লকডাউন : মানুষের যাত্রা থামছে না

রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকার জনপথ মোড়। গত শনিবার রাত ১১টায়। মাথায় একটি ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন আসলাম নামের এক ব্যক্তি। কাছে গিয়ে কোথায় যাবেন জানতে চাইলে বলেন, ‘চট্টগ্রামে যাব। কোন বাস নেই। তাই মাইক্রোবাসের অপেক্ষায় আছি। জনপ্রতি ১২০০ টাকায়। আটজনের একটি মাইক্রোবাস ভাড়া করেছি। রাত ১২টায় চট্টগ্রামের উদ্দেশে যাত্রা করবে। সে জন্য অপেক্ষা করছি।’

আসলাম গাজীপুরের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। গত সপ্তাহ থেকে গাজীপুরে লকডাউনের কারণে তেমন কাজ-কর্ম নেই। সোমবার থেকে সারাদেশে লকডাউনের ঘোষণায় ঢাকা ছাড়ছেন তিনি। চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় গ্রামের বাড়িতে যাবেন।

লকডাউনের কারণে গাজীপুর থেকে ভেঙে ভেঙে সায়েদাবাদ আসেন তিনি। প্রথমে বোর্ডবাজার থেকে সিএনজিতে জনপ্রতি ১০০ টাকা ভাড়া দিয়ে টঙ্গী ব্রিজে আসেন। এরপর টঙ্গী ব্রিজ হেঁটে পার হয়ে বাসে সায়েদাবাদ আসেন। সায়েদবাদ থেকে মাইক্রোবাসে চট্টগ্রামে যাবেন। আগে গাজীপুর থেকে চট্টগ্রাম যেতে তার খরচ হতো ৫০০-৬০০ টাকা। এখন লকডাউনের কারণে ১৫০০-২০০০ টাকা খরচ হবে বলে জানান তিনি।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সারাদেশে কঠোর লকডাউনের ঘোষণায় এভাবে ঢাকা ছাড়ছেন মানুষ। গতকাল ঢাকা থেকে বের হওয়ার ও প্রবেশ পথে ছিল মানুষের ভিড়। ফেরি, মাইক্রোবাস, সিএনজি, অটোরিক্সা, প্রাইভেট কারসহ ছোট যানবাহনের গাদাগাদি করে ঢাকা ছাড়তে দেখা তাদের।

এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন জেলা থেকে অনেকে ঢাকায় প্রবেশ করতে দেখা গেছে। যাত্রাপথে নানা দুর্ভোগ ও ভোগান্তি শিকার হতে হয়েছে বলে জানান তারা। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানতে তেমন আগ্রহ দেখা যায়নি তাদের। ঢাকার আশপাশের ৭ জেলায় বিধি-নিষেধের কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ করা হলেও মানুষ চলাচল বন্ধ হয়নি বলে স্থানীয়রা জানান।

ফেরিঘাটে মানুষের ঢল

প্রতিনিধি, শিবচর (মাদারীপুর)

লকডাউনের ঘোষণায় হাতে ভর দিয়ে বরিশালের উদ্দেশে যাত্রা করেছেন রনি। ১১ বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই পা হারিয়েছেন তিনি। এখন হাতে ভর করেই চলতে হয় তার। কোমর পর্যন্ত টায়ার দিয়ে পেচানো। ফেরির প্রচ- ভিড়ে হাতে ভর দিয়ে পদ্মা নদী পার হয়েছেন তিনি। নারায়ণগঞ্জ থেকে বরিশালের উদ্দেশে তার এই যাত্রা। রনি বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় পা হারিয়েছে। সামনে ঈদ। যদি কঠোর লকডাউন দিয়ে দেয়, তাই আগেভাগেই বরিশাল যাচ্ছি মা-বাবার কাছে। পা নেই কি আর করব হাত দিয়েই চলতে শিখেছি।’

এভাবে শুধু রনিই নয় শিশু বৃদ্ধসহ লাখো যাত্রীর ঢল এখন শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে। বিশেষ করে শিমুলিয়া ঘাটে অতিরিক্ত চাপ। যাত্রী চাপে জরুরি যানবাহন পারাপারও ব্যাহত হচ্ছে। এদিকে দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় মোটরসাইকেল, ইজিবাইকসহ বিভিন্ন হালকা যানবাহনে যাত্রীরা ৩-৪ গুণ ভাড়া গুনে গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছেন।

ঢাকার কাওরান বাজারের ফল ব্যবসায়ী মোবারক আলী বলেন, ‘কঠোর লকডাউনের সময়তো ব্যবসা বন্ধ থাকবে। ব্যবসা বন্ধ থাকলে ঢাকায় বাসা ভাড়া দিব কিভাবে আর খাবই বা কি? তাই স্ত্রী, ছেলে মেয়েসহ গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী ফিরে যাচ্ছি।’

ঢাকার একটি বেসরকারি কোম্পানির সুপারভাইজার ইমরান হোসেন বলেন, ‘অফিস বন্ধ হয়ে যাবে। কবে খুলবে তা জানি না। সামনে ঈদ তাই আগেভাগেই পরিবারের সবাইকে নিয়ে গ্রামে ফিরে যাচ্ছি।’

লকডাউনের ঘোষণায় শিমুলীয়া-বাংলাবাজার নৌরুট হয়ে দক্ষিণাঞ্চলমুখী যাত্রীদের ঢল নেমেছে। রোববার সকাল থেকেই হাজার হাজার মানুষ ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় ফিরতে দেখা গেছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নৌরুটে যাত্রী চাপ বৃদ্ধি পায়। শিমুলিয়া থেকে ছেড়ে আসা প্রতিটি ফেরিই ছিল যাত্রীতে কানায় কানায় পূর্ণ। কোন কোন ফেরিতে যাত্রীদের চাপে অল্প কয়েকটি যানবাহন পারাপার হতে দেখা গেছে। এদিন যাত্রী চাপ সামাল দিতে শিমুলিয়া থেকে আসা বেশ কয়েকটি ফেরি বাংলাবাজার ঘাটে যাত্রী ও যানবাহন আনলোড করে বাংলাবাজার ঘাট থেকে অল্প যাত্রী নিয়েই আবার শিমুলিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যেতে দেখা গেছে।

যাত্রীদের চাপে এদিন জরুরি ও পণ্যবাহী গাড়ি পারাপারেও বিলম্ব হয়। লঞ্চ বন্ধ থাকায় ফেরিতেই যাত্রীরা গাদাগাদি করে পদ্মা পাড়ি দেন। ফলে ঘাট এলাকা বা ফেরিতে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোন লক্ষণ দেখা যায়নি কোথাও। অনেককেই দেখা গেছে মাস্কবিহীন।

বিআইডব্লিউটিসি বাংলাবাজার ঘাট ম্যানেজার মো. সালাউদ্দিন বলেন, সকাল থেকেই ফেরিতে দক্ষিণাঞ্চলমুখী যাত্রী চাপ রয়েছে। দক্ষিণাঞ্চল থেকেও অনেক যাত্রী ঢাকা যাচ্ছেন। আমাদের সব ফেরি চালু থাকায় পারাপারে কোন সমস্যা হচ্ছে না। ফেরিতে যাত্রীদের পাশাপাশি জরুরি ও পণ্যবাহী গাড়ি পারাপার করা হচ্ছে। আমরা যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে ফেরিতে উঠতে বারবার অনুরোধ করছি। দূরপাল্লা বা অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রীবাহী যানবাহন বন্ধ থাকলেও বরিশাল, খুলনাসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে মোটরসাইকেল, থ্রি হুইলার, ইজিবাইকসহ হালকা যানবাহনে ৩-৪ গুণ ভাড়া গুনে যাত্রীরা বাংলাবাজার ঘাটে পৌঁছান।

একই চিত্র ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলগামী যাত্রীদের ক্ষেত্রেও। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে যাত্রীরা হালকা যানবাহনে ৩-৪ গুণ ভাড়া দিয়ে ফেরিতে পদ্মা পাড়ি দিয়েও আবারও ভোগান্তিতেও পড়েন। বাংলাবাজার থেকে ইজিবাইক, সিএনজি, মোটরসাইকেলে বরিশালে ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকা, গোপালগঞ্জ ৫শ’ টাকা, খুলনা ৭শ’ টাকা, মাদারীপুর ২শ’ টাকা, বাগেরহাট ৬৫০ টাকাসহ প্রতিটি যানবাহনেই কয়েকগুণ ভাড়া আদায় করা হয় যাত্রীদের কাছ থেকে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মহাসড়ক ও আভ্যন্তরীণ সড়কের বিভিন্ন স্থানে বেড়িকেড দিলেও বিভিন্ন অযুহাতে যাত্রীরা গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছেন। এদিন ১৬টি ফেরি দিয়ে যাত্রী ও জরুরি গাড়ি পারাপার করা হয়।

রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজট

ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশ ও বের হওয়া মুখে মানুষের চাপ বৃদ্ধি ফলে গতকাল রাজধানীর সড়কের যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। রাজধানীর গাবতলী, যাত্রাবাড়ীর চৌরাস্তা, আব্দুল্লাহপুরসহ বিভিন্ন সড়কের যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে আটকে থেকে ভোগান্তি শিকার হতে হয়েছে বলে যাত্রীরা জানান। রাজধানীর টেকনিক্যাল থেকে গাবতলীর আমিনবাজার এলাকা পর্যন্ত তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া শ্যামলী থেকে সাইন্সল্যাব ও শাহবাগ সড়কেও দীর্ঘ যানজট আটতে থাকতে হয় যাত্রীদের।

সোমবার, ২৮ জুন ২০২১ , ১৪ আষাঢ় ১৪২৮ ১৬ জিলক্বদ ১৪৪২

লকডাউন : মানুষের যাত্রা থামছে না

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

স্বাস্থ্যবিধির কোন তোয়াক্কা না করে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ। মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ফেরিতে উপচেপড়া ভিড় সংবাদ

রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকার জনপথ মোড়। গত শনিবার রাত ১১টায়। মাথায় একটি ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন আসলাম নামের এক ব্যক্তি। কাছে গিয়ে কোথায় যাবেন জানতে চাইলে বলেন, ‘চট্টগ্রামে যাব। কোন বাস নেই। তাই মাইক্রোবাসের অপেক্ষায় আছি। জনপ্রতি ১২০০ টাকায়। আটজনের একটি মাইক্রোবাস ভাড়া করেছি। রাত ১২টায় চট্টগ্রামের উদ্দেশে যাত্রা করবে। সে জন্য অপেক্ষা করছি।’

আসলাম গাজীপুরের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। গত সপ্তাহ থেকে গাজীপুরে লকডাউনের কারণে তেমন কাজ-কর্ম নেই। সোমবার থেকে সারাদেশে লকডাউনের ঘোষণায় ঢাকা ছাড়ছেন তিনি। চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় গ্রামের বাড়িতে যাবেন।

লকডাউনের কারণে গাজীপুর থেকে ভেঙে ভেঙে সায়েদাবাদ আসেন তিনি। প্রথমে বোর্ডবাজার থেকে সিএনজিতে জনপ্রতি ১০০ টাকা ভাড়া দিয়ে টঙ্গী ব্রিজে আসেন। এরপর টঙ্গী ব্রিজ হেঁটে পার হয়ে বাসে সায়েদাবাদ আসেন। সায়েদবাদ থেকে মাইক্রোবাসে চট্টগ্রামে যাবেন। আগে গাজীপুর থেকে চট্টগ্রাম যেতে তার খরচ হতো ৫০০-৬০০ টাকা। এখন লকডাউনের কারণে ১৫০০-২০০০ টাকা খরচ হবে বলে জানান তিনি।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সারাদেশে কঠোর লকডাউনের ঘোষণায় এভাবে ঢাকা ছাড়ছেন মানুষ। গতকাল ঢাকা থেকে বের হওয়ার ও প্রবেশ পথে ছিল মানুষের ভিড়। ফেরি, মাইক্রোবাস, সিএনজি, অটোরিক্সা, প্রাইভেট কারসহ ছোট যানবাহনের গাদাগাদি করে ঢাকা ছাড়তে দেখা তাদের।

এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন জেলা থেকে অনেকে ঢাকায় প্রবেশ করতে দেখা গেছে। যাত্রাপথে নানা দুর্ভোগ ও ভোগান্তি শিকার হতে হয়েছে বলে জানান তারা। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানতে তেমন আগ্রহ দেখা যায়নি তাদের। ঢাকার আশপাশের ৭ জেলায় বিধি-নিষেধের কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ করা হলেও মানুষ চলাচল বন্ধ হয়নি বলে স্থানীয়রা জানান।

ফেরিঘাটে মানুষের ঢল

প্রতিনিধি, শিবচর (মাদারীপুর)

লকডাউনের ঘোষণায় হাতে ভর দিয়ে বরিশালের উদ্দেশে যাত্রা করেছেন রনি। ১১ বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই পা হারিয়েছেন তিনি। এখন হাতে ভর করেই চলতে হয় তার। কোমর পর্যন্ত টায়ার দিয়ে পেচানো। ফেরির প্রচ- ভিড়ে হাতে ভর দিয়ে পদ্মা নদী পার হয়েছেন তিনি। নারায়ণগঞ্জ থেকে বরিশালের উদ্দেশে তার এই যাত্রা। রনি বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় পা হারিয়েছে। সামনে ঈদ। যদি কঠোর লকডাউন দিয়ে দেয়, তাই আগেভাগেই বরিশাল যাচ্ছি মা-বাবার কাছে। পা নেই কি আর করব হাত দিয়েই চলতে শিখেছি।’

এভাবে শুধু রনিই নয় শিশু বৃদ্ধসহ লাখো যাত্রীর ঢল এখন শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে। বিশেষ করে শিমুলিয়া ঘাটে অতিরিক্ত চাপ। যাত্রী চাপে জরুরি যানবাহন পারাপারও ব্যাহত হচ্ছে। এদিকে দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় মোটরসাইকেল, ইজিবাইকসহ বিভিন্ন হালকা যানবাহনে যাত্রীরা ৩-৪ গুণ ভাড়া গুনে গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছেন।

ঢাকার কাওরান বাজারের ফল ব্যবসায়ী মোবারক আলী বলেন, ‘কঠোর লকডাউনের সময়তো ব্যবসা বন্ধ থাকবে। ব্যবসা বন্ধ থাকলে ঢাকায় বাসা ভাড়া দিব কিভাবে আর খাবই বা কি? তাই স্ত্রী, ছেলে মেয়েসহ গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী ফিরে যাচ্ছি।’

ঢাকার একটি বেসরকারি কোম্পানির সুপারভাইজার ইমরান হোসেন বলেন, ‘অফিস বন্ধ হয়ে যাবে। কবে খুলবে তা জানি না। সামনে ঈদ তাই আগেভাগেই পরিবারের সবাইকে নিয়ে গ্রামে ফিরে যাচ্ছি।’

লকডাউনের ঘোষণায় শিমুলীয়া-বাংলাবাজার নৌরুট হয়ে দক্ষিণাঞ্চলমুখী যাত্রীদের ঢল নেমেছে। রোববার সকাল থেকেই হাজার হাজার মানুষ ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় ফিরতে দেখা গেছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নৌরুটে যাত্রী চাপ বৃদ্ধি পায়। শিমুলিয়া থেকে ছেড়ে আসা প্রতিটি ফেরিই ছিল যাত্রীতে কানায় কানায় পূর্ণ। কোন কোন ফেরিতে যাত্রীদের চাপে অল্প কয়েকটি যানবাহন পারাপার হতে দেখা গেছে। এদিন যাত্রী চাপ সামাল দিতে শিমুলিয়া থেকে আসা বেশ কয়েকটি ফেরি বাংলাবাজার ঘাটে যাত্রী ও যানবাহন আনলোড করে বাংলাবাজার ঘাট থেকে অল্প যাত্রী নিয়েই আবার শিমুলিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যেতে দেখা গেছে।

যাত্রীদের চাপে এদিন জরুরি ও পণ্যবাহী গাড়ি পারাপারেও বিলম্ব হয়। লঞ্চ বন্ধ থাকায় ফেরিতেই যাত্রীরা গাদাগাদি করে পদ্মা পাড়ি দেন। ফলে ঘাট এলাকা বা ফেরিতে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোন লক্ষণ দেখা যায়নি কোথাও। অনেককেই দেখা গেছে মাস্কবিহীন।

বিআইডব্লিউটিসি বাংলাবাজার ঘাট ম্যানেজার মো. সালাউদ্দিন বলেন, সকাল থেকেই ফেরিতে দক্ষিণাঞ্চলমুখী যাত্রী চাপ রয়েছে। দক্ষিণাঞ্চল থেকেও অনেক যাত্রী ঢাকা যাচ্ছেন। আমাদের সব ফেরি চালু থাকায় পারাপারে কোন সমস্যা হচ্ছে না। ফেরিতে যাত্রীদের পাশাপাশি জরুরি ও পণ্যবাহী গাড়ি পারাপার করা হচ্ছে। আমরা যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে ফেরিতে উঠতে বারবার অনুরোধ করছি। দূরপাল্লা বা অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রীবাহী যানবাহন বন্ধ থাকলেও বরিশাল, খুলনাসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে মোটরসাইকেল, থ্রি হুইলার, ইজিবাইকসহ হালকা যানবাহনে ৩-৪ গুণ ভাড়া গুনে যাত্রীরা বাংলাবাজার ঘাটে পৌঁছান।

একই চিত্র ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলগামী যাত্রীদের ক্ষেত্রেও। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে যাত্রীরা হালকা যানবাহনে ৩-৪ গুণ ভাড়া দিয়ে ফেরিতে পদ্মা পাড়ি দিয়েও আবারও ভোগান্তিতেও পড়েন। বাংলাবাজার থেকে ইজিবাইক, সিএনজি, মোটরসাইকেলে বরিশালে ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকা, গোপালগঞ্জ ৫শ’ টাকা, খুলনা ৭শ’ টাকা, মাদারীপুর ২শ’ টাকা, বাগেরহাট ৬৫০ টাকাসহ প্রতিটি যানবাহনেই কয়েকগুণ ভাড়া আদায় করা হয় যাত্রীদের কাছ থেকে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মহাসড়ক ও আভ্যন্তরীণ সড়কের বিভিন্ন স্থানে বেড়িকেড দিলেও বিভিন্ন অযুহাতে যাত্রীরা গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছেন। এদিন ১৬টি ফেরি দিয়ে যাত্রী ও জরুরি গাড়ি পারাপার করা হয়।

রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজট

ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশ ও বের হওয়া মুখে মানুষের চাপ বৃদ্ধি ফলে গতকাল রাজধানীর সড়কের যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। রাজধানীর গাবতলী, যাত্রাবাড়ীর চৌরাস্তা, আব্দুল্লাহপুরসহ বিভিন্ন সড়কের যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে আটকে থেকে ভোগান্তি শিকার হতে হয়েছে বলে যাত্রীরা জানান। রাজধানীর টেকনিক্যাল থেকে গাবতলীর আমিনবাজার এলাকা পর্যন্ত তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া শ্যামলী থেকে সাইন্সল্যাব ও শাহবাগ সড়কেও দীর্ঘ যানজট আটতে থাকতে হয় যাত্রীদের।