মগবাজার বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১১

রাজধানীর মগবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন, রাসেল (২৩) ও নুরুন্নবী মণ্ডল (৩৫)। গতকাল রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীনে তাদের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে মগবাজারের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১১ জনে। তাদের দুইজনের শরীরেই ৯০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। ময়নাতদন্তের জন্য তাদের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে পাঠানো হয়েছে।

বার্ন ইনস্টিটিউটের সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, রাসেলের শরীরে ৯০ শতাংস দগ্ধ ও শ্বাসনালী পুড়ে গিয়েছিল। তাকে প্রথমে এইচডিইউতে রাখা হয়েছিল। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত বুধবার তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিই) নেয়া হয়। তার শরীরে কাটাছেড়ার ক্ষতও ছিল। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল দুপুর ২টার দিকে তার মৃত্যু হয়। এর আগে, গতকাল ভোর সাড়ে ৪টার দিকে নুরুন্নবী মণ্ডল নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়। তার শরীরে ৯০ শতাংশ দগ্ধ ছিল। এছাড়া শরীরে গ্লাসের কাটা যখমও ছিল। পাশাপাশি তার শ্বাসনালীও দগ্ধ হয়েছিল।

এ ঘটনায় গতকাল সকালে জাফর (৬১) নামে একজনকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। বার্ন ইনস্টিটিউটে এখন কালু নামে একজন ভর্তি রয়েছেন। তার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত বলে জানান ডা. সামন্ত লাল সেন। বিস্ফোরণে আহত ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি অপর তিনজনের অবস্থাও আশঙ্কামুক্ত বলে জানা গেছে।

মৃত রাসেলের চাচা মানারুল হক জানান, রাসেলের বাবার নাম জসিম উদ্দিন। বাড়ি ঠাকুরগাঁও হরিপুর উপজেলার বনগাঁও গ্রামে। রাজধানীতে মগবাজারের একটি বাসায় থাকতো। হরিপুরের একটি কলেজে অনার্স ২য় বর্ষে পড়তো সে। করোনার কারণে দীর্ঘদিন কলেজ বন্ধ থাকায় দুর্ঘটনার এক সপ্তাহ আগে রাসেল ব্যাঙ্গল মিট সেল্সম্যানের চাকরি নিয়েছিল।

মৃত নুরুন্নবীর স্ত্রী পপি আক্তার জানান, তাদের বাড়ি রাজবাড়ির পাংশা উপজেলার হাবাসপুর গ্রামে। নুরুন্নবীর বাবার নাম ইসলাম মণ্ডল। রাজধানীতে ভ্যান চালাতেন নুরুন্নবী। থাকতেন হাতিরপুল বাটা সিগন্যাল মোড়ে একটি মেসে। পপি আক্তার ১ ছেলে নিয়ে গ্রামে থাকতেন। স্বামীর দুর্ঘটনার সংবাদ পেয়ে ঘটনার পরদিন বার্ন ইনস্টিটিউটে আসেন তিনি। প্রসঙ্গত, গত রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর ওয়ারল্যাসে তিনতলা একটি ভবনের নিচতলায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে তিনতলা ভবনটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ধসে পড়ার মতো অবস্থা। হেলে পড়ে ফাটল দেখা দিয়েছে পূর্ব পাশের একটি ভবন। কাচ ভেঙে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াসহ ঝুঁকিতে রয়েছে আশপাশের বেশ কয়েকটি ভবন। এ ঘটনায় পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, বিস্ফোরক পরিদপ্তর পৃথক পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। প্রথম থেকেই সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে গ্যাস বিস্ফোরণ হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।

শুক্রবার, ০২ জুলাই ২০২১ , ১৮ আষাঢ় ১৪২৮ ২০ জিলক্বদ ১৪৪২

মগবাজার বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১১

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

রাজধানীর মগবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন, রাসেল (২৩) ও নুরুন্নবী মণ্ডল (৩৫)। গতকাল রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীনে তাদের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে মগবাজারের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১১ জনে। তাদের দুইজনের শরীরেই ৯০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। ময়নাতদন্তের জন্য তাদের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে পাঠানো হয়েছে।

বার্ন ইনস্টিটিউটের সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, রাসেলের শরীরে ৯০ শতাংস দগ্ধ ও শ্বাসনালী পুড়ে গিয়েছিল। তাকে প্রথমে এইচডিইউতে রাখা হয়েছিল। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত বুধবার তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিই) নেয়া হয়। তার শরীরে কাটাছেড়ার ক্ষতও ছিল। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল দুপুর ২টার দিকে তার মৃত্যু হয়। এর আগে, গতকাল ভোর সাড়ে ৪টার দিকে নুরুন্নবী মণ্ডল নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়। তার শরীরে ৯০ শতাংশ দগ্ধ ছিল। এছাড়া শরীরে গ্লাসের কাটা যখমও ছিল। পাশাপাশি তার শ্বাসনালীও দগ্ধ হয়েছিল।

এ ঘটনায় গতকাল সকালে জাফর (৬১) নামে একজনকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। বার্ন ইনস্টিটিউটে এখন কালু নামে একজন ভর্তি রয়েছেন। তার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত বলে জানান ডা. সামন্ত লাল সেন। বিস্ফোরণে আহত ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি অপর তিনজনের অবস্থাও আশঙ্কামুক্ত বলে জানা গেছে।

মৃত রাসেলের চাচা মানারুল হক জানান, রাসেলের বাবার নাম জসিম উদ্দিন। বাড়ি ঠাকুরগাঁও হরিপুর উপজেলার বনগাঁও গ্রামে। রাজধানীতে মগবাজারের একটি বাসায় থাকতো। হরিপুরের একটি কলেজে অনার্স ২য় বর্ষে পড়তো সে। করোনার কারণে দীর্ঘদিন কলেজ বন্ধ থাকায় দুর্ঘটনার এক সপ্তাহ আগে রাসেল ব্যাঙ্গল মিট সেল্সম্যানের চাকরি নিয়েছিল।

মৃত নুরুন্নবীর স্ত্রী পপি আক্তার জানান, তাদের বাড়ি রাজবাড়ির পাংশা উপজেলার হাবাসপুর গ্রামে। নুরুন্নবীর বাবার নাম ইসলাম মণ্ডল। রাজধানীতে ভ্যান চালাতেন নুরুন্নবী। থাকতেন হাতিরপুল বাটা সিগন্যাল মোড়ে একটি মেসে। পপি আক্তার ১ ছেলে নিয়ে গ্রামে থাকতেন। স্বামীর দুর্ঘটনার সংবাদ পেয়ে ঘটনার পরদিন বার্ন ইনস্টিটিউটে আসেন তিনি। প্রসঙ্গত, গত রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর ওয়ারল্যাসে তিনতলা একটি ভবনের নিচতলায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে তিনতলা ভবনটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ধসে পড়ার মতো অবস্থা। হেলে পড়ে ফাটল দেখা দিয়েছে পূর্ব পাশের একটি ভবন। কাচ ভেঙে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াসহ ঝুঁকিতে রয়েছে আশপাশের বেশ কয়েকটি ভবন। এ ঘটনায় পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, বিস্ফোরক পরিদপ্তর পৃথক পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। প্রথম থেকেই সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে গ্যাস বিস্ফোরণ হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।