প্রয়োজন ছাড়া বের হওয়া যাবে না

বিধিনিষেধ কঠোর প্রয়োগ আজ থেকে

করোনভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এক সপ্তাহের ‘কঠোর লকডাউন’ শুরু হচ্ছে আজ থেকে। ‘লকডাউন’ চলাকালে প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হলেই শাস্তির মুখমুখি হতে হবে। বিধিনিষেধ অমান্য করলে ছয়মাসের জেল ও জরিমানাও হতে পারে। বন্ধ থাকবে সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস।

দেশের সব আদালত ৭ জুলাই পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তবে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে সর্বোচ্চ আদালতের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারিক কাজও সীমিত পরিসরে চলবে। আদালতের ক্ষেত্রেও সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকায় প্রত্যেক মুখ্য বিচারিক হাকিম বা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে একজন এবং ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী জেলা বা মহানগর মুখ্য বিচারিক হাকিম বা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এক বা একাধিক হাকিম স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে শারীরিক উপস্থিতিতে দায়িত্ব পালন করবেন।

সড়ক, রেল ও নৌপথে সব ধরনের যান্ত্রিক যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। সড়কপথে রিকশাসহ অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচল করতে পারবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে নৌপথে অযান্ত্রিক নৌযান চলাচল করতে পারবে কিনা সে বিষয়ে কোন নির্দেশনা নেই। অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান চলাচল বন্ধ থাকলেও আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট চালু থাকবে। এক্ষেত্রে বিদেশযাত্রীরা টিকিট প্রদর্শন করে গাড়ির ব্যবহার করতে পারবেন।

সীমিত পরিসরে সপ্তাহে ৪ দিন ব্যাংক খোলা থাকবে। ১ জুলাই ব্যাংক হলিডে হিসেবে ব্যাংক বন্ধ থাকবে। এছাড়া রোববার লকডাউনের কারণে বন্ধ থাকবে। এরপর সোমবার থেকে সপ্তাহে ৪ দিন সাড়ে ৩ ঘণ্টা লেনদেন হবে ব্যাংকে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক-শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে নামাজ আদায়, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করা যাবে। সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত হোটেল-রেস্তোরাঁয় খাবার বিক্রয় করা যাবে। সেখানে বসে খাওয়া যাবে না।

আজ সকাল ৬টা থেকে ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত মানুষের চলাচলের এই বিধিনিষেধ কার্যকর থাকবে। বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে মাঠে থাকবে আনসার, পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনী। গতকাল ২১ দফা বিধিনিষেধ দিয়ে একটি নির্দেশনা জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

এতে উল্লেখ করা হয়, সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। তবে শিল্প-কারখানাসমূহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু থাকবে। শপিংমল ও মার্কেটসহ সব দোকানপাট বন্ধ থাকবে। কিন্তু কাঁচাবাজার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে।

সব পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে। জনসমাবেশ হয় এমন সামাজিক (বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান-ওয়ালিমা, জন্মদিন, পিকনিক, পার্টি ইত্যাদি) রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং জরুরি পরিষেবা, যেমন- কৃষি পণ্য ও উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি), খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, কোভিড-১৯ টিকা প্রদান, রাজস্ব আদায় সম্পর্কিত কার্যাবলি, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাক সেবা, ব্যাংক, ফার্মেসি ও ফার্মাসিটিক্যালসসহ অন্যান্য জরুরি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মচারী ও যানবাহন প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়পত্র প্রদর্শন করে যাতায়াত করতে পারবে।

পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত ট্রাক, লরি, কাভার্ড ভ্যান, কার্গো ভেসেল নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে থাকবে। বিমান, সমুদ্র, নৌ ও স্থল বন্দর এবং সংশ্লিষ্ট অফিস নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে থাকবে। অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কেনা, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন/সৎকার ইত্যাদি) বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। নির্দেশনা অমান্যকারীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। যারা করোনাভাইরাসের টিকা দিবে শুধু তারা টিকা কার্ড দেখিয়ে কেন্দ্রে যাতায়াত করতে পারবেন।

বৃহস্পতিবার, ০১ জুলাই ২০২১ , ১৭ আষাঢ় ১৪২৮ ১৯ জিলক্বদ ১৪৪২

প্রয়োজন ছাড়া বের হওয়া যাবে না

বিধিনিষেধ কঠোর প্রয়োগ আজ থেকে

image

আজ থেকে লকডাউনের কঠোরতার ঘোষণা, মানুষ ঢাকা ছাড়ছেন। গতকাল মাওয়া ফেরিঘাটে ছিল উপচেপড়া ভিড় -সংবাদ

করোনভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এক সপ্তাহের ‘কঠোর লকডাউন’ শুরু হচ্ছে আজ থেকে। ‘লকডাউন’ চলাকালে প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হলেই শাস্তির মুখমুখি হতে হবে। বিধিনিষেধ অমান্য করলে ছয়মাসের জেল ও জরিমানাও হতে পারে। বন্ধ থাকবে সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস।

দেশের সব আদালত ৭ জুলাই পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তবে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে সর্বোচ্চ আদালতের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারিক কাজও সীমিত পরিসরে চলবে। আদালতের ক্ষেত্রেও সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকায় প্রত্যেক মুখ্য বিচারিক হাকিম বা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে একজন এবং ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী জেলা বা মহানগর মুখ্য বিচারিক হাকিম বা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এক বা একাধিক হাকিম স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে শারীরিক উপস্থিতিতে দায়িত্ব পালন করবেন।

সড়ক, রেল ও নৌপথে সব ধরনের যান্ত্রিক যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। সড়কপথে রিকশাসহ অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচল করতে পারবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে নৌপথে অযান্ত্রিক নৌযান চলাচল করতে পারবে কিনা সে বিষয়ে কোন নির্দেশনা নেই। অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান চলাচল বন্ধ থাকলেও আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট চালু থাকবে। এক্ষেত্রে বিদেশযাত্রীরা টিকিট প্রদর্শন করে গাড়ির ব্যবহার করতে পারবেন।

সীমিত পরিসরে সপ্তাহে ৪ দিন ব্যাংক খোলা থাকবে। ১ জুলাই ব্যাংক হলিডে হিসেবে ব্যাংক বন্ধ থাকবে। এছাড়া রোববার লকডাউনের কারণে বন্ধ থাকবে। এরপর সোমবার থেকে সপ্তাহে ৪ দিন সাড়ে ৩ ঘণ্টা লেনদেন হবে ব্যাংকে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক-শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে নামাজ আদায়, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করা যাবে। সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত হোটেল-রেস্তোরাঁয় খাবার বিক্রয় করা যাবে। সেখানে বসে খাওয়া যাবে না।

আজ সকাল ৬টা থেকে ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত মানুষের চলাচলের এই বিধিনিষেধ কার্যকর থাকবে। বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে মাঠে থাকবে আনসার, পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনী। গতকাল ২১ দফা বিধিনিষেধ দিয়ে একটি নির্দেশনা জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

এতে উল্লেখ করা হয়, সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। তবে শিল্প-কারখানাসমূহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু থাকবে। শপিংমল ও মার্কেটসহ সব দোকানপাট বন্ধ থাকবে। কিন্তু কাঁচাবাজার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে।

সব পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে। জনসমাবেশ হয় এমন সামাজিক (বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান-ওয়ালিমা, জন্মদিন, পিকনিক, পার্টি ইত্যাদি) রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং জরুরি পরিষেবা, যেমন- কৃষি পণ্য ও উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি), খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, কোভিড-১৯ টিকা প্রদান, রাজস্ব আদায় সম্পর্কিত কার্যাবলি, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাক সেবা, ব্যাংক, ফার্মেসি ও ফার্মাসিটিক্যালসসহ অন্যান্য জরুরি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মচারী ও যানবাহন প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়পত্র প্রদর্শন করে যাতায়াত করতে পারবে।

পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত ট্রাক, লরি, কাভার্ড ভ্যান, কার্গো ভেসেল নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে থাকবে। বিমান, সমুদ্র, নৌ ও স্থল বন্দর এবং সংশ্লিষ্ট অফিস নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে থাকবে। অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কেনা, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন/সৎকার ইত্যাদি) বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। নির্দেশনা অমান্যকারীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। যারা করোনাভাইরাসের টিকা দিবে শুধু তারা টিকা কার্ড দেখিয়ে কেন্দ্রে যাতায়াত করতে পারবেন।