সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ। গতকাল তিনি বিদায়ী সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ এর কাছ থেকে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম শাহীন ইকবাল এবং বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান নবনিযুক্ত সেনাপ্রধানকে ‘জেনারেল’ র্যাংক ব্যাজ পরিয়ে দেন।
আইএসপিআর জানিয়েছে, দায়িত্ব গ্রহণের পর নবনিযুক্ত সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর সেনাকুঞ্জে সেনাবাহিনীর একটি চৌকস দল তাঁকে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করে। সেখানে তিনি একটি গাছের চারা রোপণ করেন।
জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন ১ ডিসেম্বর ১৯৬৩ সালে খুলনা জেলার জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক শেখ মোহাম্মদ রোকন উদ্দিন আহমেদ স্বাধীনতা-পূর্বকালে একনাগারে দুই যুগ জনপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২৩ ডিসেম্বর ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে কমিশন লাভ করেন। এরপর তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে অপারেশন এলাকায় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে যোগ দিয়ে সামরিক তিনি ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড এ্যান্ড স্টাফ কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পাশাপাশি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হতে মাস্টারস্ ইন ডিফেন্স স্টাডিজ এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস্ (বিইউপি) হতে ডেভেলপমেন্ট এ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজে এম ফিল সম্পন্ন করেন। বর্তমানে তিনি বিইউপি এর অধীনে পিএইচডি অধ্যয়নরত আছেন। জেনারেল শফিউদ্দিন প্রথম স্থান অধিকার এবং এমআইএসটি গোল্ড মেডেল অর্জনসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ২০১০ সালে চীনের ন্যাশনাল ডিফেন্স ইউনিভার্সিটি (এনডিইউ) হতে ডিফেন্স এ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ কোর্স এবং মিরপুরে ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড এ্যান্ড স্টাফ কলেজ হতে আর্মি স্টাফ কোর্স সম্পন্ন করেন।
তিনি এনডিইউ, ওয়াশিংটন হতেও গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। তাঁর চাকরি জীবনে তিনি জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) হিসেবে আমি ট্রেনিং এ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড, সেনাবাহিনীর একমাত্র লজিস্টিকস্ ফরমেশন এবং ১৯ পদাতিক ডিভিশন কমান্ড করেন। এ ছাড়াও তিনি একটি পদাতিক ব্রিগেডের ব্রিগেড কমান্ডার, বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে কাউন্টার ইন্সারজেন্সি অপারেশন এলাকায় একটি পদাতিক ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক হিসেবে কমান্ড নিযুক্তিতে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ (বিআইআইএস)-এর মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
জেনারেল শফিউদ্দিন সেনাবাহিনীর একজন পাইওনিয়ার ডেপুটি ফোর্স কমান্ডার হিসেবে ২০১৪-২০১৬ পর্যন্ত ইউনাইটেড ন্যাশনস্ মাল্টিডাইমেনশনাল ইন্টিগ্রেটেড স্ট্যাবিলাইজেশন মিশন ইন দ্যা সেন্ট্রাল আফ্রিকা (মিনুস্কা)তে বহুজাতিক বাহিনীর নেতৃত্ব প্রদান করেন এবং অসামান্য কর্মদক্ষতা প্রদর্শনের জন্য এসআরএসজি কর্তৃক সাইটেশন প্রাপ্ত হন।
জেনারেল শফিউদ্দি সেনাবাহিনীর পাইওনিয়ার ডেপুটি ফোর্স কমান্ডার হিসেবে ২০১৪-২০১৬ পর্যন্ত ইউনাইটেড ন্যাশনস্ মাল্টিডাইমেনশনাল ইন্টিগ্রেটেড স্ট্যাবিলাইজেশন মিশন ইন দ্যা সেন্ট্রাল আফ্রিকা (মিনুস্কা)তে বহুজাতিক বাহিনীর নেতৃত্ব প্রদান করেন। বিভিন্ন ফরমেশন সদর দপ্তরে সিনিয়র অপারেশনাল এবং প্রশাসনিক স্টাফ অফিসারসহ সিয়ির ডাইরেক্টিং স্টাফ হিসেবে ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ প্রশিক্ষক হিসেবে ক্যাডেট কলেজ ও প্লাটুন কমান্ডার হিসেবে মিলিটারি একাডেমিতে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি সদর দপ্তর আর্মি ট্রেনিং এ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড (আর্টডক)-এর চিফ অব ডকট্রিন ডিভিশন এবং সেনাবাহিনী সদর দপ্তরে সামরিক প্রশিক্ষণ পরিদপ্তরের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পূর্বে তিনি সেনাসদরে কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত ও দুই কন্যা সন্তানের পিতা।
বিদায়ী সেনাবাহিনী প্রধানকে সংবর্ধনা
এদিকে বিদায়ী সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ-এর বিদায়ী সংবর্ধনা গতকাল সেনানিবাসে অনুষ্ঠিত হয়। নবনিযুক্ত সেনাবাহিনী প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ এর কাছে দায়িত্বভার হস্তান্তরের পর সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সব পদবির সদস্যের উপস্থিতিতে বিদায়ী সেনাবাহিনী প্রধানকে সামরিক রীতিতে বিদায় জানানো হয়। এর আগে তিনি গতকাল সকালে শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে শাহাদাত বরণকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এরপর সেনাকুঞ্জে সেনাবাহিনীর একটি চৌকস দল তাঁকে “গার্ড অব অনার’ প্রদান করে এবং সেখানে তিনি একটি গাছের চারা রোপণ করেন।
শুক্রবার, ২৫ জুন ২০২১ , ১১ আষাঢ় ১৪২৮ ১৩ জিলকদ ১৪৪২
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |
সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ। গতকাল তিনি বিদায়ী সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ এর কাছ থেকে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম শাহীন ইকবাল এবং বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান নবনিযুক্ত সেনাপ্রধানকে ‘জেনারেল’ র্যাংক ব্যাজ পরিয়ে দেন।
আইএসপিআর জানিয়েছে, দায়িত্ব গ্রহণের পর নবনিযুক্ত সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর সেনাকুঞ্জে সেনাবাহিনীর একটি চৌকস দল তাঁকে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করে। সেখানে তিনি একটি গাছের চারা রোপণ করেন।
জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন ১ ডিসেম্বর ১৯৬৩ সালে খুলনা জেলার জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক শেখ মোহাম্মদ রোকন উদ্দিন আহমেদ স্বাধীনতা-পূর্বকালে একনাগারে দুই যুগ জনপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২৩ ডিসেম্বর ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে কমিশন লাভ করেন। এরপর তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে অপারেশন এলাকায় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে যোগ দিয়ে সামরিক তিনি ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড এ্যান্ড স্টাফ কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পাশাপাশি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হতে মাস্টারস্ ইন ডিফেন্স স্টাডিজ এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস্ (বিইউপি) হতে ডেভেলপমেন্ট এ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজে এম ফিল সম্পন্ন করেন। বর্তমানে তিনি বিইউপি এর অধীনে পিএইচডি অধ্যয়নরত আছেন। জেনারেল শফিউদ্দিন প্রথম স্থান অধিকার এবং এমআইএসটি গোল্ড মেডেল অর্জনসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ২০১০ সালে চীনের ন্যাশনাল ডিফেন্স ইউনিভার্সিটি (এনডিইউ) হতে ডিফেন্স এ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ কোর্স এবং মিরপুরে ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড এ্যান্ড স্টাফ কলেজ হতে আর্মি স্টাফ কোর্স সম্পন্ন করেন।
তিনি এনডিইউ, ওয়াশিংটন হতেও গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। তাঁর চাকরি জীবনে তিনি জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) হিসেবে আমি ট্রেনিং এ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড, সেনাবাহিনীর একমাত্র লজিস্টিকস্ ফরমেশন এবং ১৯ পদাতিক ডিভিশন কমান্ড করেন। এ ছাড়াও তিনি একটি পদাতিক ব্রিগেডের ব্রিগেড কমান্ডার, বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে কাউন্টার ইন্সারজেন্সি অপারেশন এলাকায় একটি পদাতিক ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক হিসেবে কমান্ড নিযুক্তিতে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ (বিআইআইএস)-এর মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
জেনারেল শফিউদ্দিন সেনাবাহিনীর একজন পাইওনিয়ার ডেপুটি ফোর্স কমান্ডার হিসেবে ২০১৪-২০১৬ পর্যন্ত ইউনাইটেড ন্যাশনস্ মাল্টিডাইমেনশনাল ইন্টিগ্রেটেড স্ট্যাবিলাইজেশন মিশন ইন দ্যা সেন্ট্রাল আফ্রিকা (মিনুস্কা)তে বহুজাতিক বাহিনীর নেতৃত্ব প্রদান করেন এবং অসামান্য কর্মদক্ষতা প্রদর্শনের জন্য এসআরএসজি কর্তৃক সাইটেশন প্রাপ্ত হন।
জেনারেল শফিউদ্দি সেনাবাহিনীর পাইওনিয়ার ডেপুটি ফোর্স কমান্ডার হিসেবে ২০১৪-২০১৬ পর্যন্ত ইউনাইটেড ন্যাশনস্ মাল্টিডাইমেনশনাল ইন্টিগ্রেটেড স্ট্যাবিলাইজেশন মিশন ইন দ্যা সেন্ট্রাল আফ্রিকা (মিনুস্কা)তে বহুজাতিক বাহিনীর নেতৃত্ব প্রদান করেন। বিভিন্ন ফরমেশন সদর দপ্তরে সিনিয়র অপারেশনাল এবং প্রশাসনিক স্টাফ অফিসারসহ সিয়ির ডাইরেক্টিং স্টাফ হিসেবে ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ প্রশিক্ষক হিসেবে ক্যাডেট কলেজ ও প্লাটুন কমান্ডার হিসেবে মিলিটারি একাডেমিতে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি সদর দপ্তর আর্মি ট্রেনিং এ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড (আর্টডক)-এর চিফ অব ডকট্রিন ডিভিশন এবং সেনাবাহিনী সদর দপ্তরে সামরিক প্রশিক্ষণ পরিদপ্তরের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পূর্বে তিনি সেনাসদরে কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত ও দুই কন্যা সন্তানের পিতা।
বিদায়ী সেনাবাহিনী প্রধানকে সংবর্ধনা
এদিকে বিদায়ী সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ-এর বিদায়ী সংবর্ধনা গতকাল সেনানিবাসে অনুষ্ঠিত হয়। নবনিযুক্ত সেনাবাহিনী প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ এর কাছে দায়িত্বভার হস্তান্তরের পর সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সব পদবির সদস্যের উপস্থিতিতে বিদায়ী সেনাবাহিনী প্রধানকে সামরিক রীতিতে বিদায় জানানো হয়। এর আগে তিনি গতকাল সকালে শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে শাহাদাত বরণকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এরপর সেনাকুঞ্জে সেনাবাহিনীর একটি চৌকস দল তাঁকে “গার্ড অব অনার’ প্রদান করে এবং সেখানে তিনি একটি গাছের চারা রোপণ করেন।