চাপ বাড়ছে হাসপাতালে

২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড শনাক্ত, ২৫ শতাংশ ছাড়ালো শনাক্তের হার

দেশে গত তিনদিনেই সাড়ে ২১ হাজার মানুষের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। আর করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় সারাদেশের ১২৭টি ‘কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড’ হাসপাতালে ‘সাধারণ’ ও ‘আইসিইউ’সহ মোট শয্যা রয়েছে ১৫ হাজার ৪৫২টি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, করোনা আক্রান্তদের মধ্যে গতকাল পর্যন্ত দেশে ‘অ্যাক্টিভ কেস’ বা ‘সক্রিয় রোগী’র সংখ্যা ৮২ হাজার ৫০৫ জন। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন প্রায় সাত হাজার রোগী। এ হিসাবে সাড়ে আট শতাংশ করোনা রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। বাকি ৯১ দশমিক ৫০ শতাংশ রোগী বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

সারাদেশের ‘কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড’ হাসপাতালগুলোতে গতকাল পর্যন্ত প্রায় আট হাজার বেড বা শয্যা খালি থাকলেও খুলনা, রাজশাহী ও ঢাকার হাসপাতালগুলোতে রোগী ভর্তির চাপ বেড়েই চলেছে। খুলনা ও রাজশাহীর কোন কোন হাসপাতালে মোট শয্যার চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি আছেন।

রাজধানীর ১৬টি সরকারি ও ২৭টি বেসরকারি হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হয়।

গতকাল রাজধানীর ১৬টি সরকারি হাসপাতালের মধ্যে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রাজারবাগ পুলিশ লাইনস হাসপাতাল, সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল, বিএসএমএমইউসহ ৯টি হাসপাতালে কোন ‘আইসিইউ’ শয্যা খালি ছিল না।

চলতি সপ্তাহে করোনা শনাক্ত হওয়া সরকারের একজন উপসচিব গতকাল সংবাদকে জানান, তিনি হাসপাতালে ভর্তি হতে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে পরামর্শ দিয়েছেন ‘বাসায় আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিলেই ভালো হয়। হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়েছে, বেড সংকট আছে। তবে শ^াসকষ্ট বা পরিস্থিতি অবনতি হতে থাকলে হাসপাতালে ভর্তি নেয়া হবে।’

গত একদিনে দেশে আট হাজার আট শতাধিক মানুষের করোনা সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক রোগীই পাওয়া গেছে ঢাকা বিভাগে। এর মধ্যে মহানগরসহ ঢাকা জেলায় শনাক্ত হয়েছে তিন হাজার ২৫৯ জন ‘কোভিড-১৯’ রোগী।

একদিনে শনাক্তের রেকর্ড

দেশে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড আট হাজার ৮২২ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এর আগে গত ২৮ জুন আট হাজার ৩৬৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।

গত মার্চের শুরুতে দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়। এরপর গত ৭ এপ্রিল সাত হাজার ৬২৬ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়।

গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা শনাক্তের পর ‘প্রথম ঢেউয়ে’ গত বছরের ২ জুলাই একদিনে সর্বোচ্চ চার হাজার ১৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।

গত একদিনে শনাক্ত হওয়া আট হাজার ৮২২ জন নিয়ে দেশে এখন পর্যন্ত করোনায় মোট শনাক্ত দাঁড়ালো নয় লাখ ১৩ হাজার ২৫৮ জনে।

২৪ ঘণ্টায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু

গত একদিনে দেশে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন ১১৫ জন। তাদের নিয়ে এখন পর্যন্ত করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ১৪ হাজার ৫০৩ জনে।

এর আগে গত ২৯ জুন ১১২ জন এবং গত ২৭ জুন একদিনে সর্বোচ্চ ১১৯ জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২৮ জুন মারা যান ১০৪ জন।

গত বছরের ১৮ মার্চ করোনায় প্রথম একজনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছিল স্বাস্থ্য বিভাগ। এরপর করোনার প্রথম ধাক্কায় গত বছরের ৩০ জুন একদিনে সর্বোচ্চ ৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

শনাক্তের হার ছাড়ালো ২৫ শতাংশ

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশের ৫৬৫টি ল্যাবরেটরিতে (পরীক্ষাগার) ৩৫ হাজার ১০৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। দেশে এখন পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৬৬ লাখ আট হাজার ৯২৭টি।

এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা হয়েছে ৪৮ লাখ ২৪ হাজার ৪৭৫টি এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা হয়েছে ১৭ লাখ ৮৪ হাজার ৪৫২টি নমুনা।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে করোনা রোগী শনাক্তের হার ২৫ দশমিক ১৩ শতাংশ। এর আগে দৈনিক শনাক্তের হার কখনও ২৩ বা ২৪ শতাংশের বেশি হয়নি। আর এখন পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৮২ শতাংশ।

গত একদিনে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন চার হাজার ৫৫০ জন। তাদের নিয়ে মোট সুস্থতার সংখ্যা দাঁড়ালো আট লাখ ১৬ হাজার ২৫০ জন। শনাক্ত অনুপাতে সুস্থতার হার ৮৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ ও মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ।

২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হওয়া ১১৫ জনের মধ্যে পুরুষ ৭২ জন এবং নারী ৪৩ জন। আর মোট মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে পুরুষ ১০ হাজার ৩২৫ জন এবং নারী চার হাজার ১৭৮ জন।

গত একদিনে মারা যাওয়া লোকজনের মধ্যে ৬০ বছরের বেশি বয়সী ৫৭ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সী ২৫ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী ১৭ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী ১২ জন এবং ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী ছিলেন চারজন।

বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১৭ জন, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিভাগে ২৩ জন করে, খুলনা বিভাগে ৩০ জন, বরিশাল বিভাগের দুইজন, সিলেট বিভাগে তিনজন, রংপুর বিভাগে ১১ জন ও ময়মনসিংহ বিভাগে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ৮৭ জন, বেসরকারি হাসপাতালে ১৯ জন এবং বাড়িতে মারা গেছেন নয়জন।

সংক্রমণ হারে শীর্ষে খুলনা বিভাগ

ঢাকা বিভাগের ১৩ জেলায় গত একদিনে ১৯ হাজার ৩৪৪টি নমুনা পরীক্ষা হয়। এর মধ্যে চার হাজার ৩৬২ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ পাওয়া গেছে। পরীক্ষা বিবেচনায় এই বিভাগে সংক্রমণ হার ২২ দশমিক ৫৫ শতাংশ।

তবে ঢাকা মহানগরসহ জেলায় একদিনে ১৬ হাজার ১৯৭টি নমুনা পরীক্ষায় তিন হাজার ২৫৯ জনের সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এ হিসাবে ঢাকায় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ১২ শতাংশ।

শনাক্তের সংখ্যায় ঢাকা বিভাগ শীর্ষে থাকলেও সংক্রমণের হারে সভার ওপরে রয়েছে খুলনা বিভাগ। এই বিভাগের ১০ জেলায় গত একদিনে তিন হাজার ২০০টি নমুনা পরীক্ষায় এক হাজার ২৭৭ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া গেছে। খুলনায় পরীক্ষা অনুপাতে সংক্রমণের হার ৩৯ দশমিক ৯০ শতাংশ।

ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলায় ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৩০৩টি নমুনা পরীক্ষায় ৩৫৬ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ২৭ দশমিক ৩২ শতাংশ।

চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলায় গত একদিনে তিন হাজার ৭৩৩টি নমুনা পরীক্ষায় ৯৫১ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ পাওয়া গেছে। পরীক্ষা বিবেচনায় সংক্রমণ হার ২৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় ২৪ ঘণ্টায় চার হাজার ৬৩৮টি নমুনা পরীক্ষায় ৯৩৩ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ পাওয়া গেছে। শনাক্তের হার ২০ দশমিক ১১ শতাংশ।

রংপুর বিভাগের আট জেলায় সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৫১০টি নমুনা পরীক্ষা হয়। এসব পরীক্ষায় ৪৭৩ জনের করোনা সংক্রমণ পাওয়া গেছে। পরীক্ষা অনুপাতে সংক্রমণ হার ৩১ দশমিক ৩২ শতাংশ।

বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় গত একদিনে ৫৭৬টি নমুনা পরীক্ষায় ২০৮ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ৩৬ দশমিক ১১ শতাংশ।

সিলেট বিভাগের চার জেলায় ২৪ ঘণ্টায় ৮০১টি নমুনা পরীক্ষায় ২৬২ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ৩২ দশমিক ৭০ শতাংশ।

বৃহস্পতিবার, ০১ জুলাই ২০২১ , ১৭ আষাঢ় ১৪২৮ ১৯ জিলক্বদ ১৪৪২

চাপ বাড়ছে হাসপাতালে

২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড শনাক্ত, ২৫ শতাংশ ছাড়ালো শনাক্তের হার

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

দেশে গত তিনদিনেই সাড়ে ২১ হাজার মানুষের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। আর করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় সারাদেশের ১২৭টি ‘কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড’ হাসপাতালে ‘সাধারণ’ ও ‘আইসিইউ’সহ মোট শয্যা রয়েছে ১৫ হাজার ৪৫২টি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, করোনা আক্রান্তদের মধ্যে গতকাল পর্যন্ত দেশে ‘অ্যাক্টিভ কেস’ বা ‘সক্রিয় রোগী’র সংখ্যা ৮২ হাজার ৫০৫ জন। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন প্রায় সাত হাজার রোগী। এ হিসাবে সাড়ে আট শতাংশ করোনা রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। বাকি ৯১ দশমিক ৫০ শতাংশ রোগী বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

সারাদেশের ‘কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড’ হাসপাতালগুলোতে গতকাল পর্যন্ত প্রায় আট হাজার বেড বা শয্যা খালি থাকলেও খুলনা, রাজশাহী ও ঢাকার হাসপাতালগুলোতে রোগী ভর্তির চাপ বেড়েই চলেছে। খুলনা ও রাজশাহীর কোন কোন হাসপাতালে মোট শয্যার চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি আছেন।

রাজধানীর ১৬টি সরকারি ও ২৭টি বেসরকারি হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হয়।

গতকাল রাজধানীর ১৬টি সরকারি হাসপাতালের মধ্যে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রাজারবাগ পুলিশ লাইনস হাসপাতাল, সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল, বিএসএমএমইউসহ ৯টি হাসপাতালে কোন ‘আইসিইউ’ শয্যা খালি ছিল না।

চলতি সপ্তাহে করোনা শনাক্ত হওয়া সরকারের একজন উপসচিব গতকাল সংবাদকে জানান, তিনি হাসপাতালে ভর্তি হতে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে পরামর্শ দিয়েছেন ‘বাসায় আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিলেই ভালো হয়। হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়েছে, বেড সংকট আছে। তবে শ^াসকষ্ট বা পরিস্থিতি অবনতি হতে থাকলে হাসপাতালে ভর্তি নেয়া হবে।’

গত একদিনে দেশে আট হাজার আট শতাধিক মানুষের করোনা সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক রোগীই পাওয়া গেছে ঢাকা বিভাগে। এর মধ্যে মহানগরসহ ঢাকা জেলায় শনাক্ত হয়েছে তিন হাজার ২৫৯ জন ‘কোভিড-১৯’ রোগী।

একদিনে শনাক্তের রেকর্ড

দেশে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড আট হাজার ৮২২ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এর আগে গত ২৮ জুন আট হাজার ৩৬৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।

গত মার্চের শুরুতে দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়। এরপর গত ৭ এপ্রিল সাত হাজার ৬২৬ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়।

গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা শনাক্তের পর ‘প্রথম ঢেউয়ে’ গত বছরের ২ জুলাই একদিনে সর্বোচ্চ চার হাজার ১৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।

গত একদিনে শনাক্ত হওয়া আট হাজার ৮২২ জন নিয়ে দেশে এখন পর্যন্ত করোনায় মোট শনাক্ত দাঁড়ালো নয় লাখ ১৩ হাজার ২৫৮ জনে।

২৪ ঘণ্টায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু

গত একদিনে দেশে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন ১১৫ জন। তাদের নিয়ে এখন পর্যন্ত করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ১৪ হাজার ৫০৩ জনে।

এর আগে গত ২৯ জুন ১১২ জন এবং গত ২৭ জুন একদিনে সর্বোচ্চ ১১৯ জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২৮ জুন মারা যান ১০৪ জন।

গত বছরের ১৮ মার্চ করোনায় প্রথম একজনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছিল স্বাস্থ্য বিভাগ। এরপর করোনার প্রথম ধাক্কায় গত বছরের ৩০ জুন একদিনে সর্বোচ্চ ৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

শনাক্তের হার ছাড়ালো ২৫ শতাংশ

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশের ৫৬৫টি ল্যাবরেটরিতে (পরীক্ষাগার) ৩৫ হাজার ১০৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। দেশে এখন পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৬৬ লাখ আট হাজার ৯২৭টি।

এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা হয়েছে ৪৮ লাখ ২৪ হাজার ৪৭৫টি এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা হয়েছে ১৭ লাখ ৮৪ হাজার ৪৫২টি নমুনা।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে করোনা রোগী শনাক্তের হার ২৫ দশমিক ১৩ শতাংশ। এর আগে দৈনিক শনাক্তের হার কখনও ২৩ বা ২৪ শতাংশের বেশি হয়নি। আর এখন পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৮২ শতাংশ।

গত একদিনে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন চার হাজার ৫৫০ জন। তাদের নিয়ে মোট সুস্থতার সংখ্যা দাঁড়ালো আট লাখ ১৬ হাজার ২৫০ জন। শনাক্ত অনুপাতে সুস্থতার হার ৮৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ ও মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ।

২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হওয়া ১১৫ জনের মধ্যে পুরুষ ৭২ জন এবং নারী ৪৩ জন। আর মোট মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে পুরুষ ১০ হাজার ৩২৫ জন এবং নারী চার হাজার ১৭৮ জন।

গত একদিনে মারা যাওয়া লোকজনের মধ্যে ৬০ বছরের বেশি বয়সী ৫৭ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সী ২৫ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী ১৭ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী ১২ জন এবং ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী ছিলেন চারজন।

বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১৭ জন, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিভাগে ২৩ জন করে, খুলনা বিভাগে ৩০ জন, বরিশাল বিভাগের দুইজন, সিলেট বিভাগে তিনজন, রংপুর বিভাগে ১১ জন ও ময়মনসিংহ বিভাগে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ৮৭ জন, বেসরকারি হাসপাতালে ১৯ জন এবং বাড়িতে মারা গেছেন নয়জন।

সংক্রমণ হারে শীর্ষে খুলনা বিভাগ

ঢাকা বিভাগের ১৩ জেলায় গত একদিনে ১৯ হাজার ৩৪৪টি নমুনা পরীক্ষা হয়। এর মধ্যে চার হাজার ৩৬২ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ পাওয়া গেছে। পরীক্ষা বিবেচনায় এই বিভাগে সংক্রমণ হার ২২ দশমিক ৫৫ শতাংশ।

তবে ঢাকা মহানগরসহ জেলায় একদিনে ১৬ হাজার ১৯৭টি নমুনা পরীক্ষায় তিন হাজার ২৫৯ জনের সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এ হিসাবে ঢাকায় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ১২ শতাংশ।

শনাক্তের সংখ্যায় ঢাকা বিভাগ শীর্ষে থাকলেও সংক্রমণের হারে সভার ওপরে রয়েছে খুলনা বিভাগ। এই বিভাগের ১০ জেলায় গত একদিনে তিন হাজার ২০০টি নমুনা পরীক্ষায় এক হাজার ২৭৭ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া গেছে। খুলনায় পরীক্ষা অনুপাতে সংক্রমণের হার ৩৯ দশমিক ৯০ শতাংশ।

ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলায় ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৩০৩টি নমুনা পরীক্ষায় ৩৫৬ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ২৭ দশমিক ৩২ শতাংশ।

চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলায় গত একদিনে তিন হাজার ৭৩৩টি নমুনা পরীক্ষায় ৯৫১ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ পাওয়া গেছে। পরীক্ষা বিবেচনায় সংক্রমণ হার ২৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় ২৪ ঘণ্টায় চার হাজার ৬৩৮টি নমুনা পরীক্ষায় ৯৩৩ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ পাওয়া গেছে। শনাক্তের হার ২০ দশমিক ১১ শতাংশ।

রংপুর বিভাগের আট জেলায় সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৫১০টি নমুনা পরীক্ষা হয়। এসব পরীক্ষায় ৪৭৩ জনের করোনা সংক্রমণ পাওয়া গেছে। পরীক্ষা অনুপাতে সংক্রমণ হার ৩১ দশমিক ৩২ শতাংশ।

বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় গত একদিনে ৫৭৬টি নমুনা পরীক্ষায় ২০৮ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ৩৬ দশমিক ১১ শতাংশ।

সিলেট বিভাগের চার জেলায় ২৪ ঘণ্টায় ৮০১টি নমুনা পরীক্ষায় ২৬২ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ৩২ দশমিক ৭০ শতাংশ।