‘যক্ষ্মা রোগীদের হাজারে একজন এইচআইভি আক্রান্ত’

দেশে চিকিৎসাধীন ১২ হাজার যক্ষ্মা রোগীর মধ্যে এইচআইভি/এইডস আক্রান্ত পাওয়া গেছে ১২ জন। দেশে প্রতি এক হাজার যক্ষ্মা রোগীর মধ্যে একজন এইডসে আক্রান্ত। গতকাল বেলা ১১টার দিকে জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান (নিপসম), স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের টিপি-ল্যাপস অপারেশন প্ল্যানের সৌজন্যে ‘গ্লোবাল ক্যন্ড’-এর অর্থায়নে ‘বাংলাদেশের যক্ষ্মা রোগীদের মধ্যে এইচআইভির মাত্রা ২০১৯-২০২০’ শীর্ষক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষ ৬৫ শতাংশ, নারী ৪৩.০৮ শতাংশ এবং তৃতীয় লিঙ্গ ০.২ শতাংশ।

গবেষণায় দেখা গেছে, যারা এইচআইভিতে আক্রান্ত তাদের বয়স ৩৫ থেকে ৪৪ বছরের মধ্যে, এটা চিন্তার বিষয়। কারণ এই বয়সটা নানাভাবে গুরুত্বপূর্ণ, অর্থনৈতিকভাবে উৎপাদনশীল। দেশে ৩৫ লাখের অধিক যক্ষ্মা রোগী রয়েছে। গত বছরই নতুন করে ৩ লাখ যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত হয়েছে।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) অংশ হিসেবে বাংলাদেশ যক্ষ্মা ও এইডস রোগীর সংখ্যা কমিয়ে আনার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশে এইডসের প্রাদুর্ভাব নি¤œ পর্যায়ে। কিন্তু যক্ষ্মা রোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষ ৩০ দেশের একটি এবং বৈশ্বিক যক্ষ্মা রোগীর তিন দশমিক ছয় শতাংশ এখানেই থাকেন। এইডস আক্রান্ত মানুষদের যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। কারণ, এইডস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয় বলে যক্ষ্মার জীবাণুর বিরুদ্ধে মানবদেহ সঠিক সুরক্ষা পায় না। বৈশ্বিকভাবে এইডস রোগে আক্রান্ত মানুষদের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ যক্ষ্মা।

অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজ বলেন, যক্ষ্মা রোগীদের মধ্যে কী পরিমাণ এইচআইভি/এইডসে আক্রান্ত রোগী রয়েছে এটা জানা যক্ষ্মা রোগীদের চিকিৎসার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই কারণেই জরিপ করা হয়েছে। জরিপটি গত বছর জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে করা হয়েছে। রোগীর মধ্যে ১২ হাজারের অধিক রোগীর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তিনি বলেন, যক্ষ্মা রোগীদের মধ্যে এইচআইভি আক্রান্ত রোগী বেশি হলে যক্ষ্মা চিকিৎসায় ব্যাঘাত হবে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা এইচআইভিতে আক্রান্ত তাদের বয়স ৩৫ থেকে ৪৪ বছর মধ্যে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. শামিউল ইসলাম। ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশে প্রথম এইচআইভিতে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর থেকে ১০, ২০, ১০০ বা ২০০ জন করে নতুন রোগী প্রতিবছর শনাক্ত হয়েছে। ২০১৮ সালে নতুন রোগী বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৬৯ জনে। এইচআইভি আক্রান্ত হয়ে প্রথম এক রোগী মারা যান ২০০০ সালে। ২০১৮ সালে একই রোগে মৃতের সংখ্যা ১৪৮। ২০১৯ সালে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়েছিল।

মঙ্গলবার, ২৯ জুন ২০২১ , ১৫ আষাঢ় ১৪২৮ ১৭ জিলক্বদ ১৪৪২

‘যক্ষ্মা রোগীদের হাজারে একজন এইচআইভি আক্রান্ত’

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

দেশে চিকিৎসাধীন ১২ হাজার যক্ষ্মা রোগীর মধ্যে এইচআইভি/এইডস আক্রান্ত পাওয়া গেছে ১২ জন। দেশে প্রতি এক হাজার যক্ষ্মা রোগীর মধ্যে একজন এইডসে আক্রান্ত। গতকাল বেলা ১১টার দিকে জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান (নিপসম), স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের টিপি-ল্যাপস অপারেশন প্ল্যানের সৌজন্যে ‘গ্লোবাল ক্যন্ড’-এর অর্থায়নে ‘বাংলাদেশের যক্ষ্মা রোগীদের মধ্যে এইচআইভির মাত্রা ২০১৯-২০২০’ শীর্ষক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষ ৬৫ শতাংশ, নারী ৪৩.০৮ শতাংশ এবং তৃতীয় লিঙ্গ ০.২ শতাংশ।

গবেষণায় দেখা গেছে, যারা এইচআইভিতে আক্রান্ত তাদের বয়স ৩৫ থেকে ৪৪ বছরের মধ্যে, এটা চিন্তার বিষয়। কারণ এই বয়সটা নানাভাবে গুরুত্বপূর্ণ, অর্থনৈতিকভাবে উৎপাদনশীল। দেশে ৩৫ লাখের অধিক যক্ষ্মা রোগী রয়েছে। গত বছরই নতুন করে ৩ লাখ যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত হয়েছে।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) অংশ হিসেবে বাংলাদেশ যক্ষ্মা ও এইডস রোগীর সংখ্যা কমিয়ে আনার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশে এইডসের প্রাদুর্ভাব নি¤œ পর্যায়ে। কিন্তু যক্ষ্মা রোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষ ৩০ দেশের একটি এবং বৈশ্বিক যক্ষ্মা রোগীর তিন দশমিক ছয় শতাংশ এখানেই থাকেন। এইডস আক্রান্ত মানুষদের যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। কারণ, এইডস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয় বলে যক্ষ্মার জীবাণুর বিরুদ্ধে মানবদেহ সঠিক সুরক্ষা পায় না। বৈশ্বিকভাবে এইডস রোগে আক্রান্ত মানুষদের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ যক্ষ্মা।

অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজ বলেন, যক্ষ্মা রোগীদের মধ্যে কী পরিমাণ এইচআইভি/এইডসে আক্রান্ত রোগী রয়েছে এটা জানা যক্ষ্মা রোগীদের চিকিৎসার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই কারণেই জরিপ করা হয়েছে। জরিপটি গত বছর জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে করা হয়েছে। রোগীর মধ্যে ১২ হাজারের অধিক রোগীর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তিনি বলেন, যক্ষ্মা রোগীদের মধ্যে এইচআইভি আক্রান্ত রোগী বেশি হলে যক্ষ্মা চিকিৎসায় ব্যাঘাত হবে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা এইচআইভিতে আক্রান্ত তাদের বয়স ৩৫ থেকে ৪৪ বছর মধ্যে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. শামিউল ইসলাম। ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশে প্রথম এইচআইভিতে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর থেকে ১০, ২০, ১০০ বা ২০০ জন করে নতুন রোগী প্রতিবছর শনাক্ত হয়েছে। ২০১৮ সালে নতুন রোগী বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৬৯ জনে। এইচআইভি আক্রান্ত হয়ে প্রথম এক রোগী মারা যান ২০০০ সালে। ২০১৮ সালে একই রোগে মৃতের সংখ্যা ১৪৮। ২০১৯ সালে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়েছিল।