টিকা না পেয়ে প্রবাসী কর্মীদের বিক্ষোভ

ফাইজারের টিকা পাবেন এমন খবরে প্রবাসী কর্মীরা গতকাল সকাল থেকে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভিড় করেন। এ সময় টিকা না পেয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, রাজধানী ঢাকার সাতটি হাসপাতালে প্রবাসী কর্মীদের ফাইজার বায়োএনটেকের টিকা দেয়া হবে। প্রবাসী কর্মীরা বলছেন, করোনার টিকা নিতে রেজিস্ট্রেশন করলেও তারা মোবাইলে এসএমএস পাননি। আবার অনেকে কীভাবে নিবন্ধন করতে হবে তা জানেন না।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কেবল সৌদি আরব ও কুয়েত প্রবাসীদের এই টিকা দেয়ার কথা জানালেও এদিন টিকাদান কেন্দ্রে ইতালি ও অন্যান্য দেশ থেকে বাংলাদেশে এসে আটকে পড়া প্রবাসীরাও ভিড় করেন। বিক্ষোভের পরে সেখানে উপস্থিত হয়ে প্রবাসী কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন। তিনি বলেন, অ্যাপের মাধ্যমে প্রবাসীরা ভ্যাকসিন পেতে নিবন্ধন করতে পারবেন। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন দেয়ার ব্যবস্থা নিয়েছি। সে ব্যবস্থার ছোট্ট একটা প্রতীকী উদ্বোধন হলো গতকালকে। এটা আমরা ৫-৭ জনকে দিয়ে করতে চেয়েছিলাম।

সচিব বলেন, আমরা বোঝাতে চাই যে, আপনাদের সঙ্গে আছি। এই মন্ত্রণালয় আপনাদের জন্য কাজ করছে এবং ভ্যাকসিনের এই সংকটের মধ্যেও এ উদ্যোগ নিয়েছি। এ সময় প্রবাসীরা হট্টগোল শুরু করলে সচিব সবাইকে থামার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, প্লিজ আপনারা থামেন। আমরা কেউ আপনাদের চেয়ে কম প্যানিক (আতঙ্কগ্রস্ত) না। আপনারা সবাই আমাদের সম্পদ। এই জিনিসটা শুধু আমরা মুখে বলি না, করিও।

এ সময় প্রবাসীদের আশ্বাস দিয়ে সচিব বলেন, এবার টিকার জন্য মাত্র চারটা সেকশন উদ্বোধন করা হয়েছে। এরমধ্যে পুলিশ, মেডিকেল ছাত্র আর আপনারাও রয়েছেন। এটা করা হয়েছে শুধু আমাদের উদ্যোগে। আগামী সোমবার থেকে আপনারা সবাই অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। প্রবাসী কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনি যে অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করবেন, এটা কীভাবে করবেন? এটা কীভাবে বোঝা যাবে, যখন আপনার নামটি আমি সিস্টেমের মাধ্যমে ওখানে পাঠাবো। আমি আপনার নাম এখন লিখে নিলাম, হাতে হাতে এটা পৌঁছে দিলাম, এটা হবে না।

এরপরে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, অধৈর্য হলে কোন সমাধান আসবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ৭টা হসপিটালে ভ্যাকসিন দেয়ার কথা। কিন্তু সময় তো থাকতে হবে। ব্যবস্থাপনা করতে কিছুটা সময় দরকার। তিনি বলেন, রোববার বা সোমবারের দিকে ভ্যাকসিন নিবন্ধনের ব্যবস্থা হবে। সৌদি আরব ও কুয়েত ফাইজারের টিকার কথা বলছে। যাতে ১টা ডোজ নিলে সে দেশে গিয়ে বাকিটা নিতে পারে। ফাইজারের সিঙ্গেল ডোজ এখন কেবল কুর্মিটোলায় আছে। তিনি আরও বলেন, সুরক্ষা অ্যাপ এখনও চালু হয়নি। রোববার বা সোমবারের দিকে চালু হওয়ার কথা। আপনারা জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো-বিএমইটিতে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে নিন। নাম আর পাসপোর্ট স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চলে যাবে। সেখানে বলে দেয়া হবে কে কোন হাসপাতালে ভ্যাকসিন নেবেন।

মন্ত্রী বলেন, গতকাল ভ্যাকসিন যারা পাচ্ছে রিক্রুটিং এজেন্সি থেকেই পাচ্ছে। এটা ট্রায়াল। একটু ধৈর্য ধরেন, আজ-কালের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে। যাদের সময় শেষ কিংবা মেয়াদ নেই, সবাইকে বিএমইটিতে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। তাদের রেজিস্ট্রেশন করে দেয়া হবে মন্ত্রণালয় থেকে। ১ জুলাই কার্যক্রম শুরুর দিনে ফাইজারের ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল কেন্দ্রে।

শুক্রবার, ০২ জুলাই ২০২১ , ১৮ আষাঢ় ১৪২৮ ২০ জিলক্বদ ১৪৪২

টিকা না পেয়ে প্রবাসী কর্মীদের বিক্ষোভ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

ফাইজারের টিকা পাবেন এমন খবরে প্রবাসী কর্মীরা গতকাল সকাল থেকে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভিড় করেন। এ সময় টিকা না পেয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, রাজধানী ঢাকার সাতটি হাসপাতালে প্রবাসী কর্মীদের ফাইজার বায়োএনটেকের টিকা দেয়া হবে। প্রবাসী কর্মীরা বলছেন, করোনার টিকা নিতে রেজিস্ট্রেশন করলেও তারা মোবাইলে এসএমএস পাননি। আবার অনেকে কীভাবে নিবন্ধন করতে হবে তা জানেন না।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কেবল সৌদি আরব ও কুয়েত প্রবাসীদের এই টিকা দেয়ার কথা জানালেও এদিন টিকাদান কেন্দ্রে ইতালি ও অন্যান্য দেশ থেকে বাংলাদেশে এসে আটকে পড়া প্রবাসীরাও ভিড় করেন। বিক্ষোভের পরে সেখানে উপস্থিত হয়ে প্রবাসী কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন। তিনি বলেন, অ্যাপের মাধ্যমে প্রবাসীরা ভ্যাকসিন পেতে নিবন্ধন করতে পারবেন। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন দেয়ার ব্যবস্থা নিয়েছি। সে ব্যবস্থার ছোট্ট একটা প্রতীকী উদ্বোধন হলো গতকালকে। এটা আমরা ৫-৭ জনকে দিয়ে করতে চেয়েছিলাম।

সচিব বলেন, আমরা বোঝাতে চাই যে, আপনাদের সঙ্গে আছি। এই মন্ত্রণালয় আপনাদের জন্য কাজ করছে এবং ভ্যাকসিনের এই সংকটের মধ্যেও এ উদ্যোগ নিয়েছি। এ সময় প্রবাসীরা হট্টগোল শুরু করলে সচিব সবাইকে থামার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, প্লিজ আপনারা থামেন। আমরা কেউ আপনাদের চেয়ে কম প্যানিক (আতঙ্কগ্রস্ত) না। আপনারা সবাই আমাদের সম্পদ। এই জিনিসটা শুধু আমরা মুখে বলি না, করিও।

এ সময় প্রবাসীদের আশ্বাস দিয়ে সচিব বলেন, এবার টিকার জন্য মাত্র চারটা সেকশন উদ্বোধন করা হয়েছে। এরমধ্যে পুলিশ, মেডিকেল ছাত্র আর আপনারাও রয়েছেন। এটা করা হয়েছে শুধু আমাদের উদ্যোগে। আগামী সোমবার থেকে আপনারা সবাই অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। প্রবাসী কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনি যে অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করবেন, এটা কীভাবে করবেন? এটা কীভাবে বোঝা যাবে, যখন আপনার নামটি আমি সিস্টেমের মাধ্যমে ওখানে পাঠাবো। আমি আপনার নাম এখন লিখে নিলাম, হাতে হাতে এটা পৌঁছে দিলাম, এটা হবে না।

এরপরে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, অধৈর্য হলে কোন সমাধান আসবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ৭টা হসপিটালে ভ্যাকসিন দেয়ার কথা। কিন্তু সময় তো থাকতে হবে। ব্যবস্থাপনা করতে কিছুটা সময় দরকার। তিনি বলেন, রোববার বা সোমবারের দিকে ভ্যাকসিন নিবন্ধনের ব্যবস্থা হবে। সৌদি আরব ও কুয়েত ফাইজারের টিকার কথা বলছে। যাতে ১টা ডোজ নিলে সে দেশে গিয়ে বাকিটা নিতে পারে। ফাইজারের সিঙ্গেল ডোজ এখন কেবল কুর্মিটোলায় আছে। তিনি আরও বলেন, সুরক্ষা অ্যাপ এখনও চালু হয়নি। রোববার বা সোমবারের দিকে চালু হওয়ার কথা। আপনারা জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো-বিএমইটিতে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে নিন। নাম আর পাসপোর্ট স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চলে যাবে। সেখানে বলে দেয়া হবে কে কোন হাসপাতালে ভ্যাকসিন নেবেন।

মন্ত্রী বলেন, গতকাল ভ্যাকসিন যারা পাচ্ছে রিক্রুটিং এজেন্সি থেকেই পাচ্ছে। এটা ট্রায়াল। একটু ধৈর্য ধরেন, আজ-কালের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে। যাদের সময় শেষ কিংবা মেয়াদ নেই, সবাইকে বিএমইটিতে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। তাদের রেজিস্ট্রেশন করে দেয়া হবে মন্ত্রণালয় থেকে। ১ জুলাই কার্যক্রম শুরুর দিনে ফাইজারের ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল কেন্দ্রে।