মানুষকে ঘর থেকে অকারণে বের না হওয়ার অনুরোধ

করোনার (কোভিড-১৯) ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট নিয়ন্ত্রণে লকডাউন বাস্তবায়নে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি গতকাল মাঠে ছিল সশস্ত্র বাহিনী। সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যরা লকডাউন বাস্তবায়নের পাশাপাশি করোনা সংক্রমণ মোকাবেলায় যৌথভাবে সামাজিক কার্যক্রমও করবে।

গতকাল লকডাউনের প্রথম দিনে সেনাবাহিনী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত টহলে ছিল। জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা বা চাহিদা মোতাবেক ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে সমন্বয় রেখে সশন্ত্র বাহিনী সাধারণ মানুষকে লকডাউন উপেক্ষা করে ঘর থেকে বের না হওয়ার জন্য নিরুৎসায়িত করেছে।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)-এর পরিচালক লে. কর্নেল আবদুল্লাহ ইবনে জায়েদ টেলিফোনে সংবাদকে বলেন, সরকার ঘোষিত লকডাউন বাস্তবায়নে মাঠপর্যায়ের প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে কাজ করছে সশন্ত্র বাহিনী। এর মধ্যে সেনাবাহিনী ঢাকাসহ অধিকাংশ জেলায় টহল ও চেকপোস্ট কার্যক্রম পরিচালনা করছে। জেলা ম্যাজিস্টেটের চাহিদা অনুযায়ী সেনাবাহিনী তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করছে।

গতকাল লকডাউনের প্রথম দিন ছিল। লকডাউন যতদিন থাকবে সেনাবাহিনী সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মাঠে থাকবে।

লে. কর্নেল জায়েদ বলেন, গতকাল প্রথমদিন সেনাবাহিনী মাঠে থাকলেও হার্ডলাইনে বা বল প্রয়োগ না করে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে মানুষকে ঘরে থাকার অনুরোধ জানিয়েছে। লকডাউন উপেক্ষা করে যারা ঘর থেকে অকারণে বের হয়েছে এমন ব্যক্তিদের ঘরে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। জরুরি সেবার সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের কর্মস্থলে যাওয়া এবং কর্মস্থল থেকে বাসায় ফেরার পথে যাতে কোন ধরনের হয়রানির শিকার না হন সে বিষয়টিও খেয়াল রেখেছেন। তল্লাশি চৌকিতে রাস্তায় চলাচলকারী ব্যক্তিরা কোথায় যাচ্ছেন, তার গন্তব্যে যাওয়াটা কতটা জরুরি জিজ্ঞাসাবাদে সে বিষয়গুলো নিশ্চিত হয়ে ওই ব্যক্তিকে ছেড়ে দেয়া হয়।

তিনি বলেন, কোথাও কোথাও সেনাবাহিনী আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে চেকপোস্ট বসিয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাবে এবং মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি তাদের ঘরের বাইরে অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের না হওয়ার জন্য সচেতনতামূলক কার্যক্রমও চালাচ্ছে। ঢাকায় গতকাল প্রথম দিনে ৭৬টি টিম দায়িত্ব পালন করেছে। অন্যান্য জেলায় জেলা প্রশাসকের চাহিদা অনুযায়ী সেনাবাহিনী দেয়া হয়েছে।

আইএসপিআর জানিয়েছে, সেনাবাহিনীর প্রত্যেক টিমের সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট থাকছেন। ম্যাজিস্টেটের সঙ্গে সমন্বয় রেখে সেনাবাহিনী তার কাজ করেন। মূলত করোনা মহামারীর মধ্যে মানুষকে সরকারের লকডাউন মানতে যেসব নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সেই নির্দেশনা উপেক্ষা করে যারা অকারণে ঘোরাফেরা করছে তাদের ঘরে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। যারা আইন অমান্য করার চেষ্টা করছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ম্যাজিস্ট্রেটকে সহযোগিতা করা হচ্ছে।

আইএসপিআর জানিয়েছে সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকায় কাজ শুরু করেছে নৌবাহিনীর কন্টিনজেন্টসমূহ। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম ও খুলনা নৌ অঞ্চল হতে ২৩ জন কর্মকর্তাসহ ১৯৬ জন নৌ সদস্যের ৮টি কন্টিনজেন্ট সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকাসমূহে টহল ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চল থেকে ১২ জন কর্মকর্তাসহ ১০৮ নৌ সদস্যের ৬টি কন্টিনজেন্ট ভোলা সদর, বোরহানউদ্দিন, দৌলত খান, চরফ্যাশন, মনপুরা, লালমোহন, তজুমুদ্দিন, সন্দ্বীপ, হাতিয়া, টেকনাফ, কুতুবদিয়া ও মহেশখালী এলাকায় কাজ করছে। অন্যদিকে খুলনা নৌ অঞ্চল হতে ১১ জন কর্মকর্তাসহ ৮৮ জন নৌ সদস্যের ২টি কন্টিনজেন্ট মোংলা বাগেরহাট, বরগুনা সদর, আমতলী, বেতাগী, বামনা, পাথরঘাটা এবং তালতলী উপজেলায় কাজ করছে।

শুক্রবার, ০২ জুলাই ২০২১ , ১৮ আষাঢ় ১৪২৮ ২০ জিলক্বদ ১৪৪২

মাঠে সশন্ত্র বাহিনী

মানুষকে ঘর থেকে অকারণে বের না হওয়ার অনুরোধ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

করোনার (কোভিড-১৯) ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট নিয়ন্ত্রণে লকডাউন বাস্তবায়নে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি গতকাল মাঠে ছিল সশস্ত্র বাহিনী। সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যরা লকডাউন বাস্তবায়নের পাশাপাশি করোনা সংক্রমণ মোকাবেলায় যৌথভাবে সামাজিক কার্যক্রমও করবে।

গতকাল লকডাউনের প্রথম দিনে সেনাবাহিনী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত টহলে ছিল। জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা বা চাহিদা মোতাবেক ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে সমন্বয় রেখে সশন্ত্র বাহিনী সাধারণ মানুষকে লকডাউন উপেক্ষা করে ঘর থেকে বের না হওয়ার জন্য নিরুৎসায়িত করেছে।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)-এর পরিচালক লে. কর্নেল আবদুল্লাহ ইবনে জায়েদ টেলিফোনে সংবাদকে বলেন, সরকার ঘোষিত লকডাউন বাস্তবায়নে মাঠপর্যায়ের প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে কাজ করছে সশন্ত্র বাহিনী। এর মধ্যে সেনাবাহিনী ঢাকাসহ অধিকাংশ জেলায় টহল ও চেকপোস্ট কার্যক্রম পরিচালনা করছে। জেলা ম্যাজিস্টেটের চাহিদা অনুযায়ী সেনাবাহিনী তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করছে।

গতকাল লকডাউনের প্রথম দিন ছিল। লকডাউন যতদিন থাকবে সেনাবাহিনী সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মাঠে থাকবে।

লে. কর্নেল জায়েদ বলেন, গতকাল প্রথমদিন সেনাবাহিনী মাঠে থাকলেও হার্ডলাইনে বা বল প্রয়োগ না করে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে মানুষকে ঘরে থাকার অনুরোধ জানিয়েছে। লকডাউন উপেক্ষা করে যারা ঘর থেকে অকারণে বের হয়েছে এমন ব্যক্তিদের ঘরে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। জরুরি সেবার সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের কর্মস্থলে যাওয়া এবং কর্মস্থল থেকে বাসায় ফেরার পথে যাতে কোন ধরনের হয়রানির শিকার না হন সে বিষয়টিও খেয়াল রেখেছেন। তল্লাশি চৌকিতে রাস্তায় চলাচলকারী ব্যক্তিরা কোথায় যাচ্ছেন, তার গন্তব্যে যাওয়াটা কতটা জরুরি জিজ্ঞাসাবাদে সে বিষয়গুলো নিশ্চিত হয়ে ওই ব্যক্তিকে ছেড়ে দেয়া হয়।

তিনি বলেন, কোথাও কোথাও সেনাবাহিনী আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে চেকপোস্ট বসিয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাবে এবং মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি তাদের ঘরের বাইরে অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের না হওয়ার জন্য সচেতনতামূলক কার্যক্রমও চালাচ্ছে। ঢাকায় গতকাল প্রথম দিনে ৭৬টি টিম দায়িত্ব পালন করেছে। অন্যান্য জেলায় জেলা প্রশাসকের চাহিদা অনুযায়ী সেনাবাহিনী দেয়া হয়েছে।

আইএসপিআর জানিয়েছে, সেনাবাহিনীর প্রত্যেক টিমের সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট থাকছেন। ম্যাজিস্টেটের সঙ্গে সমন্বয় রেখে সেনাবাহিনী তার কাজ করেন। মূলত করোনা মহামারীর মধ্যে মানুষকে সরকারের লকডাউন মানতে যেসব নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সেই নির্দেশনা উপেক্ষা করে যারা অকারণে ঘোরাফেরা করছে তাদের ঘরে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। যারা আইন অমান্য করার চেষ্টা করছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ম্যাজিস্ট্রেটকে সহযোগিতা করা হচ্ছে।

আইএসপিআর জানিয়েছে সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকায় কাজ শুরু করেছে নৌবাহিনীর কন্টিনজেন্টসমূহ। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম ও খুলনা নৌ অঞ্চল হতে ২৩ জন কর্মকর্তাসহ ১৯৬ জন নৌ সদস্যের ৮টি কন্টিনজেন্ট সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকাসমূহে টহল ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চল থেকে ১২ জন কর্মকর্তাসহ ১০৮ নৌ সদস্যের ৬টি কন্টিনজেন্ট ভোলা সদর, বোরহানউদ্দিন, দৌলত খান, চরফ্যাশন, মনপুরা, লালমোহন, তজুমুদ্দিন, সন্দ্বীপ, হাতিয়া, টেকনাফ, কুতুবদিয়া ও মহেশখালী এলাকায় কাজ করছে। অন্যদিকে খুলনা নৌ অঞ্চল হতে ১১ জন কর্মকর্তাসহ ৮৮ জন নৌ সদস্যের ২টি কন্টিনজেন্ট মোংলা বাগেরহাট, বরগুনা সদর, আমতলী, বেতাগী, বামনা, পাথরঘাটা এবং তালতলী উপজেলায় কাজ করছে।