গ্রামাঞ্চলে উদ্যোক্তা তৈরির প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে সবাইকে বিদ্যুৎ সেবার আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। গতকাল ‘গ্রামীণ জীবনমান উন্নয়নে বিদ্যুৎ শক্তি’ প্রকল্প অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা জানান।
এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) বাস্তবায়নাধীন ওই প্রকল্পের আওতায় ৩৮৫ জন লাইফলাইন গ্রাহককে ৪ কোটি ২৩ লাখ টাকার ব্যবসায়িক সরঞ্জাম দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বে করেন আরইবি’র চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মঈন উদ্দিনের (অব.)। অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন বিদ্যুৎ সচিব মো. হাবিবুর রহমান, এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন পারকাশ প্রমুখ।
প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, গ্রামীণ জনগণকে অর্থনৈতিক কর্মকা-ে সম্পৃক্ত রাখতে চায় সরকার। এতে সুষম উন্নয়ন নিশ্চিত হবে। বিদ্যুৎ সুবিধা দ্রুত পৌঁছনো সম্ভব হলে ‘আমার গ্রাম-আমার শহর’ কার্যক্রম এগিয়ে যাবে। তিনি বলেন, বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ, রিসাইকেল প্লান্ট, স্মার্ট মিটার, স্মার্ট গ্রিড, ইলেক্ট্রিক ভিহাইকেল, লিথিয়াম ব্যাটারির কারখানা স্থাপন, ভূগর্ভস্থ বিররণ লাইন স্থাপন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে অটোমেশন ইত্যাদি প্রকল্প অর্থায়ন, কারিগরি বা পরামর্শক সেবা দিয়ে সহযোগিতা করতে পারে এডিবি।
আরইবি সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের অধিক দুর্যোগপ্রবণ, পশ্চাদপদ ও নিম্নআয়ের ৫টি জেলার (গোপালগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও, ভোলা ও সুনামগঞ্জ) মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন, গ্রামীণ উদ্যোক্তা তৈরিকরণ, নারীর ক্ষমতায়ন, কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং বিদ্যুতের দক্ষ, নিরাপদ ও উৎপাদনশীল ব্যবহারে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ‘গ্রামীণ জীবনমান উন্নয়নে বিদ্যুৎ শক্তি’ শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।
এডিবি’র মাধ্যমে জেএফপিআর (জাপান ফান্ড ফর প্রভার্টি রিডাকশন) হতে প্রাপ্ত অনুদান, জিওবি ও সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্পটি পরিচালিত হয়। প্রকল্পটির মেয়াদকাল ৩ বছর (১ জুলাই ২০১৮ থেকে ৩০ জুন-২০২১) এবং ব্যয় ১৮ কোটি ১৩ লাখ টাকা যেখানে প্রকল্প অনুদান প্রায় ৯৪ শতাংশ। অবশিষ্ট ৬ শতাশং জিওবি এবং সংস্থার। প্রকল্পটির আওতায় ২৭০০ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে, যেখানে ২১০০ জন ৫টি জেলার পিছিয়ে পড়া প্রান্তিক গ্রাহক। অবশিষ্ট ৬০০ জন আরইবি ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) কর্মকর্তা-কর্মচারী।
প্রকল্প এলাকায় বিদ্যমান পেশার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে লাইফ লাইন গ্রাহককে প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে নির্বাচন করা হয়। ২১০০ জন প্রান্তিক গ্রাহককে ১০টি ট্রেডে সর্বোচ্চ ২৮ দিনব্যাপী ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। যুক্তরাজ্যভিত্তিক ‘প্রাক্টিক্যাল অ্যাকশন কন্সালটিং’ শীর্ষক পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প (বিসিক), টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ (টিএসসি), কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এ প্রশিক্ষণ দেয়।
প্রশিক্ষণ ট্রেডসমূহের মধ্যে এলাকাভিত্তিক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু ও পরিচালনা সংক্রান্ত, ইনট্রিগ্রেটেড কৃষি, মৎস্য চাষ, এসি ও ফ্রিজ মেরামত, বেসিক কম্পিউটার, মোবাইল সার্ভিসিং, ইলেকট্রিক হাউজ ওয়্যারিং, টেইলারিং, নিরাপদ বিদ্যুৎ ব্যবহারবিষয়ক ও বিউটিফিকেশন এ প্রান্তিক গ্রাহককে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে ৪৩ শতাংশ নারী অংশগ্রহণ করেন। বর্ণিত ২৭০০ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদানের ফলে প্রশিক্ষণ খাতে প্রায় ৫ কোটি ১৯ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।
রবিবার, ২৭ জুন ২০২১ , ১৩ আষাঢ় ১৪২৮ ১৫ জিলক্বদ ১৪৪২
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |
গ্রামাঞ্চলে উদ্যোক্তা তৈরির প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে সবাইকে বিদ্যুৎ সেবার আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। গতকাল ‘গ্রামীণ জীবনমান উন্নয়নে বিদ্যুৎ শক্তি’ প্রকল্প অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা জানান।
এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) বাস্তবায়নাধীন ওই প্রকল্পের আওতায় ৩৮৫ জন লাইফলাইন গ্রাহককে ৪ কোটি ২৩ লাখ টাকার ব্যবসায়িক সরঞ্জাম দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বে করেন আরইবি’র চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মঈন উদ্দিনের (অব.)। অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন বিদ্যুৎ সচিব মো. হাবিবুর রহমান, এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন পারকাশ প্রমুখ।
প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, গ্রামীণ জনগণকে অর্থনৈতিক কর্মকা-ে সম্পৃক্ত রাখতে চায় সরকার। এতে সুষম উন্নয়ন নিশ্চিত হবে। বিদ্যুৎ সুবিধা দ্রুত পৌঁছনো সম্ভব হলে ‘আমার গ্রাম-আমার শহর’ কার্যক্রম এগিয়ে যাবে। তিনি বলেন, বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ, রিসাইকেল প্লান্ট, স্মার্ট মিটার, স্মার্ট গ্রিড, ইলেক্ট্রিক ভিহাইকেল, লিথিয়াম ব্যাটারির কারখানা স্থাপন, ভূগর্ভস্থ বিররণ লাইন স্থাপন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে অটোমেশন ইত্যাদি প্রকল্প অর্থায়ন, কারিগরি বা পরামর্শক সেবা দিয়ে সহযোগিতা করতে পারে এডিবি।
আরইবি সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের অধিক দুর্যোগপ্রবণ, পশ্চাদপদ ও নিম্নআয়ের ৫টি জেলার (গোপালগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও, ভোলা ও সুনামগঞ্জ) মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন, গ্রামীণ উদ্যোক্তা তৈরিকরণ, নারীর ক্ষমতায়ন, কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং বিদ্যুতের দক্ষ, নিরাপদ ও উৎপাদনশীল ব্যবহারে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ‘গ্রামীণ জীবনমান উন্নয়নে বিদ্যুৎ শক্তি’ শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।
এডিবি’র মাধ্যমে জেএফপিআর (জাপান ফান্ড ফর প্রভার্টি রিডাকশন) হতে প্রাপ্ত অনুদান, জিওবি ও সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্পটি পরিচালিত হয়। প্রকল্পটির মেয়াদকাল ৩ বছর (১ জুলাই ২০১৮ থেকে ৩০ জুন-২০২১) এবং ব্যয় ১৮ কোটি ১৩ লাখ টাকা যেখানে প্রকল্প অনুদান প্রায় ৯৪ শতাংশ। অবশিষ্ট ৬ শতাশং জিওবি এবং সংস্থার। প্রকল্পটির আওতায় ২৭০০ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে, যেখানে ২১০০ জন ৫টি জেলার পিছিয়ে পড়া প্রান্তিক গ্রাহক। অবশিষ্ট ৬০০ জন আরইবি ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) কর্মকর্তা-কর্মচারী।
প্রকল্প এলাকায় বিদ্যমান পেশার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে লাইফ লাইন গ্রাহককে প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে নির্বাচন করা হয়। ২১০০ জন প্রান্তিক গ্রাহককে ১০টি ট্রেডে সর্বোচ্চ ২৮ দিনব্যাপী ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। যুক্তরাজ্যভিত্তিক ‘প্রাক্টিক্যাল অ্যাকশন কন্সালটিং’ শীর্ষক পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প (বিসিক), টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ (টিএসসি), কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এ প্রশিক্ষণ দেয়।
প্রশিক্ষণ ট্রেডসমূহের মধ্যে এলাকাভিত্তিক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু ও পরিচালনা সংক্রান্ত, ইনট্রিগ্রেটেড কৃষি, মৎস্য চাষ, এসি ও ফ্রিজ মেরামত, বেসিক কম্পিউটার, মোবাইল সার্ভিসিং, ইলেকট্রিক হাউজ ওয়্যারিং, টেইলারিং, নিরাপদ বিদ্যুৎ ব্যবহারবিষয়ক ও বিউটিফিকেশন এ প্রান্তিক গ্রাহককে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে ৪৩ শতাংশ নারী অংশগ্রহণ করেন। বর্ণিত ২৭০০ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদানের ফলে প্রশিক্ষণ খাতে প্রায় ৫ কোটি ১৯ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।