মগবাজার বিস্ফোরণে দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনার দাবি

মগবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় দায়ীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন বিরোধীদলের কয়েকজন সংসদ সদস্য। এ ঘটনায় যারা মারা গেছেন তাদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবিও উঠেছে। গতকাল জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে (অনির্ধারিত আলোচনায়) এ দাবি জানান তারা।

এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়। এ সময় প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় পার্টির (জাপা) সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘মগবাজারের দুর্ঘটনায় ছয়জন মারা গেছেন। অনেকে হাসপাতালে ভর্তি। ঢাকা শহরে যেসব হোটেল বা রেস্টুরেন্ট আছে এগুলোতে যে গ্যাস স্টোভ ব্যবহার হয়, সেই গ্যাসের স্টোভ বা সিলিন্ডারগুলো কখনও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পরিদর্শনের মাধ্যমে ইন্সস্পেকশন করা হয় কিনা এ প্রশ্নটা সামনে আসছে। কারণ আমরা দেখেছি, বিভিন্ন প্রাইভেট গাড়িতে যেসব গ্যাস সিলিন্ডার রয়েছে সেগুলো ব্লাস্ট হওয়ার কারণে অনেক অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে এবং অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘আমি জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীকে অনুরোধ করব এই যে ঘটনাটা গত রাতে ঘটল এটা আসলেই যদি গ্যাসের কারণে হয়, তাহলে কী কারণে? এখানে গ্যাসের যে এত বড় একটা স্টোর ছিল, এটা কী কোন সময় ইন্সস্পেকশন করা হয়েছিল? এমনকি সারাদেশে যেসব জায়গায় গ্যাসের সিলিন্ডার স্টোর করা হয় প্রয়োজনীয় ইন্সপেকশন হয় কিনা? এগুলো যেন ইন্সস্পেকশন করা হয়। কারণ কাল রাতে যে দুর্ঘটনা ঘটল এর কারণটা, এর প্রতিকার এবং এত মানুষ মারা গেল এতে কী কোন ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে? যেসব হোটেল রেস্টেুরেন্টের কারণে এ ঘটনা ঘটছে তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য করা হবে কিনা? এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দিতে মাননীয় প্রতিমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাচ্ছি।’ বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি এসব ঘটনা ঘটছে। গত বছর নারায়ণগঞ্জের মসজিদে নামাজরত অবস্থায় প্রায় ৪০ জন মানুষ মারা গেছেন, অনেকে আহত হয়েছেন। তাদের দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিতে হয়েছে। গতকাল রাজধানীর মগবাজারের মতো ব্যস্ততম এলাকায় যে দুর্ঘটনাটা ঘটেছে এর দায় সরকারকে নিতে হবে। এখানে (সংসদে) বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নেই।’

তিনি বলেন, ‘যত্রতত্র এভাবে রেস্টুরেন্ট উঠছে সেগুলোর সেফটি আছে কিনা? আমরা বিভিন্ন দেশ ঘুরে দেখি সেখানে লেখা থাকে-সেফটি ফার্স্ট। কিন্তু বাংলাদেশের কী অবস্থা? আজকে বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণ হয়ে লোক মারা যাচ্ছে। এ কাজগুলো তো বিদ্যুৎ বিভাগের। তাদের তো জবাবদিহিতার আওতায় আসতে হবে। রাজধানীর মতো একটি জায়গায় যদি এরকম একটি ঘটনা ঘটে...। সেখানে অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কী ভয়াবহ। কী একটা অবস্থা। সেখানে অনেকগুলো বাড়ি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। এটার দায় কে নেবে? এখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আছেন, আমি অনুরোধ করব বিদ্যুৎ বিভাগকে কঠোরভাবে নির্দেশ দিতে হবে। যারা বাসাবাড়িতে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ নিচ্ছে এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে প্রতিনিয়ত মানুষ মরবে।’

মঙ্গলবার, ২৯ জুন ২০২১ , ১৫ আষাঢ় ১৪২৮ ১৭ জিলক্বদ ১৪৪২

মগবাজার বিস্ফোরণে দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনার দাবি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

মগবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় দায়ীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন বিরোধীদলের কয়েকজন সংসদ সদস্য। এ ঘটনায় যারা মারা গেছেন তাদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবিও উঠেছে। গতকাল জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে (অনির্ধারিত আলোচনায়) এ দাবি জানান তারা।

এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়। এ সময় প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় পার্টির (জাপা) সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘মগবাজারের দুর্ঘটনায় ছয়জন মারা গেছেন। অনেকে হাসপাতালে ভর্তি। ঢাকা শহরে যেসব হোটেল বা রেস্টুরেন্ট আছে এগুলোতে যে গ্যাস স্টোভ ব্যবহার হয়, সেই গ্যাসের স্টোভ বা সিলিন্ডারগুলো কখনও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পরিদর্শনের মাধ্যমে ইন্সস্পেকশন করা হয় কিনা এ প্রশ্নটা সামনে আসছে। কারণ আমরা দেখেছি, বিভিন্ন প্রাইভেট গাড়িতে যেসব গ্যাস সিলিন্ডার রয়েছে সেগুলো ব্লাস্ট হওয়ার কারণে অনেক অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে এবং অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘আমি জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীকে অনুরোধ করব এই যে ঘটনাটা গত রাতে ঘটল এটা আসলেই যদি গ্যাসের কারণে হয়, তাহলে কী কারণে? এখানে গ্যাসের যে এত বড় একটা স্টোর ছিল, এটা কী কোন সময় ইন্সস্পেকশন করা হয়েছিল? এমনকি সারাদেশে যেসব জায়গায় গ্যাসের সিলিন্ডার স্টোর করা হয় প্রয়োজনীয় ইন্সপেকশন হয় কিনা? এগুলো যেন ইন্সস্পেকশন করা হয়। কারণ কাল রাতে যে দুর্ঘটনা ঘটল এর কারণটা, এর প্রতিকার এবং এত মানুষ মারা গেল এতে কী কোন ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে? যেসব হোটেল রেস্টেুরেন্টের কারণে এ ঘটনা ঘটছে তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য করা হবে কিনা? এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দিতে মাননীয় প্রতিমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাচ্ছি।’ বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি এসব ঘটনা ঘটছে। গত বছর নারায়ণগঞ্জের মসজিদে নামাজরত অবস্থায় প্রায় ৪০ জন মানুষ মারা গেছেন, অনেকে আহত হয়েছেন। তাদের দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিতে হয়েছে। গতকাল রাজধানীর মগবাজারের মতো ব্যস্ততম এলাকায় যে দুর্ঘটনাটা ঘটেছে এর দায় সরকারকে নিতে হবে। এখানে (সংসদে) বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নেই।’

তিনি বলেন, ‘যত্রতত্র এভাবে রেস্টুরেন্ট উঠছে সেগুলোর সেফটি আছে কিনা? আমরা বিভিন্ন দেশ ঘুরে দেখি সেখানে লেখা থাকে-সেফটি ফার্স্ট। কিন্তু বাংলাদেশের কী অবস্থা? আজকে বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণ হয়ে লোক মারা যাচ্ছে। এ কাজগুলো তো বিদ্যুৎ বিভাগের। তাদের তো জবাবদিহিতার আওতায় আসতে হবে। রাজধানীর মতো একটি জায়গায় যদি এরকম একটি ঘটনা ঘটে...। সেখানে অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কী ভয়াবহ। কী একটা অবস্থা। সেখানে অনেকগুলো বাড়ি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। এটার দায় কে নেবে? এখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আছেন, আমি অনুরোধ করব বিদ্যুৎ বিভাগকে কঠোরভাবে নির্দেশ দিতে হবে। যারা বাসাবাড়িতে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ নিচ্ছে এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে প্রতিনিয়ত মানুষ মরবে।’