স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশের স্বাস্থ্যসেবার সব স্বাভাবিক কাজের পাশাপাশি করোনার চিকিৎসা চলছে। প্রায় এক কোটি লোককে আমরা ভ্যাকসিন দিয়েছি। সেখানে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার কাজ হয়েছে। কোভিড-১৯ টেস্ট আমরা প্রায় ৫০ লাখ মানুষের করেছি। সেখানে দুই হাজার কোটি টাকার কাজ হয়েছে। এক লাখ করোনার রোগীকে চিকিৎসা দিয়েছি। সেখানে দুই হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এসব কাজ আমরা করেছি বিনামূল্যেই। আগামী বছরের প্রথম প্রান্তিকের মধ্যে দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে করোনাভাইরাসের টিকার আওতায় আনা যাবে বলে আশা করন তিনি।
গতকাল সংসদে বাজেট পাসের প্রক্রিয়ার সময় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মঞ্জুরি দাবির প্রেক্ষিতে বিরোধীদলীয় সদস্যদের ছাঁটাই প্রস্তাবের জবাবে কথা বলতে গিয়ে মন্ত্রী এমন আশার কথা শোনান। বিরোধী দলের সদস্যরা তাদের বক্তব্যে করোনাভাইরাসের টিকা সংকট নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। পরে মন্ত্রী টিকা নিয়ে সরকারের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিন আমরা আনার চেষ্টা করছি। আগামী ২/৩ তারিখের মধ্যে ২৫ লাখ মডার্নার ভ্যাকসিন চলে আসবে। চীনের ভ্যাকসিনও একই সময়ে চলে আসবে। কোভ্যাক্স... থেকে আমরা ৬ কোটি ৩০ লাখ ভ্যাকসিন ডিসেম্বরের মধ্যে পাব। চীনের সিনোফার্মের সঙ্গে দেড় কোটি ভ্যাকসিনের চুক্তি হয়েছে। সব মিলিয়ে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০ কোটি ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা রয়েছে।’
১০ কোটি টিকা পেলে তা ৫ কোটি মানুষকে দেয়া যাবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘জনসন অ্যান্ড জনসনকে রিসেন্টলি অনুমতি দিয়েছি। জনসনের ৭ কোটি ভ্যাকসিন দিয়ে আমরা ৭ কোটি মানুষকে টিকা দিতে পারব। আগামী বছরের প্রথম কোয়ার্টারে পাব। সব মিলিয়ে আগামী বছরের প্রথম কোয়ার্টারের মধ্যে ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা দিতে পারব।’
ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড টিকা দিয়ে গত ৭ ফেব্রুয়ারি দেশে গণটিকাদান শুরু হয়েছিল। কিন্তু ভারত রপ্তানি বন্ধ রাখায় টিকার সংকটে পড়ে বাংলাদেশ।
পর্যাপ্ত টিকা না থাকায় দেশে প্রথম ডোজ দেয়া বন্ধ হয়ে যায়। ইতোমধ্যে যারা প্রথম ডোজ পেয়েছেন, তাদের সবাইকে দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার মতো অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাও সরকারের হাতে নেই। এ অবস্থায় সরকারকে অন্য উৎস থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহের চেষ্টা করতে হচ্ছে। সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে কেনা তিন কোটি ডোজের মধ্যে বাংলাদেশ পেয়েছে কোভিশিল্ডের ৭০ লাখ ডোজ। আর দুই দফায় ভারত থেকে কোভিশিল্ডের ৩২ লাখ ডোজ এসেছে উপহার হিসেবে।
টিকার আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্স থেকে ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি ১ লাখ ৬২০ ডোজ এবং চীনের উপহার হিসেবে দুই দফায় সিনোফার্মের তৈরি ১১ লাখ ডোজ টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ। ওই টিকা দিয়েই বৃহস্পতিবার থেকে আবার জেলা পর্যায়ে টিকাদান শুরুর ঘোষণা দেয়া হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে।
হাসপাতালে বেহাল অবস্থার অভিযোগের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সব এমপিরা তো হাসপাতালের চেয়ারম্যান। উন্নয়ন কমিটির সঙ্গে আমরা জড়িত। আপনারা প্রত্যেকে দায়িত্বে আছেন। এই বিষয়গুলো আপনাদেরই দেখার কথা। মেশিন চলে না। লোক লাগবে। এগুলো তো আপনাদের দেখতে হবে। কিন্তু আপনারা তো সেটা দেখেন না। নার্স, ডাক্তার বা যন্ত্রপাতি লাগলে তো আপনাদেরই বলতে হবে। শুধু অভিযোগ দিলে তো হবে না। যা যা প্রয়োজন আছে তার ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু চেয়ারম্যান হিসেবে এগুলো দেখার দায়িত্ব আপনাদের ওপর বর্তায়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী এই বক্তব্য দেয়ার সময় বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যদের চিৎকার-চেঁচামেচি করতে দেখা যায়।
বৃহস্পতিবার, ০১ জুলাই ২০২১ , ১৭ আষাঢ় ১৪২৮ ১৯ জিলক্বদ ১৪৪২
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশের স্বাস্থ্যসেবার সব স্বাভাবিক কাজের পাশাপাশি করোনার চিকিৎসা চলছে। প্রায় এক কোটি লোককে আমরা ভ্যাকসিন দিয়েছি। সেখানে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার কাজ হয়েছে। কোভিড-১৯ টেস্ট আমরা প্রায় ৫০ লাখ মানুষের করেছি। সেখানে দুই হাজার কোটি টাকার কাজ হয়েছে। এক লাখ করোনার রোগীকে চিকিৎসা দিয়েছি। সেখানে দুই হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এসব কাজ আমরা করেছি বিনামূল্যেই। আগামী বছরের প্রথম প্রান্তিকের মধ্যে দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে করোনাভাইরাসের টিকার আওতায় আনা যাবে বলে আশা করন তিনি।
গতকাল সংসদে বাজেট পাসের প্রক্রিয়ার সময় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মঞ্জুরি দাবির প্রেক্ষিতে বিরোধীদলীয় সদস্যদের ছাঁটাই প্রস্তাবের জবাবে কথা বলতে গিয়ে মন্ত্রী এমন আশার কথা শোনান। বিরোধী দলের সদস্যরা তাদের বক্তব্যে করোনাভাইরাসের টিকা সংকট নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। পরে মন্ত্রী টিকা নিয়ে সরকারের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিন আমরা আনার চেষ্টা করছি। আগামী ২/৩ তারিখের মধ্যে ২৫ লাখ মডার্নার ভ্যাকসিন চলে আসবে। চীনের ভ্যাকসিনও একই সময়ে চলে আসবে। কোভ্যাক্স... থেকে আমরা ৬ কোটি ৩০ লাখ ভ্যাকসিন ডিসেম্বরের মধ্যে পাব। চীনের সিনোফার্মের সঙ্গে দেড় কোটি ভ্যাকসিনের চুক্তি হয়েছে। সব মিলিয়ে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০ কোটি ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা রয়েছে।’
১০ কোটি টিকা পেলে তা ৫ কোটি মানুষকে দেয়া যাবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘জনসন অ্যান্ড জনসনকে রিসেন্টলি অনুমতি দিয়েছি। জনসনের ৭ কোটি ভ্যাকসিন দিয়ে আমরা ৭ কোটি মানুষকে টিকা দিতে পারব। আগামী বছরের প্রথম কোয়ার্টারে পাব। সব মিলিয়ে আগামী বছরের প্রথম কোয়ার্টারের মধ্যে ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা দিতে পারব।’
ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড টিকা দিয়ে গত ৭ ফেব্রুয়ারি দেশে গণটিকাদান শুরু হয়েছিল। কিন্তু ভারত রপ্তানি বন্ধ রাখায় টিকার সংকটে পড়ে বাংলাদেশ।
পর্যাপ্ত টিকা না থাকায় দেশে প্রথম ডোজ দেয়া বন্ধ হয়ে যায়। ইতোমধ্যে যারা প্রথম ডোজ পেয়েছেন, তাদের সবাইকে দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার মতো অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাও সরকারের হাতে নেই। এ অবস্থায় সরকারকে অন্য উৎস থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহের চেষ্টা করতে হচ্ছে। সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে কেনা তিন কোটি ডোজের মধ্যে বাংলাদেশ পেয়েছে কোভিশিল্ডের ৭০ লাখ ডোজ। আর দুই দফায় ভারত থেকে কোভিশিল্ডের ৩২ লাখ ডোজ এসেছে উপহার হিসেবে।
টিকার আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্স থেকে ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি ১ লাখ ৬২০ ডোজ এবং চীনের উপহার হিসেবে দুই দফায় সিনোফার্মের তৈরি ১১ লাখ ডোজ টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ। ওই টিকা দিয়েই বৃহস্পতিবার থেকে আবার জেলা পর্যায়ে টিকাদান শুরুর ঘোষণা দেয়া হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে।
হাসপাতালে বেহাল অবস্থার অভিযোগের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সব এমপিরা তো হাসপাতালের চেয়ারম্যান। উন্নয়ন কমিটির সঙ্গে আমরা জড়িত। আপনারা প্রত্যেকে দায়িত্বে আছেন। এই বিষয়গুলো আপনাদেরই দেখার কথা। মেশিন চলে না। লোক লাগবে। এগুলো তো আপনাদের দেখতে হবে। কিন্তু আপনারা তো সেটা দেখেন না। নার্স, ডাক্তার বা যন্ত্রপাতি লাগলে তো আপনাদেরই বলতে হবে। শুধু অভিযোগ দিলে তো হবে না। যা যা প্রয়োজন আছে তার ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু চেয়ারম্যান হিসেবে এগুলো দেখার দায়িত্ব আপনাদের ওপর বর্তায়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী এই বক্তব্য দেয়ার সময় বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যদের চিৎকার-চেঁচামেচি করতে দেখা যায়।