতি উচ্চ সংক্রমণ লক্ষ্য করা যায়।’ সভায় আরও বলা হয় ‘রোগ প্রতিরোধের জন্য খন্ড খন্ডভাবে গৃহীত কর্মসূচির উপযোগীতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। অন্যান্য দেশ, বিশেষত পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের অভিজ্ঞতা কঠোর ব্যবস্থা ছাড়া এর বিস্তৃতি প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। ভারতের শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞের সঙ্গেও আলোচনা করা হয়েছে। তাদের মতামত অনুযায়ী যেসব স্থানে পূর্ণ ‘শাটডাউন’ প্রয়োগ করা হয়েছে সেখানে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’

পরামর্শক কমিটির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য সর্বাত্মক উদ্যোগ নিয়েছেন। এজন্য সভায় তাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। এ রোগ থেকে পূর্ণ মুক্তির জন্য ৮০ শতাংশের ঊর্ধ্বে মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়া প্রয়োজন। বিদেশ থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহ, লাইসেন্সের মাধ্যমে দেশে ভ্যাকসিন উৎপাদন করা ও নিজস্ব ভ্যাকসিন তৈরির জন্য সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে গবেষণা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টার প্রতি কমিটি পূর্ণ সমর্থন জানায়।’

গত বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ‘কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি’র ৩৮তম সভা থেকে এ সুপারিশ করা হয় বলে বিবৃতিতে জানানো হয়।